আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
32 views
in বিবিধ মাস’আলা (Miscellaneous Fiqh) by (10 points)
reshown by
আসসালামু আলাইকুম হুজুর। আমার কয়েকটি প্রশ্ন একত্রে করছি।

1. কারো সাথে একজনের বিয়ে করার কথা,একবার তালাকের পর আবার বিয়ে।  একটা ভুল বুঝাবুঝি তে কেউ একজন যদি অপরজনকে বলে " আমার মায়ের পবিত্র দুধের কসম, আমি তোমায় বিয়ে করবো না " তাহলে কি তারা আর বিয়ে করতে পারবে না পরবর্তী তে যদি চায়? বা গুনাহ হবে? গুনাহ হলে করনীয় কি?
2. স্বপ্ন : একজন নওমুসলিম বোন স্বপ্নে দেখলো,, স্বপ্নে সে ঘুমিয়ে আছে,,তার সামনে একজন লোক দাড়ানো। অন্ধকারে তার মুখ দেখা যায় না। তার চোখ গুলো কেমন যেন হয়ে ছিল,,,সবুজ চোখের মনি থাকলে যেমন লাগে ওই রকম। বোনের সবটা মনে নেই কি কি বলেছে। তবে লোকটাকে দেখে স্বপ্নে ঘুমিয়ে থাকা বোন জেগে যায় আর লোক টা কে দেখে ভয় পায়। লোকটা রাগান্বিত হয়ে কি কি জানি বলছিল,বোনটির শুধু মনে আছে, লোকটা বলতেছিল ২ সেপ্টেম্বর। ( বোনের মা এর কিছু দিন আগেই এমন এক যুবক এর বিষয়ে বলছিল,,যে যুবকটা গুননা করে,,মানে জতীষি এমন। ওই ছেলেকে বোনের মা বোনের পড়াশুনার রেজাল্ট নিয়ে গননা করতে বলেছিল,,আর ছেলেটি গননা করে একটা উত্তর দিল।তারপর বোনের মা এসে বোনকে এসব বলল,, বোনটি স্বপ্নের মধ্যে জানতো ওই লোকটি ই সেই লোক যে স্বপ্নে এসে রাগান্বিত ভাবে কথা বলেছে। এর ব্যাখ্যা কি হুজুর? আর করনীয়ই বা কি?
3. বোনটি গননার ফলাফল তার বর্তমান অবস্থার সাথে মিলে যাওয়ার কিছুটা এমন হলো যে লোকটি সর্বশেষ তাকে ভালো করে পড়াশুনা করার পরামর্শ দিলো। এখন বোনটি যদি পড়ার সময় ওই কথা গুলা মনে করে,,,, তার কি শিরক হবে? যদিও বোনটি তার মায়ের কাছ থেকে এ কথা গুলা শুনার সময় ই মনে মনে বলছিল আল্লাহ যা চাইবেন তা ই হবে।
4. স্বপ্ন : ওই একই বোন একদিন স্বপ্নে দেখল সে তার এক বান্ধবীর সাথে একটা দোকানে যাচ্ছে,দোকান টা ওদের ই এক সহপাঠী ছেলের বাবার। ছেলেটা মাঝে মাঝে দোকানে বসে। রাস্তায় তার এক ই ক্লাস এর কিছু ছেলে সহপাঠী বোন আর তার সাথে থাকা "A "    বান্ধবী কে  দেখে বলতে লাগলো " A  এর তো দোকানীর ছেলের সাথে কিছু একটা সম্পর্ক আছে, এখন কি ওই ও (বোনকে উদ্দেশ্য করে) খারাপ ওই গেল বা এমন কিছু কথা। তারপর দোকানে পৌছানোর সাথে সাথে দোকানীর ছেলে বের হয়ে চলে গেল। আর বোনের বান্ধবী A  নিজে গিয়ে দোকান থেকে কেক বের করতেছে দেখে বোন ও বলল "আমাকে ও দে,এটা  আমার Favourite cake." A  ও বোনকে  একটা কেক দিল। তারপর বোনটি পাশের দোকানীর কাছে টাকা ভাংতি নিতে না কি জানি কিনতে গেল। ওই লোকটিকে বোনের খুব আল্লাহ ওয়ালা মনে হল,,পান্জাবী টুপি পড়া,অনেক ভালো ভালো কথা বললো। বোনের স্বপ্নের মধ্যে মনে মনে ইচ্ছে করছিল লোকটা কে জানাতপ যে বোনটি নওমুসলিম।হয়তো বোনটিকে ওনি সাহায্য ও করতে পারেন। কি ভেবে যেন আর বলা হল না। লোকটা অপরিচীত। আর পর লোকটি ভিতরের একটা রোমে গেল টাকা আনতে,,তারপর বোনটি ব্যাগ থেকে টাকা বের করে দিতে মাথা উঠালো বা এমন তারপর দেখে লোকটি সাদা পান্জাবী ঠিকই পড়া কিন্তু মাথায় তিলক হিন্দুদের মতো। আর নিচে লালা ধুতি। বোনটি মনে মনে বলল " আল্লাহ বাচাইছে যে আমি বলি নাই আমি মুসলিম। " এটার ব্যাখ্যা কি হুজুর।
5. প্রতি ওয়াক্তের ওজুতে নামাজে ওয়াসওসা লাগে। নামাজে দাড়ানোর পর লাগে এই বুছি ওজু ভেঙে যাবে। নামাজের পরে,বা অন্য সময় এমন হয় না আবার। করনীয় কি?
6. ওজুর সময় যদি মনে হয় হাত দুবার ধুইলাম,, আর অলরেডি অপর হাত ধুইতেছি,,এমন অবস্থায় ২য় হাত ৩ বার ধুয়ে কি আবার প্রথম হাত একবার ধুয়া যাবে? না হলে এমন অবস্থায় কি করবো অন্যান্য অঙ্গের ক্ষেত্রে ও?
7. একজন নওমুসলিম মেয়ে  কোন মাজহাব মানবে?  সে পুরুষদের মতো নামাজ পরে,,, যেটা হানাফি মাজহাব না। কিন্তু সে যদি বিয়ে করতে চায় সে তো তার অমুসলিম মা বাবার পার্মিশন পাবে না,,আর হানাফি মাজহাব এ প্রাপ্ত বয়স্ত মেয়ে পেরেন্স এর পার্মিশন ছাড়া বিয়ে করতে পারে,বাকি মাজহাব মতে পারে না শুনেছি। এখন সে কিছু কাজ করে যা হানাফি মাজহাব অনুযায়ী,আবার কিছু সে অনুযায়ী না।তার কাজগুলা বা আমলগুলো  কি সহী হচ্ছে,?

