আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
59 views
in বিবিধ মাস’আলা (Miscellaneous Fiqh) by (8 points)
আসসালামুয়ালাইকুম
(দয়া করে সম্পূর্ণ পড়বেন খুব অশান্তিতে আছি।)

আমি একজন শ্যামলা বর্ণের মেয়ে।আমার বাসা থেকে একজায়গায় অনলাইন ওয়েবসাইটের মাধ্যমে বিয়ের প্রস্তাব দেওয়া হয় তাদের ডিমান্ডের মধ্যে শ্যামলা ছিল এটা দেখে কিন্তু প্রস্তাব পাওয়ার পরে তারা ডিমান্ড চেঞ্জ করে শুধুমাত্র ফর্সা, উজ্জ্বল ফর্সা করে রিজেক্ট করে দেয়। এরপর একমাস পরে ছেলের বাবা ফোন দিয়ে খুবই আগ্রহ দেখায় খুব অনুনয় বিনয় করে।এরপর দেখাদেখির পরে তাদের সবকিছুই খুব ভালো লাগে কিন্তু গায়ের রং নিয়ে গোষ্ঠীর লোক কনফিউজড। কিন্তু ছেলে বলে তার মেয়ে খুবই পছন্দ হয়েছে শুধুমাত্র তার পরিবারের জন্য আগেরবার পিছিয়ে গেছিলো।এরপর ছেলেপক্ষের সম্মতি এবং আগ্রহে বিয়ের কথা আগায় ্ এবং বিয়ের ডেট একদম ফাইনাল হয়। রিলেটিভ, পাড়া প্রতিবেশী সবাইকে দাওয়াত দিয়ে। মসজিদে বিয়ে হবে তার অ্যারেঞ্জমেন্ট করে হুজুরদের দাওয়াত দিয়ে। এছাড়াও চারদিকে বিভিন্নভাবে বিয়ের সকল অ্যারেঞ্জমেন্ট শুরু হয়ে যায় ইভেন ছেলেকে ট্রাডিশনাল ভাবে যেগুলো কিনে দেওয়া হয় এগুলো তাকে দেখিয়ে তার পছন্দে কেনাও হয়। মেয়েরো সব ধরনের শপিং শেষ হয়ে যায়।(এগুলোর বিবরণ দিলাম কারণ বিয়ের বিষয়টা কতদূর এগিয়ে ছিল পরিস্থিতি বোঝানোর জন্য)


এরপর হঠাৎ বিয়ের দুই সপ্তাহ আগে তারা জানায় বিয়ে ক্যানসেল কারণ মেয়ে শ্যামলা এই বিষয়টা এখন আর ছেলেও মেনে নিতে পারছে না। সে বলে সে নাকি নারীর সৌন্দর্যের মোহ কাটাতে পারছে না সে দীনদারিতা প্রাধান্য দিতে চেয়েছিল কিন্তু এখন ঈমানের দুর্বলতা ফিল করছে।আগে ছেলের বাবা এত আগ্রহ দেখিয়ে অনুনয় বিনয় করে বিয়ে আগালো এরপর শেষ মুহূর্তে বিয়ে ভেঙে অপমান করে একবার মেয়ের বাবার কাছে ক্ষমা পর্যন্ত চায়নি।

অর্থাৎ মেয়ে পক্ষের সহজ সরল বিশ্বাসের সুযোগ নিয়ে ছেলেপক্ষ কয়েকবার করে ঘুরিয়ে পেঁচিয়ে সর্বোচ্চ অপমান করে মেয়ে এবং মেয়ে পক্ষকে। এতে তাৎক্ষণিক আমি মানসিকভাবে হঠাৎ অনেক ভেঙে পড়ি কারণ এর আগেও অনেক জায়গা থেকে পরিপূর্ণ দ্বীনদার পাত্র শুধু এই গায়ের রং রিজন দেখিয়ে রিজেক্ট করেছে তবুও আল্লাহর উপর ভরসা করেছিলাম ।এরপরেও সবকিছু ফাইনাল হয়ে সর্বোচ্চ অপমান এই একই রিজনে। আল্লাহর দান গায়ের রং নিয়ে।

