আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
32 views
in ব্যবসা ও চাকুরী (Business & Job) by (21 points)

এক ভাইয়ের পক্ষ থেকে নিচের প্রশ্নটি করছি:

আমি একটি ফ্যাক্টরির অংশীদার এবং ব্যবস্থাপনায় যুক্ত। আমাদের মধ্যে একটি মুশারাকা ভিত্তিক চুক্তি হয়েছিল, যেখানে আমরা সবাই সম্মত হয়েছিলাম যে লাভ-ক্ষতি উভয়ই ভাগ করে নেব, এবং কখনো ব্যবসা বন্ধ হয়ে গেলে সম্পূর্ণ হিসাব বুঝিয়ে দেওয়া হবে এবং যা থাকবে তা ভাগ করে নেওয়া হবে।

প্রায় ১.৫–২ বছর ধরে ফ্যাক্টরির অপারেশন বন্ধ রয়েছে। কারণ হিসাবে বলা যায়:

  • আমরা ভাড়া জায়গায় ছিলাম। স্থানীয় সমস্যার কারণে (চাঁদাবাজি, বিএসবিআই ও শ্রম দপ্তরের অযথা হস্তক্ষেপ) আমরা বাধ্য হয়ে স্থান পরিবর্তনের সিদ্ধান্ত নেই।

  • স্থায়ী ফ্যাক্টরি স্থাপনের উদ্দেশ্যে জমি ক্রয় করে ভবিষ্যতের ব্যবসা চালানোর চিন্তা করি—কারণ ভাড়ার পরিমাণ বাড়ছিল। আমরা ৯০০০ টাকা ভাড়ায় শুরু করলেও তা ২৩,০০০ টাকায় পৌঁছায়। চিন্তা ছিল, ৫ বছরের ভাড়ার টাকা জমি কিনতে ব্যয় করলে ভাল হবে।

  • কিন্তু নির্মাণ কাজের খরচ বেড়ে যাওয়ায় এবং অনেক অংশীদার অর্থ প্রদান না করায় নির্মাণ কাজ মাঝপথে থেমে যায়।

  • অর্থের অভাবে প্রোডাকশন চালু রাখতে না পারায় অতিরিক্ত খরচ হয়, যা সামাল দেওয়া কঠিন হয়ে পড়ে।

  • আমরা কিছু আন্তর্জাতিক অর্ডারের অপেক্ষায় ছিলাম, যাদের কারখানা দেখে আসার সম্ভাবনা ছিল। তাই ন্যূনতম মান বজায় রেখে কাজ চালানোর চেষ্টা করেছি।

এই পরিস্থিতিতে কিছু অংশীদার:

  • আমাদের উপর চাপ দিচ্ছেন তাদের অংশ ফেরত দিতে।

  • বিদ্যমান ক্ষতি (যেমন: পণ্য নষ্ট, নির্মাণ অসমাপ্ত, কর্মচারীদের পাওনা, বাজারে বাকি টাকা উঠানোর সমস্যা, নির্মাণ চলাকালীন খরচ ইত্যাদি) অস্বীকার করছেন।

  • কেউ কেউ দাবি করছেন তাদের পুরো টাকা ফেরত দিতে হবে—এক টাকাও কম নয়।

  • আমরা প্রস্তাব দিয়েছিলাম—ন্যূনতম যারা অংশীদার, তাদের জমি বিক্রির মাধ্যমে টাকা ফেরত দেওয়া হবে, কিন্তু তারা অপমানজনক আচরণ করছেন এবং অল্প সময়ের আল্টিমেটাম দিচ্ছেন ও হুমকি দিচ্ছেন।

প্রশ্ন (শরঈ দৃষ্টিকোণ থেকে):

১. আমরা কি বাধ্য তাদের অংশ ফেরত দিতে?
২. যদি আমরা অংশ ফেরত না দিই (কারণ ক্ষতি হয়েছে), তারা কি লোকসানের দায় এড়াতে পারে?
৩. যারা শুধু লাভ চায় কিন্তু লোকসান নিতে অস্বীকার করে, তাদের এই আচরণ শরঈভাবে বৈধ কি না?
৪. যারা জুলুম, অপমান এবং অশোভন আচরণ করছে, তাদের বিরুদ্ধে শরঈভাবে পদক্ষেপ নেওয়া কি উচিৎ?

