আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
16 views
ago in বিবিধ মাস’আলা (Miscellaneous Fiqh) by (2 points)
আমার বাবা কিছুদিন আগে মারা যান।

১।উনি প্রবাসী ছিলেন এবং টাকা ইনকাম করে নিজের কাছেই রাখতেন।পরবর্তীতে যখন জানতে পারেন যে একজন হুজুর ইসলামী ব্যাংক এ টাকা রেখে ডিপোজিট এর মাধ্যমে মুনাফা নেন । টাকা রাখার সময় ব্যাংকের ওরা এভাবে বুঝাইছে যে এটা কোন ভাবেই সুদ না কারণ প্রফিট রেট ফিক্সড না।লাভ হলে লাভ এবং ক্ষতি হলে ক্ষতি দেয়া হবে।এবং শরিয়ার সম্পূর্ন দায় দায়িত্ব তাদের এবং এই পদ্বতিতে তে সুদ দেয়া হয় না।তখন তিনি ব্যাংকে বিভিন্ন মেয়াদে টাকা রেখে মুনাফার মাধ্যমে বাড়ি নির্মান করেন।উনি ব্যাক্তি জীবনে ঈমান আমল যথাসাধ্য (যতটুকু জানতেন তার মধ্যে,যদিও খুব বেশি জ্ঞান অর্জন করতে পারেন নি)পালন করার চেস্টা করেছেন এবং সুদ বা হারাম ১ টাকাও খেতে চান নি।আমরাও আগে জানতাম ইসলামী ব্যাংক এ ডিপোজিট করে মুনাফা খাওয়া হালাল।কিন্ত এখন রিসার্চ করে জানতে পারি তারা সব নিয়ম নীতি সম্পূর্ন ভাবে না মানার কারণে এই মুদারাবা একাউন্ট করে মুনাফা ভোগ করা সন্দেহজনক এবং বিরত থাকাই ভালো।
এখন এই ক্ষেত্রে কি উনি গুনাহগার হবেন?

আমরা অই নির্মানকৃত বাড়িতেই থাকি এবং ভাড়া থেকে জীবিকা নির্বাহ করে থাকি।এছাড়া আর কোনো ইনকাম সোর্স নেই।বাবা থাকতেও অই বাড়ির ভাড়াই ছিলো একমাত্র ইনকাম সোর্স।এক্ষেত্রে বাড়ির ভাড়া কি হালাল হবে?

২।দ্বিতীয় প্রশ্নটা হচ্ছে উনি যাকাতের বিষয়ে সম্পূর্ন অবগত ছিলেন না আগে থেকে কিন্ত ৫-৭ বছর আগে থেকে অর্থাৎ যখন থেকে জানতে পেরেছেন তখন থেকে ডিপোজিট কৃত টাকা সহ যাকাত হিসাব করেছেন।৯ লাখ হিসাব করেছিলেন।এবং ক্রমান্বয়ে প্রদান করছিলেন।কিন্ত ৫ লাখ প্রদান করার পর উনি মারা যান।আরো ৪ লাখ ২০ হাজার বাকি এটা লেখা আছে।যেহেতু আর্থিক অবস্থা খুব বেশি ভালো না উনি বাড়ি ভাড়া থেকে ক্রমান্বয়ে প্রদান করছিলেন কিন্ত শেষ করে যেতে পারেন নি। এখন আমরা উনার ব্যাংক এ থাকা টাকা থেকে এটা প্রদান করে দিবো একেবারে।এতে কি উনি দায়মুক্ত হবেন ইনশাল্লাহ?
৩।উনি একটু রাগী মেজাজের ছিলেন।এবং এটা প্রায় মানসিক সমস্যার মত ছিলো।কিন্ত যখন ভালো খুবি ভালো ছিলেন।মাঝে মাঝে রাগতেন।তবে রাগ নিয়ন্ত্রনের জন্য চিকিৎসকের পরামর্শে নিয়মিত ওষুধ খেতেন।বিষয়টা তার ভাইদের সাথে।তার ২ ভাইকে তিনি ছোট থেকে অনেক আর্থিক ও অন্যান্য সাহায্য করেছেন সারাজীবন যেহেতু উনিই উল্লেক্ষ্যযোগ্য কর্মক্ষম ও আর্থিক সাবলম্বী ছিলেন। উনি জায়গা জমি ভাই বোনদের মধ্যে একদম নিখুত ভাবে ভাগ করে দিয়েছেন।এবং সব ভাই বোনেরা ভাগ করার সময় রাজিখুশি ছিলো।কিন্ত কয়েক বছর আগে থেকে মেজো ভাইয়ের সাথে রাগারাগি হয় টাকা চাইতে গিয়ে।যেটা উনার পাওয়ার কথা ছিলো পৈতৃক বিল্ডিং এর রুম যেটা তার ভাগে ছিলো সেটার বিনিময়ে দেড় লাখ টাকা দেয়ার বিষয়ে একমত হয়েছিলো আগে।কিন্ত অনেক দিন হলেও টাকা না দেয়ায় এটা নিয়ে রাগারাগি হলে মেজো ভাইয়ের মেয়ে আব্বুর নামে মামলা দেয় যেটা দ্রুতই নিস্পত্তি হয়ে যায় কিন্ত এতে কস্ট পেয়ে অই ভাইয়ের সাথে কথা সাক্ষাত করেনি ২-৩ বছর ধরে।অবশ্য একই মসজিদে নামাজ পড়ত।তবে মারা যাওয়ার পরে অই ভাইয়ের ও তার ফ্যামিলির কাছ থেকে আমার আম্মু মাফ চেয়ে নিয়েছে এবং তারা অবশ্যই মাফ করে দিয়েছে বলেছে। এক্ষেত্রে কি আত্নীয়তার সম্পর্ক নস্ট হিসেবে গণ্য হবে এবং এখন কি করা যেতে পারে আব্বুর মাগফিরাতের জন্য।

