আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
34 views
in বিবিধ মাস’আলা (Miscellaneous Fiqh) by (8 points)
edited by
আসসালামু আলাইকুম ওয়া রহমাতুল্ল-হ আমার বেশ কিছু প্রশ্নের উত্তর জানার ছিল।

১/কেউ যদি নতুন গুছানো সুন্দর বই ধার নিয়ে তা নষ্ট করে,মলীন করে ফেরত দেয়।

তাহলে কৌশলে বই দিতে অস্বীকৃতি জানালে কি গুনাহ হবে? যদিও বইগুলো ইসলামিক আর সেগুলো পড়লে সে লাভবান হবে। বইগুলো যেভাবে দিয়েছে সেভাবেই ফেরত পাওয়া কি যে ধার দিল তার হক্ব না?

২/বিবাহযোগ্য মেয়ে ঘরে রেখে, অন্য মানুষের মেয়ের জন্য অভিভাবকেরা যদি সুপাত্র খুজে,ঘটখালি করে তাহলে তা কি জায়েজ?অথচ নিজের মেয়ের বিয়ের দিকে তাদের কোনো ভ্রুক্ষেপ নেই।

৩/ কোনো বিষয়ে কারো ব্যবহারে দু:খ পেলে, তার সাথে মনোমালিন্য বা কোনো রকম কটু কথা না বলে চুপ থাকলে বা কথা বলা থেকে বিরত থাকলে কি গুনাহ হবে?শুধু নীরবতা বজায় রেখে অন্য সকল কিছু স্বাভাবিক রাখলে।

৪/ মা এবং ভাইয়ের সম্মতি থাকলে, বাবা রাজি না থাকলে কি বায়ো ডাটা জমা দেয়ার সাইট গুলোতে বায়ো ডাটা জমা দেয়া যাবে? কেননা সেখানে শর্ত থাকে যে অভিভাবকের অনুমতি নিতে হবে।

৫/ আত্নীয়দের ইনকাম যদি হারাম হয়।এতে তাদের বাসায় যাওয়া আসা কমিয়ে দিলে,কলে সহ অন্য সকল ক্ষেত্রে আত্নীয়তার সম্পর্ক বজায় রাখলে কি আত্নীয়তার সম্পর্কের হক্ব আদায় হবে?

৬/নিকট আত্নীয়দের ইনকাম হারাম হলে,তাদের বাসায় না খেয়ে,কৌশলে এড়িয়ে চললে আর বেড়াতে গেলে নিজেরাই কিছু কিনে নিয়ে গিয়ে তা ভাগ করে খেলে,তাদের দাওয়াত কবুল না করার ক্ষেত্রে কৌশল অবলম্বন করলে আর নিজেদের দিক থেকে সম্পূর্ণ উত্তম ব্যবহার বজায় রাখার পরও যদি তারা এই বিষয়ে মনোক্ষুণ্ণ হয় এতে কি গুনাহ হবে?

৭/ আমার একজন নিকট আত্নীয়ের মেয়ের বিয়ে।বিয়ে হবে পুরো সুন্নতী ত্বরিকায়। কিন্তু মেয়ের পিতার ইনকাম হালাল না। এক্ষেত্রে মেয়ের পিতা বিয়েতে স্বল্প পরিসরে কিছু আত্নীয়কে খাওয়ানোর বন্দোবস্ত করলে,আমার আব্বু সেখানে কিছু টাকা দিয়ে শরিক হলে, আমরা কি সেই বিয়ের দাওয়াত কবুল করতে পারব?যেহেতু আমার আব্বুর ইনকাম হালাল এবং তিনি সেখানে কিছু খরচ বহন করছেন আর এ খরচে অনায়াসেই অন্তত ৪ জনের(আমাদের পরিবারের সদস্য ৪জন) খাবারের বন্দোবস্ত হয়ে যাবে।

৮/ কেউ যদি হারাম সম্পর্ক করে বিয়ে করে তাহলে তাদের কখন তাওবা করতে হবে? বিয়ের আগে নাকি পরে? আর বিয়ের পরে কি নিয়মিত আন্তরিকতার সাথে তাওবা করা অব্যাহত রাখতে হবে?

৯/ কারো ইনকাম হারাম হলে সেই বিষয়ে আমরা অবগত থাকলে সেই ব্যক্তিকে কি সেই বিষয়ে সাবধান করা আমাদের দায়িত্বের মধ্যে পড়ে? না বললে কি গুনাহ হবে?

