আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
955 views
in বিবিধ মাস’আলা (Miscellaneous Fiqh) by (22 points)
reopened by
জনাব, অনুগ্রহ করে জানাবেন শিশু বক্তা হয় কেমনে। একজন মানুষকে ইসলামিক  বক্তা হতে হলে  তাকে অবশ্যই কুরআন, হাদিস, ইজমা কিয়াস, এবং এগুলোর আলোকে মাসালা দেওয়ার  জন্য বিশ্লেষণ ক্ষমতা থাকতে হবে। আর এগুলো নিয়ে পড়াশোনা করতে মিনিমাম 16 /17 বছর টাইম লাগে ।আর দেখা যায় যে বাংলাদেশের কিছু কিছু জায়গায় ছোট বাচ্চা ওয়াজ মাহফিল করে। নুরুল ইসলাম বিক্রমপুরী  এই ছোট শিশুর বয়স 9 বছর। আব্দুল্লাহ আল আমিন এর বয়স মনে হয় 9 বছর।  এরা শিশু বক্তা হয় কেমনে???

 আর দেখা যায় মাহফিলের মধ্যে তাদের আশেপাশে অনেক বড় বড় মুহাদ্দিস আলেমগণ বসে থাকেন। তাদের সামনে শিশু বক্তা পায়ের উপর পা তুলে ওয়াজ করে। আর  বিভিন্ন বড় বড়  আলেমকে  নিয়ে আজেবাজে কথা বলে সমালোচনা করে। এটা কত বড় বেয়াদবি??? আরে ধরনের লোক শিশু বক্তা হয়  কেমনে???

1 Answer

0 votes
by (573,870 points)
জবাব
بسم الله الرحمن الرحيم 


সুরা নাহল এর ১২৫ নং আয়াতে মহান আল্লাহ তায়ালা ইরশাদ করেনঃ 

اُدۡعُ اِلٰی سَبِیۡلِ رَبِّکَ بِالۡحِکۡمَۃِ وَ الۡمَوۡعِظَۃِ الۡحَسَنَۃِ وَ جَادِلۡهُمۡ بِالَّتِیۡ هِیَ اَحۡسَنُ ؕ اِنَّ رَبَّکَ هُوَ اَعۡلَمُ بِمَنۡ ضَلَّ عَنۡ سَبِیۡلِهٖ وَ هُوَ اَعۡلَمُ بِالۡمُهۡتَدِیۡنَ ﴿۱۲۵﴾

তুমি তোমরা রবের পথে হিকমত ও সুন্দর উপদেশের মাধ্যমে আহবান কর এবং সুন্দরতম পন্থায় তাদের সাথে বিতর্ক কর। নিশ্চয় একমাত্র তোমার রবই জানেন কে তার পথ থেকে ভ্রষ্ট হয়েছে এবং হিদায়াতপ্রাপ্তদের তিনি খুব ভাল করেই জানেন।

কুরআনুল কারীমে এ আরো বলা হয়েছে- 
(وَلْتَكُنْ مِنْكُمْ أُمَّةٌ يَدْعُونَ إِلَى الْخَيْرِ وَيَأْمُرُونَ بِالْمَعْرُوفِ وَيَنْهَوْنَ عَنِ الْمُنْكَرِ) 

অর্থাৎ তোমাদের মধ্যে একটি দল এমন থাকা উচিত, যারা মানুষকে কল্যাণের প্রতি দাওয়াত দেবে (অর্থাৎ) সৎকাজের আদেশ করবে এবং অসৎকাজের নিষেধ করবে। [আলে-ইমরানঃ ১০৪] 

অন্য আয়াতে আছে- 
(وَمَنْ أَحْسَنُ قَوْلًا مِمَّنْ دَعَا إِلَى اللَّهِ) 

অর্থাৎ কথা-বার্তার দিক দিয়ে সে ব্যক্তির চাইতে উত্তম কে হবে, যে আল্লাহর দিকে দাওয়াত দেয়? [ফুসসিলাতঃ ৩৩]

