বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম।
জবাবঃ
https://ifatwa.info/983/
নং ফাতওয়াতে উল্লেখ করা হয়েছে যে, জমাতের সাথে সালাত আদায়ের আদাব।
জামাআতের
সাথে সালাত আদায় করতে মুসল্লীদেরকে প্রথমেই তিনটি বিষয়ের প্রতি লক্ষ রাখতে হবে।
(১)
কাতার সোজা করে দাঁড়ানো। কোনো মুসল্লী যেন তার পার্শ্ববর্তী মুসল্লীর চেয়ে এগিয়ে বা
পিছিয়ে না দাঁড়ায়।
(২)
কাতারে এমনভাবে দাঁড়ানো, যাতে দুই মুসল্লীর মাঝখানে
কোনো ফাঁক না থাকে।
(৩)
একটি কাতার থেকে অপর কাতারের মাঝখানে অস্বাভাবিক দূরত্ব না থাকা। বরং স্বাভাবিকভাবে
সেজদা করতে যতটুকু দূরত্ব বজায় রাখা প্রয়োজন ততটুকু দূরত্ব বজায় রাখা।
এসম্পর্কে
কয়েকটি হাদীস লক্ষণীয়। যথাঃ-
১. আয়েশা
রা. হতে বর্ণিত, তিনি বলেন,
ﻋَﻦْ ﻋَﺎﺋِﺸَﺔَ ﻗَﺎﻟَﺖْ ﻗَﺎﻝَ ﺭَﺳُﻮْﻝُ ﺍﻟﻠﻪِ ﺻَﻠّﻰ ﺍﻟﻠﻪُ ﻋَﻠَﻴْﻪِ
ﻭَ ﺳَﻠَّﻢَ ﻣَﻦْ ﺳَﺪّ ﻓُﺮْﺟَﺔً ﻓِﻰ ﺻَﻒٍّ ﺭَﻓَﻌَﻪُ ﺍﻟﻠﻪُ ﺑِﻬَﺎ ﺩَﺭَﺟَﺔً ﻭَ ﺑَﻨٰﻰ ﻟَﻪُ
ﺑَﻴْﺘًﺎ ﻓِﻲ ﺍﻟْﺠَﻨّﺔِ.
রাসূলুল্লাহ
সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, যে ব্যক্তি কাতারের মধ্যকার
ফাঁক বন্ধ করবে, এর বিনিময়ে আল্লাহ তার একটি মর্যাদা বৃদ্ধি
করে দেবেন এবং জান্নাতে তার জন্য একটি ঘর নির্মাণ করে দিবেন। (আলমু‘জামুল আওসাত, তবারানী, হাদীস ৫৭৯৫; মুসান্নাফে ইবনে আবী শাইবাহ, হাদীস ৩৮২৪)
২. আয়েশা
রা. বলেন,
ﻋَﻦْ ﻋَﺎﺋِﺸَﺔَ ﻗَﺎﻟَﺖْ ﻗَﺎﻝَ ﺭَﺳُﻮْﻝُ ﺍﻟﻠﻪِ ﺻَﻠَﻰ ﺍﻟﻠﻪُ ﻋَﻠَﻴْﻪِ
ﻭَ ﺳَﻠّﻢَ ﺍِﻥّ ﺍﻟﻠﻪَ ﻭَ ﻣَﻠٰﺌِﻜَﺘَﻪُ ﻳُﺼَﻠُّﻮْﻥَ ﻋَﻠَﻰ ﺍﻟﺬِﻳْﻦَ ﻳَﺼِﻠُﻮْﻥَ ﺍﻟﺼُّﻔُﻮْﻑَ
ﻭَ ﻣَﻦْ ﺳَﺪّ ﻓُﺮْﺟَﺔً ﺭَﻓَﻌَﻪُ ﺍﻟﻠﻪُ ﺑِﻬَﺎ ﺩَﺭَﺟَﺔً .
