আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
71 views
in পরিবার,বিবাহ,তালাক (Family Life,Marriage & Divorce) by (2 points)
closed by
আসসালামু আলাইকুম
কাবিননামার ১৮ নং কলামে আমাকে কোনো অধিকার দেয়া হয়নি। কিন্তু পারিবারিক সমস্যা হওয়ার পরে আমিও আমার স্বামীর উপরে রাগ করে ছাড়তে বলতাম, কারণ আমাকে বাবার বাড়ি থেকে নেননা তাই। আর উনি কখনো আমাকে ছাড়ার নাম নিতেন না, এবং বলতেন তোমাকে অধিকার দেইনি। কিন্তু এইবার আমি খোলা তালাক দিলাম এই কথা বলার ২ মাস আগে থেকে উনি আমাকে অনেকবার পারমিশন দিছেন যে আমি উনাকে ছেড়ে যেতে বা তালাক দিতে পারবো কিংবা খোলা তালাক দিতে পারবো। - ঠিক এইভাবেই বলছেন।

তো ২ মাস আগে আমার স্বামীর ফ্যামিলি থেকে প্রবলেম ছিলো। উনার ফ্যামিলির কথা শুনে উনার বড় ভাই বিদেশে আমার স্বামীর রেস্টুরেন্টেই উনাকে আটকে ফেলছিলো আর হুমকি দিচ্ছিলো। তারা ২ ভাই একই দেশে থাকেন। ওইদিন ওই পরিস্থিতি থেকে উনি রাগ করে আমাকে ছেড়ে দিতে বলেছেন কয়েকবার উনার ভাইয়ের সামনে আবার ফোনে আমাকে একাও বলেছেন যে তুমি আমাকে ছেড়ে দাও, খোলা তালাক দাও। আমার এই কথাগুলো একদম পছন্দ হয়নি।
তাই আমিও রাগে বলেছিলাম যে- "বার বার যখন বলতেছেন ছেড়ে দিতে তাহলে আমি খোলা তালাক দিলাম", আর আমার স্বামী উত্তর দিছেন- " আমি গ্রহণ করলাম"।
এতে কি আমি নিজের উপরে তালাক নিয়ে নিছি। মানে তালাক হয়ে গেছে নাকি?
closed

1 Answer

0 votes
by (654,270 points)
selected by
 
Best answer
জবাবঃ-
وعليكم السلام ورحمة الله وبركاته 
بسم الله الرحمن الرحيم

তালাক হচ্ছে স্বামীর অধিকার। স্বামী তালাক দিলেই তালাক সংঘটিত হবে। 

হাদীস শরীফে এসেছেঃ 

حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ يَحْيَى حَدَّثَنَا يَحْيَى بْنُ عَبْدِ اللهِ بْنِ بُكَيْرٍ حَدَّثَنَا ابْنُ لَهِيعَةَ عَنْ مُوسَى بْنِ أَيُّوبَ الْغَافِقِيِّ عَنْ عِكْرِمَةَ عَنْ ابْنِ عَبَّاسٍ قَالَ أَتَى النَّبِيَّ صلى الله عليه وسلم رَجُلٌ فَقَالَ يَا رَسُولَ اللهِ إِنَّ سَيِّدِي زَوَّجَنِي أَمَتَهُ وَهُوَ يُرِيدُ أَنْ يُفَرِّقَ بَيْنِي وَبَيْنَهَا قَالَ فَصَعِدَ رَسُولُ اللهِ صلى الله عليه وسلم الْمِنْبَرَ فَقَالَ يَا أَيُّهَا النَّاسُ مَا بَالُ أَحَدِكُمْ يُزَوِّجُ عَبْدَهُ أَمَتَهُ ثُمَّ يُرِيدُ أَنْ يُفَرِّقَ بَيْنَهُمَا إِنَّمَا الطَّلَاقُ لِمَنْ أَخَذَ بِالسَّاقِ

ইবনু ‘আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, এক ব্যক্তি নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম -এর নিকট এসে বললো, হে আল্লাহর রসূল! আমার মনিব তার বাঁদীকে আমার সাথে বিবাহ দিয়েছে। এখন সে আমার ও আমার স্ত্রীর মধ্যে বিবাহ বিচ্ছেদ ঘটাতে চায়। রাবী বলেন, রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম মিম্বারে আরোহণ করলেন, অতঃপর বলেনঃ হে লোকসকল! তোমাদের কারো এরূপ আচরণ কেন যে, সে তার গোলামের সাথে তার বাঁদীর বিবাহ দেয়, অতঃপর তাদের মধ্যে বিবাহ বিচ্ছেদ ঘটাতে চায়? নারীর ঊরু স্পর্শ করা যার জন্য বৈধ, তালাকের অধিকার তার।
(সুনানে ইবনে মাজাহ ২০৮১.বায়হাকী ৯/১৫৭, ইরওয়াহ ২০৪১।)

★শরীয়তের বিধান অনুযায়ী  মহিলা নিজের উপর কেবল তখনি তালাক পতিত করতে পারবে, যদি স্বামী তাকে তালাক দেবার অধিকার দিয়ে থাকে।
এটি নিকাহ নামার ১৮ নং ধারাতে হ্যাঁ লেখার মাধ্যমেই হোক,বা পরবর্তীতে মৌখিক বা লিখিত ভাবেই হোক।
,  
সুতরাং স্বামী যদি স্ত্রীকে তালাকের ক্ষমতা প্রদান করে,আর স্ত্রী স্বামী কর্তৃক তালাকে তাভবিজের ক্ষমতাবলে লিখিত বা মৌখিকভাবে নিজের নফসের উপর তালাক দিয়ে দিলে সেটি পতিত হয়ে যাবে।

