ওয়া আলাইকুমুস-সালাম ওয়া রাহমাতুল্লাহি ওয়া বারাকাতুহু।
বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম।
জবাবঃ-
কোনো গুনাহগার মুসলমানকে কি কাফের বলা যাবে? প্রতি উত্তরে বলা যায় যে,
কোন গোনাহগার মুসলমানকে কাফের বলা যাবে না।কাফির জায়েজ হবে না। বরং যে কোনো মুসলমানকে কাফির বলবে তার মারাত্মক ধরণের গুনাহ হবে।অযথা কাউকে তাকফির করা নাজায়েয ও হারাম। কুরআন ও হাদীসে এ ব্যাপারে কড়া ধমকী এসেছে।
يَا أَيُّهَا الَّذِينَ آمَنُوا إِذَا ضَرَبْتُمْ فِي سَبِيلِ اللَّهِ فَتَبَيَّنُوا وَلَا تَقُولُوا لِمَنْ أَلْقَىٰ إِلَيْكُمُ السَّلَامَ لَسْتَ مُؤْمِنًا تَبْتَغُونَ عَرَضَ الْحَيَاةِ الدُّنْيَا فَعِنْدَ اللَّهِ مَغَانِمُ كَثِيرَةٌ ۚ كَذَٰلِكَ كُنْتُمْ مِنْ قَبْلُ فَمَنَّ اللَّهُ عَلَيْكُمْ فَتَبَيَّنُوا ۚ إِنَّ اللَّهَ كَانَ بِمَا تَعْمَلُونَ خَبِيرًا
হে ঈমানদারগণ! তোমরা যখন আল্লাহর পথে সফর কর,তখন যাচাই করে নিও এবং যে,তোমাদেরকে সালাম করে তাকে বলো না যে, তুমি মুসলমান নও। তোমরা পার্থিব জীবনের সম্পদ অন্বেষণ কর,বস্তুতঃ আল্লাহর কাছে অনেক সম্পদ রয়েছে। তোমরা ও তো এমনি ছিলে ইতিপূর্বে; অতঃপর আল্লাহ তোমাদের প্রতি অনুগ্রহ করেছেন। অতএব, এখন অনুসন্ধান করে নিও। নিশ্চয় আল্লাহ তোমাদের কাজ কর্মের খবর রাখেন। {সূরা নিসা-৯৪}
হাদীসে রাসূল সাঃ যে ব্যক্তি কাফের না তাকে কাফের বললে, সেই কুফরী তার দিকে প্রত্যাবর্তন করে মর্মে কঠোর হুশিয়ারী উচ্চারণ করেছেন-
عن أبي ذر رضي الله عنه أنه سمع النبي صلى الله عليه و سلم يقول ( لا يرمي رجل رجلا بالفسوق ولا يرميه بالكفر إلا ارتدت عليه إن لم يكن صاحبه كذلك
হযরত আবু জর রাঃ থেকে বর্ণিত। রাসুল সাঃ বলেছেন যে, তোমাদের কেউ যদি কাউকে ফাসেক বলে, কিংবা কাফের বলে অথচ লোকটি এমন নয়,তাহলে তা যিনি বলেছেন তার দিকে ফিরে আসবে। {সহীহ বুখারী, হাদীস নং-৫৬৯৮}
কত মারাত্মক হুশিয়ারী, তাই কাউকে কাফের, মুশরিক, নাস্তিক বলার ক্ষেত্রে কঠোর সতর্কতা অবলম্বন করা উচিত।
কাউকে কাফের বলার ক্ষেত্রে সতঃসিদ্ধ নিয়ম সম্পর্কে আল্লামা মোল্লা আলী কারী রহঃ শরহে ফিক্বহুল আকবারে বলেন-
ان المسئلة المتعلقة بالكفر اذا كان له تسع وتسعون احتمالا للكفر واحتمال واحد فى نفيه فالاولى للمفتى والقاضى ان يعمل بالاحتمال النافى، لان الخطا فى ابقاء الف كافر اهون من الخطاء فى افناء مسلم واحد،
কুফরী সম্পর্কিত বিষয়ে, যখন কোন বিষয়ে ৯৯ ভাগ সম্ভাবনা থাকে কুফরীর, আর এক ভাগ সম্ভাবনা থাকে, কুফরী না হওয়ার। তাহলে মুফতী ও বিচারকের জন্য উচিত হল কুফরী না হওয়ার উপর আমল করা।কেননা ভুলের কারণে এক হাজার কাফের বেচে থাকার চেয়ে ভুলে একজন মুসলমান ধ্বংস হওয়া জঘন্য। {শরহু ফিক্বহুল আকবার-১৯৯}
সুতরাং কারো কোন কাজে সন্দেহ হলেই বা সামান্যতম গুনাহের কাজ করলেই তাকে কাফের, মুরতাদ, নাস্তিক ইত্যাদি বলে প্রচার করা জায়েজ নয়। এক্ষেত্রে সর্বোচ্চ সতর্কতা অবলম্বন করা জরুরী।(সংগৃহিত)
সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনী ভাই/বোন!
সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনী ভাই/বোন!
(১)
কেউ যদি উদাহরণ দেওয়ার জন্য বলে যে,অমুক গান/কবিতাতে শিরকের কথা আছে।এবং কিবাতার অমুক লাইনে শিরক আছে।যদি সে সাথে সাথে সেই লাইনটাকে উদাহরণ দেওয়ার জন্য মুখে উচ্ছারণ করে নেয়,তাহলে এতে শিরক হবে না।
(২)
যদি কারো মনে মনে কোনো শিরক কথা চলে আসে,যদি সে সেই কথাকে মুখে উচ্ছারণ না করে,তাহলে সে এদ্বারা কাফির হবে না।
(৩)
মনে আল্লাহর একত্ববাদের প্রতি পূর্ণ বিশ্বাস থাকাবস্থায় যদি কারো মুখ থেকে শিরকি কথা বের হয়ে যায়,তাহলে এদ্ধারা সে কাফির হবে না তবে ইচ্ছাকৃত কেউ মুখ বললে,তার ঈমানে থাকবে না।চায় অন্তরের ইচ্ছা থাকুক বা নাই থাকুক।
(৪)
ইচ্ছাকৃত কুফরি কথা মুখ দ্বারা উচ্ছারিত হয়েছে কি না? সন্দেহ হলে ঈমানে কোনো সমস্যা হবে না।