আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
22 views
in হালাল ও হারাম (Halal & Haram) by (6 points)
১ - সহশিক্ষা যেহেতু হারাম। তাই সহশিক্ষা প্রতিষ্ঠানে পড়ার জন্য কোনরুপ সাহায্য করা যেমন - অনলাইনে আবেদনের কাগজপত্র তৈরি করে দেয়া, সহশিক্ষা প্রতিষ্ঠানে এডমিশনের জন্য টিউশন পড়ানো। এসব কাজ কি জায়েজ?  বা এসব কাজের মাধ্যমে উপার্জন করা টাকা কি হালাল?
২- সুদি ব্যাংকের কাগজপত্র তৈরি এবং ফটোকপি করে দেওয়া কি জায়েজ হবে?
৩ -  সহশিক্ষা প্রতিষ্ঠানে শিক্ষকতা বা যেকোন চাকরি কি জায়েজ আছে?
৪ - যদি কারো হালাল চাকরির বেতন কোন সুদি ব্যাংকের মাধ্যমে দেওয়া হয়। তাহলে তা জায়েজ হবে?
৫ -  যুদ্ধের সময় আল্লাহর অনেক বিধান রয়েছে। যেমন - নারী, শিশু, বৃদ্ধ  যুদ্ধেজরিত নয় এমন ব্যাক্তিদের ক্ষতি না করা।  এখন হা,মা,স  যদি প্রতিরোধ যুদ্ধে আল্লাহর নিয়ম ফলো করতে না পারে এবং দুনিয়াবি কায়দায়ই যুদ্ধ করে এতে কি তাদের গুনাহ হবে?
আসলে আমি চাইনা তাদের কোন গুনাহ হোক। আমি তাদের ভীষণ ভালোবাসি।
৬ - আল্লাহ আমাদের স্বাধীন ইচ্ছে শক্তি দিয়েছেন যাতে আমরা আল্লাহকে নিজ থেকে ভালোবাসি এবং ইবাদত করি। কারণ ভালোবাসায় জোরাজুরি নেই। কিন্তু এখানে তো শাস্তির কথাও বলা হয়েছে যার ভয়ে আমরা আল্লাহর আদেশ মেনে থাকি। তাহলে এখানে জোর আসলো নাকি?  আর স্বাধীন ভালোবাসা কিভাবে বুঝবো?
৭ - সলাতে সিজদায় নিজের ভাষায় দুয়া করা যায় কি?  সলাতের বাইরে আলাদা সিজদা দিয়ে দুয়া করা যায় কি?
৮ - সলাতে কি মহিলাদের পায়ের পাতা ঢেকে রাখতে হয়?
৯ - মুখ না ঢেকে পর্দা করলে কি গুনাহ হবে?
১০ - বিয়ের সময় এমনি নিজেরা আনন্দের জন্য গান বাজনা ছাড়া ঘরেই গায়ে হলুদের অনুষ্ঠান করা জায়েজ হবে?

১১- প্রাণীর ছবি আকাঁ গুনাহ কিন্তু ক্যামেরায় তোলাও কি গুনাহ কারণ ওটাতো কারো আকাঁ নয় শুধু মাত্র রিফ্লেকশন। ছবি তোলা জায়েজ আছে কি?

1 Answer

0 votes
by (647,730 points)
জবাবঃ-
بسم الله الرحمن الرحيم 

(০১)
সহশিক্ষা মূলক প্রতিষ্ঠানে পড়ার জন্য সাহায্য করা যেমন - অনলাইনে আবেদনের কাগজপত্র তৈরি করে দেয়া জায়েজ। সহশিক্ষা প্রতিষ্ঠানে এডমিশনের জন্য পুরুষদের টিউশন পড়ানো জায়েজ। এসব কাজের মাধ্যমে উপার্জন করা টাকা হালাল।

(০২)
আপনি যদি নিশ্চিত হোন সে সুদ খাবেই,সেক্ষেত্রে এসব জায়েজ নয়।

অন্যথায় এতে আপনার গুনাহ হবেনা।

(০৩)
শরীয়তের বিধান হলো গায়রে মাহরাম বালেগাহ মহিলার দিকে ইচ্ছাকৃতভাবে  দৃষ্টিপাত করা নাজায়েজ। 
অনিচ্ছায় একবার দৃষ্টি চলে গেলে সাথে সাথেই চোখ ফিরিয়ে নিতে হবে,২য় বার আর  দৃষ্টিপাত করা যাবেনা।
কারন এতে ইচ্ছাকৃতভাবেই হয়ে যায়।
সুতরাং প্রশ্নে উল্লেখিত আপনি যদি পুরুষ হোন,আর বালেগাহ ছাত্রীদের ক্লাশ নিতে হয়,সেক্ষেত্রে সহ শিক্ষা মূলক প্রতিষ্ঠানে শিক্ষকতা করলে যেহেতু বালেগাহ মহিলাদের দিকে দৃষ্টিপাত করতেই হয়, তাতে পর্দার বিধান লঙ্ঘনের গুনাহ হবে।
তাই তাকওয়ার খাতিরে তাদেরকে না পড়ানোই উত্তম।
কারন তাদের সামনেও পর্দা ফরজ।
তাদের দিকেও দৃষ্টিপাত নাজায়েজ।      

