আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
28 views
in পবিত্রতা (Purity) by (22 points)
edited by
আসসালামু আলাইকুম

আমি একটি ব্যাচেলর বাসায় থাকি। বেশ কিছুদিন ধরে তিন বছর আগের একটি ঘটনা নিয়ে বেশ চিন্তিত আছি। তিন বছর আগে এক বৃষ্টির দিনে বৃষ্টি শেষ হয়ে যাওয়ার পর আমার বাসার কিছু বড় ভাই আমার ফুটবল নিয়ে খেলতে বের হন কিন্তু আমি সেদিন বাসাতে ছিলাম না । বাসায় এসে শুনি যে খেলার মধ্যে এক সময় একটা কুকুর যে কুকুরটা আমাদের বাসার নিচেই থাকে সেই কুকুরটা খুব সম্ভবত (যদিও আমি নিশ্চিত না কারণ আমি ছিলাম না) বলটি ধরতে যাই বা বলের সংস্পর্শে আসে। বর্তমানে এখন এসে বারবার আমার মাথায় একটা প্রশ্নই ঘুরপাক খাচ্ছে যে ওই ফুটবলটির মাধ্যমে আমার বাসার প্রায় সব জিনিস নাপাক হয়ে গিয়েছে। আমার যতদূর মনে পড়ে খেলে আসার পর এক বড় ভাই আন্য আরেক বড় ভাইকে বলেছিল বলটি ধোয়ার জন্য কিন্তু উনি বলটি পরিষ্কার করেছিল কিনা আমি নিশ্চিত না এবং উনি বর্তমানে আমাদের সাথে থাকে না এবং এত আগের কথা তার মনে থাকারও কথা না। এজন্য আমি অন্য  একজন বড় ভাই যিনি ওইদিন খেলেছিলেন তাকে এ ব্যাপারে জিজ্ঞেস করি কিন্তু উনি বলটি কুকুরের সংস্পর্শে এসেছে এই ব্যাপারে কিছুটা নিশ্চিত হলেও কামড়েছে কিনা এই ব্যাপারে নিশ্চিত না বা এত বড় বল কামড়াতে পারার কথাও না।

ওই বল দিয়ে আবারো খেলা হয়েছিল তবে আমি বলটি ডিটারজেন্ট দিয়ে ধুয়ে নিয়েছিলাম তবে সেটি খেলার আগে ধুয়েছিলাম নাকি পরে সেটা নিশ্চিত হতে পারছি না। তবে বেশি মনে হচ্ছে যে আমি খেলার আগেই বলটি ধুয়ে নিয়েছিলাম।

(যতদূর মনে পড়ে ওই সময় নাপাকি নিয়ে সচেতন থাকলেও কুকুরের নাপাকি নিয়ে তেমন কিছু জানতাম না বা মনে করতাম না যেমনটা এখন করি। ওই সময় এমন কিছু ঘটেছিল বা এমন কোন যুক্তি মাথায় এসেছিল যার কারণে ভেবেছিলাম এই ঘটনাতে কোন সমস্যা নেই, তবে এখন তা মনে নেই। )

মূলত সে সময় এসব বিষয় নিয়ে এত কিছু ভাবি নি। তিন বছর পর এসে আমার মনে হচ্ছে যে এই ঘটনার মাধ্যমে সবকিছুই হয়তো নাপাক হয়ে আছে বা আমি যে যে কাজ করেছি, যা যা স্পর্শ করেছি তার সাথে কোন না কোন ভাবে নাপাক এর সংশ্লিষ্টতা রয়েছে। আমি নাপাক নিয়ে সেই সময়ও সচেতন থাকতাম এবং এখনো সচেতন থাকি। তবে এই ঘটনাটা আমাকে অত্যন্ত মানসিকভাবে চিন্তিত করছে, সব সময় মনে হয় আমি যেন নাপাক বা অপবিত্রতার সাথেই জীবন যাপন করছি। ইবাদতে মনোযোগ দিতে পারছিনা। এতদিন পরে এসে এই বিষয়ে নিশ্চিত হওয়ারও কোন পথ পাচ্ছি না। এটা কি শয়তানের  ওয়াসওয়াসা নাকি অন্য বিষয় আমি বুঝতে পারছি না। এখন এই পরিস্থিতি থেকে পরিত্রাণের উপায় কি দয়া করে আমাকে জানাবেন। <!--/data/user/0/com.samsung.android.app.notes/files/clipdata/clipdata_bodytext_250227_040235_566.sdocx-->