দাওয়াত দেবার সময় দুটি জিনিসের প্রতি নজর রাখতে হবে। এক, প্রজ্ঞা ও বুদ্ধিমত্তা এবং দুই, সদুপদেশ। এ দুটিই মূলত: দাওয়াতের পদ্ধতি।

এখানে ইসলাম প্রচার ও তাবলীগের মূলনীতি বর্ণিত হয়েছে। অর্থাৎ, তা হবে হিকমত, সদুপদেশ ও নম্রতার উপর ভিত্তিশীল এবং আলোচনার সময় সদ্ভাব বজায় রাখা, কঠোরতা পরিহার করা ও নম্রতার পথ অবলম্বন করা বাঞ্ছনীয়।

সাধারণত কুরআন ও হাদিসের গভীর জ্ঞান থাকা বক্তাদের জন্য জরুরি। কুরআনের সারগর্ভ মূলক আলোচনা করতে পারে সেই যোগ্যতা থাকা।

ওয়াজে অনেক সময় কিসসা কাহিনি বলে থাকেন অনেকেই। অনেক ক্ষেত্রে দেখা যায় অধিকাংশ কিসসা-কাহিনি বানোয়াট। যা মানুষদেরকে হাসানোর জন্য, কাঁদানোর জন্য করে থাকেন। তাও ঠিক নয়। এমন ওয়াজ করা প্রয়োজন, যার মাধ্যমে সমাজের গঠনমূলক পরিবর্তন আসবে৷ ওয়াজ মানে নাসিহাহ। আর এটা এমন হওয়া উচিত যেটা মানুষের ব্যক্তিগত জীবন, পারিবারিক জীবন, সামাজিক জীবন, রাষ্ট্রীয় জীবনে পরিবর্তন আনতে পারবে।
,
বর্তমান সময়ে "শিশু বক্তা" এটি একটি ফিতনা। 
ওয়াজের নামে এমন কিছু ঠিক নয়।

মুফতি ওমর ফারুক সন্ধীপি দাঃবাঃ বলেছেন যে, 
এটা কিয়ামতের আলামত এবং বড় ফিৎনা বলা যায়। যারা এটাকে মুজেজা বা কারামত মনে করেন তারা এর হাকিকত বুঝেন না। ইসলামের চৌদ্দশত বছরের জীবনে এ ধরনের বক্তাদের আবির্ভাব ছিল না। একজন লোক বারো-পনেরো বছর ইলমে দীন হাসিল করেন, বড়দের সোহবতে থাকেন, সুলুকের উপর কাজ করেন আরও অনেক কিছু। একজন ভালো মাপের বক্তা হওয়ার জন্য অনেক মুতাআলা এবং মেহনতের প্রয়োজন।
শিশু বক্তাদের ক্ষেত্রে দেখা যায় বয়স মাত্র  সাত-আট বছর, তাহলে সে কুরআন হাদিস পড়লো কিভাবে? তারা দু’ একটা ওয়াজ মুখস্ত করে তারপর তা শুনিয়ে দেয়। মানুষ হেই হৈ করে৷  এই আরকি৷ এটা ফিৎনা ছাড়া কিছুই না।
,
উত্তম হলো শিশু বক্তা নামের কিছু ইসলামে নেই৷ সাহাবের স্বর্ণযুগে তাবেইন তাবেতাবিইন এর যুগে কোন শিশু বক্তা ছিল না। এটা একটা ভেল্কিবাজি ছাড়া কিছুই না৷ আমাদের এই লাইনে যে যত প্রবীণ হয় তার কথা ততো দামী হয়। বুজুর্গদের  যত বেশি বয়স হয়েছে তার দ্বারা ততো বেশি লাভ হয়েছে।
আল্লাহ তায়ালা হেফাজত করুন।
আমিন। 


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

------------------------
মুফতী ওলি উল্লাহ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

by
Akdom thik bolechen hujur

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...