আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
13 views
ago in পরিবার,বিবাহ,তালাক (Family Life,Marriage & Divorce) by (4 points)
আসসালামু আলাইকুম ওয়া রহমাতুল্লহি ওয়া বারকাতুহ। আমার একজন চাচাতো বোন, ১০ মাস মাত্র বিযে হয়েছে। তার স্বামী অতিরিক্ত বদমেজাজি এবং একরোখা, সেই সাথে অনেক বেশি মানসিক অত্যাচার করতো তাকে। গত দেড়মাস আগে সে তার বাবা মার কাছে বলেছিল,  সে আপাতত স্বামীর ঘরে যাবে না, কিছুদিন বাবার বাড়িতে থাকতে চায়, ওখানে ওর কষ্ট হচ্ছে থাকতে। কিন্তু তার স্বামী মেনে নেয় নি। বোনটিকে তার স্বামী যাওয়ার জন্য জোড়াজোড়ি করলে বোনটি তার বাবা মাকে সব অত্যাচারের কথা খুলে বলে। এবং বাবা মা সিদ্ধান্ত নেন, যে ছেলের অভিভাবকদের নিয়ে আসার জন্য। তাদের সাথে কথা বলে তারপর মেয়েকে তারা পাঠাবে,তার আগে পাঠাবে না।  কিন্তু ছেলে তার পরিবারের কাউকে আনে নি।   এবং গত দেড়মাসে সে মেয়েকে মেন্টালি আরও বেশি টর্চার করে।  একবার একটা নির্দিষ্ট টাইম বেধে দেয় এই সময়ের মাঝে যদি মেয়ে ছেলের ঘরে না যায় তাহলে সে ১ তালাক দিয়ে দিবে। কিন্তু মেয়েটি এই সময়ের মাঝে যায় নি।  পরবর্তীতে তার স্বামী তার সাথে আরও বাজে ব্যবহার করে, কুরুচিপূর্ণ কথা বলে,  যা একজন সুস্হ মানুষের পক্ষে সহ্য করা সম্ভব না। মেয়েটি শেষে ডিভোর্সের সিদ্ধান্ত নেয়। তার স্বামী গত তিনদিন আগে তার বোন, বোন জামাইকে নিয়ে মেয়ের বাবার বাড়িতে আসে মেয়েকে নেওয়ার জন্য। কিন্তু মেয়ে যেতে রাজি না।  তখন পরিবারের  সবার এবং মেয়ের সম্মতিতে কাজি এনে তালাক নামায় ছেলে মেয়ে দুজনেরেই স্বাক্ষর নেওয়া হয়।  তালাকের কাগজে কয় তালাক  লিখা ছিল সেটা কেউ খেয়াল করে নি।
পরের দিন ছেলে ফোন করে মেয়ের মাকে জানায় সে মুখে তালাক দেয় নি, তাই তালাক কার্যকর হয় নি। সে তার স্ত্রীকে নিতে চাচ্ছে। কিন্তু মেয়ে এখনও যেতে রাজি না।
মেয়ের ভয় হচ্ছে, এভাবে কি তালাক কার্যকর হয়েছে কি না? নাকি তার গুণাহ হচ্ছে?
যদি তালাক কার্যকর হয় তাহলে ইদ্দত কালীন সময়টাতে কি সে বাড়িতেই কাটাবে যেহেতু স্বামীর বাড়ি যে যাবে না কিংবা ঐ জায়গাটা ওর জন্য নিরাপদও নয়৷ সে মাদ্রাসায় ভর্তি হতে চায়। সে কি এখনেই ভর্তি হয়ে ক্লাস শুরু করতে পারবে, নাকি ইদ্দত শেষ হওয়ার পর করতে হবে?

1 Answer

0 votes
ago by (644,370 points)
জবাবঃ-
وعليكم السلام ورحمة الله وبركاته 
بسم الله الرحمن الرحيم

তালাক এটি খুবই মারাত্মক একটি শব্দ। নিকৃষ্ট হালাল বলা হয়েছে হাদীসে। 

হাদীস শরীফে এসেছেঃ 

حَدَّثَنَا كَثِيرُ بْنُ عُبَيْدٍ، حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ خَالِدٍ، عَنْ مُعَرِّفِ بْنِ وَاصِلٍ، عَنْ مُحَارِبِ بْنِ دِثَارٍ، عَنِ ابْنِ عُمَرَ، عَنِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم قَالَ " أَبْغَضُ الْحَلاَلِ إِلَى اللَّهِ تَعَالَى الطَّلاَقُ " .

