আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
79 views
in বিবিধ মাস’আলা (Miscellaneous Fiqh) by (3 points)
আসসালামু আলাইকুম, আমার ঢাকা অবস্থান এর সুযোগ নিয়ে আমার প্রতিবেশী আমার বিড়াল মেরে ফেলে অকারণ এ,এদের পালনের জন্য আমি বাড়িতে লোক রেখে গেছিলাম খাবার ক্যাট ফুট সহ,কিন্তু বিড়াল পশুর জাত ওরা না বুঝে অন্যের ঘরে যায় তাই বলে দুই টা বিড়াল কে এর আগে বিষ খাইয়ে মেরেছে এবং কিছুদিন আগে আমার বিড়াল এর বাচ্চা ২ মাস বয়সী তাকে মেরে ফেলে এবং আরেকটা বাচ্চাকে তার পা ভেঙে ফেলে,আমি প্রশ্ন করায় সে আমাকে অনেক গালি দেয়,আমাকে বলে কিছু ছেলেদের দিয়ে আমাকে রেইপ করাবে তাই আমি বাধ্য হয়ে জুতা নেই, কিন্তু মারতে পারিনা,,অভিযুক্ত মহিলা আমার মাথায় ২৫ টার বেশী জুতার বাড়ি দেয়,তার হাসবেন্ড একজন হাফেজ কিন্তু উক্ত লোক আমার হাত ধরে আর তার বউ আমাকে পেটায়,,আমাকে ক্ষমা চাইতে বলে।আমার কি ক্ষমা চাওয়া উচিত? আমার পক্ষে দুনিয়ার কেউ নাই আমার মা ছাড়া,আমার রিলেটিভ রাও আমার পাশে নাই।

1 Answer

0 votes
by (63,560 points)
edited by

ওয়া আলাইকুমুস সালাম ওয়া রাহমাতুল্লাহি ওয়া বারাকাতুহু।

বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম।

জবাবঃ

হযরত ইবনে উমর থেকে বর্ণিত,

عن ابن عمر رضي الله عنهما قال : قال النبي صلى الله عليه وسلم : ( دخلتِ امرأةٌ النارَ في هِرَّة حبَسَتْها، لا هي أطعَمَتْها ولا هي ترَكَتْها تأكُلُ مِن خَشَاش الأرض حتى ماتَتْ )

নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, এক নারী একটি বিড়ালের কারণে জাহান্নামে গিয়েছিল, সে তাকে বেঁধে রেখেছিল। সে তাকে খাবারও দেয়নি, ছেড়েও দেয়নি, যাতে সে যমীনের পোকা মাকড় খেতে পারত। আবূ হুরাইরাহ্ (রাঃ) সূত্রেও নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম হতে অনুরূপ হাদীস বর্ণিত আছে। (সহীহ বোখারী-৩৩১৮,সহীহ মুসলিম-২২৪২)

হাফেজ ইবনে হাজার (রহ.) বলেন, কুরতুবি (রহ.) বলেছেন, এ হাদিস থেকে বিড়াল পালা ও বিড়ালকে বেধে রাখা জায়েজ বলে প্রমাণিত হয়, যদি তাকে খানাপিনা দেওয়ার ব্যাপারে ত্রুটি না করা হয়।  (ফাতহুল বারি : ৬/৪১২)

পশু-পাখিকে নিয়মিত খাবার - পানি ও চিকিৎসা দিয়ে খাচায় বন্দী করে সুন্দরভাবে পরিচর্যা করে লালন-পালন করা জায়েয। কিন্তু এক্ষেত্রে যথাযথ পরিচর্যা করতে হবে। পরিচর্যা করতে না পারলে অথবা বন্দি করে রাখার কারণে কষ্ট পেলে খাচায় আটকে রাখা জায়েয হবে না। বরং ছেড়ে দিতে হবে। ( রদ্দুল মুহতার ৬/৪০১)

কিছু সাহাবী থেকে খাচায় পাখি লালন-পালন করা প্রমাণিত রয়েছে। হযরত হিশাম ইবনে উরওয়া রা. থেকে বর্ণিততিনি বলেন,

كَانَ ابْنُ الزّبَيْرِ بِمَكّةَ وَأَصْحَابُ النّبِيِّ صَلّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلّمَ يَحْمِلُونَ الطّيْرَ فِي الْأَقْفَاصِ.

