আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
25 views
in ঈমান ও বিশ্বাস (Faith and Belief) by (3 points)
আসসালামু আলাইকুম।  আমার এক বোনের স্বামী  মাঝে মাঝে  ইসলামের ব্যাপারে সন্দেহ পোষন করেন। মাঝে মাঝে আগে নামাজ পড়ত, আবার ছেড়ে দিতো। যখন ছেড়ে দেয় তখন আল্লাহ আছেন  তা বিশ্বাস করেন কিনা জিজ্ঞেস করলে বলে "সন্দেহ আছে"।  এছাড়া আরও বলে সে ঘোষণা দিচ্ছেনা যে আল্লাহ নেই, তবে তার সন্দেহ আছে। হালাল হারাম সম্পর্কেও অনেক প্রশ্ন করেন। যেমন ইসলামে মদ আগে হালাল ছিলো, পরে হারাম হলো, তাহলে আল্লাহ কি আগে জানত না যে মদ ক্ষতিকর? এরকম উদ্ভট প্রশ্ন করেন। এখন এ অবস্থায় উনার ইমানের হালত জানতে চাই, আর উনার স্ত্রীর সাথে কি উনার বিবাহ হালাল আছে কিনা,।

1 Answer

0 votes
by (629,460 points)
জবাবঃ-
وعليكم السلام ورحمة الله وبركاته 
بسم الله الرحمن الرحيم

আল্লাহর নিকট একমাত্র মনোনীত দ্বীন বা জীবন ব্যবস্থা হল ইসলাম:

দ্বীন-ইসলাম হচ্ছে বিশ্বমানবতার জন্য আল্লাহ তা’আলার নিকট একমাত্র মনোনীত ও গ্রহণীয় জীবন ব্যবস্থার নাম। ইসলাম ছাড়া যত ধর্ম এবং মতাদর্শ রয়েছে সবই বাতিল- মিথ্যা। 

আল্লাহ তাআলা বলেন:

إِنَّ الدِّينَ عِندَ اللَّـهِ الْإِسْلَامُ

“আল্লাহর নিকট একমাত্র মনোনীত দ্বীন (জীবন ব্যবস্থা) ইসলাম।” (সূরা আলে ইমরান: ১৯)

তিনি আরও বলেন:
وَمَن يَبْتَغِ غَيْرَ الْإِسْلَامِ دِينًا فَلَن يُقْبَلَ مِنْهُ وَهُوَ فِي الْآخِرَةِ مِنَ الْخَاسِرِينَ

“যে ব্যক্তি ইসলাম ছাড়া অন্য দ্বীন (ধর্ম, মতাদর্শ,জীবন ব্যবস্থা) অনুসন্ধান করবে তার নিকট থেকে তা কখনোই গ্রহণ করা হবে না এবং সে ব্যক্তি হবে পরকালে ক্ষতিগ্রস্তদের অন্তর্ভুক্ত।” (সূরা আলে ইমরান: ৮৫)

সুতরাং আমাদের মনের মধ্যে এই দৃঢ় বিশ্বাস প্রথিত করা অপরিহার্য যে, আল্লাহ তা’আলার নিকট একমাত্র পছন্দনীয়, নির্বাচিত এবং গ্রহণযোগ্য দ্বীন বা জীবন ব্যবস্থার নাম হচ্ছে ইসলাম। ইসলাম ছাড়া যত ধর্ম, মতামত ও মতাদর্শ আছে সবই বাতিল, ভ্রান্ত এবং মিথ্যা।

কেউ যদি ইসলামের প্রতি সন্দেহ পোষণ করে বা ইসলামকে প্রত্যাখ্যান করে সে নিশ্চিতভাবে কাফির হয়ে যাবে। আর কাফিরের পরিণতী চিরস্থায়ী জাহান্নাম।

★কুরআনের কোনো আয়াত,মহান আল্লাহর নাম,রাসুলুল্লাহ সাঃ, হাদীস, ও শরীয়তের কোনো জরুরি বিধান নিয়ে হাসি ঠাট্রা,গালি গালাজ করলে বা ইসলামের অকাট্য ভাবে প্রমাণিত কোনো বিধানকে অস্বীকার করলে ঈমান চলে যায়।
  
মহান আল্লাহ তায়ালা ইরশাদ করেনঃ 

 قُلْ أَبِاللهِ وَآيَاتِهِ وَرَسُوْلِهِ كُنْتُمْ تَسْتَهْزِئُوْنَ، لاَ تَعْتَذِرُوْا قَدْ كَفَرْتُمْ بَعْدَ إِيْمَانِكُمْ 

‘আপনি বলুন, তোমরা কি আল্লাহর সাথে তাঁর হুকুম-আহকামের সাথে এবং তাঁর রাসূলের সাথে ঠাট্টা করছিলে? ছলনা কর না, ঈমান আনার পর তোমরা যে কাফির হয়ে গেছ’ (তওবা ৬৫-৬৬)। 

