আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
20 views
ago in বিবিধ মাস’আলা (Miscellaneous Fiqh) by (5 points)
আসসালামু আলাইকুম ওয়া রহমাতুল্লাহ্
আমি ন্যাশনালে পড়াশোনা করছি ১ম বর্ষে আছি। এখানে ছেলে মেয়ে একসাথে পড়া-শোনা করে অর্থ্যাৎ সহশিক্ষা।
যেহেতু সহশিক্ষা হারাম তাই আমি চাচ্ছিলাম ক্লাস করবো না, শুধু পরীক্ষা গুলো দিবো (যদিও বর্তমানে নতুন নিয়ম করেছে ৬০% উপস্থিতি বাধ্যতামূলক, সেটা কতটুকু কার্যকর হবে আল্লাহ ভালো জানে)
আমার সাবজেক্ট ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতি।
শুধু পরীক্ষাগুলো দিতে পারলে কি আমার জন্য এই অনার্স  কমপ্লিট করা জায়েজ হবে?
অথবা যদি মহিলা কলেজে transfer হয়ে যেতে পারি সেক্ষেত্রে কি অর্নাস কমপ্লিট করাটা জায়েজ হবে?
নাকি আমাকে এই জেনারেলের পড়াশোনাই ছেড়ে দিবে হবে?
বুঝতে পারছি না ওস্তাদজী।
আমার এবং আমার পরিবারের ইচ্ছে আমি অন্তত অর্নাসটা কমপ্লিট করি এক্ষেত্রে
আমার জন্য কুরআন হাদিসের আলোকে সঠিক ও উওম নসীহা দিয়ে সাহায্য করবেন উস্তাদজী।
জাজাকাল্লাহ খইরন।

