১. মাসনূন বিবাহ সাদাসিধে ও অনাড়ম্বর হবে। যা অপচয়, অপব্যয়, বেপর্দা ও বিজাতীয় সংস্কৃতি, গানবাদ্য, ভিডিও-অডিওমুক্ত হবে এবং তাতে যৌতুকের শর্ত বা সামর্থ্যের অধিক মহরানার শর্ত থাকবে না।
আল্লাহ তাআ’লা বলেন,
إِنَّ الْمُبَذِّرِينَ كَانُوا إِخْوَانَ الشَّيَاطِينِ ۖ وَكَانَ الشَّيْطَانُ لِرَبِّهِ كَفُورًا
‘নিশ্চয় অপচয়কারী শয়তানের ভাই। আর শয়তান হচ্ছে তার প্রভুর প্রতি বড় অকৃতজ্ঞ।’ (বনী ইসরাঈল ২৭)
★যৌতুকের আলোচনা বা সামর্থ্যের অধিক মহরানার শর্ত না থাকা; বরং মহরানা সামর্থ্যানুযায়ী ধার্য করা : কেননা, আয়েশা রাযি. থেকে বর্ণিত হাদিসে এসেছে, তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ ﷺ বলেছেন,
إِنَّ مِنْ يُمْنِ الْمَرْأَةِ : تَيْسِيرَ خِطْبَتِهَا ، وَتَيْسِيرَ صَدَاقِهَا ، وَتَيْسِيرَ رَحِمِهَا
কনের বরকতের আলামত হচ্ছে- বিয়ের প্রস্তাবনা সহজ হওয়া, মোহরানা সহজসাধ্য হওয়া এবং গর্ভ ধারণ সহজ হওয়া। (মুসনাদে আহমাদ ২৩৯৫৭)
অন্যত্র নবীজি ﷺ বলেছেন, خَيْرُ الصَّدَاقِ أَيْسَرَه‘সর্বোত্তম মোহরানা হচ্ছে- সহজসাধ্য মোহরানা।’ (বাইহাকী ১৪৭২১)
★সৎ ও খােদাভীরু পাত্র-পাত্রীর সন্ধান করে বিয়ের পয়গাম পাঠানাে। কোন সুযােগে পাত্রী দেখা সম্ভব হলে, দেখে নেয়া মুস্তাহাব। কিন্তু আনুষ্ঠানিকভাবে ঘটা করে পাত্রী দেখানাের যে প্রথা আমাদের সমাজে প্রচলিত, তা সুন্নাতের পরিপন্থী ও পরিত্যাজ্য।
শাওয়াল মাসে বিবাহ সম্পাদন করা: আয়েশা রাযি. বলেন,
تَزَوّجَنِي رَسُولُ اللهِ ﷺ فِي شَوّالٍ، وَبَنَى بِي فِي شَوّالٍ، فَأَيّ نِسَاءِ رَسُولِ اللهِ ﷺ كَانَ أَحْظَى عِنْدَهُ مِنِّي؟
‘রাসূলুল্লাহ ﷺ আমাকে শাওয়াল মাসেই বিয়ে করেছেন এবং শাওয়াল মাসেই আমার বাসর করেছেন। সুতরাং তার নিকটে আমার চেয়ে অধিক সৌভাগ্যবতী স্ত্রী আর কে আছে?’ (সহীহ মুসলিম ১৪২৩)
উল্লেখ্য, সকল মাসের যে কোন দিন বিবাহ করা জায়েয আছে।
★বিবাহের খবর ব্যাপকভাবে প্রচার করে বিবাহ করা এবং বিবাহের পরে আকদ অনুষ্ঠানে উপস্থিত লােকদের মাঝে খেজুর বন্টন করা।
( বুখারী শরীফ, হাদীস নং- ৫১৪৭।)
বাসর রাতে স্ত্রীর কপালের উপরের চুল হাতে নিয়ে এই দু’আ পড়া;
اللهم إني أسألك من خيرها وخير ما جبلت عليه . وأعوذ بك من شرها وشر ما جبلت عليه
( আবু দাউদ, হাদীস নং- ২১৬০।)
বাসর ঘরে স্ত্রীর সাথে কোমল আচরণ করা: আসমা বিনতে উমাইস রাযি. থেকে বর্ণনা করেন যে, তিনি বলেন, আমি ছিলাম আয়েশা রাযি. এর বান্ধবী। আমি আরও কিছু মহিলাকে সাথে নিয়ে তাকে রাসূল ﷺ-এর জন্য প্রস্তুত করে দিয়েছি ও তাঁর ঘরে প্রবেশ করিয়ে দিয়েছি। আসমা রাযি. বলেন ,আল্লাহর শপথ, আমরা তাঁর ঘরে মেহমানদারি হিসেবে এক পেয়ালা দুধ ছাড়া আর কিছু পাইনি। তিনি সে পেয়ালা থেকে কিছুটা পান করলেন, এরপর আয়েশা রাযি.-কে দিলেন। অল্পবয়সী মেয়েটি লজ্জাবোধ করল। তখন আমরা বললাম, আল্লাহর রাসূলের হাত ফিরিয়ে দিও না; গ্রহণ কর। তখন সে ইতস্তত করে হাতে নিল এবং সেটা থেকে পান করল। অতঃপর রাসূল ﷺ বললেন, তোমার বান্ধবীদেরকে দাও। আমরা বললাম, আমাদের চাহিদা নেই। তিনি বললেন, তোমরা ক্ষুধা ও মিথ্যা দুটোকে একত্র করো না। (মুসনাদে আহমাদ ২৬৯২৫)
স্ত্রীর সঙ্গে প্রথমে অন্তরঙ্গতা সৃষ্টি করবে, তারপর যখনই সহবাস-এর ইচ্ছা হয়, তখন প্রথমে নিম্নোক্ত দুআ পড়ে নেবে ;
بسم الله اللهم جنبنا الشيطان وجنب الشيطان ما رزقتنا
( মুসলিম, হাদীস নং-১৪৩৪।)
বাসর রাতের পর আত্মীয়-স্বজন, বন্ধুবান্ধব, শুভাকাঙ্ক্ষী ও গরীব-মিসকিনদের সাধ্যনুযায়ী ওলীমা খাওয়ানাের আয়ােজন করা।
আনাস রাযি. থেকে বর্ণিত যে, আব্দুর রহমান বিন আউফ রাযি. যখন বিয়ে করেছেন তখন নবী ﷺ তাকে বলেন, أَوْلِمْ وَلَوْ بِشَاةٍ ‘একটি ছাগল দিয়ে হলেও তুমি ওয়ালিমার আয়োজন কর।’ (বুখারী ও মুসলিম)