আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
33 views
in পরিবার,বিবাহ,তালাক (Family Life,Marriage & Divorce) by (2 points)
আসসালামু আলাইকুম ওয়া রহমাতুল্লাহি ওবারাকাতুহু!
আমার স্বামী প্রবাসী। বর্তমানে ওনি আর্থিক সংকটে থাকায় , আমি বলেছি আমার মোহরানার টাকা এখন আমাকে না দিয়ে ওই টাকা দিয়ে ওনার প্রয়োজন পূরণ করতে অর্থাৎ কর্যে হাসানা হিসেবে টাকাটা ব্যবহার করবেন। যখন অবস্থা ভালো হবে তখন  ঋণ পরিশোধ করবেন।

 ওনি যেহেতু দেশের বাইরে টাকাটা আমার হাতে দিয়ে বলতেও পারবেন না, এটা তোমার মোহরানা। আমিও বলতে পারব না আমার মোহরানার টাকা আপনাকে কর্যে হাসানা দিলাম।

এখন আমার জানার বিষয় হচ্ছে, এভাবে প্রবাসে থেকে টাকা আমার হাতে না দিয়ে ওনি যদি কর্যে হাসানা হিসেবে ব্যবহার করেন, ওনি  আর আমি শুধু মুখে মোহরানা আদায় হয়েছে বললে কি ভুল হবে?

উল্লেখ্য পরবর্তীতে তিনি ঋণ পরিশোধ করবেন।

1 Answer

0 votes
by (62,010 points)

ওয়া আলাইকুমুস-সালাম ওয়া রাহমাতুল্লাহি ওয়া বারাকাতুহু।

বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম।

জবাবঃ-

করজে হাসানা হচ্ছে উত্তম ঋণ। এ ঋণ দেওয়ায় রয়েছে সওয়াব। এখানে থাকে না দুনিয়ার কোনো স্বার্থ। তবে করজে হাসানা নিয়ে এ অর্থ খরচ করতে হবে আল্লাহ তাআলা পছন্দনীয় পথে। তবেই তা হবে সওয়াব ও উপকারিতা পাওয়ার কারণ। কেননা আল্লাহ তাআলা মানুষকে এভাবে করজে হাসানা দিতে উৎসাহিত করেছেন-

مَّن ذَا الَّذِي يُقْرِضُ اللّهَ قَرْضًا حَسَنًا فَيُضَاعِفَهُ لَهُ أَضْعَافًا كَثِيرَةً وَاللّهُ يَقْبِضُ وَيَبْسُطُ وَإِلَيْهِ تُرْجَعُونَ

তোমাদের মধ্যে এমন কে আছে যে, আল্লাহকে করজে হাসানাহ দিতে প্রস্তুত; এরপর আল্লাহ তাকে দ্বিগুণ-বহু গুণ বৃদ্ধি করে দেবেন। আল্লাহই সংকোচিত করেন এবং তিনিই প্রশস্ততা দান করেন এবং তাঁরই কাছে তোমরা সবাইকে ফিরে যেতে হবে।’ (সুরা বাকারা: আয়াত ২৪৫)

বিভিন্ন আয়াতে তাফসিরবিদরা বিভিন্ন ব্যাখ্যা করেছেন। যার মধ্যে একটি হলো, আল্লাহকে উত্তম ঋণ দেওয়ার অর্থ তাঁর পথে দান-খয়রাত করা। এই মাল যা মানুষ আল্লাহর পথে ব্যয় করে, তা আল্লাহরই দেওয়া। তা সত্ত্বেও সেটাকে ঋণ বলে আখ্যায়িত করা আল্লাহর একান্ত অনুগ্রহ বৈ কিছু নয়। তিনি এর প্রতিদান অবশ্যই দেবেন, যেমন ঋণ পরিশোধ করা অত্যাবশ্যক হয়।

মানুষকে নিঃশর্ত ঋণ দিয়ে ঘুরে দাঁড়াতে সহযোগিতা করা দান-সদকার চেয়েও উত্তম। কারণ ভিক্ষুকরা অনেক সময় বিকল্প অবলম্বন থাকার পরও চেয়ে বেড়ায়। কিন্তু কেউ একান্ত বিপদে না পড়লে কারো কাছে ঋণের জন্য হাত বাড়ায় না। রাসুল (সা.) বলেছেন, ‘মিরাজের রজনীতে জান্নাতের একটি দরজা দেখলাম, তাতে লেখা রয়েছে যে সাদাকার পুরস্কার দশ গুণ ও কর্জে হাসানার পুরস্কার আঠারো গুণ পর্যন্ত বৃদ্ধি করা হয়ে থাকে।’ লেখাটি পড়ে রাসুল (সা.) তাঁর খেদমতে নিয়োজিত ফেরেশতাকে জিজ্ঞেস করলেন, তুমি কি আমাকে বলবে এর কারণ কী? ফেরেশতা জবাব দিলেন, হে আল্লাহর রাসুল (সা.)! এর কারণ হলো, ভিক্ষুক তার কাছে কিছু অবলম্বন থাকা সত্ত্বেও ভিক্ষা চায়, কিন্তু কোনো প্রকৃত অভাবী বিপদে না পড়লে ঋণ চায় না। (ইবনে মাজাহ, হাদিস : ২৪৩১)

আবার কেউ ঋণ নেওয়ার পর কোনো সংকটে পড়ে গেছে। তার বড় ধরনের কোনো লোকসান হয়ে গেছে, তখন তাকে চাপ না দিয়ে অবকাশ দেওয়ার মধ্যেও দান-খয়রাতের সওয়াব পাওয়া যায়। রাসুল (সা.) বলেন, যে ব্যক্তি (ঋণগ্রস্ত) অভাবী ব্যক্তিকে অবকাশ দেবে, সে দান-খয়রাত করার সওয়াব পাবে। (ইবনে মাজাহ, হাদিস ২৪১৮)

সুবহানাল্লাহ, আর যদি সামর্থ্য থাকে, তাহলে মাফ করে দেওয়ার মধ্যে অফুরন্ত সওয়াব। দুনিয়াতে অভাবী ঋণগ্রস্তের ঋণ মাফ করে তাকে চিন্তামুক্ত করলে, কিয়ামতের কঠিন দিনে মহান আল্লাহও ঋণমাফকারীকে চিন্তামুক্ত করবেন। তাকে আরশের ছায়ায় আশ্রয় দেবেন। আবু হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, যে লোক অভাবী ও ঋণগ্রস্তকে সুযোগ প্রদান করে অথবা ঋণ মাফ করে দেয়, কিয়ামতের দিবসে আল্লাহ তাআলা তাকে নিজের আরশের ছায়ায় আশ্রয় প্রদান করবেন, যেদিন তাঁর আরশের ছায়া ছাড়া আর কোনো ছায়া থাকবে না। (তিরমিজি, হাদিস ১৩০৬)

প্রশ্নকারী সম্মানিত দ্বীনি ভাই/বোন!

প্রশ্নেল্লিখিত আপনাদের চুক্তিটি সহিহ হয়েছে। আপনার স্বামী করযে হাসানা হিসেবে আপনার থেকে মোহরানার টাকা করয নিয়েছে। পরবর্তীতে আপনার স্বামীর উপর আবশ্যক হবে যে, উক্ত করয যথা সময়ে আপনাকে পরিশোধ করে দিবেন ইনশাআল্লাহ।


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

--------------------------------
মুফতী মুজিবুর রহমান
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...