আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
51 views
in যাকাত ও সদকাহ (Zakat and Charity) by (7 points)
closed by
আসসালামু আলাইকুম ওয়া রহমাতুল্লাহ।

১.জমি এভাবে নেওয়া আমাদের এই দিকে কট নেওয়া বলে। অর্থাৎ আমি কারো কাছে থেকে ১ বিঘা জমি নিলাম এবং এর বিনিময়ে তাকে ৩ লক্ষ্য টাকা দিলাম। শর্ত হচ্ছে যে আমি সর্বনিম্ন এই জমি ২ বছর আবাদ করে খেতে পারবো। এরপর সুবিধা মতো দুই বছর পর অথবা যতদিন তাঁর সমর্থ হবে না আমাকে টাকা পুনরায় দেওয়ার ততদিন আমি এই জমি আবাদ করবো।যখন ৩ লক্ষ্য টাকা আমাকে দিবে তখন আমি এই জমি পুনরায় তাঁকে দিয়ে দিব।

এখানে থেকে জানার ইচ্ছা যে;

i) এইভাবে জমি নেওয়া কি বৈধ?

ii)যদি বৈধ হয় তাইলে যে তিন লক্ষ টাকা আমি তাঁর কাছে থেকে পাই সেটার যাকাত আমাকে দিতে হবে নাকি?আর এই জমির ফসলের যাকাত ও কি আমাকে দিতে হবে নাকি?

২.ফসলের যাকাত এর ক্ষেত্রে ফসল উঠালেই তো দিতে হবে। কিন্তু ফসলের যাকাত এর নিসাব আছে কি? অর্থাৎ জমি থেকে ফসল উৎপাদন করার পর কতটুকু হলে তাঁর যাকাত দিতে হবে?

৩.রসুনের খেতে রসুন আছে এই ফসল উঠানোর পর কিভাবে তা পরিমাপ করে যাকাত নির্ধারণ করবো? কারণ সাধারণ এই ফসল উঠিয়ে তার সংরক্ষণ করা হয় পরে তা বিক্রি করা হয়।

এখন কথা হচ্ছে ফসল যখন উঠালাম তখন তো আর পরিমাণ করতে পারলাম না।

এখন অনুমানিক পরিমাণ করে যাকাত দেওয়া যাবে? নাকি যখন বিক্রি করবো তখন পরিমাণ করে তাঁর পর যাকাত দিব?

৪.সদকাতুল ফিতরা কি দিয়ে আদায় করবো?টাকা নাকি খাদ্য? ইসলামী ফাউন্ডেশনের উদ্যোগে যা নির্ধারণ করা হয় তা দিলে কি আদায় হবে? সদকাতুল ফিতর কি রোজার মাসে আদায় করা জরুরি?
closed

1 Answer

0 votes
by (606,120 points)
selected by
 
Best answer
জবাবঃ-
وعليكم السلام ورحمة الله وبركاته 
بسم الله الرحمن الرحيم

(০১)
প্রশ্নে উল্লেখিত পদ্ধতিকে কট বা বন্ধক রাখা বলে।
বন্ধক রাখা হয় ঋণ আদায়ের নিশ্চয়তাস্বরূপ। এতে ঋণদাতা নিশ্চিত থাকেন যে ঋণ আদায় না করলেও বন্ধককৃত বস্তু থেকে আদায় করে নেওয়া যাবে। 

পবিত্র কোরআনেও এর নির্দেশ রয়েছে। আল্লাহ তাআলা ইরশাদ করেন, ‘আর যদি তোমরা সফরে থাকো এবং কোনো লেখক না পাও, তাহলে হস্তান্তরিত বন্ধক রাখবে। আর যদি তোমরা একে অপরকে বিশ্বস্ত মনে করো, তবে যাকে বিশ্বস্ত মনে করা হয়, সে যেন স্বীয় আমানত আদায় করে এবং নিজ রব আল্লাহকে ভয় করে।’ (সুরা বাকারা, আয়াত : ২৮৩)
,
বন্ধককৃত বস্তু বন্ধকগ্রহীতার কাছে আমানতস্বরূপ। 

