আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
67 views
in পরিবার,বিবাহ,তালাক (Family Life,Marriage & Divorce) by (5 points)
আসসালামু আলাইকুম।
আমার স্বামী আমাকে কিছুদিন আগে ৩য় তালাক দিয়েছে রাগের মাথায়।বর্তমানে আমি ইদ্দত পালন করছি। আমি তার প্রথম স্ত্রী এবং তার ২য় স্ত্রীও আছে। আমাদের ১ বছরের ছেলে সন্তান আছে। আমরা যদি বিচ্ছিন্ন হয়ে যাই বাচ্চাটার ভবিষ্যৎ খুব খারাপ হতে পারে। বাচ্চাটাকে তার বাবা খুব ভালোবাসে। তাকে নিয়ে আমি চলে গেলে তার জীবন যাপন স্বাভাবিক হবেনা। আবার তার কাছে বাচ্চাটাকে দিলে আমি মা হয়ে স্বাভাবিকভাবে চলতে পারবোনা। আমার বাবার আর্থিক অবস্থাও ভালোনা,আমার ভরনপোষণ কোনোভাবেই চালাতে পারবেনা, আবার তাদেরকে সামাজিকভাবে অনেক হ্যনস্তার স্বীকার হতে হবে।

এমতাবস্থায় যেহেতু আমার অন্যএ বিবাহ ছাড়া তার সাথে সংসার করা হারাম, সেহেতু আমি অন্যএ বিয়ে করতে চাই,কিন্তু সংসার করার উদ্দেশ্যে নয়। ধরুন উস্তায আমি আমার কোনো বিবাহিত  ছেলে বন্ধুকে বিয়ের প্রস্তাব দিলাম, সে জানবে আমি ডিভোর্সি এবং আমার একটি ছেলে সন্তান আছে। এখন সে আমাকে বিয়ে করতে রাজী হলো এবং বিয়ে করলো। এরপর আমি কোন কোন অবস্থায় তার কাছে তালাক চাইতে পারবো?

১) আমি কী তার কাছে কোনো কিছুর বিনিময়ে খোলা তালাক চাইতে পারবো? এটা কী জায়েজ হবে?
২) বিয়ের পর আমি যদি তাকে আমার সার্বিক অবস্থা বলি এবং তাকে জানাই যে সে আমাকে তালাক দিলে আমি পূর্বের স্বামীর কাছে ফেরত যাবো। এভাবে তালাক নেওয়া কী জায়েজ হবে?

৩) অথবা সে যদি আমাকে সামাজিকভাবে স্ত্রী হিসেবে স্বীকৃতি দিতে অসম্মতি জানায় তবে কী আমি তার কাছে তালাক চাইতে পারবো? এটা কী জায়েজ হবে?
৪) অথবা যদি তার কোনো দোষ আমার সামনে আসে যেটা ইসলামে জায়েজ নেই এবং সে যদি তা থেকে ফেরত আসতে না চায় তবে কী এসবের জন্য তালাক চাওয়া জায়েজ হবে?
প্রিয় উস্তায পার্থিব এই দুনিয়ার বিনিময়ে আমি আমার আখিরাত হারাতে চাইনা। আমি আমার আল্লাহকে ভয় করি।আমি তার সামনে দাঁড়ানোকে ভয় করি, আমি তার সামনে জবাবদিহিতার ভয় করি। উস্তায এই দুনিয়ার দুঃখ কষ্ট মৃত্যুর মাধ্যমে শেষ হয়ে যাবে কিন্তু পরকালীন জীবনের কষ্ট সহ্য করার ক্ষমতা আমার নেই। যেটা করা জায়েজ হবে সেটাই বলবেন আমাকে। উস্তায আমি হয়তো মনে মনে  গোপন করছি যে আমি সংসার করবোনা, কিন্তু আমার আল্লাহ তো জানেন আমার অন্তরেের খবর, এটা কী প্রতারণা হবে না? এর জন্য কী আল্লাহর কাছে জবাবদিহি করতে হবে?  আল্লাহ কী আমার প্রতি অসন্তুষ্ট হবেন? এভাবে প্রথম স্বামীর কাছে ফিরলে সেই বিয়েতে কী কল্যান থাকবে?

1 Answer

0 votes
by (591,840 points)
জবাবঃ-
وعليكم السلام ورحمة الله وبركاته 
بسم الله الرحمن الرحيم

কোন মারাত্মক সমস্যা ছাড়া কোন মহিলা তার স্বামী থেকে তালাক চাওয়া হারাম ও কবীরা গুনাহ্।

সাওবান (রাঃ) থেকে বর্ণিত তিনি বলেন: রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেন:

أَيُّمَا امْرَأَةٍ سَأَلَتْ زَوْجَهَا طَلَاقًا فِيْ غَيْرِ مَا بَأْسٍ ؛ فَحَرَامٌ عَلَيْهَا رَائِحَةُ الْـجَنَّةِ.

