আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
44 views
in বিবিধ মাস’আলা (Miscellaneous Fiqh) by (43 points)

আসসালামু আলাইকুম। আশা করি ভালো আছেন। আমি জেনারেল পড়ুয়া। ইসলামি বই নিয়ে কিছু পরামর্শ চাচ্ছি। সবগুলোর উত্তর দিলে উপকৃত হতাম। 
 

১) যৌবনে নিজেকে হেফাজতের জন্য এবং নারীর ফিতনায় পতিত না হওয়ার জন্য কোন ভালো বই আছে? বইটি কুরআন হাদীসের রেফারেন্সসহ থাকলে ভালো হয়। 

 

২) এখন যৌবন যার by মাওলানা জুলফিকার আহমাদ নকশবন্দি , আবু মিদফা সাইফুল ইসলাম (অনুবাদক) এ বই টা কেমন হবে? 

 

৩) এখন যৌবন যার এ বইয়ে কিছু ঘটনা আছে যা কুরআন, হাদীসে নাই সেক্ষেত্রে উক্ত ঘটনা গুলোর প্রতি কেমন বিশ্বাস রাখবো?  


 

৪) শুধু মাত্র ‘তালাক’ এর মৌলিক বিষয় ও মাসআলা জানার কোনো বই আছে। থাকলে নাম বললে উপকৃত হতাম।


 

৫) স্বপ্নের ব্যাখা কোন বই থেকে ভালো জানা যাবে? 


 

৬) তাসাউফ ও আত্মশুদ্ধি মুফতি তাকী উসমানীর লেখা এ বইটি কেমন? 

 

৭) তাউাউফ ও আত্মশুদ্ধি বইয়ের একজন ভালো অনুবাদকের নাম বললে উপকৃত হতাম। 


 

৮) সীরাত বিষয়ে সঠিকভাবে জানার জন্য কোন বইটি সবচেয়ে ভালো? 

 

৯) সীরাত বিষয়ে জানার জন্য রেইনড্রপসের সীরাহ বইটি কেমন? 


 

১০) ফরজে আইন আবুল হাসনাত কাসিমের লেখা, এ বইটি কেমন হবে? 



 

জাযাকাল্লাহু খাইরান

1 Answer

+1 vote
by (667,230 points)
জবাবঃ-
وعليكم السلام ورحمة الله وبركاته 
بسم الله الرحمن الرحيم 

(০১)
হাদীস শরীফে এসেছেঃ 
‘আলক্বামাহ (রহ.) হতে বর্ণিত। 

عن علقمة، قال: كنت مع عبد الله، فلقيه عثمان بمنى، فقال: يا أبا عبد الرحمن إن لي إليك حاجة فخلوا، فقال عثمان: هل لك يا أبا عبد الرحمن في أن نزوجك بكرا، تذكرك ما كنت تعهد؟ فلما رأى عبد الله أن ليس له حاجة إلى هذا أشار إلي، فقال: يا علقمة، فانتهيت إليه وهو يقول: أما لئن قلت ذلك، لقد قال لنا النبي صلى الله عليه وسلم: «يا معشر الشبابمن استطاع منكم الباءة فليتزوج، ومن لم يستطع فعليه بالصوم فإنه له وجاء»