আরো জানুনঃ 

ফাতাওয়ায়ে শামীতে আছেঃ
   
قال لھا: طلقي نفسک ولم ینو أو نوی واحدة فطلقت وقعت رجعیة الخ (الدر المختار مع رد المحتار، کتاب الطلاق، باب الأمر بالید، ۴: ۵۷۵، ط: مکتبة زکریا دیوبند)۔
সারমর্মঃ
কেহ যদি তার স্ত্রীকে বলে,তুমি তোমার নিজের নফসকে তালাক দাও,কোনো নিয়ত না করে,অথবা এক তালাকের নিয়ত করে,অতঃপর স্ত্রী তালাক দেয়,তাহলে এক তালাকে রজয়ী পতিত হবে।     

رجل قال لامرأتہ خذي طلاقک، فقالت: أخذت، یقع الطلاق۔ (الفتاویٰ الہندیۃ، کتاب الطلاق / الفصل الثاني في إیقاع الطلاق ۱؍۳۵۹)
সারমর্মঃ
কোনো ব্যাক্তি যদি তার স্ত্রীকে বলে,তুমি তোমার তালাক গ্রহন করো।
স্ত্রী যদি বলে যে গ্রহন করলাম,তাহলে তালাক পতিত হয়ে যাবে।    

আরো জানুনঃ- 

★সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি বোন,
প্রশ্নের বিবরন মতে এক্ষেত্রে তালাক পতিত হয়নি।

আপনি যদি তালাক গ্রহণ করতে চান, সেক্ষেত্রে নিম্নোক্ত ধরনের বাক্য উচ্চারণ করতে হবেঃ- 
যেমন এভাবে বলতে হবে যে আমি তালাক গ্রহণ করলাম, বা আমি নিজের নফসের উপর তালাক প্রদান করিলাম বা আমি নিজেকে নিজে তালাক দিলাম।

এ জাতীয় বাক্য বলতে হবে।


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

------------------------
মুফতী ওলি উল্লাহ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

by (2 points)
আসসালামু আলাইকুম ওয়া রহমাতুল্লাহ
জাযাকাল্লাহ খাইরান উত্তর প্রদানের জন্য।

আসলে আমি তালাক গ্রহণ করতে চাইনা। তখন পরিস্থিতি আর শয়তানের ওয়াসওয়াসায় আমি বলে দেই। আল্লাহুম্মাগফিরলি 
দুইজন মুফতি সাহেব আমাকে বলেছেন যে খোলা তালাক হয়ে গেছে, আবার নতুন দেনমোহর ধার্য করে বিবাহ বন্ধনের মাধ্যমে সংসার শুরু করা যাবে। আবার আরও ২/৩ জন মুফতি সাহেব আমাকে আলেমের শরণাপন্ন হতে বলেছিলেন, উনারা উত্তর দিতে পারেন নি। আর এই কারণে আমি আপনাদের শরণাপন্ন হয়েছি। 
 'তাফয়ীযে তালাক' এর ক্ষেত্রেও কি পুনরায় সংসার করতে হলে নতুন দেনমোহর ধার্য করে বিবাহ বন্ধন আবদ্ধ হতে হবে?
by (654,270 points)
এক্ষেত্রে স্পষ্ট বাক্যে এক বা দুই তালাক দিলে স্বামী যদি তাকে ইদ্দতকাল অতিবাহিত হওয়ার আগেই ফিরিয়ে নিতে চায়,তাহলে তার সাথে স্বামীরসূলক কোন দৈহিক আচরণ বা মৌখিকভাবে তাকে ফিরিয়ে নিলাম বললেই হবে।

আর যদি অস্পষ্ট বাকে তালাক দেয়,বা উপরোক্ত ক্ষেত্রে ইদ্দতকাল অতিবাহিত হওয়ার পরে ফিরিয়ে নিতে চায়,সেক্ষেত্রে নতুন করে বিবাহ করে নিতে হবে।

তিন তালাক গ্রহন করলে সেক্ষেত্রে শরয়ী হালালাহ ব্যতীত পূর্বের স্বামীর কাছে ফিরে যাওয়ার জন্য নতুন করে বিবাহের কোন সুযোগ নেই।
by (2 points)
আসসালামু আলাইকুম ওয়া রহমাতুল্লাহ
জাযাকাল্লাহ খাইরান সুন্দরভাবে বুঝিয়ে দেয়ার জন্য।

আমি আমার স্বামীকে দেখিয়েছি আমার প্রশ্ন এবং আপনার উত্তর। কিন্তু উনি বলতেছেন উনার খেয়াল হচ্ছে আমি বলেছি যে,  "আমি খোলা তালাক নিলাম" এরকম বাক্য বলছি ((('দিলাম' শব্দ নাকি বলি নাই))) , আর উনি বলছেন আমি গ্রহণ করলাম। 

যদি আমি খোলা তালাক নিলাম বলে থাকি তাহলে কি খোলা তালাক হয়ে গেছে? আমার স্পষ্ট খেয়াল হয় আমি দিলাম বলেছি। কিন্তু 'আমি খোলা তালাক নিলাম' এর পরিণতি কি হুজুর?

আমাকে মাফ করবেন বার বার বিরক্ত করছি।
by (654,270 points)
আপনি যদি তালাকের অধিকারপ্রাপ্ত হন আর যদি আপনি নিশ্চিত হোন যে আপনি "নিলাম" শব্দ বলেছেন, সে ক্ষেত্রে তালাক পতিত হবে না।

আর যদি আপনি নিশ্চিত হন যে "দিলাম" শব্দ বলেছেন  অথবা আপনি যদি তালাকের অধিকারপ্রাপ্ত না হোন, সেক্ষেত্রে তালাক পতিত হবে না।

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...