1 Answer

0 votes
by (643,950 points)
ওয়া আলাইকুমুস-সালাম ওয়া রাহমাতুল্লাহি ওয়া বারাকাতুহু। 
বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম।
জবাবঃ-
আলহামদুলিল্লাহ!
একাধিক জন মিলে কোনো ব্যবসা শুরু করলে, সেই ব্যবসাকে মুশারাকাহ বলে। লাভ-লোকসানে উভয়ের মধ্যে পার্সেন্টিজ আকারে চুক্তিবদ্ধ থাকতে হবে। কারো জন্য নির্দিষ্ট পরিমাণ লাভের শর্তারোপ করা বা কারো জন্য লসে শরীক না হওয়ার চুক্তি গ্রহণযোগ্য হবে না। এ সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে ক্লিক করুন- https://www.ifatwa.info/110922

قال صاحب الهداية: (وَمِنْ شَرْطِهَا أَنْ يَكُونَ الرِّبْحُ بَيْنَهُمَا مُشَاعًا لَا يَسْتَحِقُّ أَحَدُهُمَا دَرَاهِمَ مُسَمَّاةً) مِنْ الرِّبْحِ لِأَنَّ شَرْطَ ذَلِكَ يَقْطَعُ الشَّرِكَةَ بَيْنَهُمَا وَلَا بُدَّ مِنْهَا كَمَا فِي عَقْدِ الشَّرِكَةِ.(الهداية-3/226)
এ সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে ক্লিক করুন-https://www.ifatwa.info/12438

সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনী ভাই/বোন!
(১) যদি বিল্ডিং নির্মাণের সময় তাদের সম্মতি থাকে, তাহলে এই মুহূর্তে তাদের অংশ ফেরত দেওয়া ওয়াজিব হবে না। 

(২) যদি ব্যবসার শুরুতে চুক্তি থাকে, এবং বিল্ডিং নির্মাণেও তাদের সম্সতি থাকে, তাহলে এখন তারা লোকসানের দায় এড়াতে পারবে না।

(৩) যারা শুধু লাভ চায় কিন্তু লোকসান নিতে অস্বীকার করে, তাদের এই আচরণ শরঈভাবে বৈধ হবে না। 

(৪) যারা জুলুম, অপমান এবং অশোভন আচরণ করছে, তাদের বিরুদ্ধে শরঈভাবে পদক্ষেপ নেওয়া যাবে।

حدثنا الحسن بن علي الخلال حدثنا أبو عامر العقدي حدثنا كثير بن عبد الله بن عمرو بن عوف المزني عن أبيه عن جده أن رسول الله صلى الله عليه وسلم قال الصلح جائز بين المسلمين إلا صلحا حرم حلالا أو أحل حراما والمسلمون على شروطهم إلا شرطا حرم حلالا أو أحل حراما قال أبو عيسى هذا حديث حسن صحيح
রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ মুসলমানদের একে অপরের সাথে সন্ধি স্থাপন করা জায়িয। কিন্তু বৈধকে অবৈধ অথবা অবৈধকে বৈধ করার মত সন্ধি চুক্তি জায়িয নেই। মুসলমানগণ তাদের একে অপরের মধ্যে স্থিরকৃত শর্তাবলী মেনে চলতে বাধ্য। কিন্তু হালালকে হারাম অথবা হারামকে হালাল করার মত শর্ত বৈধ নয় (তা বাতিল বলে গণ্য হবে)।(জা'মে তিরমিযি-১৩৫২, পৃষ্টা-৪৮৭, সুনানু ইবনু মা'জাহ-২৩৫৩)


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

--------------------------------
মুফতী ইমদাদুল হক
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...