আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
9 views
ago in পরিবার,বিবাহ,তালাক (Family Life,Marriage & Divorce) by (3 points)


আসসালামু আলাইকুম উস্তাদ
প্রশ্ন : আমার বিবাহ হয় ২০২১ সালে, তো মেয়ের পরিবারের সাথে কথা ছিলো বিয়ের ৬ মাস পরে আমরা মেয়েকে উঠিয়ে নিয়ে আসবো। বিয়েটা হয় আমাদের বাসায় কিন্তু বিবাহের রাতে মেয়ে ছিলো এক রুমে আমি ছিলাম অন্য রুমে শারীরিক কোনো সম্পর্ক হয়নি বা আমি তাকে স্পর্শ ও করি নাই। পরেরদিন সন্ধায় মেয়ে মেয়ের বাড়ী চলে যায়।
এখান থেকেই আসল ঘটনা শুরু - বিয়ের ২৫/২৬ দিন পরে আমরা জানতে পারি আমাদের এলাকায় এক মেয়ের সাথে ওই মেয়ের ( যাকে আমি বিবাহ করেছি) তার (Lesbian) সমকামিতার সম্পর্ক, মূলত আমাকে বিবাহ করার উদ্দেশ্য ছিলো ওই দু'জন মেয়ে যেনে কাছাকাছি থাকতে পারে যেহেতু একই এলাকার, আমি যখন কর্মের জন্য বাহিরে যাবো তখন তাদের উদ্দেশ্য পুরোন হবে।
-বিস্তারিত যখন আমরা ওই মেয়ের ব্যপারে জানতে পারি তখন ওই মেয়ে চালাকি করে কোর্ট থেকে আমাকে ডিভোর্স লেটার পাঠায় আমার বাসায়, লেটার পাঠানোর আগেই আমি মন থেকে ওই মেয়েকে ছেড়ে দেই। কিন্তু লেটার পাঠানোর পরে আমি ওই লেটারে এখনো সাক্ষর করিনি। মেয়ের সাক্ষর ছিলো লেটারে।
প্রশ্ন হচ্ছে - আমার কি ডিভোর্স হয়েছে বা তালাক হয়েছে?
ওই মেয়েকি এখনো আমার বউ হিসেবে আছে কি না?
যদি ডিভোর্স বা তালাক না হয় তাহলে আমার করণীয় কি হতে পারে, এই মুহুর্তে জানতে চাচ্ছি উস্তাদ?
আমি কিন্তু আগেই বলেছি ওই মেয়েকে আমি মন থেকে ছেড়ে দিয়েছি, এখনো ঘৃণা করি কারণ জঘন্য কাজের সাথে জড়িত ওই মেয়ে।
পরবর্তীতে ২০২৩ সালে আমি আবার বিবাহ করি এবং একটা ছেলে সন্তান আছে এখন আলহামদুলিল্লাহ।
দ্বিতীয় বিবাহে কোনো সমস্যা হবে কি না? 

বিস্তারিত জানালে উপকার হবে। জাঝাকুমুল্লাহু খাইরান

1 Answer

0 votes
ago by (659,160 points)
জবাবঃ-
وعليكم السلام ورحمة الله وبركاته 
بسم الله الرحمن الرحيم

তালাক হচ্ছে স্বামীর অধিকার। স্বামী তালাক দিলেই তালাক সংঘটিত হবে। 

হাদীস শরীফে এসেছেঃ 

حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ يَحْيَى حَدَّثَنَا يَحْيَى بْنُ عَبْدِ اللهِ بْنِ بُكَيْرٍ حَدَّثَنَا ابْنُ لَهِيعَةَ عَنْ مُوسَى بْنِ أَيُّوبَ الْغَافِقِيِّ عَنْ عِكْرِمَةَ عَنْ ابْنِ عَبَّاسٍ قَالَ أَتَى النَّبِيَّ صلى الله عليه وسلم رَجُلٌ فَقَالَ يَا رَسُولَ اللهِ إِنَّ سَيِّدِي زَوَّجَنِي أَمَتَهُ وَهُوَ يُرِيدُ أَنْ يُفَرِّقَ بَيْنِي وَبَيْنَهَا قَالَ فَصَعِدَ رَسُولُ اللهِ صلى الله عليه وسلم الْمِنْبَرَ فَقَالَ يَا أَيُّهَا النَّاسُ مَا بَالُ أَحَدِكُمْ يُزَوِّجُ عَبْدَهُ أَمَتَهُ ثُمَّ يُرِيدُ أَنْ يُفَرِّقَ بَيْنَهُمَا إِنَّمَا الطَّلَاقُ لِمَنْ أَخَذَ بِالسَّاقِ

