আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
22 views
ago in পরিবার,বিবাহ,তালাক (Family Life,Marriage & Divorce) by (8 points)
السلام عليكم ورحمة الله وبركاته.
উস্তাজ আমার এক ছোট বোন হারাম সম্পর্কে ছিলো। সম্পর্ককে হালাল করার জন্য তারা গোপনে বিয়ে করে। বিয়ের সময় ছেলের কয়েকজন বন্ধু এবং মেয়ের কয়েকজন বান্ধবী ছিলো। তারা মেয়েরা ক্লাস ৯ ও ছেলেরা ক্লাস ১০ এ পড়তো। এরপর তারা নিজেদেরকে স্বামী-স্ত্রী ভেবেই রিলেশন চালিয়ে যায়। তবে এটা শুধু করা বলা, ঘুরতে যাওয়া, হাত ধরা, এটুকুর মধ্যেই সীমাবদ্ধ ছিলো। পরে তাদের মাঝে ঝামেলা হয়, কথা বন্ধ হয়ে যায়৷ মেয়ের পরিবার যেহেতু কিছুই জানতো না, তাই তারা অন্য জায়গায় মেয়ের বিয়ে ঠিক করে ও বিয়ে দিয়ে দেয়। মেয়েও জেদের বশে বিয়ে করে। এখন সে সুখেই আছে। কিন্তু তারপর প্রথম বিয়ে যদি শুদ্ধ হয়ে যায় তাহলে পরের বিয়ে তো হয় নি। অন্যদিকে তার আগের বয়ফ্রেন্ড তাদের বিয়েকে অস্বীকার করছে, তাকে তালাক দিতে বললেও তালাক দিচ্ছে না। তাকে বলা হচ্ছে বিয়ে হোক বা না হোক তুমি তালাক দাও, কিন্তু সে কিছুতেই তালাক দেয় না।
এখন মেয়ের করণীয় কী? পারিবারিকভাবে যার সাথে বিয়ে হয়েছে তার সাথে তো সে স্বামী-স্ত্রীর সম্পর্কেই থাকছে। এদিকে আগের বিয়ে যে বাতিল করবে, ছেলে তালাক দিতে রাজি না, বিয়েটাকেই অস্বীকার করছে। অথচ সাক্ষীরা সব সাক্ষ্য দিচ্ছে।
তারা বিয়ে করার সময় হানাফি মাযহাব নিয়ে বিয়ে করেছিলো। এখন আরো অনেক ফতোয়া দেখছে যেখানে অভিভাবকের অনুমতি ছাড়া বিয়ে জায়েজ নেই। সেই ফতোয়া অনুযায়ী তো তাহলে তাদের বিয়েই হয় নি। তারা এখন কনফিউজড।
আগের বিয়ে যদি হয়েও থাকে, সেই ছেলে তো কোনো ভাবেই স্বীকার করছে না, তালাকও দিচ্ছে না। আবার পরুবারকেও এই বিষয়ে জানানো সম্ভব হচ্ছে না। এক্ষেত্রে করণীয় কী?

1 Answer

0 votes
ago by (656,550 points)
জবাবঃ-
وعليكم السلام ورحمة الله وبركاته 
بسم الله الرحمن الرحيم 

শরীয়তের বিধান হলো যদি দুইজন প্রাপ্ত বয়স্ক সমঝদার সাক্ষ্যির সামনে প্রাপ্ত বয়স্ক পাত্র ও পাত্রি যদি প্রস্তাব দেয় এবং অপরপক্ষ তা গ্রহণ করে নেয়, তাহলে ইসলামী শরীয়াহ মুতাবিক বিবাহ শুদ্ধ হয়ে যায়। অভিভাবকের সম্মতি থাকুক বা না থাকুক। অভিভাবক জানুক বা না জানুক।

 তবে যদি গায়রে কুফুতে বিবাহ করে, তথা এমন পাত্রীকে বিবাহ করে, যার কারণে ছেলে বা মেয়ের পারিবারিক সম্মান বিনষ্ট হয়, তাহলে পিতা সে বিয়ে আদালতের মাধ্যমে ভেঙ্গে দিতে পারে। যদি কুফুতে বিবাহ করে, তাহলে পিতা এ অধিকারও পাবে না।

হাদীস শরীফে এসেছেঃ- 


عَنْ عَبْدِ اللهِ بْنِ عَبَّاسٍ؛ أَنَّ رَسُولَ اللهِ صلى الله عليه وسلم، قَالَ: «الْأَيِّمُ أَحَقُّ بِنَفْسِهَا مِنْ وَلِيِّهَا.