আপনি সকলকে হাত পা,চেহারা সহ পরিপূর্ণ পর্দা করার আদেশ করবেন, প্রয়োজনে কর্তৃপক্ষের সাথে আলোচনা করে বিষয়টি প্রতিষ্ঠানের  নিয়ম আকারে বানিয়ে নিতে পারেন।   
,

এখানে বেতন সংক্রান্ত মাসয়ালা হলোঃ

পড়ানোর বিনিময়ে বেতন দেওয়া হয়তাই কেহ যদি সহশিক্ষা সম্ভলিত প্রতিষ্ঠাবে  নিয়ম অনুসারে কোনো প্রকার অবহেলা-অলসতা না করে ঠিকমত পড়ানতাহলে যে বেতন পাবে সেটা তার জন্য হালাল হবে।

কেননা তিনি ক্লাশের বিনিময়েই বেতন নিচ্ছেন,আর তিনি ছেলেদেরও ক্লাশ নিচ্ছেন,পুরো সময়টা তিনি এই কাজেই ব্যায় করছেন।

শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের যাবতীয় নিয়ম মেনে চলছেন,আরো আনুষাঙ্গিক কাজও করছেন,এই সময়ে চাইলে তিনি ব্যবসা বাণিজ্যও করতে পারতেন,তা না করে তিনি জীবনের পুরো সময়টাতে তিনি সেই প্রতিষ্ঠানে  শিক্ষাদানের পিছনেই খরচ করছেন।

,

তবে শরয়ী পর্দা মেইনটেইন না করলে সর্বদা পর্দা লঙ্ঘনের গোনাহে লিপ্ত থাকবে।


আরো জানুনঃ 

https://ifatwa.info/654/

 

(এক্ষেত্রে কিছু আলেমদের দৃষ্টিভঙ্গি হলোযদি তিনি দৃষ্টি নিচু করতে না পারেন,সর্বদায় যদি এই শিক্ষকতার দরুন গুনাহ চলমান থাকে,ফিতনায় জড়িয়ে যায়,তাহলে যেহেতু এ ধরনের প্রতিষ্ঠানে চাকরিই তার গুনাহের কারন,তাই এহেন বেতন জায়েজ গ্রহন হবেনা।)

 

সুতরাং তাকওয়ার খাতিরে তো এমনিতেই এহেন চাকুরী ছেড়ে দেওয়া উচিত। 


আরো জানুনঃ 
https://ifatwa.info/34083/

সহ শিক্ষা সম্পর্কে বিস্তারিত জানুনঃ 

(০৪)
উক্ত বেতন গ্রহণ করা জায়েজ আছে।
তবে সে বেতন ব্যাংকে জমিয়ে রেখে তা হতে সুদ গ্রহণ করা জায়েজ হবে না।

(০৫)
শরীয়তের বিধান সকলের ক্ষেত্রে সমান।

৬ - 
কেউ আল্লাহর শাস্তির ভয়ে ইবাদত করে,আবার কেউ আল্লাহর মুহাব্বতে এবাদত করে।
দুটোই জায়েজ আছে।

অন্তরের মধ্যে যদি আল্লাহর মুহাব্বত পরিপূর্ণভাবে বিরাজ করে আর সেই মুহাব্বতের তাগিদেই যদি ইবাদত করা হয়, সেই মুহাব্বতের তাগিদেই যদি সমস্ত গুনাহ হতে বেঁচে থাকা যায়, তাহলে আল্লাহর মুহাব্বতে ইবাদত করা হয়েছে বলে ধরা হবে।

যেমন কোনো কোনো বুযুর্গ বলেন, যে আল্লাহ যদি আমাকে জান্নাতে দেওয়ার পরও সন্তুষ্ট থাকেন, আমি সে জান্নাতে যেতে রাজি নয়।

পক্ষান্তরে আল্লাহ যদি আমাকে জাহান্নামে দিয়েই খুশি থাকেন, সেক্ষেত্রে আমি জাহান্নামে যেতেও রাজি।

৭ - হানাফি মাযহাব মোতাবেক সলাতে সিজদায় আরবি ব্যাতিত নিজের ভাষায় দুয়া করা যায়না।
সলাতের বাইরে আলাদা সিজদা দিয়ে দুয়া করা যায়।

৮ - সলাতে মহিলাদের পায়ের পাতা ঢেকে রাখতে হয়না।

৯ - মুখ না ঢেকে পর্দা করলে গুনাহ হবে।
এতে পরিপূর্ণ পর্দা আদায় হবেনা।

১০ -  জায়েজ হবেনা।
এটিও হিন্দুয়ানী সংস্কৃতি মানার শামিল।

১১- 
এক্ষেত্রে ওলামায়ে কেরামদের মাঝে মতবিরোধ রয়েছে কেউ কেউ উভয়ের হুকুম একই মনে করেন কেউ কেউ এক্ষেত্রে প্রিন্ট করার আগ পর্যন্ত আলাদা হুকুম বলে মনে করেন।

এ সংক্রান্ত বিস্তারিত জানুনঃ- 


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

------------------------
মুফতী ওলি উল্লাহ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...