ইবনু ‘আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, এক ব্যক্তি নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম -এর নিকট এসে বললো, হে আল্লাহর রসূল! আমার মনিব তার বাঁদীকে আমার সাথে বিবাহ দিয়েছে। এখন সে আমার ও আমার স্ত্রীর মধ্যে বিবাহ বিচ্ছেদ ঘটাতে চায়। রাবী বলেন, রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম মিম্বারে আরোহণ করলেন, অতঃপর বলেনঃ হে লোকসকল! তোমাদের কারো এরূপ আচরণ কেন যে, সে তার গোলামের সাথে তার বাঁদীর বিবাহ দেয়, অতঃপর তাদের মধ্যে বিবাহ বিচ্ছেদ ঘটাতে চায়? নারীর ঊরু স্পর্শ করা যার জন্য বৈধ, তালাকের অধিকার তার।
(সুনানে ইবনে মাজাহ ২০৮১.বায়হাকী ৯/১৫৭, ইরওয়াহ ২০৪১।)

আরো জানুনঃ- 

শরীয়তের বিধান হলো স্বামী যদি জেনে শুনে নিকাহ নামার ১৮ নং ধারাতে স্ত্রীকে তালাকের ক্ষমতা দেয়, অথবা সেখানে কাজী সাহেব বা অন্য কেহ হ্যাঁ লিখে দেয়,আর স্বামী তাহা জেনে শুনে নিচে স্বাক্ষর দেয়,আর এই নিকাহ নামা বিবাহের ইজাব কবুল হওয়ার পরে যদি লেখা হয়,তাহলে স্ত্রী তালাকের ক্ষমতা পাবে। 

তবে যদি এমনটি না হয়,স্বামী যদি না জেনেই নিচে সাইন করে,সে যদি তালাকের ক্ষমতা প্রদানের এই বিষয় সম্পর্কে স্বীকার না করে যে এটার তারই লেখা,অথবা এই নিকাহ নামা যদি বিবাহের ইজাব কবুল হওয়ার আগে লেখা হয়,তাহলে স্ত্রী তালাকের ক্ষমতা পাবেনা।
 
كُلُّ كِتَابٍ لَمْ يَكْتُبْهُ بِخَطِّهِ وَلَمْ يُمِلَّهُ بِنَفْسِهِ لَا يَقَعُ بِهِ الطَّلَاقُ إذَا لَمْ يُقِرَّ أَنَّهُ كِتَابُهُ كَذَا فِي الْمُحِيطِ (الفتاوى الهندية، كتاب الطلاق، الفصل السادس فى الطلاق بالكتابة-1/379، المحيط البرهانى، كتاب الطلاق، الفصل السادس فى ايقاع الطلاق بالكتاب-4/486، تاتارخانية، كتاب الطلاق، الفصل السادس فى ايقاع الطلاق بالكتاب-3/380)
সারমর্মঃ
প্রত্যেক ঐ লেখা,যেটা নিজ হাত দিয়ে লিখেনি,নিজের মন সেদিকে ঝুকেওনি,তাহলে তালাক পতিত হবেনা।
যদি সে এটা স্বীকার না করে যে এটার তারই লেখা।    

সুতরাং  যদি স্বামীর দস্তখত করার সময় জানা থাকে যে, কাজী স্ত্রীকে তালাক দেয়ার অধিকার দিয়েছে মর্মে উপরে লিখে দিয়েছে, একথা জানার পরও যদি স্বামী উক্ত কাগজের নিচে সাইন করে, তাহলে স্বামী কর্তৃক স্ত্রীকে তালাক দেয়ার অধিকার দেয়া হয়েছে বলে সাব্যস্ত হবে। সেই হিসেবে স্ত্রী যদি পরবর্তীতে নিজের উপর তালাক পতিত করে থাকে, তাহলে তালাক পতিত হয়ে যায়।

আরো জানুনঃ 
,
সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি ভাই,
আপনার প্রথম বিবাহের ক্ষেত্রে নিকাহনামায় যদি ১৮ নম্বর ধারায় আপনি স্ত্রীকে তালাকের অধিকার দিয়ে থাকেন,আর সেই নিকাহনামা যদি বিবাহের ইজাব কবুলের পর লেখা হয়ে থাকে,এমতাবস্থায় আপনার স্ত্রী যদি সেই তালাকের অধিকার বলে সে নিজেই নিজের নফসের উপর তালাক প্রদান করে থাকে, সেক্ষেত্রে তার উপর তালাক পতিত হয়ে গিয়েছে, এখন ইদ্দতকাল অতিবাহিত হওয়ার পর সে অন্যত্রে বিবাহ বসতে পারবে।

তবে সর্বাবস্থায় আপনার দ্বিতীয় বিবাহ শুদ্ধ। এই দ্বিতীয় বিবাহ কোন সমস্যা হবে না।


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

------------------------
মুফতী ওলি উল্লাহ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...