আসসালামু আলাইকুম।
আমি স্টুডেন্ট, এসএসসির পর পড়াশোনা আর করিনি। পরে মাদরাশাতে ভর্তি হই।
তো এক আন্টি তার দুই মেয়েকে আমার কাছে প্রাইভেট পড়াতে দেয়, তার একটা মেয়ে পড়ে ৮ম শ্রেণিতে, আর আরেকটা পড়ে ৯ম শ্রেণিতে। বেতন কত টাকা দিতে হবে, সেই টাকার কথা আমি সম্মানের খাতিরে আগে কিছুই জানাইনি,আর না তারা জানিয়েছিলেন।
তো ১ ফেব্রুয়ারি থেকে মেয়ে দুইটি পড়া শুরু করে (ইংরেজি আর গণিত একইসাথে ১ ঘন্টায় পড়াই)। দুইজন যেহেতু আলাদা শ্রেণিতে তাই আলাদা টাইমে পড়াই, মানে দুইজনকে আলাদা ভাবে দুই ঘন্টা সময় দিয়ে এই দুইটি সাব্জেক্ট একসাথে পড়াই, শুক্রবার বাদে সপ্তাহে ছয় দিন ই।
আবার ৩ ফেব্রুয়ারি থেকে তাদের একজন আরেকটা সাব্জেক্টের (জীববিজ্ঞান) প্রাইভেট পড়া আমার কাছে শুরু করে। সেখানেও ১ঘন্টা করে সময় দেই।
আবার ১০ ফেব্রুয়ারি থেকে সেই মেয়েটাই আর ও দুইটা সাব্জেক্টের (রসায়ন,পদার্থবিজ্ঞান) প্রাইভেট শুরু করে আমার কাছে। সেখানেও দুইটা সাব্জেক্টের পেছনে মোট ১ ঘন্টা করে সময় দেই।
আবার ও ২৩ ফেব্রুয়ারি থেকে সেই মেয়েটা আর ও একটা বিষয়ের (উচ্চতর গণিত) প্রাইভেট পড়া শুরু করে। সেখানেও ১ ঘন্টা করে সময় দেই।
এখন এই দুই শিক্ষার্থীর মা যিনি,তিনি খুব সম্ভবত মার্চ এর ৩ তারিখ (আমার যতটুকু মনে পড়ছে তারিখ টা) বেতন দিতে আসে। আর আমার হাতে মাত্র ২০০০ টাকা ধরিয়ে দেয়! আমি অবাক হয়ে যাই!
[ বলে রাখা ভালো, আমি নিজেও আগে যেসব স্যারের কাছে পড়েছি তারা ১ ঘন্টা একটা সাব্জেক্টের পেছনে সময় দিলে ১০০০ টাকাই দিতাম। আর ভেবেও নিয়েছিলাম সেই মহিলাও ১০০০ টাকাই দেবেন! মহিলা হয়তো জানেন যেহেতু এগুলো সাইন্সের সাব্জেক্ট, তাই ১০০০ টাকার কমে কেউ ই পড়ায় না! তার উপর আবার সপ্তাহে ৬ দিন ই পড়াই ! ১ ঘন্টা করে পড়াই কখনো বা ১ ঘন্টার বেশি ও পড়িয়েছি।]
তো আমি সেই মহিলাকে বলি, "আন্টি আমি এই টাকা নিব না। যতগুলো সাব্জেক্ট ই পড়াই না কেন, আমি সাব্জেক্ট হিসেবে না ধরে ঘন্টা হিসাব করে টাকা নিব (যেহেতু সাব্জেক্ট হিসাব করলে অনেক টাকা চলে আসে,তাই ঘন্টা হিসাব করে ১০০০ টাকা করে নিব)।
তো বললাম আমি তাদের রেগুলার ৫ ঘন্টা সময় দিয়েছি তাই ৫০০০ টাকা। তিনি বলেন আর ও ১০০০ টাকা দিবো। আমি তাও বললাম, না আন্টি ৫০০০ এর নিচে নিব না।" তো তিনি খুব সম্ভবত মনক্ষুণ্য হয়ে সাথে সাথেই ৫০০০ টাকা দিয়ে গেলেন,কিছুই আর বলেননি। এবং এর পরেরদিন থেকে তার মেয়েদের আর পড়তে পাঠাননি।
তো উপরে বলা হয়েছে — ফেব্রুয়ারির ১ তারিখ থেকে দুইটা প্রাইভেট শুরু করে (২ ঘন্টা), ৩ তারিখ থেকে একটা (১ঘন্টা), ১০ তারিখ থেকে একটা (১ঘন্টা) আর, ২৩ তারিখ থেকে একটা (১ঘন্টা)।
কিন্তু যেহেতু সেই মহিলা মার্চের ৩ বা ৪ তারিখে বেতন দিয়ে যায় মানে ৫০০০ টাকা দিয়ে যায় আর তারপর থেকে তার মেয়েকে আর পাঠাননি। তাই যেই প্রাইভেট টা ২৩ তারিখ থেকে শুরু করেছিল,এবং যদি ২৩ তারিখ থেকে পড়িয়েছিলাম তাও সেটার বেতন আমি নেইনি। মানে সেই মহিলাকে আমার অভিভাবক বাসায় নিয়ে এসে ১০০০ টাকা হাসিমুখে ফেরত দিয়েছে দিয়েছে। যদিও তিনি নিতে অস্বীকার করছিলেন।
তো এটা কি ঠিক হয়েছে? আমার কি কোনো গুনাহ হয়েছে? আমি আসলে নতুন প্রাইভেট পড়ানো শুরু করেছি। তাই বুঝে উঠতে পারিনি যে, আগেই টাকার কথা বলে নেওয়া উচিত ছিল।ভবিষ্যতে ইন শা আল্লাহ সবাইকে আগেই টাকার কথা বলে নিয়েই তারপর প্রাইভেট পড়ানো শুরু করব। (আসলে আমি প্রায় সিওর ছিলাম যে সাইন্সের সাব্জেক্ট ১ ঘন্টা করে সময় দিলে, আর সপ্তাহে ৬ দিন পড়ালে তিনি ১০০০ ই দেবেন, এর কমে দেবেন না। সম্মানের খাতিরে টাকার কথা শুরুতেই তাকে বলিনি, তবে মাঝে মাঝে মনে হতো কম দেন কিনা, তাও সম্মানের খাতিরে শুরুতেই টাকার কথা বলিনি, ভেবেছিলাম তারা জানেনই।)