আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

+2 votes
371 views
in পরিবার,বিবাহ,তালাক (Family Life,Marriage & Divorce) by (4 points)

আসসালামু 'আলাইকুম।

একজন ২৭ বছর বয়সী নারী, যিনি নানা ঘটনা ও কারনের ফলে মানসিক ভাবে বিয়ে করার জন্য প্রস্তুত না এবং তার পক্ষে স্ত্রী হিসেবে স্বামীর প্রতি মায়া বা ভালবাসার ব্যাপারটিও সম্ভব না (মানসিক কারনেই, শারীরিক নয়)। তিনি বেশ কয়েকটি মানসিক সমস্যাতেও আক্রান্ত। দীর্ঘ দিনের এই সমস্যার কোন সমাধান হচ্ছেনা ফলে সে আরো বেশী হতাশ হয়ে পরছেন এবং আশংকা করছেন যে একজন মুসলিম নারী হিসেবে তার দায়িত্ব পালনে ব্যর্থ হলেন। কিন্তু তিনি একজন আদর্শ উম্মাত হতে চান। এ ব্যাপারে তিনি কি করতে পারেন? 

1 Answer

0 votes
by (675,600 points)
জবাব
وعليكم السلام ورحمة الله وبركاته 
بسم الله الرحمن الرحيم 

হাদীস শরীফে এসেছেঃ
 
حَدَّثَنَا عُثْمَانُ بْنُ أَبِي شَيْبَةَ، حَدَّثَنَا جَرِيرٌ، عَنِ الْأَعْمَشِ، عَنْ إِبْرَاهِيمَ، عَنْ عَلْقَمَةَ، قَالَ: إِنِّي لَأَمْشِي مَعَ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ مَسْعُودٍ بِمِنًى إِذْ لَقِيَهُ عُثْمَانُ فَاسْتَخْلَاهُ فَلَمَّا رَأَى عَبْدُ اللَّهِ، أَنْ لَيْسَتْ لَهُ حَاجَةٌ قَالَ لِي: تَعَالَ يَا عَلْقَمَةُ فَجِئْتُ فَقَالَ لَهُ: عُثْمَانُ أَلَا نُزَوِّجُكَ يَا أَبَا عَبْدِ الرَّحْمَنِ بِجَارِيَةٍ بِكْرٍ لَعَلَّهُ يَرْجِعُ إِلَيْكَ مِنْ نَفْسِكَ مَا كُنْتَ تَعْهَدُ، فَقَالَ عَبْدُ اللَّهِ: لَئِنْ قُلْتَ ذَاكَ لَقَدْ سَمِعْتُ رَسُولَ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ يَقُولُ: مَنِ اسْتَطَاعَ مِنْكُمُ الْبَاءَةَ فَلْيَتَزَوَّجْ، فَإِنَّهُ أَغَضُّ لِلْبَصَرِ، وَأَحْصَنُ لِلْفَرْجِ، وَمَنْ لَمْ يَسْتَطِعْ مِنْكُمْ فَعَلَيْهِ بِالصَّوْمِ، فَإِنَّهُ لَهُ وِجَاءٌ

আলকামাহ (রহঃ) সূত্রে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমি ‘আব্দুল্লাহ ইবনু মাসঊদ (রাযি.)-এর সাথে মিনায় হাঁটছিলাম। এ সময় ‘উসমান (রাযি.)-এর সাথে দেখা হলে তিনি আব্দুল্লাহ (রাযি.)-এর সাথে নির্জনে আলাপ করেন। অতঃপর আব্দুল্লাহ যখন দেখলেন, এ বিষয়ে তার কোনো প্রয়োজন নেই, তখন তিনি আমাকে বললেন, হে আলকামাহ! এদিকে এসো। আমি এলে ‘উসমান (রাযি.) তাকে বললেন, হে আবূ আব্দুর রহমান! আমরা কি আপনার সাথে একটি কুমারী মেয়ে বিয়ে দিবো, যাতে আপনি অতীতের প্রাণচাঞ্চল্য ফিরে পান? আব্দুল্লাহ (রাযি.) বলেন, আমি এরূপ এজন্যই বলেছি যে, আমি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-কে বলতে শুনেছিঃ তোমাদের কেউ বিয়ের সামর্থ্য রাখলে সে যেন অবশ্যই বিয়ে করে। কেননা বিয়ে দৃষ্টিকে সংযত রাখে এবং যৌন জীবনকে সংযমী করে। আর যে ব্যক্তির বিয়ে করার সামর্থ্য নাই সে যেন অবশ্যই সওম পালন করে। কেননা সওম তার যৌনস্পৃহা দমনকারী।
(আবু দাউদ ২০৪৬)
,
سَعِيدُ بْنُ أَبِي مَرْيَمَ أَخْبَرَنَا مُحَمَّدُ بْنُ جَعْفَرٍ أَخْبَرَنَا حُمَيْدُ بْنُ أَبِي حُمَيْدٍ الطَّوِيلُ أَنَّه“ سَمِعَ أَنَسَ بْنَ مَالِكٍ يَقُوْلُ جَاءَ ثَلاَثَةُ رَهْطٍ إِلٰى بُيُوْتِ أَزْوَاجِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم يَسْأَلُوْنَ عَنْ عِبَادَةِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم فَلَمَّا أُخْبِرُوْا كَأَنَّهُمْ تَقَالُّوْهَا فَقَالُوْا وَأَيْنَ نَحْنُ مِنَ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم قَدْ غُفِرَ لَه“ مَا تَقَدَّمَ مِنْ ذَنْبِه„ وَمَا تَأَخَّرَ قَالَ أَحَدُهُمْ أَمَّا أَنَا فَإِنِّي أُصَلِّي اللَّيْلَ أَبَدًا وَقَالَ آخَرُ أَنَا أَصُوْمُ الدَّهْرَ وَلاَ أُفْطِرُ وَقَالَ آخَرُ أَنَا أَعْتَزِلُ النِّسَاءَ فَلاَ أَتَزَوَّجُ أَبَدًا فَجَاءَ رَسُوْلُ اللهِ صلى الله عليه وسلم إِلَيْهِمْ فَقَالَ أَنْتُمْ الَّذِينَ قُلْتُمْ كَذَا وَكَذَا أَمَا وَاللهِ إِنِّي لأخْشَاكُمْ للهِ÷ وَأَتْقَاكُمْ لَه“ لَكِنِّي أَصُوْمُ وَأُفْطِرُ وَأُصَلِّي وَأَرْقُدُ وَأَتَزَوَّجُ النِّسَاءَ فَمَنْ رَغِبَ عَنْ سُنَّتِي فَلَيْسَ مِنِّي.