1 Answer

0 votes
ago by (78,210 points)
ওয়া ‘আলাইকুমুস সালাম ওয়া রহমাতুল্ল-হি ওয়া বারাকা-তুহু।
বিসমিল্লা-হির রহমা-নির রহীম।
জবাবঃ
https://ifatwa.info/43048/ নং ফাতওয়ায় উল্লেখ রয়েছে যে,
দ্বীনি শিক্ষা হোক বা দুনিয়াবি শিক্ষা হোক, ইসলামের বিধান হলো ছেলেরা ছেলেদের প্রতিষ্ঠানে এবং মেয়েরা মেয়েদের প্রতিষ্ঠানে পড়বে। বিশেষত মেয়েদের ক্ষেত্রে এর প্রতি সর্বোচ্চ লক্ষ রাখা ও গুরুত্ব দেয়া আবশ্যক। 
,
■ কেননা, আল্লাহ তাআলা বলেন,
زُيِّنَ لِلنَّاسِ حُبُّ الشَّهَوَاتِ مِنَ النِّسَاء
মানবকূলকে মোহগ্রস্ত করেছে নারী…। (সূরা আলি ইমরান ১৪)
,
■ রাসুলুল্লাহ ﷺ বলেছেন,
مَا تَرَكْتُ بَعْدِي فِتْنَةً أَضَرَّ عَلَى الرِّجَالِ مِنْ النِّسَاءِ
আমি আমার পরে মানুষের মাঝে পুরুষদের জন্য নারীদের চাইতে অধিকতর ক্ষতিকর কোন ফিতনা রেখে যাই নি। (বুখারী ৪৮০৮ মুসলিম ২৭৪০)
,
■ ফাতাওয়া লাজনাতিদ্দায়িমাতে এসেছে,
 فلا يجوز للمرأة أن تَدرس أو تعمل في مكان مختلط بالرجال والنساء ، ولا يجوز لوليها أن يأذن لها بذلك
সুতরাং মেয়েদের জন্য এমন প্রতিষ্ঠানে পড়া-লেখা কিংবা চাকরি করা জায়েয হবে না যেখানে নারী-পুরুষের সহাবস্থান রয়েছে এবং অভিবাকের জন্য জায়েয হবে না তাকে এর অনুমতি দেয়া।  (ফাতাওয়া লাজনাতিদ্দায়িমা ১২/১৫৬)
,
★ একান্ত অপারগ অবস্থায় বা বিকল্প কোন পথ না পেলে এসব প্রতিষ্ঠানে পড়াশোনা করা জায়েয আছে। কেননা, الضرورات تبيح المحظورات     জরুরত নিষিদ্ধ কাজকে সিদ্ধ করে দেয়। (আলআশবাহ ওয়াননাযাইর ১/৭৮)
তবে সবোর্চ্চ সতর্কতা অবলম্বন করা জরুরি, যাতে পর্দা লঙ্ঘন বা আল্লাহর অসন্তুষ্টি মূলক কার্যক্রম সংঘটিত না হয়।
কেননা, আল্লাহ তাআলা বলেন,
فَاتَّقُوا اللَّهَ مَا اسْتَطَعْتُمْ
অতএব তোমরা যথাসাধ্য আল্লাহকে ভয় কর। (সূরা তাগাবুন ১৬)
,
যতদিন পর্যন্ত এই দেশে পৃথক শিক্ষা ব্যবস্থা চালু না হচ্ছে, ততদিন প্রয়োজনের তাগিদে নিম্নোক্ত শর্তাদির সাথে উলামায়ে কেরামগন  কলেজ-ভার্সিটিতে শিক্ষা গ্রহণের পরামর্শ দেন।
১. শিক্ষা অর্জন দেশ ও মুসলিম জাতীর খেদমতের উদ্দেশ্যে হতে হবে।
২. চোখকে সব সময় নিচু করে রাখতে হবে, প্রয়োজন ব্যতীত কোনো শিক্ষক/শিক্ষিকার দিকে তাকানো যাবে না। মহিলা/পুরুষ তথা অন্য লিঙ্গের  সহশিক্ষার্থীদের সাথে তো কোনো প্রকার সম্পর্ক রাখা যাবেই না। সর্বদা অন্য লিঙ্গর শিক্ষার্থী থেকে নিজেকে নিরাপদ দূরত্বে রাখতে হবে। ফাতাওয়া উসমানী ১/১৬০-১৭১
,
সহ শিক্ষা সংক্রান্ত বিস্তারিত জানুনঃ 
,
আপনি উপরোক্ত শর্তগুলি পুরোপুরি ভাবে মেনে ফ্রি মিক্সিং পরিবেশে পড়াশোনা  করতে পারেন। শর্তাবলি মেনে চলতে যা যা করা দরকার, তা তাই করতে হবে। দাঁতে দাঁত চেপে অন্তরকে কন্ট্রোল করে পড়াশোনা চালিয়ে যেতে হবে। যদি শর্তাবলী মেনে চলতে অনেক কষ্টকর হয়,তাহলে প্রয়োজনে ক্লাশে কম উপস্থিত হবেন। তদুপরি দৃষ্টিগত গুনাহ হলে ইস্তেগফার পাঠ করবেন।  
,
আপনি ইচ্ছাকৃতভাবে কোনো গায়রে মাহরাম মহিলার দিলে নজর দিবেননা, অনিচ্ছায় নজর চলে গেলে সাথে চোখ ফিরিয়ে নিবেন।
তাদের সাথে কোনো কথা বলবেননা। বৈধ ও প্রয়োজনীয় কথা হলে দৃষ্টি অবনত রেখে অল্প সময়েও কথা বলে শেষ করবেন।
,
★ সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনী বোন!
,
আপনি মহিলা কলেজে transfer হয়ে যাওয়ার সর্বোচ্চ চেষ্টা করলেন। হয়ে গেলে ভালো। অন্যথায় আপনি উপরোক্ত শর্তগুলি পুরোপুরি ভাবে মেনে ফ্রি মিক্সিং পরিবেশে পড়াশোনা  করতে পারেন। শর্তাবলি মেনে চলতে যা যা করা দরকার, তা তাই করতে হবে। দাঁতে দাঁত চেপে অন্তরকে কন্ট্রোল করে পড়াশোনা চালিয়ে যেতে হবে। যদি শর্তাবলী মেনে চলতে অনেক কষ্টকর হয়, তাহলে প্রয়োজনে ক্লাসে কম উপস্থিত হবেন। তদুপরি দৃষ্টিগত গুনাহ হলে ইস্তেগফার পাঠ করবেন।  
,
আপনি ইচ্ছাকৃতভাবে কোনো গায়রে মাহরামের দিকে নজর দিবেননা, অনিচ্ছায় নজর চলে গেলে সাথে চোখ ফিরিয়ে নিবেন।
তাদের সাথে কোনো কথা বলবেন না। বৈধ ও প্রয়োজনীয় কথা হলে দৃষ্টি অবনত রেখে অল্প সময়েও কথা বলে শেষ করবেন।

(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

--------------------------------
মুফতী আব্দুল ওয়াহিদ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...