8. নামাজের সময় চোখের পানি মুখে গেলে কি নামাজ ভেঙে যাবে? বা রোজার  থাকা অবস্থায় নামাজরত  এমন সময় হলে করনীয় কি?

9. আর একজন বোনের রাগারাগি বশত এক তালাক হয়েছে। কিন্তু সে চেষ্টা করছে বর্তমানে তার আগের স্বামীর সাথে যোগাযোগ না করতে,, কিন্তু ১/২ দিন যোগাযোগ বন্ধ থাকলেও ৩য় দিন আবার লুপ এ পরে যাচ্ছে বারবার। তারা আবার বিয়ে করবে।  কিন্তু কথা বলাটায় তো গুনাহ হচ্ছে, সে কিভাবে কি করবে এমত অবস্থায়?
মাফ চেয়ে নিচ্ছি এতগুলো প্রশ্ন করার জন্য। আসলে অনেক দিনের জমানো প্রশ্ন। মাফ করবেন হুজুর। প্রশ্নগুলোর উত্তর একটু তাড়াতাড়ি পেলে মেহেরবানি হয়।  জাজাকাল্লাহ। আসসালামু আলাইকুম।

1 Answer

0 votes
ago by (652,350 points)
জবাবঃ-
وعليكم السلام ورحمة الله وبركاته 
بسم الله الرحمن الرحيم

