আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
38 views
in বিবিধ মাস’আলা (Miscellaneous Fiqh) by (14 points)
আস্সালামুআলাইকুম ওয়ারাহমাতুল্লাহি ওবারাকাতুহ উস্তাদ।আমার কয়েকটি প্রশ্ন:


১)অনেকে বলে আসর এর পর সুবহানাল্লাহ আলহামদুলিল্লাহ আল্লাহু আকবার এই জিকির গুলো নামাজের পর করলে এর মাঝে কারো সাথে কথা না বললে টানা ৩বছর এমন করলে ওলির খাতায় তার নাম লিখা হয়। এটা কী সহীহ উস্তাদ?

মহিলারা যে ৩দিন ৭দিনের জামাতে যায় এগুলো কী উচিত উস্তাদ যদি মাহরাম সাথে থাকে?

২)উস্তাদ আমাকে আমার আম্মা বই কিনে দেন ইসলামিক।আম্মা আমাকে না করেছে কাউকে পড়ার জন্য দিতে। আমি যদি সদকায়ে জারিয়ার নিয়ত কাউকে পড়তে দেই আবার নিয়ে আসি আমার ও আম্মার সোয়াবের উদেশ্য তাহলে কী এটা বান্দার হক নষ্ট বা মায়ের অবাধ্য হওয়া হবে উস্তাদ যেহেতু আম্মা সদকায়ে জারিয়ার বিষয়টা বুঝেন না?

৩)উস্তাদ আমাকে একজন বলেছেন কুরআনের আয়াত নিয়ে গভীর চিন্তা ভাবনা করতে কী বুঝানো হয়েছে এখানে এর আগে আল্লাহর কাছে দোয়া করে নিতে এভাবে নিজে থেকে চিন্তা ভাবনা করার পর ওই আয়াতটার তাফসীর পড়তে এভাবে কী পড়া উচিত হবে উস্তাদ যেহেতু আমরা এই লাইনের না এখানে কী ভুল হবার সম্ভাবনা আছে?

1 Answer

0 votes
by (579,240 points)
জবাবঃ-
وعليكم السلام ورحمة الله وبركاته 
بسم الله الرحمن الرحيم

(০১)
এক্ষেত্রে ওলির খাতায় তার নাম লেখা হবে,এমন কথা কোথাও পাইনি।

মহিলারা যে ৩দিন ৭দিনের জামাতে যায় এগুলোকে মাস্তুরাত জামাত বলে।

মাস্তুরাত জামাতের বিধানঃ-
মহিলাদের দায়িত্ব হল ঘরে অবস্থান করে সাধ্যমত দ্বীনের খেদমত করা,এবং সন্তানের তা'লিম তারবিয়্যাতের ব্যবস্থা সহ স্বামীর ঘরের হেফাজত করা।

পুরুষের দায়িত্ব হল,বাহিরে অবস্থান করে ব্যবসা-বাণিজ্য,চাকুরী ইত্যাদি সহ যাবতীয় বাহিরের কাজ আঞ্জাম দেয়া।

বর্তমান সময়ে যেহেতু নিজ ঈমান-আমল কে হেফাজত করা এবং সাথে সাথে অন্যকে আ'মলের প্রতি উৎসাহিত করা অত্যন্ত জরুরী একটি বিষয়।অনেক সময় অন্যর অা'মলকে চর্মচক্ষু দ্বারা অবলোকন করার পরই নিজের জন্য আ'মল করা সহজসাধ্য হয়। তাই এই হেকমতের প্রতি লক্ষ্য রেখে তাবলীগ সমস্ত শর্তকে যত্নের সাথে পালনের নিমিত্তে ফুকাহায়ে কিরাম মাস্তুরাত জামাতের অনুমতি দিয়ে থাকেন।

তবে যদি কোনো শর্ত ছুটে যায় বা কোনো শর্তকে যত্নের সাথে আ'মলে নিয়ে আসা না হয়,তাহলে সেক্ষেত্রে মাস্তুরাত জামাতে যাওয়া বৈধ হবে না।

এক্ষেত্রে ফুকাহায়ে কিরাম নিম্নোক্ত জিহাদ ভিত্তিক কিছু হাদীস দ্বারা উক্ত মাস্তরাত জামাতের দলীল দিয়ে থাকেন।যদিও হাদীস গুলো জিহাদ বিষয়ে এসেছে,তথাপি এখানে একটি বিষয় লক্ষণীয় যে,

আমরা দেখছি পর্দার বিধান আরোপিত হওয়ার পরও মহিলা সাহাবিগণ জিহাদের ময়দানে অংশ নিয়েছেন,তাই তা'লিম তারবিয়্যাত এর মত গুরুত্বপূর্ণ বিষয়েও শরয়ী শর্তের ভিত্তিতে মহিলাদের জন্য ঘরের বাহিরে যাওয়ার অনুমতি দেওয়া যেতে পারে।

