আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
28 views
in যাকাত ও সদকাহ (Zakat and Charity) by (6 points)
আসসালামুয়ালাইকুম,
(০১)

আমি গত রোজায় যাকাত দিয়েছিলাম রুপার নেসাবে। এই বছর রোজাতে এক চন্দ্র বছর পুর্ন হবে? আমার কাছে এই এক বছর ৩.৫ লাখ টাকা আছে৷ কিন্তু কিছু দিনের মধ্যে আমার ৫০ হাজার টাকা রিন শোধ করতে হবে যা আমার হাজবেন্ড এর রিন, তিনি তার মামার থেকে নিয়েছিল। আমি কি তাহলে রোজায় ৩.৫ লাখ এর উপর যাকাত দিব নাকি ৩ লাখ এর উপর। আমি কি যাকাত এর এমাউন্ট থেকে আমার হাজবেন্ড এর রিন শোধ করতে পারবো? যাকাত এর এমাউন্ট থেকে রিন শোধ করতেসি এটা আমার হাজবেন্ড কে না জানিয়ে দিলে কি সমস্যা হবে?

(০২)

আমার কিছু স্বর্ন ও আছে। সেগুলোর উপর ও যাকাত দিব। কিন্তু আমার মা আমাকে বিয়েতে যা স্বর্ন দিয়েছিলেন সেগুলো আমার কাছেই থাকে কিন্তু আমি বেচতে গেলে মা বেচতে দিবে না। তাহলে আমি কি এই স্বর্নের পুরোপুরি হকদার? এই স্বর্নের যাকাত কি আমি দিব নাকি আমার মা কে বলবো? আমি দিলে কি যাকাত আদায় হবে? আমার সন্তানের স্বর্নের যাকাত তো আমাকেই দিতে হবে আমার সম্পদের সাথে মিলিয়ে?
(০৩)

এক বাবা তার সন্তানের চিকিৎসা এর জন্য যাকাত গ্রহন করছেন। এই খানে কি যাকাত দেওয়া যাবে?

1 Answer

0 votes
by (592,140 points)
জবাবঃ-
وعليكم السلام ورحمة الله وبركاته 
بسم الله الرحمن الرحيم

একজন মানুষ দৈনিক যত টাকাই উপার্জন করুক না কেন, এবং যে উদ্দেশ্যেই জমা করুক না কেন, বৎসর শেষে যদি যাকাতের নিসাব পরিমান সম্পদ তার নিকট থাকে, তাহলে তার উপর জাকাত ফরয হবে।
 عَنْ عَائِشَةَ، قَالَتْ: سَمِعْتُ رَسُول اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ يَقُولُ: «لَا زَكَاةَ فِي مَالٍ حَتَّى يَحُولَ عَلَيْهِ الْحَوْلُ»
হযরত আয়েশা রা থেকে বর্ণিতঃনবী কারীম সাঃ বলেনঃ-সম্পত্তিতে কোনো যাকাত নেই যতক্ষণ না এক বৎসর পূর্ণ হবে।(সুনানে ইবনে মাজা-১৭৯২)

عَنْ ابْنِ عُمَرَ، قَالَ: قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: «مَنْ اسْتَفَادَ مَالًا فَلَا زَكَاةَ عَلَيْهِ، حَتَّى يَحُولَ عَلَيْهِ الحَوْلُ عِنْدَ رَبِّهِ» 
হযরত ইবনে উমর রাঃ থেকে বর্ণিত নবী কারীম সাঃ বলেনঃ- বৎসরের মধ্যখানে অর্জিত সম্পদে জাকাত আসবেনা যতক্ষণ না মালিকের পূর্ণ সম্পত্তির একবৎসর পূর্ণ হবে।(জামে তিরমিযি-৬৩১)
বিস্তারিত জানতে ভিজিট করুন- https://www.ifatwa.info/638

সোনা, রূপা,টাকা,এবং ব্যবসায়িক মালে যাকাত আসে, যদি তা নেসাব পরিমাণ হয়।
স্বর্ণের নেসাবঃ৭.৫ ভড়ি।
রূপার নেসাবঃ৫২.৫ ভড়ি।
এখানে একটি বিষয় লক্ষণীয় যে, কারো কাছে শুধুমাত্র স্বর্ণ বা শুধুমাত্র রূপা থাকলে সেটার নেসাব পূর্ণ হলেই যাকাত আসবে, অন্যথায় যাকাত আসবে না। তবে হ্যাঁ, যদি কারো নিকট স্বর্ণ এবং রূপা অথবা টাকা এভাবে থাকে যে, কোনোটিরই নেসাব পূর্ণ হয়নি, তাহলে এক্ষেত্রে রূপার নেসাবকেই মানদন্ড ধরে নেয়া হবে। 
এ সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে ক্লিক করুন- https://www.ifatwa.info/121

মালে নামীতে যাকাত আসে।
মালে নামী বলতে যে মাল শরীয়তের দৃষ্টিতে বাড়তে থাকে,সেগুলো সর্বমোট চার প্রকার,(১)সোনা(২)রুপা(৩)ব্যবসার মাল(৪)গবাদি পশু
এগোলো কে যেহেতু শরীয়ত বাড়ন্ত মাল বলে আখ্যা দিয়েছে,সুতরাং এগুলো বাড়ন্ত মাল।বাস্তবে সবগুলো বাড়ুক বা নাই বাড়ুক।