1 Answer

0 votes
by (68,400 points)

ওয়া আলাইকুমুস সালাম ওয়া রাহমাতুল্লাহি ওয়া বারাকাতুহু।

বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম।

জবাবঃ

https://ifatwa.info/71248/ নং ফাতওয়ায় উল্লেখ রয়েছে যে,

শরীয়তে শুধুমাত্র সন্দেহের ভিত্তিতে কোনো পাক জিনিসকে নাপাক বলার সুযোগ নেই।

যা নিম্নোক্ত হাদীস থেকে প্রমানিত হয়।

হাদীস শরীফে এসেছেঃ

عَنْ سَعِيدِ بْنِ الْمُسَيَّبِ، وَعَبَّادِ بْنِ تَمِيمٍ، عَنْ عَمِّهِ، قَالَ: شُكِيَ إِلَى النَّبِيِّ صلي الله عليه وسلم الرَّجُلُ يَجِدُ الشَّىْءَ فِي الصَّلَاةِ حَتَّى يُخَيَّلَ إِلَيْهِ فَقَالَ " لَا يَنْفَتِلُ حَتَّى يَسْمَعَ صَوْتًا أَوْ يَجِدَ رِيحًا " . - صحيح :

আব্বাদ ইবনু তামীম হতে তাঁর চাচার সূত্রে বর্ণিত। তিনি বলেন, এক ব্যক্তি নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর কাছে অভিযোগ করল যে, কখনো সলাতের মধ্যে কিছু একটা সন্দেহ হয় যে, তার অযু হয়ত নষ্ট হয়ে গেছে। তিনি বললেন, (বায়ু নির্গত হওয়ার) শব্দ না শুনা কিংবা গন্ধ না পাওয়া পর্যন্ত সলাত ছাড়বে না।

বুখারী (অধ্যায়ঃ উযু, অনুঃ নিশ্চিত না হওয়া পর্যন্ত সন্দেহ বশতঃ উযু করতে হবে না, হাঃ ১৩৭), মুসলিম ৩৬২ (অধ্যায়ঃ হায়িয, অনুঃ পবিত্রতার ব্যাপারে নিশ্চিত হওয়ার পর উযু নষ্ট হওয়ার সন্দেহ হলেও ঐ অবস্থায় সালাত আদায় করা জায়িয,মিশকাতুল মাসাবিহ ৩০৬)

,

এই হাদীসের ব্যাখ্যায় মুহাদ্দিসিনে কেরামগন বলেছেনঃ

ব্যাখ্যা: قَوْلُهٗ (حَتّى يَسْمَعَ صَوْتًا أَو يَجِدَ رِيْحًا)  যতক্ষণ না সে বায়ু বের হওয়ার শব্দ বা নির্গত বায়ুর গন্ধ পাবে ততক্ষণ নামাজ ছেড়ে আসবে না)। এর অর্থ হলো যতক্ষণ না সে শব্দ শ্রবণ বা গন্ধ পাওয়া বা অন্য যে কোন পন্থায় তার বায়ু নির্গত হওয়ার বিষয়ে নিশ্চিত হয় ততক্ষণ নামাজ পরিত্যাগ করবে না বা ছেড়ে আসবে না। তবে এতে সুনিশ্চিত হওয়ার জন্য শুধুমাত্র শব্দ শ্রবণ বা গন্ধ পাওয়াটিই শর্ত নয়।

,

এ হাদীস আরও প্রমাণ করে যে, শারী‘আতের কোন বিষয়ে সন্দেহের মাধ্যমে সুনিশ্চিত বিষয় বাতিল হয়ে যাবে না। অতএব যার সন্দেহ হবে বায়ু নির্গত হয়েছে কিনা তবে সে তার অজু ভঙ্গ না হওয়ার বিষয়ে নিশ্চিত থাকবে। নিশ্চিত না হাওয়া পর্যন্ত এ সন্দেহ তার কোন ক্ষতি করবে না। আর এটি অন্যান্য বিষয়েও সমভাবে প্রযোজ্য।

