আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

+2 votes
1,700 views
in ঈমান ও বিশ্বাস (Faith and Belief) by (16 points)

আমি একজন ভেরিকোসিল এর রোগী। এই রোগের সার্জারি ব্যতীত কোনো এফেক্টিভ চিকিৎসা নেই অ্যালোপ্যাথি তে। অ্যালোপ্যাথিক সরকারি ডাক্তারই আমাকে সার্জারি করাতে নিষেধ করেছেন। ঢাকা মেডিকেল এর ইউরোলজিস্ট বলেছিলেন সার্জারি করালে ভবিষ্যতে সন্তান নিতে সমস্যা হতে পারে। আবার সার্জারির সফলতার হারের ব্যাপারে গ্যারান্টি নেই। অনেকের সার্জারি করার পর ফিরে আসে। আমি হোমিওপ্যাথিও খেয়েছি এর জন্য। কিন্তু কাজ হয়নি।

আমার শিরায় সমস্যার কারণে প্রচণ্ড ব্যথা হয় অণ্ডকোষ এ। মাঝেমাঝে হাঁটতে অসুবিধা হয়। আমি এর জন্য ব্যথা কমাতে ন্যাচরাল উপায় খুঁজেছিলাম। নেট এ পা উপরে করে ঢেলান দিয়ে শুয়ে থাকার একটা ব্যায়াম দেখেছিলাম। সেটা করার পর ব্যথা কমেছিল। কিন্তু পরে জানতে পারি এটা এক ধরনের ইয়োগা আর ইয়োগা নাকি হারাম ও এর দ্বারা শিরক হতে পারে (জাকির নায়েক ও অন্যান্য অনেক স্কলার এর কথানুযায়ী‌)। এখন আমি এটা জানার পর ওই পজিশন এ আর থাকিনি। কিন্তু ব্যথার কারণে পা চেয়ার উপরে ঢালুভাবে রাখি যাতে শিরার দূষিত রক্ত হার্ট এ ফিরে ব্যথা কমে। এমতাবস্থায় আমি নেট ঘেটে দেখেছি এটা কোনো ইয়োগা পোজ এর সাথে মিলে কিনা। সাদৃশ্য পাইনি। তবে কিছুটা সাদৃশ্য আছে। আমি যেহেতু অন্য কোনো পথ পাচ্ছি না তাহলে এমতাবস্থায় কি এটা করা জায়েজ হবে?  বিস্তারিত জানাবেন। 

1 Answer

0 votes
by (565,890 points)
জবাব
بسم الله الرحمن الرحيم 


মেডিটেশন (meditation), যোগ ব্যায়াম (yoga) মূলতঃ একটি শয়তানী ফাঁদ; যা নিঃসন্দেহে হারাম।

মানুষকে আল্লাহর ইবাদত থেকে ফিরিয়ে কথিত অন্তর্গুরুর ইবাদতে লিপ্ত করার অভিনব প্রতারণার নাম হল কোয়ান্টাম মেথড। হাজার বছর পূর্বে ফেলে আসা হিন্দু বৌদ্ধ খৃষ্টান পাদ্রী ও যোগী সন্ন্যাসীদের যোগ-সাধনার আধুনিক কলা-কৌশলের নাম দেওয়া হয়েছে “মেডিটেশন”। হতাশাগ্রস্ত মানুষকে সাময়িক প্রশান্তির সাগরে ভাসিয়ে এক কল্পিত দেহ ভ্রমণের নাম দেওয়া হয়েছে Science of Living বা জীবন-যাপনের বিজ্ঞান। 

যারা এসব মেডিটেশন করে,তারা প্রত্যেকের ধর্মবিশ্বাসকে শ্রদ্ধা করে। তাদের মতে, “সকল ধর্মই সঠিক”। তারা বিশ্বাস করে মেডিটেশনই  হচ্ছে নতুন সহস্রাব্দে আধুনিক মানুষের জীবন যাপনের বিজ্ঞান। 

