আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
37 views
in সুন্নাহ-বিদ'আহ (Sunnah and Bid'ah) by (8 points)
edited by
আসসালামু আলাইকুম উস্তাদ,

১। নামাজে কাতারে দাঁড়ানোর সময় কি ডান দিক থেকে কাতারে দাঁড়াতে হয়? নাকি মাঝখান থেকে (ঈমাম সাহেবের পিছন থেকে) কাতারে দাঁড়াতে হয়? নাকি যেকোন জায়গা থেকেই দাঁড়ানো শুরু করা যায়? ১ম কাতার কিংবা ২য় কাতার, সকল কাতারের জন্যই কি একই নিয়ম? কোন কাতারে একজন (যিনি সবার শেষে উপস্থিত হয়েছেন) দাঁড়াতে পারবে কি?

২। নামাজের মধ্যে তাসবীহসমূহ কি জোরে উচ্চারণ করে পড়তে হবে? নাকি মনে মনে পড়বো? ফরজ এবং নফল সব নামাজেই কি একই নিয়ম?

৩। যে স্থানে একবার জামাত হয়ে গেছে, সেখানে ২য় জামাত পড়লে কি নামাজ অশুদ্ধ হয়? সমাজে এটা অনেক প্রচলিত, এ ব্যাপারে হাদিস কি বলে?

1 Answer

0 votes
by (65,970 points)
edited by

 

বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম।

জবাবঃ

https://ifatwa.info/983/   নং ফাতওয়াতে উল্লেখ করা হয়েছে যে, জমাতের সাথে সালাত আদায়ের আদাব।

জামাআতের সাথে সালাত আদায় করতে মুসল্লীদেরকে প্রথমেই তিনটি বিষয়ের প্রতি লক্ষ রাখতে হবে।

(১) কাতার সোজা করে দাঁড়ানো। কোনো মুসল্লী যেন তার পার্শ্ববর্তী মুসল্লীর চেয়ে এগিয়ে বা পিছিয়ে না দাঁড়ায়।

(২) কাতারে এমনভাবে দাঁড়ানো, যাতে দুই মুসল্লীর মাঝখানে কোনো ফাঁক না থাকে।

(৩) একটি কাতার থেকে অপর কাতারের মাঝখানে অস্বাভাবিক দূরত্ব না থাকা। বরং স্বাভাবিকভাবে সেজদা করতে যতটুকু দূরত্ব বজায় রাখা প্রয়োজন ততটুকু দূরত্ব বজায় রাখা।

এসম্পর্কে কয়েকটি হাদীস লক্ষণীয়। যথাঃ-

১. আয়েশা রা. হতে বর্ণিত, তিনি বলেন,

 ﻋَﻦْ ﻋَﺎﺋِﺸَﺔَ ﻗَﺎﻟَﺖْ ﻗَﺎﻝَ ﺭَﺳُﻮْﻝُ ﺍﻟﻠﻪِ ﺻَﻠّﻰ ﺍﻟﻠﻪُ ﻋَﻠَﻴْﻪِ ﻭَ ﺳَﻠَّﻢَ ﻣَﻦْ ﺳَﺪّ ﻓُﺮْﺟَﺔً ﻓِﻰ ﺻَﻒٍّ ﺭَﻓَﻌَﻪُ ﺍﻟﻠﻪُ ﺑِﻬَﺎ ﺩَﺭَﺟَﺔً ﻭَ ﺑَﻨٰﻰ ﻟَﻪُ ﺑَﻴْﺘًﺎ ﻓِﻲ ﺍﻟْﺠَﻨّﺔِ.

রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, যে ব্যক্তি কাতারের মধ্যকার ফাঁক বন্ধ করবে, এর বিনিময়ে আল্লাহ তার একটি মর্যাদা বৃদ্ধি করে দেবেন এবং জান্নাতে তার জন্য একটি ঘর নির্মাণ করে দিবেন। (আলমু‘জামুল আওসাত, তবারানী, হাদীস ৫৭৯৫; মুসান্নাফে ইবনে আবী শাইবাহ, হাদীস ৩৮২৪)

২.  আয়েশা রা. বলেন,

 ﻋَﻦْ ﻋَﺎﺋِﺸَﺔَ ﻗَﺎﻟَﺖْ ﻗَﺎﻝَ ﺭَﺳُﻮْﻝُ ﺍﻟﻠﻪِ ﺻَﻠَﻰ ﺍﻟﻠﻪُ ﻋَﻠَﻴْﻪِ ﻭَ ﺳَﻠّﻢَ ﺍِﻥّ ﺍﻟﻠﻪَ ﻭَ ﻣَﻠٰﺌِﻜَﺘَﻪُ ﻳُﺼَﻠُّﻮْﻥَ ﻋَﻠَﻰ ﺍﻟﺬِﻳْﻦَ ﻳَﺼِﻠُﻮْﻥَ ﺍﻟﺼُّﻔُﻮْﻑَ ﻭَ ﻣَﻦْ ﺳَﺪّ ﻓُﺮْﺟَﺔً ﺭَﻓَﻌَﻪُ ﺍﻟﻠﻪُ ﺑِﻬَﺎ ﺩَﺭَﺟَﺔً .

রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, নিশ্চয় আল্লাহ তাআলা এবং ফেরেশতাগণ তাদের প্রতি রহমত বর্ষণ করেন, যারা কাতারসমূহকে সংযুক্ত করে। আর যে ব্যক্তি ফাঁক বন্ধ করল, এর বিনিময়ে আল্লাহ তাআলা তার একটি মর্যাদা বৃদ্ধি করে দেন। (সুনানে ইবনে মাজাহ, হাদীস ৯৯৫; মুসনাদে আহমাদ, হাদীস ২৪৬৩১)

৩. ইবনু উমার রা. হতে বর্ণিত,

 রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, তোমরা কাতার সোজা কর। কাঁধসমূহকে বরাবর রাখ। ফাঁক বন্ধ কর। তোমাদের ভাইদের হাতে তোমরা নরম হয়ে যাও এবং শয়তানের জন্য ফাঁক ছেড়ে দিয়ো না। যে কাতার জুড়ে দেয় আল্লাহ তাআলাও তাকে জুড়ে দেন। পক্ষান্তরে যে কাতার বিচ্ছিন্ন করে আল্লাহ তাআলা তাকে বিচ্ছিন্ন করে দেন।(সুনানে আবূ দাঊদ, হাদীস ৬৬৬)

সু-প্রিয় পাঠকবর্গ! তিন নাম্বার হাদীসে রাসূলুল্লাহ সাঃ বলছেন, "তোমাদের ভাইদের হাতে তোমরা নরম হয়ে যাও "(আবু-দাউদ:৬৬৬)

প্রত্যেক মুসাল্লি তার পাশে খালি জায়গা দেখলে পাশের মুসাল্লি কে হাত ধরে নিজের দিকে ডাকবে। অর্থাৎ নিজের পাশে অপর মুসাল্লি ভাইকে দাড় করাবে যাতে করে ফাঁক না পড়ে যায়। যাকে ডাকা হবে তার প্রতি রাসূলুল্লাহ সাঃ এর নির্দেশ হলসে যেন নরম হয়ে যায় এবং আহবান কারী মুসাল্লি ভাইয়ের ডাকের জবাব দেয়।

ইমাম সাহেবের বরাবর পিছন হল মুক্তাদিদের মূল অবস্থান স্থলতাই এই অবস্থানস্থলের দিকে নিয়ে আসতে ডান বাম যেকোনো দিক থেকে মুসাল্লিকে ডাকা হবে।

ইমাম সাহেবের পিছনে কাতারে যদি তিনজন মুক্তাদি থাকেনতাহলে মধ্যখানের জন ঠিক ইমাম সাহেবের পিছনো দাড়াবেন এবং অন্য দুইজন দুই পাশে দাড়াবেন।এখন যদি চতুর্থ আরেকজন আসেন,তাহলে উনি ডান দিকে দাড়াবেন।এভাবেই কাতারবন্দি হয়ে নামাজ আদায় করার নিয়ম বর্ণনা করা হয়েছে।

সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি ভাই/বোন!

১. কাতার সম্পর্কিত আলোচনা উপরে বিস্তারিত করা হয়েছে।

২. একাকী নামাজ পড়ার সময় সুরা কেরাত যেভাবে জবান নাড়িয়ে উচ্চারণ করে পড়তে হয় ঠিক সেভাবে তাজবি সমূহ পাঠ করতে হবে। তবে জবান না নাড়িয়ে মনে মনে পড়া যাবে না। সব নামাজের ক্ষেত্রে একই বিধান।

৩. সাধারনত মসজিদ দু’ধরনের হয়ে থাকে, এক. স্থানীয় মসজিদ, দুই চলাচলের রাস্তায়, যানবাহন ইত্যাদি স্থানের মসজিদ।

প্রথম প্রকার মসজিদের বিধান হলো, যদি তাতে নির্ধারিত ইমাম, মুয়াজ্জিন থাকে, ও মহল্লাবাসী আজান ও ইকামতের সাথে জামাত করে থাকে, তাহলে স্থানীয় লোকদের জন্য উক্ত মসজিদে দ্বিতীয় জামাত করা মাকরুহে তাহরীমি, তবে কোন কারণে যদি মহল্লাবাসীর কিছু লোক জামাত না পায়, তাদের জন্য মেহরার ব্যতিরেকে দ্বিতীয় জামাত করা বৈধ, তবে উত্তম হলো,একাকি নামাজ আদায় করা। অথবা যদি অন্য এলাকার লোক দ্বিতীয় জামাত করতে চায় বা মুসাফির হয়, তাদের জন্যও বৈধ আছে।দ্বিতীয় প্রকার মসজিদের বিধান হলো, এধরনের মসজিদে দ্বিতীয় জামাত করা বৈধ, সুতরাং প্রশ্নোক্ত ক্ষেত্রে এভাবে দ্বিতীয় জামাত করা বৈধ, তবে উত্তম হলো, একাকি আদায় করা।


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

--------------------------------
মুফতী মুজিবুর রহমান
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...