 فَنَذَرُ الَّذِيْنَ لاَ يَرْجُوْنَ لِقَاءَنَا فِيْ طُغْيَانِهِمْ يَعْمَهُوْنَ 

‘সুতরাং যারা আমার সাথে সাক্ষাতের আশা রাখে না, আমি তাদেরকে তাদের দুষ্টামীতে ব্যতিব্যস্ত করে রাখি’ (ইউনুস ১১)। 

এ ধরনের লোকদের সাথে উঠাবসা, চলাফেরা ত্যাগ করতে হবে, যতক্ষণ পর্যন্ত তারা উক্ত আচরণ পরিত্যাগ না করে। 

وَقَدْ نَزَّلَ عَلَيْكُمْ فِي الْكِتَابِ أَنْ إِذَا سَمِعْتُمْ آيَاتِ اللهِ يُكْفَرُ بِهَا وَيُسْتَهْزَأُ بِهَا فَلاَ تَقْعُدُوْا مَعَهُمْ حَتَّى يَخُوْضُوْا فِيْ حَدِيْثٍ غَيْرِهِ إِنَّكُمْ إِذًا مِثْلُهُمْ إِنَّ اللهَ جَامِعُ الْمُنَافِقِيْنَ وَالْكَافِرِيْنَ فِيْ جَهَنَّمَ جَمِيْعًا-
‘আর কুরআনের মাধ্যমে তোমাদের প্রতি এই হুকুম জারী করে দিয়েছেন যে, যখন আল্লাহর আয়াত সমূহের প্রতি অস্বীকৃতি জ্ঞাপন ও বিদ্রূপ করতে শুনবে, তখন তোমরা তাদের সাথে বসবে না, যতক্ষণ না তারা প্রসঙ্গ পরিবর্তন করে। অন্যথা তোমরাও তাদেরই মত হয়ে যাবে। আল্লাহ মুনাফিক ও কাফিরদেরকে জাহান্নামে একই জায়গায় সমবেত করবেন’ (নিসা ১৪০)। 

আরো জানুনঃ- 

সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি ভাই/বোন, 
প্রশ্নে উল্লেখিত ব্যাক্তির ঈমান ও বিবাহ নবায়ন করতে হবে।

আপনার উক্ত বোনের স্বামীর জন্য করনীয়ঃ-
নেককার ব্যাক্তিদের সোহবতে বেশি বেশি থাকতে হবে।
তিনি দাওয়াত ও তাবলীগের মেহনতে গিয়ে কমপক্ষে এক চিল্লা দিবেন।

বেশি বেশি কুরআন তিলাওয়াত করতে হবে। 
কুরআন যে মু'জিযা,একজন উম্মি নাবী থেকে ১৪০০ বছর আগে পুরো দুনিয়াকে চ্যালেঞ্জ দেয়া এমন এক মহা গ্রন্থ এসেছে,বিষয়টি ভালোভাবে বুঝার চেষ্টা করা।

আপনার উক্ত বোন তার স্বামীকে প্যারাডক্সিকাল সাজিদ,সত্যকথন,উল্টো নির্ণয়, সহ এ সংক্রান্ত গ্রন্থ গুলি হাদিয়া দিতে পারেন।
বা এই বই গুলোর আলোকে জ্ঞান অর্জন করে তাদেরকে বুঝাতে পারেন।

"প্যারাডক্সিকাল সাজিদ"  সহ আরিফ আজাদের বাকি বই গুলো দেয়ারও পরামর্শ থাকবে  

তাহাজ্জুদ সহ সকল আমলে কান্নাকাটি তার হেদায়েতের জন্য দোয়া করতে পারেন। 

আসিফ আদনান ভাই, শামছুল আরেফিন শক্তি ভাই ও ইফতেখার সিফাত ভাইয়ের নিয়মিত লেখা গুলি পড়তে বলতে পারেন।
তাদের লিখিত বইগুলি পড়তে বলতে পারেন।

Asif Adnan, Amiruzzaman Shamsul Arefin Shakti, Iftekhar Sifat ভাইদের ফেসবুকে সার্চ করলে পেয়ে যাবেন। উনাদের পোস্টগুলো পড়তে বলতে পারেন। আগে যেসব পোস্ট করা হয়েছিলো সেগুলোও।

"হিউম্যান বিয়িং শতাব্দীর বুদ্ধিবৃত্তিক লড়াই" "চিন্তাপরাধ" সহ ইফতেখার সিফাত ও আসিফ আদনান ভাইয়ের ভালো কিছু বই আছে, সেগুলো পড়তে বলতে পারেন। এ ক্ষেত্রে খুবই কাজে দেয়।


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

------------------------
মুফতী ওলি উল্লাহ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...