আবদুল্লাহ ইবনে যুবায়ের রা. মক্কায় ছিলেন। তখন সাহাবীগণ খাচায় পাখি রাখতেন। (আল আদাবুল মুফরাদহাদীস ৩৮৩)

 

অন্য এক হাদীসে রয়েছে-

عن أَنَسٍ: قَالَ: كَانَ النَّبِيُّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ، أَحْسَنَ النَّاسِ خُلُقًا وَكَانَ لِي أَخٌ يُقَالُ لَهُ أَبُو عُمَيْر، وقال أحبه فَطِيمٌ وَكَانَ إِذَا جَاءَ قَالَ: يَا أَبَا عُمَيْرٍ، مَا فَعَلَ النُّغيْرُ نُغَرٌ كَانَ يَلْعَبُ بِهِ

আনাস (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) সবার চেয়ে অধিক সদাচারী ছিলেন। আমার একজন ভাই ছিলতাকে আবূ ‘উমায়র’ বলে ডাকা হতো। আমার অনুমান যেসে তখন মায়ের দুধ খেতো না। যখনই সে তাঁর নিকট আসতোতিনি বলতেনঃ হে আবূ ‘উমায়র! তোমার নুগায়র কি করছেসে নুগায়র পাখিটা নিয়ে খেলতো। (বুখারী হাদীস নং ৬২০৩মুসলিম ,২১৫০)

 

হযরত আবূ হুরায়রা রাঃ থেকে বর্ণিত। সাহাবায়ে কেরাম রাঃ রাসূল সাঃ কে জিজ্ঞাসা করেন-

قَالُوا: يَا رَسُولَ اللَّهِ، وَإِنَّ لَنَا فِي البَهَائِمِ أَجْرًا؟ قَالَ: «فِي كُلِّ كَبِدٍ رَطْبَةٍ أَجْرٌ

হে আল্লাহর রাসূল! জীব জন্তুর জন্যও কি আমাদের পুরস্কার আছে? তিনি বললেন, হ্যাঁ, প্রত্যেক দয়ার্দ্র হৃদয়ের অধিকারীদের জন্য পুরস্কার আছে। {বুখারী, হাদীস নং-২৩৬৩}

 

সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনী বোন!

 

. নিয়মিত খাবার - পানি ও চিকিৎসা দিয়ে সুন্দরভাবে পরিচর্যার মাধ্যমে বিড়াল পোষা জায়েজ এবং বিড়ালকে টাকা-পয়সা দিয়ে খাবার কিনে খাওয়ালেও সওয়াব হবে ইনশাআল্লাহ। তাই প্রশ্নোক্ত ক্ষেত্রে আপনার জন্য বিড়াল পোষা জায়েজ এবং বিড়ালকে নিয়মিত খাবার খাওয়ানোর কারণে আপনি সওয়াবও পাবেন ইনশাআল্লাহ। তবে যদি আপনার বিড়াল  প্রতিবেশীদের কোনো ক্ষতি করতে থাকে। ফলে প্রতিবেশীরা অতিষ্ঠ হয়ে পড়বে, তাই এই ছুরতে আপনার জন্য করনীয় হবে সেই বিড়ালকে অন্য এলাকায় ছেড়ে আসা। অথবা বড় খাচার মধ্যে বন্দি করে রাখা এবং নিয়মিত খাবার-পানি দেওয়া। একান্ত কখনও ছেড়ে দিলে তার দিকে দৃষ্টি রাখা। যাতে করে অন্যের কোনো ক্ষতি করতে না পারে।

 

২. প্রশ্নোক্ত ক্ষেত্রে যদি বাস্তবেই উক্ত মহিলা অকারণে আপনার বিড়ালগুলোকে হত্যা করে থাকে তাহলে তার অনেক অনেক গোনাহ হয়েছে। কারণ অযথা কোনো পশু-পাখিকে হত্যা করার কথা তো দুরের কথা, কষ্ট দেওয়াও জায়েজ নেই।

হাদীস শরীফে এসেছে- নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, এক নারী একটি বিড়ালের কারণে জাহান্নামে গিয়েছিল, সে তাকে বেঁধে রেখেছিল। সে তাকে খাবারও দেয়নি, ছেড়েও দেয়নি, যাতে সে যমীনের পোকা মাকড় খেতে পারত।

 

৩. আপনাকে মারধর ও গালি-গালাজ এবং  অত্যন্ত গর্হিত কথা বলার কারণে উক্ত মহিলা অনেক বড় গর্হিত কাজ ও গোনাহ করেছে ফলে তাকেই আপনার কাছে ক্ষমা চাওয়া উচিত ও আল্লাহ তায়ালার কাছে তওবা করা উচিত।

 

. প্রিয় বোন! আপনি ধৈর্য্য ধারণ করবেন। আল্লাহ তায়ালা ধৈর্য্য ধারণকারীদেরকে মহব্বত করেন ও ভালোবাসেন এবং ধৈর্য্য ধারণকারীদের সাথে আছেন। আবার আপনি চাইলে উক্ত ঘটনার কথা বলে এলাকার মাতব্বরদের কাছ থেকে সাহায্য নিতে পারেন বা আইনি ব্যবস্থা গ্রহন করতে পারেন।


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

--------------------------------
মুফতী আব্দুল ওয়াহিদ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)
by (63,560 points)
উত্তরটা আরো একটু সংযোজন করা হলো। 

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...