আমি তখন নিজের কন্ট্রোল হারিয়ে ফেলে ছেলের বোনের কাছে বলি
""আমার আল্লাহ আমাকে ভালোবাসেন সুতরাং তিনি কখনো ই তোমার ভাইকে ক্ষমা করবে না। তোমার ভাই অনেক সুযোগ পেয়েও বারবার আমাকে অপমান করে শেষ পর্যন্ত নিজের লাইফে লানত না নিয়ে খান্ত হলো না। এ পৃথিবী সারা জীবন রাজত্ব করার মতো না জাহান্নাম সত্য এবং এই অন্যায় এই মুহূর্ত থেকে মৃত্যুর আগে এবং মৃত্যুর পরেও তোমার ভাইকে পাকড়াও করে বেড়াবে আর এটা আমার অভিশাপ না আল্লাহ আমাকে ভালোবাসেন তাই তিনিই বিচার করবেন তিনি ন্যায়বিচারক কখনো ক্ষমা করবেন না।""


আমার জীবনে আমি কাউকে কখনো অভিশাপ দিইনি সব সময় ক্ষমা করে দেওয়ার চেষ্টা করেছি কিন্তু এই ইনসিডেন্টটা আমাকে খুব ধাক্কা দিয়েছে তাৎক্ষণিক আমি কন্ট্রোল করতে পারিনি। কিন্তু যখন স্বাভাবিক হলাম তখন ওই কথাগুলোর জন্য অনুতপ্ত ছিলাম কিন্তু তাদের কাছে কথাগুলো ফিরেয়ে নেওয়ার মতো পরিস্থিতি ছিল না।
এখন কথা হল আমি অভিশাপ মনে করে দিইনি। আমি এই বিশ্বাসে কথাগুলো বলছিলাম যে আল্লাহ আমাকে ভালবাসেন। আল্লাহর দেওয়া একটা গায়ের রঙের জন্য যারা আমাকে অপমান করল আল্লাহ তাদের ক্ষমা করবেন না। এই বিশ্বাস থেকে বলেছিলাম।
১.এখন প্রশ্ন হলো ঐ কথাগুলো অভিশাপ হয়ে কি আমার নিজের উপরই খাটবে?

২.অনলাইন ওয়েবসাইটের আপডেটের মাধ্যমে দেখলাম উক্ত ছেলেটার ১০ দিনের মাথায় বিয়ে হয়ে গেছে অথচ আমি ওই ঘটনার পর থেকে দোয়া করছিলাম দ্রুততম সময়ের মধ্যে আমার আরো উত্তম জায়গায় বিয়ে হোক কিন্তু আমি মনে ন্যূনতম শান্তি নেই। তাহলে কি আল্লাহ আমার উপর অসন্তুষ্ট? আমার বিয়ের দুআ গুলো ঐ লোকের উপর ফলছে এবং কষ্টের সময় বলে ফেলা কথাগুলো আমার উপর ফলছে?
কিন্তু আমি তো তারপরে অনুতপ্ত এবং আমি মাজলুম ছিলাম।

৩. কিছু উত্তম নাসিহা দিবেন যেনো হতাশা না এসে তাওয়াক্কুল বাড়ে।


বিঃদ্রঃ:যত মানুষ পুরো ঘটনার সাক্ষী কেউ কষ্ট কন্ট্রোল করতে পারেনি এবং ছেলে পক্ষের লোকদের অন্যায়ের শাস্তি না চেয়ে পারেনি।

1 Answer

0 votes
by (643,110 points)