১০/ হারাম ইনকামের সাথে জড়িত কাছের আত্নীয়দের কিভাবে হারাম ইনকাম সম্পর্কে হিকমাহর সাথে দাওয়াহ দেয়া যায় যেন তারা এ বিষয়ে মনোক্ষুণ্ন না হয়?
১১/ আর পর্যাপ্ত সতর্কতার সাথে তাদের এই বিষয়ে দাওয়াহ দেয়ার পরও যদি তারা কষ্ট পায় বা মনোক্ষুণ্ণ হয় এতে কি আমাদের গুনাহ হবে?

১২/ পাত্র/পাত্রী নির্বাচনের ক্ষেত্রে কি কি বিষয় দেখার কথা হাদিসে এসেছে? শুধু দ্বীনদারিতা দেখে বা যাচাই করে যদি কেউ পাত্র/পাত্রী নির্বাচন করে তা কি উত্তম নাকি সাথে কুফুও মেলানো উচিত?
অনেকে আবার বিয়ের ক্ষেত্রে আরও নানান দিক বিবেচনা করতে বলে,যেমন: সৌন্দর্য্যের সামঞ্জস্যতা, অর্থ সম্পদ পাত্রীর চেয়ে পাত্রের বেশি হওয়া, বংশ মর্যাদায় পাত্রী যেন পাত্রের চেয়ে উচু না হয় আরও কত কি।আমার জিজ্ঞাসা হলো এই সকল কিছুকে প্রায়োরিটি না দিয়ে শুধু দ্বীনদারিতা দেখে দুনিয়াবী চাহিদাগুলোকে কমিয়ে বিয়ে করা কি উত্তম নয়? এক্ষেত্রে পাত্র/পাত্রী নির্বাচনের ক্ষেত্রে একজন আল্লাহ ভীরু জীবনসঙ্গী পাওয়ার লক্ষ্যে কি কি বিষয় অবশ্যই দেখা উচিত সে বিষয়গুলো নিয়ে কুরআন ও সুন্নাহর আলোকে কিছু পরামর্শ দিলে কৃতজ্ঞ হবো।

1 Answer

0 votes
ago by (575,580 points)
জবাবঃ-
وعليكم السلام ورحمة الله وبركاته 
بسم الله الرحمن الرحيم

(০১)
হাদীস শরীফে এসেছেঃ- 

حَدَّثَنَا مُسَدَّدٌ عَنْ يَحْيَى عَنْ سُفْيَانَ قَالَ حَدَّثَنِي سَلَمَةُ بْنُ كُهَيْلٍ عَنْ أَبِي سَلَمَةَ عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ أَنَّ رَجُلاً أَتَى النَّبِيَّ صلى الله عليه وسلم يَتَقَاضَاهُ بَعِيرًا فَقَالَ رَسُولُ اللهِ صلى الله عليه وسلم أَعْطُوهُ فَقَالُوا مَا نَجِدُ إِلاَّ سِنًّا أَفْضَلَ مِنْ سِنِّهِ فَقَالَ الرَّجُلُ أَوْفَيْتَنِي أَوْفَاكَ اللهُ فَقَالَ رَسُولُ اللهِ صلى الله عليه وسلم أَعْطُوهُ فَإِنَّ مِنْ خِيَارِ النَّاسِ أَحْسَنَهُمْ قَضَاءً

আবূ হুরাইরাহ (রাঃ) হতে বর্ণিত যে, একজন লোক নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম -এর নিকট তার (প্রাপ্য) উটের তাগাদা দিতে আসে। আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম সাহাবীদের বললেন, তাকে একটি উট দিয়ে দাও। তাঁরা বললেন, তার চেয়ে উত্তম বয়সের উটই পাচ্ছি। লোকটি বলল, আপনি আমাকে পূর্ণ হক দিয়েছেন, আল্লাহ আপনাকে যেন পূর্ণ হক দেন। আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, তাকে সেটি দিয়ে দাও। কেননা, মানুষের মধ্যে সেই উত্তম, যে উত্তমরূপে ঋণ পরিশোধ করে। (বুখারী ২৩৯২,২৩০৫)  (আধুনিক প্রকাশনীঃ ২২১৭, ইসলামিক ফাউন্ডেশনঃ ২২৩৪)

و في الفتاوى الهندية:قال محمدرحمه الله تعالى في الأصل: إذا كان الرجل على دابة بإجارة أو عارية فنزل عنها في السكة ودخل في المسجد ليصلي فخلى عنها فهلكت فهو ضامن.....ولو أدخل المستعير الحمل في بيته وترك الدابة المستعارة في السكة فهلكت فهو ضامن سواء ربطها أو لم يربطها؛ لأنه لم يربطها؛ لأنه لما غيبها عن بصره فقد ضيعها حتى لو تصور أنه إذا دخل المسجد أو البيت والدابة لا تغيب عن بصره لا يجب الضمان، وعليه الفتوى. (4/ 366)
সারমর্মঃ-
কোনো ব্যাক্ত যদি কাহারো বাহন ধার বা ভাড়ায় নিয়ে বাজারে রেখে মসজিদে গমন করে,বাহন যদি হারিয়ে যায়,সেক্ষেত্রে সে জামিন হবে। 

★সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি বোন,
বইগুলো যেভাবে দিয়েছে, সেভাবেই ফেরত পাওয়া যে ধার দিল তার হক্ব।

সুতরাং কেউ যদি নতুন গুছানো সুন্দর বই ধার নিয়ে তা নষ্ট করে,মলীন করে ফেরত দেয়।
সেক্ষেত্রে ক্ষমা চেয়ে নিবে,মালিক ক্ষমা না করলে সেক্ষেত্রে ক্ষতিপূরণ বাবদ কিছু টাকা দিবে।

(০২)
এক্ষেত্রে দেড়ি করা অভিভাবকদের জন্য ঠিক নয়। 
মেয়ের দ্বারা কোনো গুনাহ হয়ে গেকে তার দায়ভার মেয়ের বাবার উপর বর্তাবে।

(০৩)
এমনটি জায়েজ আছে।
তবে ৩ দিনের বেশি যেহেতু কথা বলা বন্ধ রাখা জায়েজ নয়,তাই প্রশ্নে উল্লেখিত ছুরতে কমপক্ষে সালাম বিনিময় করতে হবে।

(০৪)
এখানে অভিভাবক হলো আপনার বাবা।
তাই তিনি অনুমতি না দিলে সেক্ষেত্রে অভিভাবক অনুমতি দিয়েছেন বলাটা মিথ্যা হবে।

(০৫)
হক আদায় হবে।
বিপদ আপদে সাধ্যের মধ্যে থেকে পাশে দাড়ানোর চেষ্টা করতে হবে।

(০৬)
প্রশ্নের বিবরন মতে এক্ষেত্রে গুনাহ হবেনা।

(০৭)
প্রশ্নের বিবরণ মতে আপনারা সেই বিয়ের দাওয়াত কবুল করতে পারবেন।

(০৮)
হারাম সম্পর্কের কারনে বিয়ের আগেও তওবা করবে,বিয়ের পরেও তওবা করবে।

(০৯)
আপনার অধিনস্ত হলে বা নিকটতম আত্মীয় হলে সেটা আপনার আবশ্যকীয় দায়িত্ব।  

(১০)
এ ব্যপারে ইবাদত দোয়া কবুলের হাদীস গুলো বলে তাদের বুঝাতে হবে।

(১১)
না,গুনাহ হবেনা।

(১২)
কুফু মিলানোর কথা হাদীসে এসেছে।
তবে দ্বীনদারিত্বকে প্রাধান্য দেয়ার ব্যপারে রাসুলুল্লাহ সাঃ সতর্ক করেছেন।

হাদীস শরীফে এসেছেঃ  
 
وَعَنْ أَبِىْ هُرَيْرَةَ قَالَ : قَالَ رَسُوْلُ اللّٰهِ ﷺ : «تُنْكَحُ الْمَرْأَةُ لِأَرْبَعٍ : لِمَالِهَا وَلِحَسَبِهَا وَلِجَمَالِهَا وَلِدِينِهَا فَاظْفَرْ بِذَاتِ الدَّيْنِ تَرِبَتْ يَدَاكَ»

আবূ হুরায়রাহ্ (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন যে, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ (মূলত) চারটি গুণের কারণে নারীকে বিবাহ করা হয়- নারীর ধন-সম্পদ, অথবা বংশ-মর্যাদা, অথবা রূপ-সৌন্দর্য, অথবা তার ধর্মভীরুর কারণে। (রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন) সুতরাং ধর্মভীরুকে প্রাধান্য দিয়ে বিবাহ করে সফল হও। আর যদি এরূপ না কর তাহলে তোমার দু’ হাত ধূলায় ধূসরিত হোক (ধর্মভীরু মহিলাকে প্রাধান্য না দিলে ধ্বংস অবধারিত)!
(সহীহ বুখারী ৫০৯০, মুসলিম ১৪৬৬, নাসায়ী ৩২৩০, আবূ দাঊদ ২০৪৭, ইবনু মাজাহ ১৮৫৮, আহমাদ ৯৫২১, ইরওয়া ১৭৮৩, সহীহ আল জামি‘ ৩০০৩।)

কুফু সম্পর্কে বিস্তারিত জানুনঃ  https://www.ifatwa.info/4541/


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

------------------------
মুফতী ওলি উল্লাহ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...