আসসালামু আলাইকুম।
একটা গভীর সমস্যার সমাধান করতে গিয়ে কিছু জিজ্ঞাসার সম্মুখীন হওয়া এবং আপনার কাছে সুচিন্তিত মতামতের আবেদন।মূল প্রশ্নে যাওয়ার আগে প্রেক্ষাপট টা কিছুটা দীর্ঘ হতে পারে। কিন্তু পুরো গল্পটা জানানো গুরুত্বপূর্ণ মনে হলো।
আমি দেশের শীর্ষস্থানীয় নামকরা একটা পাব্লিক মেডিকেলের ছাত্রাবাসে থাকি। প্রকৃতির স্বাভাবিক নিয়মে হলে বেশ কিছু বিড়াল খাবারের আশায় আনাগোনা করে। কিছু জন্ম থেকেই এখানেই থাকে। অবোঝ প্রানি, তাই যার তার কাছে গিয়ে খাবারের অনুযোগ , ছেলে বিড়াল নিজেদের মধ্যে মারামারি ঝগড়া, অসুস্থ বিড়ালের যত্রতত্র পায়খানা করা সব মিলিয়েই এদের জীবন। খুব যে উন্নত জীবনযাপন করছে তা না, কিন্তু রাস্তাঘাটে লাথিগুতা খাওয়া ,কুকুরের কামড়, চিরকালীন রোগাশকা, জীবানুভর্তি জীবন এর চেয়ে কিছুটা হলেও ভালো আছে।আমরা কয়েকজন পাগল আছি, সাধ্যমত খাবার দেয়ার চেষ্টা ,অসুস্থ হলে চিকিৎসার ব্যবস্থার চেষ্টা করি।
গত বছর, সরকার পতনের আগে আমাদের principal, vice principal ছিলেন ফ্যাসিস্টের দোসর। তখন হলের ছাত্রলীগের নেত্রীরা স্যারদের সাথে মিলে প্ল্যান করে হলের সকল বিড়ালকে খাবার সাথে ঘুমের ঔষধ খাইয়ে বস্তা ভরে বাইর ফেলে আসার। তখন কয়েকজন মিলে এর বিরোধিতা করি এবং অবশেষে স্যারদের থামাতে সক্ষম হই। কিন্তু সেই থেকে এই মেয়েগুলোর উপর মানসিক নির্যাতন, বুলিয়িং, তাদের নামে মিথ্যা গীবত চলে আসছে। বারবার হলের ,কলেজের পাব্লিক গ্রুপে গালিগালাজ করে পোস্ট লেখা হয় কেন আমরা এটা হতে দিলাম না। এখন বিড়ালের জন্যে তাদের দুর্ভোগের দায়িত্ব যেন নেই।
অবশেষে আমরা কিছু প্রতিষ্ঠানের সাথে যোগাযোগ করে সিদ্ধান্ত নেই বিড়ালগুলোকে স্পে( জরারু ফেলে দেয়া) করানোর যাথে আর সংখ্যাবৃদ্ধি না হয় এবং ছেলে বিড়াল মারামারি / যত্রতত্র হিসু করা বন্ধ করে। সেই সাথে লিটার দিয়ে পটি ট্রেইনিং এবং ভ্যাক্সিন দেয়ানোর।এজন্য ডোনেশন পোস্ট দেয়ার পর একজন ছাত্রী বলছে স্পে করানো জায়েজ না। তাই যেন ফুটো করা বস্তায় ভরে ওদের কোনো এলাকায় ফেলে আসা হয় ওরা টিকে থাকবে আর নেচারাল ইকোসিস্টেম নষ্ট হবেনা।
এখন কথা হলো যেই বিড়ালগুলো জন্ম থেকেই হোস্টেলেই ছিল তার জন্যে নেচারাল হ্যাবিটেন্ট তো এখানেই তাকে অন্য জায়গায় ফেলে আসাটাই তো তার প্রতি অন্যায়। এর মধ্যে কিছু বিড়াল দুর্বল কিছু একদম বাচ্চা।বর্তমানে দুইটি বাচ্চার ফ্লু হয়েছে আমরা চিকিৎসা করাচ্ছি বাইরে ফেলে দিল তো ওরা এই সুবিধা গুলো পাবেনা। আর যেখানে ফেলে আসবে সেখানে যে ওদের বিষ খাইয়ে মেরে ফেলবেনা তারও তো নিশ্চয়তা নেই। কিছুদিন আগেও জাপানিজ গারডেন আবাসিক এলাকায় এরকম ঘটেছে। তারপর বর্তমান বিড়াল সরালে তো আবারও নতুন স্ট্রে বিড়াল আসবে তখন? মানলাম হোস্টেলের মেয়েদের অসুবিধা হচ্ছে কিন্তু এই পরিস্থিতিতে বেস্ট সলুশন কি সেটাই না যেটা দুই পক্ষকেই বেনিফিট দিবে?
অনেক অনেক ধন্যবাদ মনোযোগ দিয়ে আমাদের কষ্টের কথা শোনার জন্যে। আপনার বিজ্ঞ প্রতিক্রিয়ায় অপেক্ষায় রইলাম।
আসসালামু আলাইকুম ওয়া রাহমাতুল্লাহি ওয়া বারাকাহ।