আনাস ইব্নু মালিক (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, তিন জনের একটি দল নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এর ‘ইবাদাত সম্পর্কে জিজ্ঞেস করার জন্য নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) - এর স্ত্রীদের বাড়িতে আসল। যখন তাঁদেরকে এ সম্পর্কে জানানো হলো, তখন তারা ‘ইবাদাতের পরিমাণ কম মনে করল এবং বলল, নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) - এর সঙ্গে আমাদের তুলনা হতে পারে না। কারণ, তাঁর আগের ও পরের সকল গুনাহ্ ক্ষমা ক’রে দেয়া হয়েছে। এমন সময় তাদের মধ্য হতে একজন বলল, আমি সারা জীবন রাতভর সলাত আদায় করতে থাকব। অপর একজন বলল, আমি সবসময় সওম পালন করব এবং কক্ষনো বাদ দিব না। অপরজন বলল, আমি নারী সংসর্গ ত্যাগ করব, কখনও বিয়ে করব না। এরপর রসূলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) তাদের নিকট এলেন এবং বললেন, “তোমরা কি ঐ সব লোক যারা এমন এমন কথাবার্তা বলেছ? আল্লাহ্র কসম! আমি আল্লাহ্কে তোমাদের চেয়ে বেশি ভয় করি এবং তোমাদের চেয়ে তাঁর প্রতি বেশি অনুগত; অথচ আমি সওম পালন করি, আবার তা থেকে বিরতও থাকি। সলাত আদায় করি এবং নিদ্রা যাই ও মেয়েদেরকে বিয়েও করি।  সুতরাং যারা আমার সুন্নাতের প্রতি বিরাগ পোষণ করবে, তারা আমার দলভুক্ত নয়।  [মুসলিম ১৬/১, হাঃ ১৪০১, আহমাদ ১৩৫৩৪] (আধুনিক প্রকাশনীঃ ৪৬৯০, ইসলামী ফাউন্ডেশনঃ ৪৬৯৩)
,
শরীয়তের বিধান হলো বিবাহ সকলের জন্য ফরজ,ওয়াজিব নয়।
   
বরং যৌন তাকীদ যখন সহ্যসীমা অতিক্রম করে যায় এবং শরঈ সীমা ভেঙে ফেলার আশঙ্কা  দেখা দেয়, অর্থাৎ উক্ত দুর্ঘটনায় লিপ্ত হওয়ার আশঙ্কা প্রবলতর হয়ে ওঠে, তখন মুমিন লোকের পক্ষে বিয়ে করা ওয়াজিব হয়ে যায়। 

কিন্তু যৌন তাড়না যদি সীমাতিক্রম না করে, তাহলে সেমতাবস্থায় বিয়ে সুন্নতে মুয়াক্কাদাহ। 

পক্ষান্তরে, স্ত্রীর হক আদায় করতে না পারার ধারণা যদি প্রবলতর হয়, তাহলে সেমতাবস্থায় বিয়ের ফাঁদে নিজকে জড়ানো শরীয়তের দৃষ্টিতে অপছন্দনীয় অর্থাৎ মাকরূহ। 

বরং স্ত্রীর হক আদায় করতে না পারার ব্যাপারে যে- ব্যক্তি স্থির নিশ্চিত, তার পক্ষে বিয়ে করা হারাম।
,
★সুতরাং প্রশ্নে উল্লেখিত ছুরতে যদি উক্ত মহিলা বিবাহ না করতে চায়,তাহলে গুনাহে লিপ্ত না হওয়ার ১০০% সম্ভাবনা থাকলে এটি তার জন্য জায়েজ আছে।
অন্যথায় গুনাহে লিপ্ত সম্ভাবনা থাকলে তার জন্য বিবাহ না করা জায়েজ নয়।
,
আমরা পরামর্শ হিসেবে বলবো যে তাকে বিবাহ করা উচিত।
স্বামীর প্রতি মায়া ভালোবাসা ইনশাআল্লাহ আল্লাহই রহম করবেন।
আশা করি কোনো সমস্যা হবেনা। 
ইনশাআল্লাহ। 
আল্লাহর উপর ভরসা করে তাকে বিবাহ করা উচিত।


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

------------------------
মুফতী ওলি উল্লাহ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...