তিনি বলেন, যখন আমি ‘আবদুল্লাহ্ (রাঃ)-এর সঙ্গে ছিলাম, ‘উসমান (রাঃ) তাঁর সঙ্গে মিনাতে দেখা করে বলেন, হে আবূ ‘আবদুর রহমান! আপনার সাথে আমার কিছু দরকার আছে। অতঃপর তারা দু’জনে এক পাশে গেলেন। তারপর ‘উসমান (রাঃ) বললেন, হে আবূ ‘আবদুর রহমান! আমি কি আপনার সঙ্গে এমন একটি কুমারী মেয়ের বিয়ে দিব, যে আপনাকে আপনার অতীত কালকে স্মরণ করিয়ে দিবে? ‘আবদুল্লাহ্ যখন দেখলেন, তার এ বিয়ের দরকার নেই তখন তিনি আমাকে ‘হে ‘আলক্বামাহ’ বলে ইঙ্গিত করলেন। আমি তাঁর কাছে গিয়ে বলতে শুনলাম, আপনি আমাকে এ কথা বলছেন (এ ব্যাপারে) রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমাদেরকে বলেছেন, হে যুবকের দল! তোমাদের মধ্যে যে বিয়ের সামর্থ্য রাখে, সে যেন বিয়ে করে এবং যে বিয়ের সামর্থ্য রাখে না, সে যেন ‘সওম’ পালন করে। কেননা, সওম যৌন ক্ষমতাকে দমন করে।(সহীহ বোখারী-৫০৬৫)

★সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি ভাই/বোন,
যৌবনে নিজেকে হেফাজতের জন্য এবং নারীর ফিতনায় পতিত না হওয়ার জন্য কিছু বইঃ-

★ইবনুল কাইয়্যিম রহ. – তাহযীবুল ফুযূল / রোগ ও প্রতিকার (Ad-Daa’ wad-Dawaa’)

এখানে গুনাহ, বিশেষ করে নারীর ফিতনা থেকে বাঁচার গভীর আলোচনা আছে।

★ইমাম ইবনুল জাওযি রহ. – তালবিসে ইবলিস।
কিভাবে শয়তান যুবকদের ধোঁকা দেয় এবং কিভাবে বাঁচতে হবে, তার বিশদ ব্যাখ্যা।

★ইমাম গাযযালি রহ. – ইহইয়াউ উলূমিদ্দীন (বিশেষ করে, তাকওয়া, সাবর, ও শারীরিক খেয়াল-খুশিকে নিয়ন্ত্রণ করার অধ্যায়)।

★ইমাম নববী রহ. – রিয়াদুস সালিহীন।

এখানে তাকওয়া, সাবর, দৃষ্টি সংযম, লজ্জাশীলতা ও আত্মশুদ্ধির ব্যাপারে অসংখ্য হাদিস একত্রিত আছে।

★সাথে কিছু কাজ করার পরামর্শ থাকবেঃ-

দৃষ্টি সংযম: কুরআন নির্দেশ দিয়েছে, “মুমিন পুরুষদের বল, তারা যেন দৃষ্টি সংযত করে।” (সূরা আন-নূর: 30)

নামাজ ও কুরআনের সাথে সম্পর্ক রাখা।

অসুস্থ প্রবৃত্তিকে নিয়ন্ত্রণে রাখতে রোজা রাখা।

একাকীত্ব এড়িয়ে চলা (কারণ একাকীত্ব অনেক সময় গুনাহর দিকে ঠেলে দেয়)।

সুস্থ ও হালাল ব্যস্ততা তৈরি করা – যেমন ইলম চর্চা, বৈধ খেলাধুলা, শরীরচর্চা,ইত্যাদি।

(০২)
বইটি অনেক ভালো,আলহামদুলিল্লাহ। 

(০৩)
এক্ষেত্রে মূলনীতি হলোঃ-

যদি গল্প বা ঘটনা কুরআন-সুন্নাহর সাথে বিরোধ না থাকে → তখন তা শিক্ষা/উপদেশ হিসেবে নেয়া যেতে পারে।

যদি সহিহ হাদিস দ্বারা প্রমাণিত → তখন নির্দ্বিধায় গ্রহণ করবেন।

যদি বিরোধী হয় → তখন একেবারেই গ্রহণ করা যাবে না।

যদি না মিলানো যায়, না অস্বীকার করা যায় (যেমন কিছু ইসরাঈলিয়াত বা কাহিনি) → তখন নিরপেক্ষ থাকবেন, শিক্ষা নেওয়া যায় তবে একে নির্ভুল দলিল হিসেবে ধরা যাবে না।

