বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম।
জবাবঃ-
(১)
জিন শব্দের অর্থ হলো গোপন। জিনেরা মানুষের দৃষ্টিতে অদৃশ্য থাকে বলেই এর নাম জিন। আল কুরআনে আল্লাহ বলেছেন, তারপর যখন রাত তার ওপর আচ্ছন্ন হল। [সূরা আল আনআম : ৭৬] এ আয়াতে ব্যবহৃত জান্না শব্দের অর্থ হল, আচ্ছন হওয়া, ঢেকে যাওয়া, গোপন হওয়া। জিনকে আমরা দেখতে না পাওয়ার বিষয়টি আল্লাহ পবিত্র কুরআনের অন্যত্র বর্ণনা করেছেন। তিনি বলেছেন, নিশ্চয় সে ও তার দলবল তোমাদের দেখে যেখানে তোমরা তাদের দেখ না। [সূরা আল আরাফ : ২৭] মানুষের মধ্যে যেমন প্রকারভেদ রয়েছে, নানা জাতি উপজাদি ও সম্প্রদায় রয়েছে, তেমনি জিন জাতির মধ্যে ভিভক্তি রয়েছে। রাসূলুল্লাহ সা. এ সম্পর্কে বলেন : জিন জাতি তিন প্রকার। এক. যারা শূন্যে উড়ে বেড়ায়। দুই. কিছু সাপ ও কুকুর। তিন. মানুষের কাছে আসে ও চলে যায়। [তাবারানি] প্রখ্যাত হাদিস বিশারদ শায়খ আলবানি রহ. হাদিসটিকে সহিহ বলেছেন। জিনদের ক্ষমতার মধ্যে রয়েছে তারা, বিভিন্ন প্রাণীর রূপ ধারণ করতে পারে। জিনদের একটি গ্রুপ সর্বদা সাপ ও কুকুরের বেশ ধারণ করে চলাফেরা করে মানব সমাজে। এটা তাদের স্থায়ী রূপ। হাদিস বিশারদদের মতে জিনদের কয়েক টি শ্রেণি আছে। যেমন সাধারন জিন, আমির জিন (এরা মানুষের সাথে থাকে), শয়তান- এরা অবাধ্য, উদ্ধত, ইফরিত জিন এরা শয়তানের চাইতেও বিপদজনক। জিন জাতিকে সৃষ্টি করা হয়েছে হজরত আদম আ. এর ২০০০ বছর পূর্বে। হাদিসের ভাষ্যমতে জিন জাতির আদি পিতা (আবুল জিন্নাত) সামুমকে আল্লাহ তায়ালা আগুনের শিখা দ্বারা তৈরি করার পর আল্লাহ সামুমকে বলেন তুমি কিছু কামনা কর। তখন সে বলে, আমার কামনা হল আমরা মানুষকে দেখব কিন্তু মানুষরা আমাদের দেখতে পারবে না। আর আমাদের বৃদ্ধরাও যেন যুবক হয় মৃত্যুর পূর্বে। আল্লাহ সামুমের দুটি ইচ্ছাই পূরণ করেন। জিনরা বৃদ্ধ বয়সে মৃত্যুর পূর্বে আবার যুবক হয়। জিনেরা আগুণের তৈরি হলেও এরা মূলত আগুণ নয়। যেমন মানব সৃষ্টির মূল উপাদান কাদামাটি হলেও মানুষ কিন্তু প্রকৃত পক্ষে কাদামাটি নয়। ঠিক তেমনি জিনের পূর্ব পুরুষ আগুণের তৈরি হলেও জিন মানেই আগুন নয়। এর প্রমাণ মুসনাদ আহমদে বর্ণিত রাসুলুল্লাহ সা. একটি হাদিস। তিনি বলেছেন, শয়তান নামাজের মধ্যে আমার সাথে মুকাবেলা করতে আসে তখন আমি তার গলা টিপে দেই। ইসলামপূর্ব আরব উপকথাগুলোতে জিনের উল্লেখ আছে। প্রাচীন সেমাইট জাতির জনগণ জিন নামক সত্ত্বায় বিশ্বাস করতো। তাদের মতানুসারে জিন কয়েক প্রকারে বিভক্ত। যেমন, ঘুল (দুষ্ট প্রকৃতির জিন যারা মূলত কবরস্থানের সাথে সম্পর্কিত এবং এরা যেকোন আকৃতি ধারণ করতে পারে), সিলা (যারা আকৃতি পরিবর্তন করতে পারতো) এবং ইফরিত (এরা খারাপ আত্মা)। এছাড়া মারিদ নামক এক প্রকার জিন আছে যারা জিন দের মধ্যে সবচেয়ে শক্তিশালী।(মাওলানা রুকন রাইয়ান)
(২)জিন এবং মানুষের মধ্যে শারীরিক সম্পর্ক করা সম্ভব। তবে তাতে পূর্ণতা আসবে না।
(৩)দাজ্জাল ইবলিসের পুত্র নয়।বরং তার বাবা এবং মা মানুষ।এবং তারা জাতীগত ইহুদী থাকবে।
(৪)
আল্লামা এবং রহিমাহুল্লাহ শব্দের অর্থ কি ?
আল্লামা অর্থ অধিক জ্ঞানী।বেশী বেশী জ্ঞান যার রয়েছে,তিনিই আল্লামাহ।
পরিভাষায় আল্লামা বলা হয়ঃ যার কাছে কুরআন হাদীস এবং দুনিয়াবী তথা যাবতীয় জ্ঞান যার থাকবে,সেই আল্লামাহ।
রাহিমাহুল্লাহু অর্থ আল্লাহ তাকে রহম করুক।জীবিত হোক বা মৃত, যে কাউকে রাহিমাহুল্লাহু বলা যাবে।তবে এ শব্দ মৃতদের সাথে ব্যবহারিক ভাবে নির্দিষ্ট হয়ে গেছে।
(৫)
কাফির শব্দটি কুফর থেকে উৎকলিত। ‘কুফর’ শব্দের অর্থ হচ্ছে অস্বীকার করা, অবিশ্বাস করা অথবা গোপন করা।
বাংলাতে ‘কাফের’ শব্দের অর্থ করা হয় অবিশ্বাসী।
সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনী ভাই/বোন!
জ্বীনকে অবিশ্বাস করা মানে কুরআনকে অবিশ্বাস আর কুরআনকে অবিশ্বাস করলে ঈমান থাকবে না।সে হিসেবে জ্বীনকে অস্বীকার করলেও ঈমান থাকবে না।