আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
66 views
in সাওম (Fasting) by (12 points)
আসসালামু আলাইকুম ওয়া রাহমাতুল্লাহি ওয়া বারাকাতুহ। নিচের প্রশ্নগুলোর জবাব জানালে উপকার হতো মুহতারাম।

. নারীরা বাসার মধ্যে শেষ দশকে ২/৩ দিনের জন্য ইতিকাফে বসতে পারবে কিনা? এটা কি সুন্নাহ ইতিকাফ হবে নাকি নফল ইতিকাফ?

. ইতিকাফের নিয়তে একটা রুমের বিছানা + ফ্লোর মিলে ইতিকাফের স্থান নির্দিষ্ট করা যাবে কিনা?
. ইতিকাফ ভেঙে ফেললে সেটার কাফফারা কি হবে? যেমন - আমি এত দিনের জন্য ইতিকাফ করব। কিন্তু দেখা গেল এর আগেই বের হয়ে গেলাম। এইক্ষেত্রে।

. বাসার মধ্যে ইতিকাফে বসলে পাশের রুম থেকে খাবার আনা যাবে কিনা। ওয়াশরুম ও অন্যরুমে।
. দ্বীন পালন করতে যেয়ে আত্মীয়দের মধ্যে থেকে অনেকে বৈরী, আক্রমণাত্মক আচরণ করেন। তাদের সাথে আমার আচরণ কেমন হওয়া উচিত। নিজের ইসলাহের জন্য কথা বলা অফ রাখলে কি গুনাহ হবে...

জাযাকাল্লাহু খাইরন

1 Answer

0 votes
by (70,170 points)

ওয়া আলাইকুমুস-সালাম ওয়া রাহমাতুল্লাহি ওয়া বারাকাতুহু

বিসমিল্লাহির রহমানির রহীম

জবাব:-

হাদীস শরীফে এসেছেঃ 

হযরত আয়েশা রাযি থেকে বর্ণিত,

ﻋَﻦْ ﻋَﺎﺋِﺸَﺔَ ﺭَﺿِﻲَ ﺍﻟﻠَّﻪُ ﻋَﻨْﻬَﺎ ﺯَﻭْﺝِ ﺍﻟﻨَّﺒِﻲِّ ﺻَﻠَّﻰ ﺍﻟﻠَّﻪُ ﻋَﻠَﻴْﻪِ ﻭَﺳَﻠَّﻢَ ﺃَﻥَّ ﺍﻟﻨَّﺒِﻲَّ ﺻَﻠَّﻰ ﺍﻟﻠَّﻪُ ﻋَﻠَﻴْﻪِ ﻭَﺳَﻠَّﻢَ ﻛَﺎﻥَ ﻳَﻌْﺘَﻜِﻒُ ﺍﻟْﻌَﺸْﺮَ ﺍﻷَﻭَﺍﺧِﺮَ ﻣِﻦْ ﺭَﻣَﻀَﺎﻥَ ﺣَﺘَّﻰ ﺗَﻮَﻓَّﺎﻩُ ﺍﻟﻠَّﻪُ ، ﺛُﻢَّ ﺍﻋْﺘَﻜَﻒَ ﺃَﺯْﻭَﺍﺟُﻪُ ﻣِﻦْ ﺑَﻌْﺪِﻩِ

রাসূলুল্লাহ সাঃ ইহকাল ত্যাগ করার আগ পর্যন্ত রমজানের শেষ দশে এ'তেক্বাফ করতেন। অতঃপর উনার বিবিগণ এ'তেক্বাফ করেন। (সহীহ বোখারী-২০২৬, সহীহ মুসলিম-১১৭২)

মহিলারা ঘরের মসজিদে (নামাজ পড়ার স্থানে) বা একটি জায়গাকে নির্দিষ্ট করে এ'তেক্বাফে বসবে। তবে সাবধান! পরবর্তীতে আর স্থান পরিবর্তন করা যাবে না।মহিলাদের জন্য শর্ত হল,হায়েয নেফাস থেকে পবিত্র থাকা।এ'তেক্বাফের মধ্যখানে যদি হায়েয চলে আসে, তাহলে এ'তেক্বাফ ফাসিদ হয়ে যাবে। কেননা তখন তো উনি আর রোযা রাখতে পারবেন না।