 হযরত আয়েশা রাযি থেকে বর্ণিত,

عن حديث عائشة، كل حدثني طائفة من الحديث، قالت: «كان النبي صلى الله عليه وسلم إذا أراد أن يخرج أقرع بين نسائه، فأيتهن يخرج سهمها خرج بها النبي صلى الله عليه وسلم، فأقرع بيننا في غزوة غزاها، فخرج فيها سهمي، فخرجت مع النبي صلى الله عليه وسلم بعد ما أنزل الحجاب»

তিনি বলেন,যখন রাসূলুল্লাহ সাঃ সফরে বাহির হওয়ার ইচ্ছা পোষণ করতেন,তখন নিজ স্ত্রীগণের মধ্যে লটারী দিতেন।লটারির মাধ্যমে যার নাম বের হত তাকে নিয়ে সফরে বের হতেন।একবার একটি যুদ্ধে যাওয়ার জন্য আমাদের মধ্যে লটারি দিলে লটারিতে আমার নাম উঠে আসল,তাই আমি রাসূলুল্লাহ সাঃ এর সাথে যুদ্ধে বের হলাম।এটা ছিলো পর্দা ফরয হওয়ার পরের ঘটনা।

সহীহ বুখারী-(শামেলা)২৮৭৯

মহিলাদের জন্য শরিয়তের বিধান হল, বাড়িতে অবস্থান করা। জরুরি প্রয়োজন ছাড়া বাহিরে বের না হওয়া। নবিজি সা. ইরশাদ করেন, মহিলা গোপনীয় বস্তু, সুতরাং যখন সে বাহিরে বের হয়, শয়তান তার দিকে দৃষ্টি দেয়। তাকে এবং তার দ্বারা অন্যদেরকে বিপদগামী করে। -মিরকাত: ৬:২৮২

এজন্য ফকিহগণ অতীব জরুরি প্রয়োজন ছাড়া মহিলাদের ঘর থেকে বের হতে নিষেধ করেছেন। তারা নামায, রোযা, ওযু, গোসল ইত্যাদির মাসআলা-মাসায়েল মাহরাম বা স্বামী থেকে জেনে নিবে। যদি তা সম্ভব না হয়, তাহলে স্বামী কিংবা অভিভাবকের অনুমতিতে পূর্ণ শরয়ি পর্দা রক্ষা করে বাহিরে যেতে পারবে। অবশ্য তাবলীগে যাওয়া মহিলাদের উপর ফরয বা ওয়াজিব না হওয়ায় স্বাভাবিক অবস্থায় তাদের তাবলীগে না যাওয়া উচিত।
,
★তদুপরি বর্তমানে বদদ্বীনের সয়লাব চতুর্দিকে ছড়িয়ে পড়া এবং স্বামী কিংবা মাহরামের কাছ থেকে দ্বীনের বিভিন্ন বিষয় জানা সম্ভব না হওয়ায় মহিলাগণ নিম্নোক্ত শর্ত সাপেক্ষে তাবলিগে যেতে পারবেন-

১. নিয়ত শুদ্ধ করা।

২. স্বামী কিংবা অভিভাবকের পূর্ণ অনুমতি থাকা।

৩. সুগন্ধিযুক্ত আতর, সেন্ট ইত্যাদি ব্যবহার না করা।

৪. মাহরাম সাথে থাকা।

৫. সর্বদা পূর্ণ শরয়ি পর্দা রক্ষা করা।

৬. অবস্থান স্থলে পর্দার এমন ব্যবস্থা থাকা, যাতে সেখানে পর পুরুষের যাতায়াত মোটেও না হয়।

৭. তালিম নিচু স্বরে করা; যাতে তাদের আওয়াজ পর পুরুষ শুনতে না পায়।

৮. স্বামী ও সন্তানদের হক নষ্ট না করা।
(কিছু তথ্য সংগৃহীত)

বিস্তারিত জানুনঃ  

তাবলিগে যাওয়া সংক্রান্ত বিস্তারিত জানুনঃ   

(০২)
এটা বান্দার হক নষ্ট হবেনা।
মায়ের কথার অমান্য হলেও এক্ষেত্রে ছওয়াব মিলবে,ইনশাআল্লাহ 

(০৩)
কুরআনের আয়াত নিয়ে গভীর চিন্তাভাবনা করতে তাফসীরের কিতাব গুলো একের পর এক অধ্যায়ন করতে হবে।


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

------------------------
মুফতী ওলি উল্লাহ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

0 votes
1 answer 2,384 views
+1 vote
1 answer 703 views
...