৩। আরেকটা জটিল বিষয়।আব্বু মারা যায় আমাদের নিজের বিল্ডিং এর ছাদে থাকা আম পারতে গিয়ে ছাদ থেকে পড়ে গিয়ে।আম গাছ টির গোড়া পাশের ছোট চাচার জায়গায়।ছোট চাচার সাথে সম্পর্ক খুবি ভালো।কিন্ত গাছের ডাল এ থাকা আম পারা কি অন্যের হক নস্ট হিসেবে গন্য হবে এবং হক নস্ট করতে গিয়ে মৃত্যু হিসেবে গণ্য হবে?যদিও আব্বু ৫ ওয়াক্ত সালাত,সিয়াম,হজ্ব পালন করেছে যখন থেকে ইসলাম বুজেছে।উল্লেখ্য পৈতৃক জায়গা ভাগ হয়েছে কিন্ত গাছ তেমন ভাবে ভাগ হয়নি।তবে ফল সাধারণত ৩ ভাইয়ের মধ্যে ভাগ হয়।তবে এক্ষত্রে আব্বু নিজেদের জন্য কিছু ফল পারতে গিয়েছিলো।এক্ষেত্রেও ছোট চাচাদেরকে আমরা বলেছি বাকি ফল আপনারা নিয়ে নিয়েন।আমরা কিছু নিয়েছি।
৪।আব্বু আগে কোরআন পড়তে পারতেন না।যদিও নামাজের জন্য সূরা মুখস্থ ছিলো।তবে হজ্বের আগে একজন হুজুরের কাছে আম পারা পড়েছেন।এবং বানান করে ছোট ওজীফা থেকে আরবি শিখেছিলেন।এবং বলতেন বড় সাইজের একটা কোরআন কিনবেন যাতে পড়তে সুবিধা হয়।এক্ষেত্রে কি কোরআন এর হক আদায় হবে নিয়তের কারনে আল্লাহ মাফ করবেন ইনশাল্লাহ?

৪। মৃতে ব্যাক্তির জন্য সন্তানের দোয়ার ফলে কি কবীরা ও সগীরা সকল গুণাহ মাফ হবে ইনশাল্লাহ? এই পরিস্থিতিতে আমার আর কি কি করণীয় আছে?

জাজাকাল্লাহ খইরন।

1 Answer

0 votes
ago by (653,130 points)
ওয়া আলাইকুমুস-সালাম ওয়া রাহমাতুল্লাহি ওয়া বারাকাতুহু। 
বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম।
জবাবঃ-
আলহামদুলিল্লাহ!
প্রচলিত ডিপিএস,স্কীম ডিপিএস, ফিক্সট ডিপোজিট হারাম এবং পরিত্যাজ্য।

তবে যদি কোনো ব্যাংক শরীয়তকে পুরোপুরি মেনে এই সমস্ত প্রকল্প, স্কীমগুলো প্রনয়ন করে ও যত্নসহকারে তা পালন করতে সচেষ্ট থাকে তবে তা জায়েয হবে। যেমন পাকিস্তানের মিজান ব্যাংক সম্পর্কে শুনা যায়,যে তারা সম্পূর্ণভাবে শরীয়তকে মেনে চলে।
যত্নসহকারে পালনের অর্থ হচ্ছে,ডিপিএস এমন হতে হবে যে,যে মেয়াদের জন্য ডিপি এস করা হবে,মেয়াদ শেষ হওয়ার পর আসল ব্যতীত মুনাফা কত? তা নির্দিষ্ট  হতে পারবে না।
যদি মুনাফা নির্দিষ্ট হয়ে থাকে,তাহলে সেটা সুদের অন্তর্ভুক্ত হয়ে হারাম হয়ে যাবে।

যদি কেউ টাকা জমানোর উদ্দেশ্যে তথাকথিত ইসলামী ব্যাংকগুলোতে ৫-১০ বছর মেয়াদী ডিপিএস করে নেয়, তাহলে সে শুধুমাত্র আসল নিতে পারবে। মুনাফা নিতে পারবে না। কেননা মুনাফা সুদ। আর সুদ হারাম।এ সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে ক্লিক করুন- https://www.ifatwa.info/112674


সুপ্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি ভাই/বোন!
আপনার বাবাকে জিজ্ঞেস করে বা অনুমান করে জেনে নিবেন যে, সুদের কত টাকা বিল্ডিং নির্মাণে ব্যায় হয়েছে। সবগুলো টাকা সদকাহ করে দিবেন। তাহলে ঐ বাড়ীতে থাকা আপনাদের জন্য নাজায়েয হবে না।

(২) জ্বী, উনার যাকাত যদি আপনারা আদায় করে দেন, তাহলে আদায় হয়ে যাবে। গরীব মিসকিন ও এতিমখানা মাদরাসায় দিয়ে দিবেন । 

(৩) গাছ যার ফলও তার। তবে কিছু পরিবারের ভাইবোনদের মধ্যে সাধারণত মৌনসম্মতি থাকে, যেজন্য বিষয়টা একেক পরিবারে একেক রকম হিসেবে গণ্য হবে।

(৪) নিয়তের কারনে হয়তো আল্লাহ শিখা ও তিলাওয়াতের সওয়াব দিয়ে দিবেন।জাযাকাল্লাহ। 

(৫) সগীরা তো মাফ হবে, তবে কবিরা গোনাহ মাফ হবে কি না? তা আল্লাহই ভালো জানেন।


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

--------------------------------
মুফতী ইমদাদুল হক
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...