জবাবঃ-
শরীয়তের বিধান অনুযায়ী তুহর তথা দুই হায়েজের মাঝে পবিত্রতার সর্বনিম্ন সীমা পনেরো দিন।
এই পনেরো দিনের মধ্যে কোনো রক্ত আসলে সেটি হায়েজ নয়,বরং সেটি ইস্তেহাজা তথা অসুস্থতা।
এই সময়ে নামাজ রোযা আদায় করতে হবে।
হজরত হান্নাদ [রহ] আম্মাজান আয়েশা [রা]-এর হাদিস বর্ণনা করেছেন যে, ফাতিমা বিনতে হুবাইশ নামক এক নারী একবার রাসুল [সা]-এর সমীপে এসে বললো, হে আল্লাহর রাসুল, আমি একজন ইস্তেহাযাগ্রস্ত মেয়ে। আমি তো পাক হই না। তাই আমি কি নামাজ পড়া ছেড়ে দেবো? রাসুল [সা] বললেন, না, কারণ এ রক্ত হায়েযের নয়; বরং এ হলো শিরা থেকে বেরিয়ে আসা রক্ত। সুতরাং যখন তোমার হায়েযের নির্ধারিত দিনগুলি আসে তখন সে দিনগুলি নামাজ ছেড়ে দেবে। আর হায়েযের দিন চলে গেলে তোমার রক্ত ধুয়ে নেবে এবং নামাজ আদায় করবে। [তিরমিজি, হাদিস-১২৫]
,
আরো জানুনঃ
শরীয়তের বিধান অনুযায়ী হায়েযের সর্বনিম্ন সময়সীমা হলো ৩ তিন,আর সর্বোচ্ছ সময়সীমা ১০দিন।
এ ১০দিনের ভিতর লাল,হলুদ,সবুজ,লাল মিশ্রিত কালো বা নিখুত কালো যে কালারের-ই পানি বের হোক না কেন তা হায়েয হিসেবেই গণ্য হবে।যতক্ষণ না নেপকিন সাদা নজরে আসবে। (বেহেশতী জেওর-১/২০৬)
হাদীস শরীফে এসেছে
أقل الحیض للجاریۃ البکر والثیب ثلاثۃ أیام ولیالیہا وأکثرہ عشرۃ أیام
دار قطني، السنن، 1: 219، رقم: 61
রাসুল সাঃ বলেন মহিলাদের হায়েজের সর্বনিম্ন সীমা হলো ৩ দিন ৩ রাত,সর্বোচ্চ সীমা হলো ১০ দিন ১০ রাত।
হায়েজের দিন গুলোতে যেই কালারেরই রক্ত হোক,সেটি হায়েজের রক্ত বলেই গন্য হবে।
উক্ত সময় নামাজ রোযা ইত্যাদি আদায় করা যাবেনা।
(কিতাবুল ফাতওয়া ২/৭৬)
তবে স্পষ্ট সাদা কালারের কিছু বের হলে সেটাকে হায়েজ বলা যাবেনা।
(ফাতাওয়ায়ে হক্কানিয়াহ ২/৮৩৩)
উম্মে আলক্বামাহ তথা মার্জনা (مَوْلاَةِ عَائِشَةَ) হইতে বর্ণিত,
عن أم علقمة أَنَّهَا قَالَتْ : " كَانَ النِّسَاءُ يَبْعَثْنَ إِلَى عَائِشَةَ أُمِّ الْمُؤْمِنِينَ بِالدُّرْجَةِ فِيهَا الْكُرْسُفُ فِيهِ الصُّفْرَةُ مِنْ دَمِ الْحَيْضَةِ يَسْأَلْنَهَا عَنْ الصَّلَاةِ فَتَقُولُ لَهُنَّ لَا تَعْجَلْنَ حَتَّى تَرَيْنَ الْقَصَّةَ الْبَيْضَاءَ تُرِيدُ بِذَلِكَ الطُّهْرَ مِنْ الْحَيْضَةِ "
তিনি বলেনঃ (ঋতুমতী) স্ত্রীলোকেরা আয়েশা (রাঃ)-এর নিকট ঝোলা বা ডিবা (دُرْجَة) পাঠাইতেন, যাহাতে নেকড়া বা তুলা (كُرْسُفْ) থাকিত। উহাতে পাণ্ডুবৰ্ণ ঋতুর রক্ত লাগিয়া থাকিত। তাহারা এই অবস্থায় নামায পড়া সম্পর্কে তাহার নিকট জানিতে চাহিতেন। তিনি [আয়েশা (রাঃ)] তাহাদিগকে বলিতেনঃ তাড়াহুড়া করিও না, যতক্ষণ পর্যন্ত পূর্ণ সাদা (বর্ণ) দেখিতে না পাও। তিনি ইহা দ্বারা ঋতু হইতে পবিত্রতা (طُهْر) বুঝাইতেন।(মুয়াত্তা মালিক-১২৭)
আরো জানুনঃ-
★সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি বোন,
প্রশ্নে উল্লেখিত ছুরতে আপনাকে মনে করার চেষ্টা করতে হবে যে আগের মাসের কয় তারিখে আপনার হায়েজ এসেছিলো?
প্রয়োজনে প্রবল ধারণার উপর আমল করবেন।
*আপনার হায়েজ যদি ১৯ শে জুন থেকে শুরু হয়ে থাকে, সেক্ষেত্রে ২৬ শে জুন আপনার হায়েজ শেষ হয়ে গিয়েছিল। এমতাবস্থায় ২৭ শে জুন থেকে নিয়ে ১১ ই জুলাই পর্যন্ত আপনার পবিত্রতার ১৫ দিন ধরা হবে।
**আপনার হায়েজ যদি ২০ শে জুন থেকে শুরু হয়ে থাকে, সেক্ষেত্রে ২৭ শে জুন আপনার হায়েজ শেষ হয়ে গিয়েছিল। এমতাবস্থায় ২৭ শে জুন থেকে নিয়ে ১২ ই জুলাই পর্যন্ত আপনার পবিত্রতার ১৫ দিন ধরা হবে।
***আপনার হায়েজ যদি ২১ শে জুন থেকে শুরু হয়ে থাকে, সেক্ষেত্রে ২৮ শে জুন আপনার হায়েজ শেষ হয়ে গিয়েছিল। এমতাবস্থায় ২৯ শে জুন থেকে নিয়ে ১৩ ই জুলাই পর্যন্ত আপনার পবিত্রতার ১৫ দিন ধরা হবে।
★সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি বোন,
প্রশ্নে উল্লেখিত ছুরতে জুলাইয়ের ০৯ তারিখ হতে যে স্রাব আসছে,এটা যেহেতু পবিত্রতার ১৫ দিন অতিবাহিত হওয়ার পর আগেই হয়েছে,সুতরাং এটি নিঃসন্দেহে ইস্তেহাজা।
এ সময়ে নামাজ চালু রাখতে হবে।
প্রবল ধারণার ভিত্তিতে যদি আপনার হায়েজ যদি ২০ শে জুন থেকে শুরু হয়েছিলো বলে ধরে নেয়া হয়,সেক্ষেত্রে
যদি আজ ১২ ই জুলাই থেকে নিয়ে নুন্যতম আরো ৩ দিন যদি ব্লিডিং হয় সেক্ষেত্রে আজ হতে আপনি হায়েজ ধরবেন।