আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
101 views
in বিবিধ মাস’আলা (Miscellaneous Fiqh) by (61 points)
আমার করা সর্বশেষ প্রশ্নগুলোর যে উত্তর দেওয়া হয়েছে, তা বুঝতে সক্ষম হইনি। আলাদা আলাদা উত্তর প্রধান করলে কৃতজ্ঞ থাকবো। প্রশ্নগুলো পুনরায় লিখলাম।

১) "যারা আল্লাহর আইন দিয়ে বিচার কার্য পরিচালিত করে না, তারা কাফির, জালিম, ফাসিক" এখানে কার ক্ষেত্রে কোনটি প্রযোজ্য হবে?

কেউ একজন চুরি করলো। বিচার দেওয়া হলো গ্রামের মুরব্বিকে। এমতাবস্থায় তিনি পণ্য ফেরত বা অন্য কোনোভাবে বিষয়টা মিটমাট করে দিলেন; চোরের হাত কর্তন করার বিধান প্রয়োগ করলেন না। এক্ষেত্রে তিনি কাফির, নাকি জালিম, নাকি ফাসিক?

নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মোবাইল কোর্ট পরিচালনা করার সময় বিভিন্ন জালিয়াতিতে জেল জরিমানা করেন। এসব ক্ষেত্রে যদি ইসলামের সুনির্দিষ্ট বিধান থাকে, কিন্তু রাষ্ট্রের চলমান আইনে তা প্রয়োগের সুযোগ উনি না পান। তাহলে কি তিনি কাফির হবেন? নাকি জালিম বা (ও) ফাসিক হবেন?

২) চলমান দেশীয় আইনে পুলিশ, আনসার, ইউএনও এসব সেক্টরে মুসলিমদের যাওয়া উচিত কি, যেখানে আল্লাহর আইনের বিচার ব্যবস্থা নেই? (উল্লেখ্য, এসব সেক্টরে দ্বীনদার মুসলিমরা না গেলে দিনদিন হয়তো জুলুম দুর্নীতি বাড়তে থাকবে)

1 Answer

0 votes
by (671,200 points)
জবাব
بسم الله الرحمن الرحيم 


(০১)
আল্লাহ তায়ালা ইরশাদ করেনঃ

 وَمَنْ لَمْ يَحْكُمْ بِمَا أَنْزَلَ اللهُ فَأُوْلَئِكَ هُمُ الْكَافِرُوْنَ
 ‘যারা আল্লাহর নাযিলকৃত বিধান অনুযায়ী বিচার বা শাসন করেনা, তারা কাফের’ (মায়েদাহ ৫/৪৪)। 

এর পরে ৪৫ আয়াতে রয়েছে ‘তারা যালেম’ (فَأُوْلَئِكَ هُمُ الظَّالِمُوْنَ) 

এবং ৪৭ আয়াতে রয়েছে, 
‘তারা ফাসেক’ (فَأُوْلَئِكَ هُمُ الْفَاسِقُوْنَ)। 

একই অপরাধের তিন রকম পরিণতি : কাফের, যালেম ও ফাসেক।
,
★ব্যাখ্যাঃ
যে ব্যক্তি আল্লাহর নাযিলকৃত বিধানকে অস্বীকার করল সে কুফরী করল। আর যে ব্যক্তি তা স্বীকার করল, কিন্তু সে অনুযায়ী বিচার করল না সে যালিম ও ফাসিক।

এখানে ‘কাফের’ অর্থ ইসলাম থেকে খারিজ প্রকৃত ‘কাফের’ বা ‘মুরতাদ’ নয়। বরং এর অর্থ আল্লাহর বিধানের অবাধ্যতাকারী কবীরা গোনাহগার ব্যক্তি।

হযরত আব্দুল্লাহ ইবনু আববাস (রাঃ) উক্ত আয়াতের ব্যাখ্যায় বলেন, 
مَنْ جَحَدَ مَا أَنْزَلَ اللهُ فَقَدْ كَفَرَ وَمَنْ أَقَرَّ بِهِ وَلَمْ يَحْكُمْ فَهُوَ ظَالِمٌ فَاسِقٌ 
‘যে ব্যক্তি আল্লাহর নাযিলকৃত বিধানকে অস্বীকার করল সে কুফরী করল। আর যে ব্যক্তি তা স্বীকার করল, কিন্তু সে অনুযায়ী বিচার করল না সে যালিম ও ফাসিক।

(ইবনু জারীর, কুরতুবী, ইবনু কাছীর, উক্ত আয়াতের তাফসীর দ্রষ্টব্য; তাহকীক দ্রষ্টব্য : খালেদ আল-আম্বারী, উছূলুত তাকফীর পৃঃ ৬৪; ৭৫-৭৬ টীকাসমূহ।)

এই আয়াতের ব্যাখ্যা সংক্রান্ত বিস্তারিত জানুনঃ
,
(০২)
বচলমান দেশীয় আইনে পুলিশ, আনসার, ইউএনও,সেনাবাহিনী এসব সেক্টরে অধিকাংশই যদি ইসলামপন্থি হয়ে যায়,তাহলে দেশের অবস্থায় আমূল পরিবর্তন চলে আসবে।

সুতরাং দ্বীনদ্বার ব্যক্তিবর্গর জন্য এসব সেক্টরে যোগ দেওয়া অত্যন্ত অপরিহার্য। বিশেষকরে যাদের ইসলাম নিয়ে চিন্তাভাবনা রয়েছে।যারা ইসলামের স্বার্থকে সর্বদা মাথায় রাখেন,তাদের জন্য এসব বাহিনীতে যোগ দেওয়া সময়ের দাবী।

আরো জানুনঃ 

তবে সেখানে চাকরি করতে গিয়ে যদি আল্লাহ ও তাঁর রাসূল, দীন ও শরীয়ত বিরোধী কোন আদেশ জারি করা হয় তাহলে তা মানা জায়েজ নয়। তবে যদি এমন চাকরি হয়, যার কাজই হলো আল্লাহ ও তাঁর রাসূল এবং দীন ও শরীয়ত বিরোধী কাজ করা তাহলে এমন চাকরি করা বৈধ হবে না।

হাদীস শরীফে আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম দ্ব্যর্থহীনভাবে ঘোষণা করেছেন-

لا طاعة لمخلوق في معصية الخالق،

'সৃষ্টিকর্তা তথা আল্লাহ তা'আলার অবাধ্যাচরণে কোন মাখলুকের আনুগত্য নেই।'

কোন কোন বর্ণনায় এসেছে-

انما الطاعة في المعروف

'ভালো কাজের ক্ষেত্রেই কেবল আনুগত্য হবে।' (সহিহ বুখারী : ৭২৫৭, সহিহ মুসলিম : ১৮৪০, সুনানে তিরমিজি)

আরো জানুনঃ 


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

------------------------
মুফতী ওলি উল্লাহ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...