তাদের প্রচার অনুযায়ী বাংলাদেশে ফলিত মনোবিজ্ঞানের পথিকৃৎ এবং আত্ম-উন্নয়নে ধ্যান পদ্ধতির প্রবর্তক প্রফেসর এম. ইউ. আহমাদ নাকি ক্লিনিক্যালি ডেড হওয়ার পরেও পুনরায় জীবন লাভ করেন শুধু “তাঁকে বাঁচতে হবে, তিনি ছাড়া দেশে নির্ভরযোগ্য মনোচিকিৎসক নেই” তাঁর এই দৃঢ় বিশ্বাসের জোরে। [মহাজাতক, কোয়ান্টাম টেক্সট বুক, জানুয়ারি ২০০০, পৃষ্ঠা ২২-২৪] অর্থাৎ হায়াত মউতের মালিক তিনি নিজেই। (নাউযুবিল্লাহ)

এটি মূলতঃ হাজার বছর পূর্বে ফেলে আসা হিন্দু-বৌদ্ধ-খৃষ্টান পাদ্রী ও যোগী-সন্ন্যাসীদের যোগ-সাধনার আধুনিক কলা-কৌশলের নাম। (yoga and breathing by Muhammad ‘Abd al-Fattaah Faheem p. 19)

অথচ রাসূলুল্লাহ  ﷺ বলেছেন,

 لَيْسَ مِنَّا مَنْ تَشَبَّهَ بِغَيْرِنَا، لَا تَشَبَّهُوا بِاليَهُودِ وَلَا بِالنَّصَارَى 

যে অন্য সম্প্রদায়ের সাথে সাদৃশ্য বা মিল রেখে চলে, সে আমাদের দলভুক্ত নয়, তোমরা ইয়াহূদী ও নাসারাদের সাথে সাদৃশ্য রেখো না। (তিরমিযী ২৬৯৫)

মেডিটেশনের লক্ষ্য হ’ল অন্তর্গুরুকে পাওয়া। তাদের ভাষায়, ‘মেডিটেশনের মাধ্যমেই আপনি সংযোগ সাধন করতে পারেন আপনার  ‘অন্তরের আমি’র  সাথে, আপনার শক্তির মূল উৎসের সাথে।’

মেডিটেশনের এই দৃষ্টিভঙ্গি ইসলামের দৃষ্টিতে মারাত্মক অপরাধ। মূলতঃ ‘অন্তরের আমি’ হল নফসে আম্মারা; যার অনুসরণের পরিণতি হল জাহান্নাম। এদেরকে লক্ষ্য করেই আল্লাহ বলেন,

 أَرَأَيْتَ مَنِ اتَّخَذَ إِلَٰهَهُ هَوَاهُ أَفَأَنتَ تَكُونُ عَلَيْهِ وَكِيلًا-أَمْ تَحْسَبُ أَنَّ أَكْثَرَهُمْ يَسْمَعُونَ أَوْ يَعْقِلُونَ ۚ إِنْ هُمْ إِلَّا كَالْأَنْعَامِ ۖ بَلْ هُمْ أَضَلُّ سَبِيلًا

আপনি কি দেখেছেন ঐ ব্যক্তিকে, যে তার প্রবৃত্তিকে উপাস্যরূপে গ্রহণ করে? তবুও কি আপনি তার যিম্মাদার হবেন? আপনি কি মনে করেন যে, তাদের অধিকাংশ শোনে অথবা বোঝে ? তারা তো চতুস্পদ জন্তুর মত; বরং আরও পথভ্রান্ত। (সূরা ফুরক্বান ৪৩-৪৪)

★প্রশ্নে উল্লেখিত ছুরতে আপনার জন্য উক্ত ব্যায়াম করতে শরীয়তের দৃষ্টিকোন থেকে কোনো সমস্যা নেই।  
তবে তাদের ধ্যান ধারণা নিজের ভিতরে আনবেন না  এবং তাদের অনুসরণ এর চিন্তাও মাথায় আনবেন না।

বিস্তারিত জানুনঃ 


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

------------------------
মুফতী ওলি উল্লাহ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...