,

আল্লামা ইবনে নুজাইম রাহ,লিখেন,

اﻟْﻘَﺎﻋِﺪَﺓُ اﻟﺜَّﺎﻟِﺜَﺔُ: اﻟْﻴَﻘِﻴﻦُ ﻻَ ﻳَﺰُﻭﻝُ ﺑِﺎﻟﺸَّﻚِّ ﻭَﺩَﻟِﻴﻠُﻬَﺎ ﻣَﺎ ﺭَﻭَاﻩُ ﻣُﺴْﻠِﻢٌ ﻋَﻦْ ﺃَﺑِﻲ ﻫُﺮَﻳْﺮَﺓَ ﺭَﺿِﻲَ اﻟﻠَّﻪُ ﻋَﻨْﻪُ ﻣَﺮْﻓُﻮﻋًﺎ {ﺇﺫَا ﻭَﺟَﺪَ ﺃَﺣَﺪُﻛُﻢْ ﻓِﻲ ﺑَﻄْﻨِﻪِ ﺷَﻴْﺌًﺎ ﻓَﺄَﺷْﻜَﻞَ ﻋَﻠَﻴْﻪِ ﺃَﺧَﺮَﺝَ ﻣِﻨْﻪُ ﺷَﻲْءٌ ﺃَﻡْ ﻻَ ﻓَﻼَ ﻳَﺨْﺮُﺟَﻦَّ ﻣِﻦْ اﻟْﻤَﺴْﺠِﺪِ ﺣَﺘَّﻰ ﻳَﺴْﻤَﻊَ ﺻَﻮْﺗًﺎ، ﺃَﻭْ ﻳَﺠِﺪَ ﺭِﻳﺤًﺎ

ভাবার্থঃ তৃতীয় উসূল,ঈয়াক্বিন (দৃঢ় বিশ্বাস)সন্দের দ্বারা খতম হয় না। [তথা কারো কোনো বিষয় সম্পর্কে দৃঢ় বিশ্বাস থাকলে, সে বিষয় সম্পর্কে বিপরিত কোনো সন্দেহের উদ্রেক হলে পূর্ব বিশ্বাসের কোনো ক্ষতি হবে না অর্থাৎ নতুন করে জন্ম নেয়া সন্দেহ অগ্রহণযোগ্য ]

মুসলিম শরীফের সনদে বর্ণিত হযরত আবু-হুরায়রা রাযি থেকে বর্ণিত হাদীস তার  উজ্জল দৃষ্টান্ত।

হাদীসটি এই, রাসূলুল্লাহ সাঃ বলেন,যদি কারো তার পায়ুপথে কিছু বের হওয়ার সন্দেহ হয় এবং উক্ত বের হওয়া না হওয়া নিয়ে সে দ্বিধাদ্বন্দ্বে পড়ে যায়।তাহলে সে যেন মসজিদ থেকে (অজু করার নিমিত্তে) বের না হয়, যতক্ষণ না সে বায়ুর আওয়াজ শুনছে বা এর দুর্গন্ধ তার নাকে আসছে। (আল-আশবাহ ওয়ান-নাযাইর;১/৪৭)

এ সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে ক্লিক করুন- https://www.ifatwa.info/293  

,

সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনী ভাই!

,

শুধু সন্দেহের কারণে কোনো জিনিস নাপাক হয় না বা নাপাকির হুকুম আরোপিত হয় না। সুতরাং প্রশ্নোক্ত ক্ষেত্রে পুরো বাড়ি পাক হিসাবে ধরে নিবেন। আরো জানুন - জরুরতের কারণের অনেক কিছু পাক - https://ifatwa.info/50099/

আর প্রশ্নোক্ত ক্ষেত্রে কোনো সমস্যা হবে না। তবে আপনি সব রকম ওয়াসওয়াসা পরিহার করে চলবেন। কারণ, ওয়াসওয়াসার কার্যকরী চিকিৎসা হল, একে সম্পূর্ণরূপে এড়িয়ে যাওয়া; এমনকি মনের মধ্যে কোন দ্বিধাদ্বন্দ্ব থাকা সত্ত্বেও।’ (আল-ফাতাওয়া আল-ফিকহিয়্যা আল-কুবরা ১/১৪৯)


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

--------------------------------
মুফতী আব্দুল ওয়াহিদ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)
by (22 points)
আসসালামু আলাইকুম, 
প্রশ্নক্ত ক্ষেত্রে বাসার আসবাবপত্র ও অন্যান্য জিনিসও কি পাক ধরে নেব?
by (68,400 points)
ওয়া আলাইকুমুস সালাম ওয়া রাহমাতুল্লাহ 
জী,,,

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...