★বন্ধকি জমি থেকে বন্ধকগ্রহীতার কোনো ফায়দা হাসিল করা নাজায়েজ ও হারাম। এমনকি বন্ধকদাতা এর অনুমতি দিলেও পারবে না। কারণ বন্ধকি জমি থেকে বন্ধকগ্রহীতা কোনো ধরনের ফায়দা উপভোগ করা সুদের অন্তর্ভুক্ত, যা হারাম। (বাদায়েউস সানায়ে : ৬/১৪৬)

ইবনে সিরিন (রহ.) সূত্রে বর্ণিত, তিনি বলেন, জনৈক লোক সাহাবি ইবনে মাসউদ (রা.)-এর কাছে জিজ্ঞেস করল, এক ব্যক্তি আমার কাছে একটি ঘোড়া বন্ধক রেখেছে, তা আমি আরোহণের কাজে ব্যবহার করেছি। ইবনে মাসউদ (রা.) বলেন, তুমি আরোহণের মাধ্যমে এর থেকে যে উপকার লাভ করেছ তা সুদ হিসেবে গণ্য হবে। (মুসান্নাফে আব্দুর রাজ্জাক, হাদিস : ১৫০৭১)
,
বিখ্যাত তাবেয়ি ইমাম কাজি শুরাইহ (রহ.)-কে জিজ্ঞেস করা হয়েছিল, সুদ পান করা কিভাবে হয়ে থাকে? তিনি বলেন, বন্ধকগ্রহীতা বন্ধকি গাভির দুধ পান করা সুদ পানের অন্তর্ভুক্ত। (মুসান্নাফে আব্দুর রাজ্জাক, হাদিস : ১৫০৬৯)
,
★সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি ভাই,
(i)
প্রশ্নে উল্লেখিত উভয় পদ্ধতি নাজায়েজ। 
এটি জায়েজ পদ্ধতি নয়।
,     
বৈধ পদ্ধতি সম্পর্কে জানুনঃ 

এ সংক্রান্ত বিস্তারিত মাসয়ালা জানুনঃ 

(ii)
বন্ধকী বস্তুর উপর যাকাত ফরয। তাই ঐ ৩ লক্ষ টাকার যাকাত আপনাকে দিতে হবে।

তবে এখনই দেওয়া আবশ্যক নয়। যখন তা ফিরিয়ে আনবেন তখন বিগত বছরগুলোর যাকাত আদায় করলেই চলবে। 
এক্ষেত্রে টাকা ফিরে যত বছর লাগবে,হিসাব করে প্রত্যেক বছরের যাকাত দিতে হবে।

আর চাইলে বন্ধক থাকা অবস্থায়ই ঐ টাকার যাকাত বছরে বছরে আদায় করে দিতে পারেন। 

(০৩)
বিক্রয় করার পর আপনার যাকাত আদায়ের সময় তার মূল্যের যাকাত আদায় করবেন

(০৪)
মূল্য দ্বারা ফিতরা আদায় করা যায়।
মূল্য দিয়ে ফিতরা আদায় করা উত্তম না মূল জিনিষ দ্বারা ফিতরা আদায় করা উত্তম? এ সম্পর্কে উলামায়ে কেরাম থেকে দু-রকম সিদ্ধান্ত আমরা দেখতে পাই।

সুতরাং আমরা এ সিদ্ধান্তেই পৌছতে সক্ষম হবো যে,মূল্য দ্বারা ফিতরা করলে সেটা আদায় হয়ে যাবে।হ্যা সময়-সুযোগ থাকলে মূল জিনিষ দ্বারাও দিয়ে দিতে পারবেন।উভয়টিই পারবেন।

বিস্তারিত জানুনঃ- 
https://www.ifatwa.info/17199/

ইসলামী ফাউন্ডেশনের উদ্যোগে যা নির্ধারণ করা হয় তা দিলে আদায় হবে।

এ সংক্রান্ত জানুনঃ- 
https://www.ifatwa.info/115526/

★ফিতরা কখন আদায় করতে হবে?