‘‘যে কোন মহিলা কোন মারাত্মক সমস্যা ছাড়া নিজ স্বামীর নিকট তালাক চাইলো তার উপর জান্নাতের সুগন্ধি হারাম হয়ে যাবে’’। (আবূ দাউদ ২২২৬; তিরমিযী ১১৮৭; ইব্নু মাজাহ্ ২০৫৫)

ইসলামী স্কলারগন বলেছেন, যেসব কারণে স্ত্রীর জন্য স্বামীর কাছ থেকে তালাক চাওয়ার অনুমতি আছে তা হলোঃ-

★যদি কোনো বাস্তবসম্মত কারণে উভয়ের পক্ষে একসঙ্গে বসবাস করাটা অসম্ভব হয়ে পড়ে তাহলে স্ত্রীর জন্য স্বামীর কাছ থেকে তালাক চাওয়ার অনুমতি আছে।

★যদি স্বামীর মাঝে দৈহিক এমন ত্রুটি থাকে, যার কারণে দাম্পত্যজীবনের স্বাভাবিকতা খুবই দুরূহ হয়ে যায়। যেমন—পাগল হওয়া, যৌন অক্ষম হওয়া, কুষ্ঠরোগে আক্রান্ত হওয়া। 
বলা বাহুল্য, স্বামীর মাঝে উক্ত ত্রুটিগুলো থাকা অবস্থায় স্ত্রীকে ভালোভাবে রাখা সম্ভব নয়।

★স্বামী স্ত্রীর আবশ্যকীয় জরুরত তথা ভরণ-পোষণ দিতে অক্ষম হলে। কেননা, এটা স্ত্রীর মৌলিক অধিকার। 

★শরিয়ত নির্দেশিত কারণ ছাড়া স্বামী স্ত্রীকে কষ্ট দেওয়া বা জুলুম করা।

এটা শারীরিকভাবেও হতে এবং মানসিকভাবে হতে পারে। যেমন—স্ত্রীকে মারধর করা, গালাগাল করা, স্ত্রীকে তার পিতা-মাতার সঙ্গে দেখা সাক্ষাতে বাধা প্রদান করা, বেপর্দা কিংবা হারাম কাজে স্ত্রীকে জোরপূর্বক বাধ্য করা। 

★স্বামীর মধ্যে দ্বীনদারির প্রতি অবহেলা চরম পর্যায়ের হলে। যেমন—নামাজ না পড়া, মদ পান করা, পরকীয়া কিংবা চারিত্রিক অন্যায়-অপকর্মে লিপ্ত হওয়া। 

বিস্তারিত জানুনঃ- 

★সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি বোন,
উক্ত স্বামীর মধ্যে দ্বীনদারির প্রতি অবহেলা চরম পর্যায়ের হলে। যেমন—একেবারেই নামাজ না পড়া, মদ পান করা, পরকীয়া কিংবা চারিত্রিক অন্যায়-অপকর্মে লিপ্ত হওয়া। 

এধরণের অপরাধ পাওয়া গেলে সেক্ষেত্রে আপনি তালাক চাইতে পারেন।
নতুবা উপরোক্ত অন্যায় ছুরতগুলো তালাক চাওয়ার শরয়ী বৈধ ওযর নয়।

তাপরেও এসব ওযরে তালাক চাইলে সেক্ষেত্রে বিনা ওযরে তালাক চাওয়ার গুনাহ হলেও তালাকটি সহবাসের পরে হলে সেক্ষেত্রে ইদ্দত পালনের পর আপনি ১ম স্বামীর সাথে বিবাহ বসতে পারবেন।

★আরো একটি ছুরত অবলম্বন করতে পারেন,সেটি হলো বিবাহের সময় আপনি নিকাহনামায় বা মৌখিক ভাবে তালাকের ক্ষমতা চেয়ে নিবেন।

পরবর্তীতে শারীরিক সম্পর্ক হয়ে যাওয়ার পর নিজে নিজেই নিজের নফসের উপর তালাজ প্রদান করবেন।

এতেও তালাক হয়ে যাবে।

তবে তালাকের শরয়ী বৈধ ওযর না থাকলে আপনি গুনাহগার হবেন।


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

------------------------
মুফতী ওলি উল্লাহ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...