হযরত আব্দুল্লাহ বিন আব্বাস রাঃ থেকে বর্ণিত। রাসূল সাঃ ইরশাদ করেছেন, মেয়ে তার ব্যক্তিগত বিষয়ে অভিভাবকের চেয়ে অধিক হকদার। {মুয়াত্তা মালিক, হাদীস নং-৮৮৮, সহীহ মুসলিম, হাদীস নং-১৪২১, মুসনাদে আহমাদ, হাদীস নং-১৮৮৮, সুনানে আবু দাউদ, হাদীস নং-২০৯৮, সুনানে দারেমী, হাদীস নং-২২৩৪, সুনানে তিরমিজী, হাদীস নং-১১০৮, সুনানে নাসায়ী, হাদীস নং-৩২৬০, সহীহ ইবনে হিব্বান, হাদীস নং-৪০৮৪, সুনানে দারাকুতনী, হাদীস নং-৩৫৭৬}

عَنْ أَبِي سَلَمَةَ بْنِ عَبْدِ الرَّحْمَنِ قَالَ: ” جَاءَتِ امْرَأَةٌ إِلَى رَسُولِ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ، فَقَالَتْ: يَا رَسُولَ اللَّهِ، إِنَّ أَبِي وَنِعْمَ الْأَبُ هُوَ، خَطَبَنِي إِلَيْهِ عَمُّ وَلَدِي فَرَدَّهُ، وَأَنْكَحَنِي رَجُلًا وَأَنَا كَارِهَةٌ. فَبَعَثَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ إِلَى أَبِيهَا، فَسَأَلَهُ عَنْ قَوْلِهَا، فَقَالَ: صَدَقَتْ، أَنْكَحْتُهَا وَلَمْ آلُهَا خَيْرًا. فَقَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: «لَا نِكَاحَ لَكِ، اذْهَبِي فَانْكِحِي مَنْ شِئْتِ

হযরত সালামা বিনতে আব্দুর রহমান রাঃ থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, একদা এক মেয়ে রাসূল সাঃ এর কাছে এল। এসে বলল, হে আল্লাহর রাসূল! আমার পিতা! কতইনা উত্তম পিতা! আমার চাচাত ভাই আমাকে বিয়ের প্রস্তাব দিল আর তিনি তাকে ফিরিয়ে দিলেন। আর এমন এক ছেলের সাথে বিয়ে দিতে চাইছেন যাকে আমি অপছন্দ করি। এ ব্যাপারে রাসূল সাঃ তার পিতাকে জিজ্ঞাসা করলে পিতা বলে, মেয়েটি সত্যই বলেছে। আমি তাকে এমন পাত্রের সাথে বিয়ে দিচ্ছি যার পরিবার ভাল নয়। তখন রাসূল সাঃ মেয়েটিকে বললেন, “এ বিয়ে হবে না, তুমি যাও, যাকে ইচ্ছে বিয়ে করে নাও”। {সুনানে সাঈদ বিন মানসূর, হাদীস নং-৫৬৮, মুসন্নাফে আব্দুর রাজ্জাক, হাদীস নং-১০৩০৪, মুসান্নাফে ইবনে আবী শাইবা, হাদীস নং-১৫৯৫৩, দিরায়া ফী তাখরীজি আহাদিসীল হিদায়া, হাদীস নং-৫৪১}

আরো জানুনঃ- 

উক্ত মাসয়ালার ক্ষেত্রে চার মাযহাবের অবস্থান দলিল সহ জানুনঃ-

★সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি ভাই/বোন,
আপনার বোন যে গোপনে বিবাহ করেছিলো,সেই বিবাহ শুদ্ধ হয়েছিলো।
সেই স্বামী যেহেতু এখনো তাকে তালাক দেয়নি তাই পরবর্তীতে আপনার বোন যেখানে বিবাহ বসেছে, সেটি কোনক্রমেই সহীহ হয়নি।

তারা যে ঘর সংসার করতেছে এটা স্পষ্ট যেনা হচ্ছে, দ্রুত তাদেরকে ঘর সংসার করা হতে সরে আসতে হবে।

এক্ষেত্রে আপনার বোন তার সেই পূর্বের স্বামী হতে যেভাবেই হোক তালাক নিবেন।

প্রয়োজনে টাকা পয়সা দিয়ে হোক বা তাতেও কাজ না হলে আইনি ভাবেই হোক তাতেও কাজ না হলে অন্য কোনভাবে জোর করে হলেও তার থেকে তালাক নিতে হবে।

তালাকের পর ইদ্দত কাল (৩ হায়েজ) অতিক্রম করতে হবে এরপরে আপনার বোন পরবর্তী স্বামীর সাথে বিবাহ বসতে পারবে।

তার আগে কোনোক্রমেই তারা বিবাহ বসতে পারবে না।


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

------------------------
মুফতী ওলি উল্লাহ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...