وَإِنْ قَدَّمُوهَا عَلَى يَوْمِ الْفِطْرِ جَازَ،

ঈদের দিন সকাল ফিতরা ওয়াজিব হয়।
ঈদের দিনের পূর্বে ফিতরা দিয়ে দিলে তা আদায় হবে ।
ফাতাওয়ায়ে হিন্দিয়া-১/১৯২

ঈদের সালাতের পূর্বে ফিতরা দেয়া মুস্তাহাব।তবে পরে দিলেও আদায় হবে।(ফাতাওয়ায়ে মাহমুদিয়্যা-০৯/৬৩৯)

বিস্তারিত জানুনঃ 
,
★ঈদুল ফিতরের দিন ঈদের নামাজের পূর্বে সদকাতুল ফিতর দেওয়া মুস্তাহাব, তার আগে দিলেও আদায় হয়ে যাবে। 


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

------------------------
মুফতী ওলি উল্লাহ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

by (7 points)
edited by
বৈধ প্রদ্ধততি সম্পর্কে আরো একটু খোলাসা করলে বুঝতে পারতাম আরকি?
১.লিজ বা ভাড়া নেওয়ার বিষয়টি বুঝতে পেরেছি।
কিন্তু দ্বিতীয় প্রদ্ধতিটা বুঝি নাই।

আরো দুটি প্রশ্ন হচ্ছে:-
১.এক লক্ষ্য টাকা ঋন নিলাম বিনিময়ে বললাম যে পাঁচ বছর এই জমি খেয়ে পরিশোধ হয়ে যাবে এভাবে বন্ধক নেওয়া কি জায়েজ?মানে বছর শেষে জমি ফিরত দিবে অতিরিক্ত টাকা দিতে হবে না।
২.আরকটি প্রদ্ধতি হলো এক লক্ষ্য টাকার বিনিময়ে জমি নিলাম আর এটা নির্ধারণ করলাম যে আমি বন্ধক নিচ্ছি জমি সিকিউরিটি হিসেবে আর আমি ভাড়া বাবদ এর স্বল্প মূল্যে তোমাকে পরিশোধ করবো (বাজার মূল্য না)।আর নির্দিষ্ট সময় পর আমার টাকা ঘুরিয়ে দিলে আমি তোমাকে জমি দিয়ে দিব।আর ভাড়ার টাকা তো আমি দিবোই। এভাবে কি জাহেজ হবে?
 ২.১)স্বল্পমূল্যে না হয়ে যদি ন্যায্য বাজার মূল্য অনুযায়ী ভাড়া বা লিসের টাকা দিলে কি তা বৈধ হবে ?আর আমি নির্দিষ্ট সময় পর আসল টাকা কিন্তু তাঁর কাছে থেকে ফেরত নিব).
by (606,120 points)
দ্বিতীয় পদ্ধতি হলো মূলত সেই জমি ক্রয় বিক্রয়।

 বন্ধকগ্রহীতার কাছে ঋণী ব্যক্তি তার জমিটি বিক্রি করে দেবে।

এই ওয়াদার ওপর যে ঋণ পরিশোধ হওয়ার পর বন্ধকগ্রহীতা আবার জমিটি তার কাছে বিক্রি করে দেবে। 

এ ক্ষেত্রে বন্ধকগ্রহীতার মালিকানায় যত দিন থাকবে সে তা মালিক হিসেবে ভোগ করতে পারবে। 




by (606,120 points)
(০১)
এক্ষেত্রে ঋণগ্রহীতা যদি এক টাকাও পরিশোধ করতে না হয় তাহলে এ সূরটি বৈধ হবে তবে এটি ঋণের চুক্তি করা যাবে না এখানে ভাড়ার চুক্তি করতে হবে যে উক্ত জমি আমি পাঁচ বছর জন্য ভাড়া নিলাম এক লক্ষ টাকা ধার্য করে।

(০২
এক্ষেত্রে উক্ত জমি থেকে উপকৃত হওয়া হারাম।

২.১ 
ঐ টাকার মধ্যে থেকেই ভাড়ার টাকা মাইনাস করা হলে এটি জায়েজ হবে।

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

0 votes
1 answer 410 views
...