মালে গায়রে নামী বলতে যে মাল শরীয়তের দৃষ্টিতে বাড়ে না।উপরোক্ত মাল ব্যতীত সবগুলোই অবাড়ন্ত।যেমন-স্থাবর সম্পত্তি এবং নিজ প্রয়োজনে ক্ররিদকৃত গাড়ী আসবাবপত্র ইত্যাদি।
বিস্তারিত দেখতে ভিজিট করুন-https://www.ifatwa.info/1434

শরীয়তের বিধান অনুযায়ী হেবা পূর্ণ হওয়ার জন্য কবজা তথা হস্তগত হওয়া শর্ত।
হাদীস শরীফে এসেছেঃ
  
عن عثمان وابن عمر وابن عباس رضي اللّٰہ عنہم أنہم قالوا: لا تجوز صدقۃ حتی تقبض۔ (رواہ البیہقي ۶؍۱۷۰، إعلاء السنن ۱۶؍۹۱ رقم: ۵۲۶۴ دار الکتب العلمیۃ بیروت)
সারমর্মঃ
হযরত উসমান রাঃ ,ইবনে ওমর রাঃ ইবনে আব্বাস রাঃ বলেন ছদকাহ জায়েজ নেই,কবজা করার আগ পর্যন্ত।  
عن معاذ بن جبل وشریح رضي اللّٰہ عنہما أنہما کانا لا یجیزانہا حتی تقبض‘‘ اہـ۔ (رواہ البیہقي ۶؍۱۷۰، إعلاء السنن ۱۶؍۹۱ رقم: ۵۲۶۵ دار الکتب العلمیۃ بیروت)
সারমর্মঃ
হযরত মুয়াজ বিন জাবাল রাঃ এবং হযরত শুরাইহ রাঃ হেবার পূর্ণ হওয়ার ইজাযত দেননা কবজা করার আগ পর্যন্ত।   

عن إبراہیم قال: الہبۃ لا تجوز حتی تقبض، والصدقۃ تجوز قبل أن تقبض۔ (المصنف لعبد الرزاق / باب الہبات ۹؍۱۰۷، التعلیقات علی الہدایۃ / کتاب الہبۃ ۶؍۲۳۸ مکتبۃ البشری کراچی)
সারমর্মঃ
হযরত ইবরাহীম রহঃ বলন জায়েজ নেই,কবজা করার আগ পর্যন্ত।
ছদকাহ জায়েজ আছে কবজার আগেই।

বিস্তারিত জানুনঃ- 

★সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি বোন,
(০১)
এই বছর রমজানে আপনার চন্দ্র বছর পুর্ন হবে। যেদিন আপনার বছর পূর্ণ হবে সেদিন আপনার হাতে যত টাকা থাকবে তত টাকারই যাকাত দিতে হবে।

সেদিনের আগেই যদি আপনি আপনার স্বামীকে পঞ্চাশ হাজার টাকা দিয়ে দেন, তাহলে সে টাকার যাকাত দিতে হবে না।

অবশিষ্ট টাকা যা আপনার মালিকানাতে থাকবে সেটা শুধু যাকাত দিতে হবে।

উল্লেখ্য যে আপনার স্বামীকে উক্ত ৫০ হাজার টাকা আপনি কিভাবে দিবেন? যদি সেটা  ঋন হিসেবে দিতে চান তাহলে সে টাকা তো আপনি পরবর্তীতে ফিরে পাবেন। তো পরবর্তীতে টাকা ফেরত পাওয়ার পর হিসাব করে প্রতিবছরের যাকাত আদায় করতে হবে।

আর যদি উক্ত টাকা আপনার স্বামীকে করজ হিসেবে নয় বরং এমনিতেই দিয়ে দেন সে ক্ষেত্রে সে টাকার যাকাত আপনাকে আদায় করতে হবে না।

★আপনি যাকাত এর এমাউন্ট থেকে আপনার হাজবেন্ড এর ঋণ শোধ করতে পারবেননা।

(০২)
 যেহেতু উক্ত স্বর্ণ আপনার মা আপনাকে দিয়ে দিয়েছেন এবং আপনি সেটি হস্তগত করেছেন এটি আপনার কাছে আছে তাই উত্তর স্বর্ণের সম্পন্ন মালিকানা আপনারই।

এ স্বর্ণের যাকাত প্রতিবছর আপনাকে অবশ্যই দিতে হবে।

(০৩)
এক্ষেত্রে সে সন্তান বালেগ নাকি নাবালেগ?

যদি সে বালেগ হয় সেক্ষেত্রে সে সন্তান যদি ধনী না হয়, তাহলে তাকে যাকাত দেওয়া যাবে।

আর যদি সে নাবালেগ হয় সেক্ষেত্রে তার বাবা যদি ধনী হয়, তাহলে তাকে যাকাত দেওয়া যাবে না। আর যদি তার বাবা গরিব হয়, সেক্ষেত্রে তাকে যাকাত দেওয়া যাবে।


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

------------------------
মুফতী ওলি উল্লাহ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

by (6 points)
হাজবেন্ড যদি বেকার হয়, কোনো ইনকাম সোর্স না থাকে তাহলেও কি হাজবেন্ড কে রিন শোধ করার জন্য যাকাত দিতে পারবো? 

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...