পরবর্তীতে কমপক্ষে একদিন রোযা সহ এ'তেক্বাফকে কাযা করে নেবেন।সম্ভব হলে অবশিষ্ট সকল দিনের এ'তেক্বাফকে রোযাসহ কাযা করে নিতেও পারেন। স্বভাবত মানুষের যে সমস্ত প্রয়োজন থাকে সেসব প্রয়োজনের স্বার্থে তিনি এ'তেক্বাফ থেকে বের হতে পারবেন। প্রস্রাব পায়খানা,ওজু ফরয গোসল ইত্যাদির জন্য।তবে শীতিলতা অর্জনের নিমিত্তে উনি গোসলে যেতে পারবেন না।

খানা পাকানোর জন্য উনি পাকঘরে যেতে পারবেন না।তবে প্রয়োজনে তিনি এ'তেক্বাফ স্থলে খানাকে রান্না করে নিতে পারবেন। (ফাতাওয়ায়ে মাহমুদিয়্যাহ-১০/২৫১)

বিস্তারিত জানুনঃ  https://ifatwa.info/1275/

সুতরাং আপনি ঘরের  নামাজ পড়ার স্থানে বা একটি জায়গাকে নির্দিষ্ট করে এ'তেক্বাফে বসবেন।

এক্ষেত্রে সেখানে প্রবেশ কালে ইতেকাফের নিয়ত করবেন। ঐ স্থান থেকেই যে কাজ গুলি করা যায়, সেগুলো করতে পারবেন।

ঐ স্থান কোনোভাবেই ত্যাগ করা যাবেনা। শুধু মাত্র পায়খানা পেশাব করার জন্য বাহিরে (টয়লেটে) যেতে পারবেন। দৈনন্দিনের গোসলের জন্য যেতে পারবেননা। যদি গোসল করেন, তাহলে এক্ষেত্রে আপনি ইস্তেঞ্জা (পেশাব/পায়খানা) করার জন্য বের হওয়ার সময় গোসলের কাপড় ইত্যাদি নিয়ে এক বারে বের হবেন,যাতে আবার সেই স্থানে আসতে না হয়। দ্রুত ইস্তেঞ্জা গোসল করে চলে আসবেন। উক্ত স্থান থেকে বাহিরে গিয়ে কাহারো সাথে কোনো কথা বলবেননা।

উক্ত স্থানে থেকেও অহেতুক কাজ ও কথা থেকে বিরত থাকার চেষ্টা করবেন। সর্বদায় কুরআন তিলাওয়াত, যিকির আযকার,নামাজ ইত্যাদিতে মগ্ন থাকবেন।    

রমজানের শেষ দশকে দশদিনের নিচে ইতেকাফ করলে সেটি নফল ইতেকাফ বলে গন্য হবে।

আরো জানুনঃ https://ifatwa.info/16004/

প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি ভাই/বোন!

আপনি উক্ত বেডরুমে ইতিকাফ করতে পারবেন। তবে যে ঘরে ইতিকাফে বসে  নির্জনতা অবলম্বন করা যায়, সেই ঘরে ইতিকাফ করাই ভালো হবে। ইতিকাফরত অবস্থায় ইতেকাফের স্থান থেকে ঘরের লোকদের সাথে প্রয়োজনে কথাবার্তা বলা যাবে। কোনো সমস্যা নেই। তবে অহেতুক ও অপ্রয়োজনীয়  কথাবার্তা বলা থেকে বিরত থাকার চেষ্টা থাকতে হবে। বেশি বেশি ইবাদত,কুরআন তিলাওয়াত যিকির আযকারে লিপ্ত হওয়া চাই। 

খাবার বা পানি আনার জন্য অন্য রুমে বা টয়লেটে যাওয়া যাবে, যেহেতু এটা হাজত। তবে তথায় অনর্থক অবস্থান করা যাবে না। করলে ইতিকাফ ফাসিদ হয়ে যাবে।

আত্নীয়দের মধ্যে যাদের আচরণ নেগিটিভ তাদের সাথে সবর ও হেকমতের সাথে আচরণ করতে হবে। এসম্পর্কে আরো জানুন: https://ifatwa.info/73950/


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

--------------------------------
মুফতী মুজিবুর রহমান
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

0 votes
1 answer 368 views
...