ইমাম মালিক রহ. বলেছেন:

"যে কোনো কথা কুরআন ও সুন্নাহর সাথে মিলে যায়, তা গ্রহণ করো; আর যা এর সাথে বিরোধ করে, তা ফেলে দাও।”

(০৪)
শুধু মাত্র ‘তালাক’ এর মৌলিক বিষয় ও মাসআলা জানার কোনো বই আছে। 

তবে সেগুলোর অধিকাংশই হানাফি মাযহাবের নয়। তবুও উল্লেখ করছি।

★ইসলামিক ফিকহ সিরিজ – তালাক ও হালাল বিবাহ

লেখক: শায়খ মাওলানা হাফিজ মুহাম্মাদ আনওয়ার

বিষয়বস্তু: তালাকের প্রকার, শর্ত, ইত্তেফাক/মাশরুক মাসআলা, তালাকের পরে বিধান

★মৌলিক ফিকহ – তালাক ও রজ্জা

লেখক: শায়খ মুহাম্মাদ ইবনে সালেহ আল উসমানী

বিষয়বস্তু: ইসলামের মৌলিক বিধান, তালাকের সংখ্যা, ওয়ারিশ, হালাল/হারাম পার্থক্য

★ইসলামিক লিগ্যাল রুলস – Talaq

লেখক: হাফিজ ইমাম মুহাম্মাদ সাদ

বিষয়বস্তু: তালাক সংক্রান্ত সহিহ হাদিস ও ফিকহ অনুযায়ী মাসআলা।

আপনি হানাফি মাযহাব অনুসারী হলে উপরোক্ত বই গুলো না পড়ার পরামর্শ থাকবে। 

সেক্ষেত্রে নিম্নোক্ত বই গুলো পড়ার পরামর্শ থাকবেঃ

ফাতাওয়ায়ে আলমগিরি পড়বেন।ফাতাওয়ায়ে রাহমানিয়াকেও সংগ্রহে রাখতে পারেন।ফাতাওয়ায়ে ফকিহুল মিল্লাতকেও সংগ্রহে রাখতে পারেন।

তাছাড়া আশরাফুল হেদায়া,নুরুল ইযাহ,কুদুরি,মালাবুদ্দাহ কিতাব,বেহেশতি যেওরও সংগ্রহে রাখতে পারবেন।

(০৫) এক্ষেত্রে নিম্নোক্ত বই গুলো পড়তে পারেনঃ-

★তাবারি (Ibn Sirin) – তাবারীফিল মনা'ম

কোরআন ও সুন্নাহর আলোকে স্বপ্নের ব্যাখ্যা।অনেক মুসলিমি গবেষক ও আলেম এটিকে সবচেয়ে প্রামাণিক মনে করেন।

★ইবনে কাইয়্যিম – রুহুল মুনাফি' বা তাফসীরুল মনাম।

স্বপ্ন ও তার বাস্তব জীবনের প্রভাব নিয়ে।

★মুসলিম তরজমায় সহজ বই (বাংলা অনুবাদ)

“স্বপ্ন ও তার ব্যাখ্যা” – শায়খ মুহাম্মাদ বিন সলেহ আল উসমানী

(০৬) তাসাউফ ও আত্মশুদ্ধি মুফতি তাকী উসমানীর লেখা এ বইটি অনেক ভালো,আলহামদুলিল্লাহ। 

৭) হযরত মাওলানা মামুনুর রশিদ।

৮) এ সংক্রান্ত জানুনঃ- https://ifatwa.info/33873/

৯) সীরাত বিষয়ে জানার জন্য রেইনড্রপসের সীরাহ বইটি ভালো। পড়তে পারেন।

১০) ফরজে আইন আবুল হাসনাত কাসিমের লেখা,বইটি ভালো,পড়তে পারেন। 


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

------------------------
মুফতী ওলি উল্লাহ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...