ওয়া আলাইকুমুস-সালাম ওয়া রাহমাতুল্লাহি ওয়া বারাকাতুহু।
বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম।
জবাবঃ-
মাকবারা অর্থ কবর। টিভি টিভি চ্যানেল গুলোতে আরাবী কাফেলা নামে যে সব অনুষ্টান সম্প্রচারিত হয়।এতে যে বিভিন্ন নবী রাসূলদের মাখবারা দেখানো হয়। বলতে গেলে এর অধিকাংশই জালিয়াতি মাকবারাহ।কেননা দুই জন নবী ব্যতীত আর কারো মাকবারাহ নির্দিষ্ট নয়।
ইমাম ইবনে তাইমিয়্যাহ রাহ. বলেন,
قال شيخ الإسلام: وَأَمَّا قُبُورُ الْأَنْبِيَاءِ: فَاَلَّذِي اتَّفَقَ عَلَيْهِ الْعُلَمَاءُ هُوَ " قَبْرُ النَّبِيِّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ " فَإِنَّ قَبْرَهُ مَنْقُولٌ بِالتَّوَاتُرِ وَكَذَلِكَ فِي صَاحِبَيْهِ وَأَمَّا " قَبْرُ الْخَلِيلِ " فَأَكْثَرُ النَّاسِ عَلَى أَنَّ هَذَا الْمَكَانَ الْمَعْرُوفَ هُوَ قَبْرُهُ وَأَنْكَرَ ذَلِكَ طَائِفَةٌ وَحُكِيَ الْإِنْكَارُ عَنْ مَالِكٍ وَأَنَّهُ قَالَ لَيْسَ فِي الدُّنْيَا قَبْرُ نَبِيٍّ يُعْرَفُ إلَّا قَبْرُ نَبِيِّنَا صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ لَكِنَّ جُمْهُورَ النَّاسِ عَلَى أَنَّ هَذَا قَبْرُهُ وَدَلَائِلُ ذَلِكَ كَثِيرَةٌ وَكَذَلِكَ هُوَ عِنْدَ أَهْلِ الْكِتَابِ. وَلَكِنْ لَيْسَ فِي مَعْرِفَةِ قُبُورِ الْأَنْبِيَاءِ بِأَعْيَانِهَا فَائِدَةٌ شَرْعِيَّةٌ وَلَيْسَ حِفْظُ ذَلِكَ مِنْ الدِّينِ وَلَوْ كَانَ مِنْ الدِّينِ لَحَفِظَهُ اللَّهُ كَمَا حَفِظَ سَائِرَ الدِّينِ وَذَلِكَ أَنَّ عَامَّةَ مَنْ يَسْأَلُ عَنْ ذَلِكَ إنَّمَا قَصْدُهُ الصَّلَاةُ عِنْدَهَا وَالدُّعَاءُ بِهَا وَنَحْوُ ذَلِكَ مِنْ الْبِدَعِ الْمَنْهِيِّ عَنْهَا. انتهى
নবীদের কবর এর মধ্যে মুহাম্মদ সা. এর কবর সম্পর্কে সমস্ত উলামেয়ে কেরাম একমত।ইহা তাওয়াতুর রেওয়ায়ত তথা সূত্র পরম্পরায় দ্বারা নিশ্চিতরূপে প্রমাণিত।ঠিক তেমনি আবু বকর ও উমর রাযি দ্বয়ের কবরও সুনিশ্চিতভাবে প্রমাণিত।তাছাড়া আল-খলিল নামক এলাকায় ইবরাহিম আ. এর কবর সম্পর্কে অধিকাংশ মানুষ একমত রয়েছে।তবে কিছু লোক এর বিরোধীতাও করে থাকেন।ইমাম মালিক রাহ ইবরাহিম আ.এটাকে অস্বীকার করে থাকেন।ইমাম মালিক রাহ. বলেন, দুনিয়াতে হযরত মুহাম্মদ সা. এর কবর ব্যতীত আর কোনো কবর সুনিশ্চিত ও সুনির্ধারিত নয়।তবে জুমহুর উলামায়ে কেরাম বলেন, আল খালিল নামক এলাকায় অবস্থিত কবরই ইবরাহিম আ. এর কবর।এর স্বপক্ষে অনেক দলীল প্রমাণ রয়েছে।
ঠিকতেমনিভাবে আহলে কিতাব উলামাদের মধ্যেও নবীদের মাকবারাহ নির্দিষ্ট নয়।পূর্ববর্তী নবীদের মাকবারাহ জানার মধ্যে কোনো প্রকার শরয়ী ফায়েদা নেই।এবং এই মাকবারাহ গুলোকে সংরক্ষণ করা বা জানা দ্বীনের কোনো অংশও নয়।যদি দ্বীনের অংশ হত,তাহলে আল্লাহ তা'আলা সংরক্ষণ করে রাখতেন,যেভাবে দ্বীনের অন্যান্য শাখাকে সংরক্ষণ করে রেখেছেন।তাছাড়া নবীর করব প্রচার ও জানা এবং পরিচয় লাভ করার অর্থই হল,কবরের পাশে ইবাদত করা।যা নিষিদ্ধ।
শায়খুল ইসলাম আরো বলে থাকেন,
وقال شيخ الإسلام ابن تيمية رحمه الله :
" وَلَمَّا ظَهَرَ قَبْرُ دَانْيَالَ بتستر كَتَبَ فِيهِ أَبُو مُوسَى إلَى عُمَرَ بْنِ الْخَطَّابِ - رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُ - فَكَتَبَ إلَيْهِ عُمَرُ : إذَا كَانَ بِالنَّهَارِ فَاحْفِرْ ثَلَاثَةَ عَشَرَ قَبْرًا، ثُمَّ ادْفِنْهُ بِاللَّيْلِ فِي وَاحِدٍ مِنْهَا، وَعَفِّرْ قَبْرَهُ، لِئَلَّا يَفْتَتِنَ بِهِ النَّاسُ "
انتهى من "مجموع الفتاوى" (15/ 154)
তাসতুর এলাকায় যখন হযরত দানিয়াল আ. এর জিসম মোবারক পাওয়া গেল,তখন আবু মুসা আশ'আরী রাযি হযরত উমর রাযির কাছে চিঠি লিখে পাঠালেন,হযরত উমর রাযি বললেন,দিনের বেলায় ১৩ মাকবারাহ খুদাই করা হবে।এবং রাত্রের অন্ধকারে এই ১৩টি কবরের কোনো একটিতো কবরে দাফন করে নিবে।যাত'করে লোকজন ফিতনায় পতিত না হয়।(মাজমুউল ফাতাওয়া-১৫/১৫৪)
সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি ভাই/বোন!
যেহেতু আল্লাহর রাসূল ব্যতীত কারো মাকবারাহ নির্দিষ্ট নয়।তাই এগুলোকে নিশ্চিতরূপে বিশ্বাস করা উচিৎ হবে না।