(০১)
কসম হবে কেবল আল্লাহর নামে অথবা তার কোন গুনের নাম নিয়ে অথবা  কুরআনের কসম করে।
অন্যথায় তাহা জায়েজ নয়। 
,
হাদীস শরীফে এসেছেঃ
  
حَدَّثَنَا قُتَيْبَةُ، حَدَّثَنَا أَبُو خَالِدٍ الأَحْمَرُ، عَنِ الْحَسَنِ بْنِ عُبَيْدِ اللَّهِ، عَنْ سَعْدِ بْنِ عُبَيْدَةَ، أَنَّ ابْنَ عُمَرَ، سَمِعَ رَجُلاً، يَقُولُ لاَ وَالْكَعْبَةِ . فَقَالَ ابْنُ عُمَرَ لاَ يُحْلَفُ بِغَيْرِ اللَّهِ فَإِنِّي سَمِعْتُ رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم يَقُولُ " مَنْ حَلَفَ بِغَيْرِ اللَّهِ فَقَدْ كَفَرَ أَوْ أَشْرَكَ " . قَالَ أَبُو عِيسَى هَذَا حَدِيثٌ حَسَنٌ . وَفُسِّرَ هَذَا الْحَدِيثُ عِنْدَ بَعْضِ أَهْلِ الْعِلْمِ أَنَّ قَوْلَهُ " فَقَدْ كَفَرَ أَوْ أَشْرَكَ " عَلَى التَّغْلِيظِ . وَالْحُجَّةُ فِي ذَلِكَ حَدِيثُ ابْنِ عُمَرَ أَنَّ النَّبِيَّ صلى الله عليه وسلم سَمِعَ عُمَرَ يَقُولُ وَأَبِي وَأَبِي . فَقَالَ " أَلاَ إِنَّ اللَّهَ يَنْهَاكُمْ أَنْ تَحْلِفُوا بِآبَائِكُمْ " . وَحَدِيثُ أَبِي هُرَيْرَةَ عَنِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم أَنَّهُ قَالَ " مَنْ قَالَ فِي حَلِفِهِ وَاللاَّتِ وَالْعُزَّى فَلْيَقُلْ لاَ إِلَهَ إِلاَّ اللَّهُ " . قَالَ أَبُو عِيسَى هَذَا مِثْلُ مَا رُوِيَ عَنِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم أَنَّهُ قَالَ " إِنَّ الرِّيَاءَ شِرْكٌ " . وَقَدْ فَسَّرَ بَعْضُ أَهْلِ الْعِلْمِ هَذِهِ الآيَة : ( وَمَنْ كَانَ يَرْجُو لِقَاءَ رَبِّهِ فَلْيَعْمَلْ عَمَلاً صَالِحًا ) الآيَةَ قَالَ لاَ يُرَائِي .

 ইবনে উমার (রঃ) একটি লোককে বলতে শুনলেন ‘না, কাবার কসম!’ তিনি তাকে বললেন, ‘আল্লাহ ছাড়া অন্য কারো নামে কসম খেও না। কেননা, আমি রাসুলুল্লাহ (সঃ) কে বলতে শুনেছি, “যে ব্যক্তি গায়রুল্লাহ নামে কসম করে, সে কুফরি অথবা শিরক করে।” (আবু দাউদ ৩২৫১, তিরমিজি ১৫৩৫ নং)

وَحَدَّثَنِي أَبُو الطَّاهِرِ، أَحْمَدُ بْنُ عَمْرِو بْنِ سَرْحٍ حَدَّثَنَا ابْنُ وَهْبٍ، عَنْ يُونُسَ، ح وَحَدَّثَنِي حَرْمَلَةُ بْنُ يَحْيَى، أَخْبَرَنَا ابْنُ وَهْبٍ، أَخْبَرَنِي يُونُسُ، عَنِ ابْنِ شِهَابٍ، عَنْ سَالِمِ بْنِ، عَبْدِ اللَّهِ عَنْ أَبِيهِ، قَالَ سَمِعْتُ عُمَرَ بْنَ الْخَطَّابِ، يَقُولُ قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم " إِنَّ اللَّهَ عَزَّ وَجَلَّ يَنْهَاكُمْ أَنْ تَحْلِفُوا بِآبَائِكُمْ " . قَالَ عُمَرُ فَوَاللَّهِ مَا حَلَفْتُ بِهَا مُنْذُ سَمِعْتُ رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم نَهَى عَنْهَا ذَاكِرًا وَلاَ آثِرًا .

