সুরা নাহল এর ১২৫ নং আয়াতে মহান আল্লাহ তায়ালা ইরশাদ করেনঃ
اُدۡعُ اِلٰی سَبِیۡلِ رَبِّکَ بِالۡحِکۡمَۃِ وَ الۡمَوۡعِظَۃِ الۡحَسَنَۃِ وَ جَادِلۡهُمۡ بِالَّتِیۡ هِیَ اَحۡسَنُ ؕ اِنَّ رَبَّکَ هُوَ اَعۡلَمُ بِمَنۡ ضَلَّ عَنۡ سَبِیۡلِهٖ وَ هُوَ اَعۡلَمُ بِالۡمُهۡتَدِیۡنَ ﴿۱۲۵﴾
তুমি তোমরা রবের পথে হিকমত ও সুন্দর উপদেশের মাধ্যমে আহবান কর এবং সুন্দরতম পন্থায় তাদের সাথে বিতর্ক কর। নিশ্চয় একমাত্র তোমার রবই জানেন কে তার পথ থেকে ভ্রষ্ট হয়েছে এবং হিদায়াতপ্রাপ্তদের তিনি খুব ভাল করেই জানেন।
কুরআনুল কারীমে এ আরো বলা হয়েছে-
(وَلْتَكُنْ مِنْكُمْ أُمَّةٌ يَدْعُونَ إِلَى الْخَيْرِ وَيَأْمُرُونَ بِالْمَعْرُوفِ وَيَنْهَوْنَ عَنِ الْمُنْكَرِ)
অর্থাৎ তোমাদের মধ্যে একটি দল এমন থাকা উচিত, যারা মানুষকে কল্যাণের প্রতি দাওয়াত দেবে (অর্থাৎ) সৎকাজের আদেশ করবে এবং অসৎকাজের নিষেধ করবে। [আলে-ইমরানঃ ১০৪]
অন্য আয়াতে আছে-
(وَمَنْ أَحْسَنُ قَوْلًا مِمَّنْ دَعَا إِلَى اللَّهِ)
অর্থাৎ কথা-বার্তার দিক দিয়ে সে ব্যক্তির চাইতে উত্তম কে হবে, যে আল্লাহর দিকে দাওয়াত দেয়? [ফুসসিলাতঃ ৩৩]
দাওয়াত দেবার সময় দুটি জিনিসের প্রতি নজর রাখতে হবে। এক, প্রজ্ঞা ও বুদ্ধিমত্তা এবং দুই, সদুপদেশ। এ দুটিই মূলত: দাওয়াতের পদ্ধতি।
এখানে ইসলাম প্রচার ও তাবলীগের মূলনীতি বর্ণিত হয়েছে। অর্থাৎ, তা হবে হিকমত, সদুপদেশ ও নম্রতার উপর ভিত্তিশীল এবং আলোচনার সময় সদ্ভাব বজায় রাখা, কঠোরতা পরিহার করা ও নম্রতার পথ অবলম্বন করা বাঞ্ছনীয়।
সাধারণত কুরআন ও হাদিসের গভীর জ্ঞান থাকা বক্তাদের জন্য জরুরি। কুরআনের সারগর্ভ মূলক আলোচনা করতে পারে সেই যোগ্যতা থাকা।
ওয়াজে অনেক সময় কিসসা কাহিনি বলে থাকেন অনেকেই। অনেক ক্ষেত্রে দেখা যায় অধিকাংশ কিসসা-কাহিনি বানোয়াট। যা মানুষদেরকে হাসানোর জন্য, কাঁদানোর জন্য করে থাকেন। তাও ঠিক নয়। এমন ওয়াজ করা প্রয়োজন, যার মাধ্যমে সমাজের গঠনমূলক পরিবর্তন আসবে৷ ওয়াজ মানে নাসিহাহ। আর এটা এমন হওয়া উচিত যেটা মানুষের ব্যক্তিগত জীবন, পারিবারিক জীবন, সামাজিক জীবন, রাষ্ট্রীয় জীবনে পরিবর্তন আনতে পারবে।
,
বর্তমান সময়ে "শিশু বক্তা" এটি একটি ফিতনা।
ওয়াজের নামে এমন কিছু ঠিক নয়।
,
মুফতি ওমর ফারুক সন্ধীপি দাঃবাঃ বলেছেন যে,
এটা কিয়ামতের আলামত এবং বড় ফিৎনা বলা যায়। যারা এটাকে মুজেজা বা কারামত মনে করেন তারা এর হাকিকত বুঝেন না। ইসলামের চৌদ্দশত বছরের জীবনে এ ধরনের বক্তাদের আবির্ভাব ছিল না। একজন লোক বারো-পনেরো বছর ইলমে দীন হাসিল করেন, বড়দের সোহবতে থাকেন, সুলুকের উপর কাজ করেন আরও অনেক কিছু। একজন ভালো মাপের বক্তা হওয়ার জন্য অনেক মুতাআলা এবং মেহনতের প্রয়োজন।
,
শিশু বক্তাদের ক্ষেত্রে দেখা যায় বয়স মাত্র সাত-আট বছর, তাহলে সে কুরআন হাদিস পড়লো কিভাবে? তারা দু’ একটা ওয়াজ মুখস্ত করে তারপর তা শুনিয়ে দেয়। মানুষ হেই হৈ করে৷ এই আরকি৷ এটা ফিৎনা ছাড়া কিছুই না।
,
উত্তম হলো শিশু বক্তা নামের কিছু ইসলামে নেই৷ সাহাবের স্বর্ণযুগে তাবেইন তাবেতাবিইন এর যুগে কোন শিশু বক্তা ছিল না। এটা একটা ভেল্কিবাজি ছাড়া কিছুই না৷ আমাদের এই লাইনে যে যত প্রবীণ হয় তার কথা ততো দামী হয়। বুজুর্গদের যত বেশি বয়স হয়েছে তার দ্বারা ততো বেশি লাভ হয়েছে।