ওয়া আলাইকুমুস-সালাম ওয়া রাহমাতুল্লাহি
ওয়া বারাকাতুহু।
বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম।
জবাবঃ-
করজে হাসানা
হচ্ছে উত্তম ঋণ। এ ঋণ দেওয়ায় রয়েছে সওয়াব। এখানে থাকে না দুনিয়ার কোনো স্বার্থ। তবে
করজে হাসানা নিয়ে এ অর্থ খরচ করতে হবে আল্লাহ তাআলা পছন্দনীয় পথে। তবেই তা হবে সওয়াব
ও উপকারিতা পাওয়ার কারণ। কেননা আল্লাহ তাআলা মানুষকে এভাবে করজে হাসানা দিতে উৎসাহিত
করেছেন-
مَّن ذَا
الَّذِي يُقْرِضُ اللّهَ قَرْضًا حَسَنًا فَيُضَاعِفَهُ لَهُ أَضْعَافًا كَثِيرَةً
وَاللّهُ يَقْبِضُ وَيَبْسُطُ وَإِلَيْهِ تُرْجَعُونَ
‘তোমাদের মধ্যে এমন কে আছে যে, আল্লাহকে করজে হাসানাহ
দিতে প্রস্তুত; এরপর আল্লাহ তাকে দ্বিগুণ-বহু গুণ বৃদ্ধি
করে দেবেন। আল্লাহই সংকোচিত করেন এবং তিনিই প্রশস্ততা দান করেন এবং তাঁরই কাছে তোমরা
সবাইকে ফিরে যেতে হবে।’ (সুরা বাকারা: আয়াত ২৪৫)
বিভিন্ন আয়াতে
তাফসিরবিদরা বিভিন্ন ব্যাখ্যা করেছেন। যার মধ্যে একটি হলো, আল্লাহকে উত্তম ঋণ দেওয়ার অর্থ তাঁর পথে দান-খয়রাত করা। এই মাল
যা মানুষ আল্লাহর পথে ব্যয় করে, তা আল্লাহরই দেওয়া।
তা সত্ত্বেও সেটাকে ঋণ বলে আখ্যায়িত করা আল্লাহর একান্ত অনুগ্রহ বৈ কিছু নয়। তিনি এর
প্রতিদান অবশ্যই দেবেন, যেমন ঋণ পরিশোধ করা
অত্যাবশ্যক হয়।
মানুষকে নিঃশর্ত
ঋণ দিয়ে ঘুরে দাঁড়াতে সহযোগিতা করা দান-সদকার চেয়েও উত্তম। কারণ ভিক্ষুকরা অনেক সময়
বিকল্প অবলম্বন থাকার পরও চেয়ে বেড়ায়। কিন্তু কেউ একান্ত বিপদে না পড়লে কারো কাছে ঋণের
জন্য হাত বাড়ায় না। রাসুল (সা.) বলেছেন, ‘মিরাজের রজনীতে জান্নাতের একটি দরজা দেখলাম, তাতে লেখা রয়েছে যে সাদাকার পুরস্কার দশ গুণ ও কর্জে হাসানার পুরস্কার আঠারো গুণ
পর্যন্ত বৃদ্ধি করা হয়ে থাকে।’ লেখাটি পড়ে রাসুল (সা.) তাঁর খেদমতে নিয়োজিত ফেরেশতাকে
জিজ্ঞেস করলেন, তুমি কি আমাকে বলবে এর কারণ কী? ফেরেশতা জবাব দিলেন, হে আল্লাহর রাসুল (সা.)! এর কারণ হলো, ভিক্ষুক তার কাছে কিছু অবলম্বন থাকা সত্ত্বেও ভিক্ষা চায়, কিন্তু কোনো প্রকৃত অভাবী বিপদে না পড়লে ঋণ চায় না। (ইবনে মাজাহ, হাদিস : ২৪৩১)
আবার কেউ ঋণ
নেওয়ার পর কোনো সংকটে পড়ে গেছে। তার বড় ধরনের কোনো লোকসান হয়ে গেছে, তখন তাকে চাপ না দিয়ে অবকাশ দেওয়ার মধ্যেও দান-খয়রাতের সওয়াব
পাওয়া যায়। রাসুল (সা.) বলেন, যে ব্যক্তি (ঋণগ্রস্ত)
অভাবী ব্যক্তিকে অবকাশ দেবে, সে দান-খয়রাত করার
সওয়াব পাবে। (ইবনে মাজাহ, হাদিস ২৪১৮)
সুবহানাল্লাহ, আর যদি সামর্থ্য থাকে, তাহলে মাফ করে দেওয়ার মধ্যে অফুরন্ত সওয়াব। দুনিয়াতে অভাবী ঋণগ্রস্তের ঋণ মাফ করে
তাকে চিন্তামুক্ত করলে, কিয়ামতের কঠিন দিনে
মহান আল্লাহও ঋণমাফকারীকে চিন্তামুক্ত করবেন। তাকে আরশের ছায়ায় আশ্রয় দেবেন। আবু হুরায়রা
(রা.) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, যে লোক অভাবী ও ঋণগ্রস্তকে সুযোগ প্রদান করে অথবা ঋণ মাফ করে দেয়, কিয়ামতের দিবসে আল্লাহ তাআলা তাকে নিজের আরশের ছায়ায় আশ্রয় প্রদান
করবেন,
যেদিন তাঁর আরশের ছায়া ছাড়া আর কোনো ছায়া থাকবে না। (তিরমিজি, হাদিস ১৩০৬)
প্রশ্নকারী সম্মানিত দ্বীনি ভাই/বোন!
প্রশ্নেল্লিখিত আপনাদের
চুক্তিটি সহিহ হয়েছে। আপনার স্বামী করযে হাসানা হিসেবে আপনার থেকে মোহরানার টাকা করয
নিয়েছে। পরবর্তীতে আপনার স্বামীর উপর আবশ্যক হবে যে, উক্ত করয যথা সময়ে আপনাকে পরিশোধ
করে দিবেন ইনশাআল্লাহ।