আবূ তাহির আহমাদ ইবনু আমর ইবনু সারহ ও হারমালাহ্ ইবনু ইয়াহইয়া (রহঃ) ..... উমার ইবনু খাত্তাব (রাযিঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ আল্লাহ তা'আলা তোমাদের বাপ-দাদার নামে কসম করতে নিষেধ করেছেন। উমার (রাযিঃ) বললেন, আল্লাহর কসম! আমি যখন থেকে রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে এ থেকে নিষেধ করতে শুনেছি, তখন থেকে আর কখনও সে নামে কসম করিনি, নিজের পক্ষ থেকেও নয়, আর অপরের উদ্ধৃতি দিয়েও নয়। (বুখারী ৩৮৩৬,মুসলিম ১৬৪৬,ইসলামিক ফাউন্ডেশন ৪১০৮, ইসলামিক সেন্টার ৪১০৬)

★সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি ভাই/বোন,
প্রশ্নে উল্লেখিত ছুরতে এটি কসম বলে বিবেচিত হবেনা।
তারা আবারো বিয়ে করতে পারবে, এতে গুনাহ হবেনা।

(০২)
এটি তার মনের কল্পনা প্রসূত স্বপ্ন বলেই মনে হচ্ছে। সুতরাং চিন্তিত না হওয়ার পরামর্শ থাকবে।

(০৩)
এতে শিরক হবেনা।
তবে তিনি কোনভাবেই এগুলো বিশ্বাস করবেন না।

(০৪)
এটি তার মনের কল্পনা প্রসূত স্বপ্ন বলেই মনে হচ্ছে। 

(০৫)
ওয়াসওয়াসাকে পাত্তা দেয়া যাবেনা।

আরো জানুনঃ- 

(০৬)
এক্ষেত্রে প্রথম হাত যদি ভালোভাবে ধোয়া হয়ে থাকে, কোন অংশ যদি শুকনো না থাকে, তাহলে প্রথম হাত আর ধোয়া লাগবে না।

(০৭)
প্রশ্নের বিবরন মতে তার প্রতি হানাফি মাযহাব মানার পরামর্শ থাকবে। 

(০৮)
সেই পানি গিলে ফেললে নামাজ ভেঙ্গে যাবে। 
এক্ষেত্রে কোনো কাপড় দিয়ে সেই পানি মুছে নিতে হবে। 

(০৯)
যেহেতু এক তালাক হয়েছে,সুতরাং তাদের তো পুনরায় ঘর সংসার করার সুযোগ আছে।
তাই সেই স্বামীর সংসারে পুনরায় ফিরিয়ে যাওয়ার পরামর্শ থাকবে। 

এক্ষেত্রে যদি এক তালাকে রজয়ী হয়ে থাকে সেক্ষেত্রে ইদ্দতকাল অতিবাহিত না হয়ে থাকলে স্বামী তাকে ফিরিয়ে নিলাম বললেই ফিরে না হয়ে যাবে অথবা তার সাথে স্বামী সুলভ কোন দৈহিক আচরণ করলে ফিরিয়ে নেওয়া হয়ে যাবে।

আর যদি ইদ্দতকাল অতিবাহিত হয়ে গিয়ে থাকে, বায়েন তালাক হয়ে থাকে,সেক্ষেত্রে নতুন করে বিবাহ পড়িয়ে নিতে হবে।


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

------------------------
মুফতী ওলি উল্লাহ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...