আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
358 views
in পরিবার,বিবাহ,তালাক (Family Life,Marriage & Divorce) by (1 point)
আমি আমার বাবা মায়ের অমতে শুধু ছেলের পরিবারের সম্মতিতে ছেলেকে বিয়ে করি। বিয়ের আগে ছেলেটি আমাকে ওয়াদা করেছিল আমাকে কখনো ছেড়ে যাবে না, কষ্ট দিবে না এবং আমি যদি চাকুরি করি এবং আমার বাবা মা কে সেই অর্থ দেই তাতে সে কোনদিন ই আপত্তি করবে না। আমি নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক। বাংলাদেশের একটি স্বনামধন্য পাবলিক ইউনিভার্সিটি থেকে বিএসসি এন্ড এম এস সি পাশ করি। আমি দরিদ্র ঘরের মেয়ে তাই আমার পড়াশুনার উদ্দেশ্য ছিল চাকুরি করে বাবা মায়ের পাশে দাড়ানো।  এটা তাদেরও প্রত্যাশা ছিল। কিন্তু এই ছেলেটি আমার সব জেনে শুনে আমাকে পছন্দ করে এবং আমি বিবাহ করি। কিন্তু বিয়ের পর থেকে সে আমাকে আমার প্রয়োজনীয় ভরণপোষণ দিত না। আমি তার সাথেই থাকতাম। আমি বাধ্য হয়ে সরকারি চাকুরির পড়াশুনা ছেড়ে প্রাইভেট চাকুরিতে ঢুকে পরি। এদিকে আমার বাবা মাও অনেক অসুস্থ হয়ে পড়েন। বিয়ের আগে যতটা ইসলামিক পথে চলেছি, বিয়ের পর আরো বেশি ইসলামিক ভাবে চলার চেষ্টা করেছি। আমার স্বামী তার দেয়া সব ওয়াদা ভংগ করে আমাকে এখন ককোন অবস্থাতেই চাকুরী করতে দিতে চায় না। আমি অনেক বুঝিয়েছি তাকে। সে মানতে নারাজ। এবং আমাকে অবাধ্য বলে ইসলামের দোহায় ও দিয়েছে। সে আমাকে এই জন্য তালাক দেয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। আমি এই অবস্থায় কি করতে পারি। বিয়ের পর আমি নিজেও অনেক রোগা হয়ে গেছি মানসিক অত্যাচারে। সে ঠিকমত ওষুধ টাও কিনে দেয় না। অসুস্থ মানুষ ভারি কাজ করতে পারি না, সে সামরথ থাকা সত্তেও একটা কাজের লোক রেখে দেয় না। নিজেও কখনো হেল্প করে না। তাই সব পরিস্থিতি বিবেচনা করে চাকুরির সিদ্ধান্ত নিয়েছি। এতে সে আমাকে তালাকের সিদ্ধান্ত নিয়েছে।  আমার এখন কি করনীয়? দয়া করে আমাকে সুপরামর্শ দিয়ে সহায়তা করবেন।  ধন্যবাদ

1 Answer

0 votes
by (574,260 points)
জবাব
بسم الله الرحمن الرحيم 


শরীয়তের বিধান অনুযায়ী স্বামীর অনুমতি  ব্যাতিত স্ত্রীর জন্য নফল রোযা রাখা, নফল নামাজ পড়া,কুরআন তেলাওয়াত করা নিষেধ।   
(নাজমুল ফাতওয়া ৫/৩০৭) 

সুতরাং স্বামীর অনুমতি ব্যাতিত চাকুরী করা জায়েজ নেই।    

হাদীস শরীফে আছে,

إذا دعا الرجل زوجته لحاجته فالتأته، وإن  كانت على التنور

স্বামী যখন নিজ প্রয়োজনে স্ত্রীকে ডাকবে তখন সে যেন তাতে সাড়া দেয়, যদিও সে চুলায় (রান্নার কাজে) থাকে (জামে তিরমিযী, হাদীস : ১১৬০; সুনানে নাসাঈ, হাদীস : ৮৯৭১)।

عَنْ مُعَاذٍ، قَالَ: قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: «لَوْ كُنْتُ آمِرًا أَحَدًا أَنْ يَسْجُدَ لِأَحَدٍ لَأَمَرْتُ النِّسَاءَ أَنْ يَسْجُدْنَ لِأَزْوَاجِهِنَّ»

হযরত মুয়াজ রাঃ থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূল সাঃ ইরশাদ করেছেন, যদি আমি যদি কোন ব্যক্তিকে অন্য কাউকে সেজদা করার আদেশ দিতাম, তাহলে আমি স্ত্রীদের আদেশ দিতাম তাদের স্বামীকে সেজদা দিতে। [কিন্তু সেজদা আল্লাহ ছাড়া কাউকে দেয়া জায়েজ নয়, তাই এ আদেশ দেয়া হয়নি’।

হাদীসটি যেসব কিতাবে বর্ণিত
মুসন্নাফ ইবনে আবী শাইবা, হাদীস নং-৮৭৮৫,
সুনানে দারেমী, হাদীস নং-১৫০৪,
সুনানে আবু দাউদ, হাদীস নং-২১৪০,
মুসনাদুল হারেস, হাদীস নং-৪৯৮,
মাশকিলুল্ আসার, হাদীস নং-১৪৮৭,
মুজামে কাবীর, হাদীস নং-৪৮৬,
মুসতাদরাক আলাস সাহিহাইন, হাদীস নং-২৭৬৩,
সুনানে কুবরা লিলবায়হাকী, হাদীস নং-১৪৭০৫।

আরো জানুনঃ 
,
★সুতরাং প্রশ্নে উল্লেখিত ছুরতে স্বামীর হক বেশি।
এক্ষেতে স্বামীর অনুমতি ব্যাতিত স্ত্রীর জন্য চাকুরী করা জায়েজ নেই।     
,
মেয়েদের তাদের বাবা মাকে দেখা শোনার ব্যাপারে শরয়ী সীমারেখা সম্পর্কে বিস্তারিত জানুনঃ 

★প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি বোন, 
প্রশ্নে উল্লেখিত ছুরতে চাকরি করতে না দেওয়ার অজুহাতে নিজ সিদ্ধান্তেত উপর অটল থেকে বিচ্ছেদের দিকে সম্পর্ককে নিয়ে যাওয়া ইসলাম সমর্থন করেনা।
তাই আপনার উচিত,স্বামী যেহেতু চাকুরির অনুমতি দিবেনা,তাই বিষয় টি মাথা থেকে ঝেড়ে ফেলা।
,
কিন্তু সে যেহেতু বিবাহের পর থেকেই আপনার প্রয়োজনীয় ভরণপোষণ দেয়না,অসুস্থ হলে ঔষধ টাও ক্রয় করে দেয় না। অসুস্থ মানুষ হিসেবে ভারি কাজ করতে পারেননা, সে সামর্থ থাকা সত্তেও একটা কাজের লোক রেখে দেয় না। নিজেও কখনো হেল্প করে না। 
,
সুতরাং এহেন পরিস্থিতিতে পারিবারিক ভাবে বসে মুরব্বিদের মাধ্যমে বিষয়টি সমাধানের চেষ্টা করুন।
,
শত চেষ্টার পরেও সমাধান না হলে আপনারা বিবাহ বিচ্ছেদের দিকে যেতে পারেন।
এক্ষেত্রে তিন তালাক না দিয়ে এক তালাক প্রদানের দিকেই যাওয়া শরীয়ত সম্মত পন্থা।


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

------------------------
মুফতী ওলি উল্লাহ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...