আমি জাহেলিয়াত থেকে দ্বীনের ফেরা একজন মানুষ। তবে আমার এই দ্বীনের পথে ধাবিত হয় একজনের উছিলায়। আমার বয়স যখন ১৯ তখন একজনের সাথে পরিচয় হয়। আমি ঢাকা আর সে সিলেটে থাকে। সে কিছুটা ধার্মিক মাইন্ডের ছিল। আমি তার সহবতে থেকে পর্দা -নামাজ শুরু করি৷ এরপর আমরা অনলাইনে বিয়ে করি। (তার কিছুটা জ্বীনের সমস্যা আছে) আমার সাথে তার কুফু মিলেনা।সে গরিব।
আমাদের ৫বছরের সম্পর্ক। এরপর, আমি জেনারেলে ভার্সিটিতে ভর্তি না হয়ে মাদ্রাসায় switch করি।
এরপর গত বছর একটা কালো যাদু practice করে এমন ফামিলির একটা মহিলার জন্য সব সমস্যা শুরু হয়।
অই মহিলা আমার মাদ্রাসার ক্লাসমেটের মা। অই মেয়ের বিয়ে বদ দ্বীন ছেলের সাথে fix করতে চেয়েছিল তার লোভী মা। আমি অই মেয়েকে বিয়ে থেকে বারণ করি। এরপর সব সমস্যা শুরু হয়। অই মহিলা শুধু মাত্র আমার নাম জানে। আমাকে দেখেও নাই, কথাও হয় নাই। সে আমাকে তার বাসায় নিতে চায়, তার চেস্টা ব্যর্থ হলে সে আমার অনুপস্থিতিতে আমার মা কে ফোন দিয়ে বলে:- আমি মাদ্রাসা বাদ দিয়ে কারো সাথে ঘুরে বেড়াই কিনা!!এভাবে আমার মা বোনের মনে সন্দেহ দেয়।
ওই মহিলা বলে হুজুররা কম বেতন পায়। এদের কাছে বিয়ে দিব কি ভিক্ষা করার জন্য?
এই ঘটনার পরেই, আমি পরিবারের কাছে ধরা পড়ি।
অই ছেলেকে আমার পরিবার মেনে নিবেনা। কারণ,টাকা কম। এরপর, আমাদের মাঝে কিছুটা মনমালিন্য চলছিল। এক পর্যায়ে,জানতে পারি আমাদের বিয়ে সহিহ হয় নি। সাক্ষী ১ জন ছিল তাই৷
এরপর মাঝখানে আরও ঘটনা ঘটে।
আমরা আবারও বিয়ের জন্য প্রস্তুত হই৷ তার দুইদিন আগে, আমি আবারও পরিবারের কাছে একটা বিষয়ে ধরা পড়ি। আমাকে কুরআন ধরে উনারা কসম করায় যেন ওই ছেলেলে ভুলে যাই। এরপর আমি বিয়ে করিনি।
এতে সে বলে, যেহেতু আমাদের সম্পর্কে কোন উন্নতি নেই। কুফু মিলেনা। বিয়ের পর মানুষ পরিবর্তন হতে পারে। তুমি পালিয়ে আসলে, পায়ের নিচে মাটি থাকবেনা। আমি মাসনা করলে তুমি প্রতিবাদও করতে পারবে না। তখন কি করবা?
কিন্তু আমার মন তাকে ছাড়তে চায়না। এরপর দুইজন ইস্তেখারা করি। বিয়ের জন্য অগ্রগামী হওয়াতেই ২ জনের মনস্থির হয়। এরপর আমি আরও ২ বার ইস্তেখারা করি(মোট-৩ বার)।
২য় বার, আমি ইস্তেখারা করার পর, ২জন রমজান মাসে বিয়ের সিদ্ধান্ত নেই।
এর আরেকটা ঝামেলা হয়। তার জ্বীনের সমস্যা হয় এটার জন্য শারীরিক -মানসিক সমস্যা হয়।
এরপর আমি ৩য় বারের মত ইস্তেখারা করি। কিছুতেই মনস্থির হচ্ছিলো না। আমি আল্লাহর কাছে এই দোয়া করেছি যে, যেই সিদ্ধান্ত নিলে আমি দ্বীনের পথে অটল অবিচল থাকব সেটাই যেন নেওয়া হয়।
এরপর আমি আমার ফ্রেন্ডকে সব ঘটনা +ইস্তেখারা করতে বলি। সে ইস্তেখারা করার পর, বিয়ের জন্য রাজি হতে বলে।
এরপর দিন তার ভাইয়ের ফোন আসে। সে বলে, হুজুররা ছেলের জন্য পাত্রী দেখছে। ছেলের শারীরিক কন্ডিশন ভালো না। ওর ভাই কুফুর বিষয় চিন্তা করে সিদ্ধান্ত নিতে বলে আমি রাজি কিনা? এরপর আমি ফ্রেন্ডের ইস্তেখারা আর নিজের করা ৩য় বারের ইস্তেখারা অনুযায়ী আমি রাজি এটা জানাই।
এরপর ওই ছেলে আর তার ভাই এলাকার তাবলীগের সাথী ভাই আর কিছু হুজুরদের সাথে মাশওয়ারা করে। তারা বিয়ে করার জন্য সিদ্ধান্ত জানায়।৷ কুফুর ব্যাপারটাও বুঝায়।
এখন আবার আমার সেই ফ্রেন্ড আবার দ্বিধায় পড়ে যায়৷ ফ্রেন্ড এখন বলছে যে, ছেলে যেহেতু গরিব সে আমাকে মাদ্রাসায় পড়াতে পারবেনা। আর এটা হয়তো আমার ঈমানের পরীক্ষা। সে আরও বলে,
"আমি এই সিদ্ধান্ত দ্বারা আল্লাহর দিকে তথা মাদ্রাসার জন্য ওকে ছাড়ি নাকি নিজের তাকদীর নিজে ঠিক করে অর্থাৎ ওকে বিয়ে করে মাদ্রাসার পড়া বন্ধ করে দেই? এটাই, আল্লাহ নাকি এটাই দেখতে চায়।"
আমি আল্লাহকে সর্বদা এটাই বলেছি,আল্লাহ আমার কল্যাণের জন্য যেটা ভালো হয় সেই পথে আমাকে পরিচালনা করুন। এই নিয়ে মোট ৩ বার ইস্তেখারা করলাম।
বর্তমানে সে অনেকটাই মানসিকভাবে সুস্থ। কিন্তু জ্বীনের জন্য শারীরিকভাবে একটু দুর্বল।
এখন এই নির্দিষ্ট ব্যক্তিকে নিয়ে কি আদৌউ আমাদের ইস্তেখারা ঠিক হয়েছে? এর মাধ্যমে কি আমি নিজের তাকদীর নিজে বেছে নিয়েছি?