আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
14 views
in পরিবার,বিবাহ,তালাক (Family Life,Marriage & Divorce) by (1 point)
আসসালামু আলাইকুম
উস্তাদ বিয়ের আগে এনগেজমেন্ট কি জায়েয?
ছেলের মা একবার এসে দেখে গেছে মেয়ে ( যদিও তখন বুঝতে পারি নি যে দেখতে আসছে)  আবার আসবে ছেলে সহ আর পছন্দ হলে নাকি আংটি পড়িয়ে যাবে। এখন উস্তাদ এটা কি জায়েয হবে আংটি পড়ানো, পাএের মা যদি পড়ায়? আর জায়েয না হলে তাদেরকে কিভাবে না করা যাবে  এটা? আর বিয়ের আগে পাএের দ্বীনদারিতা যাচাই করা যাবে কিভাবে?আর বিয়ে যদি  খেজুর ছিটিয়ে মসজিদে হয় আর পাশাপাশি কাছের  আত্মীয় স্বজন
প্রায়  ৫০ জনকে দাওয়াত দেওয়া হয় তাহলে কি সুন্নত আদায় হবে?

1 Answer

0 votes
by (631,320 points)
জবাবঃ-
وعليكم السلام ورحمة الله وبركاته 
بسم الله الرحمن الرحيم

https://ifatwa.info/117467/ নং ফতোয়াতে উল্লেখ রয়েছেঃ- 
শরীয়তের পরিভাষায় এঙ্গেজমেন্ট বলতে পুরুষ কর্তৃক কোনো নারীকে বিবাহ করতে চাওয়া বুঝায়। 

এক্ষেত্রে আংটি বা চেইন বিনিময় করার বিষয়টিও সমাজে প্রচলিত রয়েছে,এটি সামাজিক রীতি মাত্র। বিবাহের পূর্বে এরূপ কোন লেনদেনের প্রমাণ শরী‘আতে পাওয়া যায় না। অতএব এগুলি থেকে বিরত থাকা আবশ্যক।

ইসলামে কোনো নারীকে বিবাহের প্রস্তাব দেওয়ার ক্ষেত্রে বিশেষ কোনো প্রথা কিংবা রীতিনীতি নেই। এঙ্গেজমেন্টের নামে আমাদের সমাজে প্রচলিত আংটি বদলের যেই রেওয়াজ আছে তা সম্পূর্ণ শরীয়তবিরোধী। মূলত এঙ্গেজমেন্টের সাথে আংটি বদলের কোনো সম্পর্ক নেই।

অনেকে মনে করেন, বিবাহের পূর্বে পাত্র-পাত্রীর মাঝে আংটি বদল করলে উভয়ের মধ্যে ভালোবাসা বৃদ্ধি পায়। এটি একটি সামাজিক কুসংস্কার ও অজ্ঞতা বৈ কিছুই নয়। ইসলামী শরীয়তে এর কোনো ভিত্তি নেই।

বিবাহপূর্ব পাত্র কর্তৃক পাত্রীকে আংটি পরিয়ে দেওয়ার এই প্রথাটি মূলত ইহুদি-খৃষ্টানদের থেকে এসেছে। এই প্রথার সাথে মুসলমানদের কোনো সম্পর্ক নেই। আর নবীজি সা. বলেছেন, যে কোনো জাতিকে অনুসরণ করবে, আখিরাতে সে ওই জাতির অন্তর্ভুক্ত হবে। 

হাদীস শরীফে এসেছেঃ 

وَعَنْ عَمْرِو بْنِ شُعَيْبٍ عَنْ أَبِيهِ عَنْ جَدِّه رَضِىَ اللهُ عَنْهُمْ أَنَّ رَسُولَ اللهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قَالَ:لَيْسَ مِنَّا مَنْ تَشَبَّهَ بِغَيْرِنَا لَا تَشَبَّهُوا بِالْيَهُودِ وَلَا بِالنَّصَارٰى فَإِنَّ تَسْلِيمَ الْيَهُودِ الْإِشَارَةُ بِالْأَصَابِعِ وَتَسْلِيمَ النَّصَارَى الْإِشَارَةُ بِالْأَكُفِّ. رَوَاهُ التِّرْمِذِىُّ

আমর ইবনু শু‘আয়ব তাঁর পিতার মাধ্যমে তাঁর পিতামহ হতে বর্ণনা করেন যে, রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ যে ব্যক্তি আমাদের ছাড়া অন্য জাতির সাথে সাদৃশ্য করে সে আমাদের অন্তর্ভুক্ত নয়। তোমরা ইয়াহূদী ও খ্রিষ্টানদের সাথে সাদৃশ্য করো না। কেননা ইয়াহূদীরা অঙ্গুলির ইশারায় সালাম দেয়, আর খ্রিষ্টানরা হাতের তালু দ্বারা সালাম করে।