ওয়া আলাইকুমুস-সালাম ওয়া রাহমাতুল্লাহি ওয়া বারাকাতুহু।
বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম।
জবাবঃ-
আলহামদুলিল্লাহ!
আল্লাহ তা'আলা বলেনঃ
ﻗﺎﻝ ﺍﻟﻠﻪ ﺗﻌﺎﻟﻰ : ( ﻟَﺎْ ﻳُﺤِﺐُّ ﺍﻟﻠّﻪُ ﺍﻟْﺠَﻬْﺮَ ﺑِﺎﻟﺴُّﻮﺀِ ﻣِﻦَ ﺍﻟْﻘَﻮْﻝِ ﺇِﻻَّ ﻣَﻦْ ﻇُﻠِﻢَ ﻭَﻛَﺎﻥَ ﺍﻟﻠَّﻪُ ﺳَﻤِﻴْﻌًﺎ ﻋَﻠِﻴْﻤًﺎ )
আল্লাহ কোন মন্দ বিষয় প্রকাশ করা পছন্দ করেন না। তবে কারো প্রতি জুলুম হয়ে থাকলে সে কথা আলাদা। আল্লাহ শ্রবণকারী, বিজ্ঞ। ( সূরা নিসা-১৪৮)

ইবনে ক্বাসির রাহ তার তদীয় তাফসীর গ্রন্থের ১/৫৭২ পৃষ্টায় উক্ত আয়াতের ব্যখ্যা করতে যেয়ে বলেনঃ
" ﻗﺎﻝ ﺍﺑﻦ ﻋﺒﺎﺱٍ ﻓﻲ ﺍﻵﻳﺔ : ﻳﻘﻮﻝ : ﻻ ﻳﺤﺐ ﺍﻟﻠﻪ ﺃﻥ ﻳﺪﻋﻮ ﺃﺣﺪٌ ﻋﻠﻰ ﺃﺣﺪٍ ، ﺇﻻ ﺃﻥ ﻳﻜﻮﻥ ﻣﻈﻠﻮﻣًﺎ ، ﻓﺈﻧّﻪ ﻗﺪ ﺃﺭﺧﺺ ﻟﻪ ﺃﻥ ﻳﺪﻋﻮ ﻋﻠﻰ ﻣﻦ ﻇﻠﻤﻪ ، ﻭﺫﻟﻚ ﻗﻮﻟﻪ : ( ﺇِﻟّﺎ ﻣَﻦ ﻇُﻠِﻢَ ) ، ﻭﺇﻥ ﺻﺒﺮ ﻓﻬﻮ ﺧﻴﺮٌ ﻟﻪ " ﺍﻧﺘﻬﻰ
ইবনে আব্বাস রাঃ উক্ত আয়াতের ব্যখ্যা করতে যেয়ে বলেনঃ মাযলুম ব্যতীত কেউ কারো উপর বদদো'আ করতে আল্লাহ পচন্দ করেননা।তবে সর্বাবস্থায় ধর্য্য ধারণই উত্তম হবে।মাজলুম জালিমের কাছ থেকে সীমালঙ্ঘন ব্যতীত প্রতিশোধগ্রহণ করতে পারবে বা প্রতিশোধের অপেক্ষায় থাকতে পারবে এতে তার কোন প্রকার গুনাহ হবেনা।এ সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে ক্লিক করুন- https://www.ifatwa.info/19877

সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনী ভাই/বোন!
বিয়ের আয়োজনকে বাস্তবায়িত করার লক্ষ্যে ঘটাকরে খরচাপাতি করার পর হুট করে বিয়েকে রিজেক্ট করে দেয়া, স্পষ্টত মেয়ের উপর জুলুম হয়েছে। আর মাজলুম সে আল্লাহর কাছে বিচার দায়ের করতেই পারে। সুতরাং আল্লাহর কাছে বলা আপনার এই কথাগুলো অনুচিত হয়নি। আপনি মাজলুম হিসেবে এই কথাগুলো বলতেই পারেন। এতে কোনো সমস্যা নেই। পাত্র বিয়েকে এভাবে এগিয়ে নেয়ার পর মেয়ের জন্য আগত পরিস্থিতির কথা চিন্তা না করে হঠাৎ বিয়েকে রিজেক্ট করার জন্য অবশ্যই তাকে একদিন না একদিন আফসোস করতেই হবে। হয়তো আল্লাহ তা'আলা আপনার জন্য এর চেয়ে উত্তম ব্যবস্থা করে রেখেছেন। আল্লাহ আপনার কল্যাণ করুক।আমীন।


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

--------------------------------
মুফতী ইমদাদুল হক
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...