রাসূলুল্লাহ
সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, নিশ্চয় আল্লাহ তাআলা এবং ফেরেশতাগণ
তাদের প্রতি রহমত বর্ষণ করেন, যারা কাতারসমূহকে সংযুক্ত
করে। আর যে ব্যক্তি ফাঁক বন্ধ করল, এর বিনিময়ে আল্লাহ তাআলা তার
একটি মর্যাদা বৃদ্ধি করে দেন। (সুনানে ইবনে মাজাহ, হাদীস ৯৯৫; মুসনাদে আহমাদ, হাদীস ২৪৬৩১)
৩. ইবনু
উমার রা. হতে বর্ণিত,
রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, তোমরা কাতার সোজা কর। কাঁধসমূহকে বরাবর রাখ। ফাঁক বন্ধ কর। তোমাদের
ভাইদের হাতে তোমরা নরম হয়ে যাও এবং শয়তানের জন্য ফাঁক ছেড়ে দিয়ো না। যে কাতার জুড়ে
দেয় আল্লাহ তাআলাও তাকে জুড়ে দেন। পক্ষান্তরে যে কাতার বিচ্ছিন্ন করে আল্লাহ তাআলা
তাকে বিচ্ছিন্ন করে দেন।(সুনানে আবূ দাঊদ, হাদীস ৬৬৬)
সু-প্রিয়
পাঠকবর্গ! তিন নাম্বার হাদীসে রাসূলুল্লাহ সাঃ বলছেন, "তোমাদের ভাইদের হাতে তোমরা নরম হয়ে যাও "(আবু-দাউদ:৬৬৬)
প্রত্যেক
মুসাল্লি তার পাশে খালি জায়গা দেখলে পাশের মুসাল্লি কে হাত ধরে নিজের দিকে ডাকবে। অর্থাৎ
নিজের পাশে অপর মুসাল্লি ভাইকে দাড় করাবে যাতে করে ফাঁক না পড়ে যায়। যাকে ডাকা হবে তার
প্রতি রাসূলুল্লাহ সাঃ এর নির্দেশ হল, সে যেন নরম হয়ে যায় এবং আহবান
কারী মুসাল্লি ভাইয়ের ডাকের জবাব দেয়।
ইমাম
সাহেবের বরাবর পিছন হল মুক্তাদিদের মূল অবস্থান স্থল, তাই এই অবস্থানস্থলের দিকে নিয়ে আসতে ডান বাম যেকোনো দিক থেকে মুসাল্লিকে ডাকা
হবে।
ইমাম
সাহেবের পিছনে কাতারে যদি তিনজন মুক্তাদি থাকেন, তাহলে মধ্যখানের জন ঠিক ইমাম
সাহেবের পিছনো দাড়াবেন এবং অন্য দুইজন দুই পাশে দাড়াবেন।এখন যদি
চতুর্থ আরেকজন আসেন,তাহলে উনি ডান দিকে দাড়াবেন।এভাবেই কাতারবন্দি
হয়ে নামাজ আদায় করার নিয়ম বর্ণনা করা হয়েছে।
সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি ভাই/বোন!
১. কাতার সম্পর্কিত আলোচনা উপরে বিস্তারিত করা হয়েছে।
২. একাকী নামাজ পড়ার সময় সুরা কেরাত যেভাবে জবান নাড়িয়ে
উচ্চারণ করে পড়তে হয় ঠিক সেভাবে তাজবি সমূহ পাঠ করতে হবে। তবে জবান না নাড়িয়ে মনে
মনে পড়া যাবে না। সব নামাজের ক্ষেত্রে একই বিধান।
৩. সাধারনত মসজিদ দু’ধরনের হয়ে থাকে,
এক. স্থানীয় মসজিদ,
দুই চলাচলের রাস্তায়,
যানবাহন ইত্যাদি স্থানের মসজিদ।
প্রথম প্রকার মসজিদের বিধান হলো,
যদি তাতে নির্ধারিত ইমাম,
মুয়াজ্জিন থাকে,
ও মহল্লাবাসী আজান ও ইকামতের সাথে
জামাত করে থাকে, তাহলে স্থানীয় লোকদের জন্য উক্ত মসজিদে দ্বিতীয় জামাত করা মাকরুহে তাহরীমি,
তবে কোন কারণে যদি মহল্লাবাসীর কিছু
লোক জামাত না পায়, তাদের জন্য মেহরার ব্যতিরেকে দ্বিতীয় জামাত করা বৈধ,
তবে উত্তম হলো,একাকি নামাজ আদায় করা। অথবা যদি অন্য এলাকার লোক
দ্বিতীয় জামাত করতে চায় বা মুসাফির হয়, তাদের জন্যও বৈধ আছে।দ্বিতীয় প্রকার মসজিদের বিধান
হলো, এধরনের মসজিদে দ্বিতীয় জামাত করা বৈধ, সুতরাং প্রশ্নোক্ত ক্ষেত্রে এভাবে দ্বিতীয় জামাত
করা বৈধ, তবে উত্তম হলো, একাকি আদায় করা।