(হাদীসটির হুকুম হাসান : তিরমিযী ২৬৯৫, সিলসিলাতুস্ সহীহাহ্ ২১৯৪, আল জামি‘উস্ সগীর ৯৫৬৫, সহীহুল জামি‘ ৫৪৩৪, আল মু‘জামুল আওসাত্ব ৭৩৮০, ইরওয়া ১২৭০, সহীহ আত্ তারগীব ওয়াত্ তারহীব ২৭২৩।)
,
 قَالَ رَسُولُ اللَّهِ - صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ : " مَنْ تَشَبَّهَ بِقَوْمٍ فَهُوَ مِنْهُمْ " 
আবদুল্লাহ ইবনু ‘উমার (রাঃ)] হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ যে ব্যক্তি কোন সম্প্রদায়ের সাদৃশ্য গ্রহণ করবে, সে তাদেরই অন্তরভুক্ত (হয়ে যাবে)।
(হাদিস টির হুকুম হাসান : আবূ দাঊদ ৪০৩১, মুসনাদে আহমাদে এরূপ শব্দে হাদীসটি নেই; আল জামি‘উস্ সগীর ১১০৯৪, সহীহুল জামি‘ ৬১৪৯, ইরওয়া ২৬৯১।

সমাজে প্রচলিত এঙ্গেজমেন্ট তথা পাত্র কর্তৃক পাত্রীকে আংটি পরানোর অনুষ্ঠানে সাধারণত ছেলে মেয়েটিকে নিজ হাতে আংটি পরিয়ে দেয়; অথচ মেয়েটি এখনো তার স্ত্রী হয়নি।

বিবাহ সম্পন্ন হওয়ার আগ পর্যন্ত মেয়েটি ছেলেটির জন্য গাইরে মাহরাম, অর্থাৎ উভয়ের মধ্যে পর্দার বিধান শতভাগ বর্তাবে। আর আংটি পরিয়ে দেওয়ার মাধ্যমে ছেলে-মেয়ে উভয়েই পর্দার বিধান লঙ্ঘন করে কবিরা গুনাহে লিপ্ত হচ্ছে।

এনগেজমেন্ট ব্যাপারটা ইসলামে কোনো ভাবেই জায়েজ নেই।

এভাবে বিয়ে যদি ঠিক হয়ে যায়, বিয়ের আগের কয়দিন ওই মেয়ের সাথে কথা বলা দেখা করা বাহিরে বের হওয়া সম্পূর্ণ হারাম।

সে এখনো তার বিবাহিতা স্ত্রী হয়নি,সে এখনো গায়রে মাহরাম রয়েছে,তাই গায়রে মাহরামের মতোই তার সাথে পর্দার বিধান হবে।

বিবাহের ক্ষেত্রে করনীয় ও বর্জনীয় সম্পর্কে বিস্তারিত জানুনঃ- 

আরো জানুনঃ- 

★সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি বোন,
বিয়ের আগে এনগেজমেন্ট জায়েয নয়।
পাত্রের মা যদি আংটি পড়ায়, সেক্ষেত্রে যদিও গায়রে মাহরাম পুরুষ এর আংটি পড়ানোর সমস্যাটি থাকবেনা,তদুপরি বিজাতীয় কুঃসংস্কার তখনও বাকি থাকে,সেজন্য এটিও জায়েজ নেই।

পাত্র দ্বীনদার কিনা,সেটা যাচাইয়ের জন্য করনীয় সম্পর্কে জানুনঃ-  https://ifatwa.info/100035

মসজিদে প্রশ্নে উল্লেখিত পদ্ধতিতে বিবাহ করলে সুন্নাত ও মুস্তাহাব পদ্ধতি অনুসরণ করা হবে,ইনশাআল্লাহ। 

তবে আওয়াজ, শোরগোল বা পায়ের নিচে পড়ে যাওয়ার সম্ভাবনা থাকলে খেজুর না ছিটিয়ে বেটে দেওয়া উচিত।
মসজিদ এবং খাদ্যের ইহতিরাম তথা মান বজায় রাখতে হবে, এদিকে গুরুত্ব দিতে হবে।

এ সংক্রান্ত জানুনঃ- 

পাত্রীর বাবা সামাজিক প্রথা বা  কাহারো চাপে নয়,বরং সন্তুষ্টি চিত্তে শরীয়তের গন্ডির মধ্যে থেকে দাওয়াতের অনুষ্ঠান করে,সেক্ষেত্রে তাহা জায়েজ হবে।


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

------------------------
মুফতী ওলি উল্লাহ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...