কাসীর  ইবন  উবায়দ .......... ইবন  উমার  (রাঃ)  নবী  করীম  সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম  হতে  বর্ণনা  করেছেন যে,  আল্লাহ্  তা‘আলার  নিকট  নিকৃষ্টতম  হালাল বস্তু  হল  তালাক।

(আবূ দাউদ ২১৭৮, ইরওয়া ২০৪০, যইফ আবু দাউদ ৩৭৩-৩৭৪, আর-রাদ্দু আলাল বালীক ১১৩।) 

এ শব্দটি নিয়ত থাকুক বা না থাকুক রাগে বলুক আর মুহাব্বতে বলুক স্ত্রীকে উদ্দেশ্য নিয়ে মুখ দিয়ে এ শব্দ বের হলেই তালাক পতিত হয়ে যায়। 

হাদীসে এসেছে-

عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ أَنَّ رَسُولَ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قَالَ: ” ثَلَاثٌ جِدُّهُنَّ جِدٌّ وَهَزْلُهُنَّ جِدٌّ: الطَّلَاقُ، وَالنِّكَاحُ، وَالرَّجْعَةُ “

হযরত আবূ হুরায়রা রাঃ থেকে বর্ণিত। রাসূল সাঃ ইরশাদ করেছেন, তিনি বিষয় এমন যে, ইচ্ছেকৃত করলে ইচ্ছেকৃত এবং ঠাট্টা করে করলেও ইচ্ছেকৃত বলে ধর্তব্য হয়। তা হল, তালাক, বিবাহ এবং তালাকে রেজয়ীপ্রাপ্তা স্ত্রীকে ফিরিয়ে নিয়ে আসা। {সুনানে ইবনে মাজাহ, হাদীস নং-২০৩৯, সুনানে আবু দাউদ, হাদীস নং-২১৯৪}

স্ত্রীকে মেসেজে উদ্দেশ্য ছাড়া "তালাক" শব্দটি লেখার পর তা কেটে মেসেজ না পাঠালেও তালাক পতিত হয়ে যাবে। এক্ষেত্রে লেখার সময় থেকে স্ত্রীর উপর ইদ্দত আবশ্যক হবে। 
এক্ষেত্রে রজয়ী তালাক পতিত হবে। 

فَإِنْ كَانَ كَتَبَ: امْرَأَتُهُ طَالِقٌ فَهِيَ طَالِقٌ سَوَاءٌ بَعَثَ الْكِتَابَ إلَيْهَا، أَوْ لَمْ يَبْعَثْ.
سرخسي، المبسوط، 6: 143، بيروت: دار المعرفة

সারমর্মঃ-
যদি কোনো ব্যাক্তি নিজের স্ত্রীকে তালাক লিখেছে,তাহলে তার স্ত্রীর উপর তালাক পতিত হয়ে যাবে। চাই লেখাটি তার নিকট পাঠাক বা না পাঠাক।

 فتاویٰ عالمگیری
وَلَوْ كَتَبَ الطَّلَاقَ فِي وَسَطِ الْكِتَابِ وَكَتَبَ قَبْلَهُ وَبَعْدَهُ حَوَائِجَ ثُمَّ مَحَا الطَّلَاقَ وَبَعَثَ بِالْكِتَابِ إلَيْهَا وَقَعَ الطَّلَاقُ كَانَ الَّذِي قَبْلَ الطَّلَاقِ أَقَلَّ أَوْ أَكْثَرَ.

الشيخ نظام وجماعة من علماء الهند، الفتاوى الهندية، 1: 378، دار الفكر

সারমর্মঃ-
যদি চিঠির মাঝে তালাক লেখে,এবং তার আগে বা পরে প্রয়োজনীয় কথা লেখে,অতঃপর মাঝে হতে তালাক শব্দ মুছে দেয়,এবং লেখাটি স্ত্রীর নিকট পৌছে দেয়,তাহলে তালাক পতিত হয়ে যাবে। চাই তালাকের পূর্বে কম লিখুক বা বেশি লিখুক।

আরো জানুনঃ- 

★সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি ভাই/বোন,   
প্রশ্নের বিবরন মতে স্বামী যেহেতু তার স্ত্রীকে তালাক দিয়েছে এক্ষেত্রে তালাক পতিত হয়ে গিয়েছে।
এখন ঐ মহিলার ইদ্দত পালন করতে হবে।

স্বামীর বাড়িতে যেহেতু সে কোনভাবেই নিরাপদ বোধ করছে না, তাই সে নিজ বাড়িতেই ইদ্দত পালন করবে। ইদ্দত কাল শেষ হওয়ার পর সে মাদ্রাসায় ভর্তি হতে পারবে।

এখন প্রশ্ন হলো,স্বামী তার স্ত্রীকে ফিরিয়ে নিতে চাইলে আর স্ত্রীও যেতে চাইলে সেক্ষেত্রে করনীয় কি?

এক্ষেত্রে সেই তালাকনামায় কয় তালাক লেখা ছিল সেটি মূল বিবেচ্য বিষয়। 

যদি এক বা দুই তালাক লেখা থাকে সেক্ষেত্রে স্বামী চাইলে তাকে ফিরিয়ে নিতে পারবে।

যদি ৩ তালাকের কথা লেখা থাকে,সেক্ষেত্রে স্বামী তাকে শরয়ী হালালাহ ব্যাতিত ফিরিয়ে নিতে পারবেনা।


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

------------------------
মুফতী ওলি উল্লাহ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...