আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
56 views
in বিবিধ মাস’আলা (Miscellaneous Fiqh) by (2 points)
আসসালামু আলাইকুম ওয়ারহমাতুল্লহ।

 ২০২০ সালে আমি দ্বীনের বুঝ পাই। তারপর থেকে একটা ঘটনা আমার সাথে ঘটছে। ৩-৪ মাস পরপর আমি একটা স্টেজ পার করি যে সময়টাতে আমি ইবাদত, ইলম, স্বাভাবিক সমস্ত কাজ থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ি। আমি কিছুই করতে পারি না। সবকিছু আমার কাছে অস্বাভাবিক কঠিন লাগে। আমার অন্তর যন্ত্রণায় দগ্ধ হতে থাকে। কিছু করতে না পারায় অন্তরের ব্যথা আরো বেড়ে যায়। অন্তরের এমন তীব্র ব্যথা, যা আমার কাছে বিভীষিকাময় লাগে। আমি এইসময়টাতে নির্বাক দৃষ্টিতে তাকিয়ে থাকি। আমার এই অচল অবস্থাকে আরো কঠিন করে তোলে আমার দুর্বলতাগুলো। সমস্ত চিন্তা এসে গ্রাস করে আমাকে। আমি বের হতেই পারিনা এসব চিন্তা থেকে। এই সময়টা ১০-১৫ দিন আবার কখনো কমবেশি হয়। আমার ইচ্ছে হয় মরে যাই। মাটির সাথে মিশে যেতে ইচ্ছে করে, হারিয়ে যেতে ইচ্ছে করে। এসময়টাতে একটা আকুতি আমার অন্তরে আসে, কেউ একজন এসে আমাকে কিছু বলুক, আমি মন্ত্রমুগ্ধের মত তাকে শুনি।  আমার এমনটা কেন হয়, আমার কি করণীয় আমাকে জানাবেন ওস্তায। আমার পরিস্থিতিটা খুব কঠিন।

1 Answer

0 votes
by (61,230 points)

ওয়া আলাইকুমুস-সালাম ওয়া রাহমাতুল্লাহি ওয়া বারাকাতুহু

বিসমিল্লাহির রহমানির রহীম

জবাব:-

https://ifatwa.info/108728/  নং ফাতওয়াতে উল্লেখ করা হয়েছে যে,

এহেন চিন্তা শয়তানের পক্ষ থেকে আসে। তাই এহেন চিন্তা আসলেই বিতাড়িত শয়তান থেকে আল্লাহর কাছে পানাহ চাইবেন।  আল্লাহ তায়ালা  বলেন,

وَإِمَّا يَنزَغَنَّكَ مِنَ الشَّيْطَانِ نَزْغٌ فَاسْتَعِذْ بِاللَّهِ ۖ إِنَّهُ هُوَ السَّمِيعُ الْعَلِيمُ

যদি শয়তানের পক্ষ থেকে তুমি কিছু কুমন্ত্রণা অনুভব কর, তবে আল্লাহর শরণাপন্ন হও। নিশ্চয় তিনি সর্বশ্রোতা, সর্বজ্ঞ। (সূরা হা-মীম-সিজদাহ ৩৬)

প্রশ্নে উল্লেখিত খারাপ খারাও চিন্তাকে গুরুত্ব না দিয়ে কোনো উপকারী কাজে ব্যস্ত হয়ে যাবেন।  বুদ্ধিমানের কাজ হল, সমস্যাটিকে স্বাভাবিক মনে করে একে গুরুত্ব না দেয়া।

হাদিসে এসেছে, একবার সাহাবায়ে কেরমের একদল রাসূলুল্লাহ -এর কাছে এসে জিজ্ঞাসা করলেন, আমরা আমাদের অন্তরে কখনো কখনো এমন বিষয় অনুভব করি, যা মুখ দিয়ে উচ্চারণ করা আমাদের কাছে খুব কঠিন মনে হয়। রাসূলুল্লাহ বললেন, সত্যিই কি তোমরা এরকম পেয়ে থাক? তাঁরা বললেন হ্যাঁ, আমরা এরকম অনুভব করে থাকি। রাসূলুল্লাহ বললেন, ذَاكَ صَرِيحُ الْإِيمَانِ এটি তোমাদের ঈমানের স্পষ্ট প্রমাণ। (মুসলিম, কিতাবুল ঈমান, অনুচ্ছেদ: অন্তরের ওয়াসওয়াসা)

ইবন আব্বাস রাযি. থেকে বর্ণিত আরেক হাদিসে এসেছে, রাসূলুল্লাহ -এর কাছে একজন লোক এসে বললেন, আমার মনে কখনো এমন কথার উদয় হয়, যা উচ্চারণ করার চেয়ে আগুনে পুড়ে কয়লা হয়ে যাওয়া আমার কাছে বেশি ভালো মনে হয়। রাসূলুল্লাহ বললেন,

 الْحَمْدُ لِلَّهِ الَّذِي رَدَّ أَمْرَهُ إِلَى الْوَسْوَسَةِ

 সমস্ত প্রশংসা আল্লাহর জন্য যিনি এ বিষয়টিকে নিছক একটি মনের ওয়াসওয়াসা হিসাবে নির্ধারণ করেছেন। (আবু দাউদ, কিতাবুল আদব, অনুচ্ছেদ: ওয়াসওয়াসা প্রতিরোধ)

আপনি নিম্নোক্ত দোয়া বেশি বেশি পাঠ করবেন।

আনাস রাযি. বলেন, রাসুল (উম্মতকে শিক্ষা দেওয়ার জন্য) সব সময় এই দোয়া করতেন,

يَا مُقَلِّبَ الْقُلُوْبِ ثَبِّتْ قَلْبِىْ عَلىٰ دِيْنِكَ

হে অন্তর পরিবর্তনকারী! আমার অন্তর আপনার দীনের উপর দৃঢ় করে দিন।

আনাস রাযি. বলেন, আমি বললাম, হে আল্লাহর রাসুল! আমরা আপনার উপর এবং আপনার আনিত শিক্ষার উপর ঈমান এনেছি। এখন আপনার মনে কি আমাদের সম্পর্কে কোনো সন্দেহ আছে? ( যে বেশি বেশি এই দোয়া করেন!) রাসুল উত্তর দিলেন হ্যাঁ! সব অন্তর আল্লাহর দুই আঙ্গুলের মধ্যে পড়ে আছে। আল্লাহ যেভাবে চান, এগুলোকে পরিবর্তন করেন। (তিরমিযি ২১৪০ তাকদির অধ্যায়)

সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনী ভাই/বোন!

প্রশ্নে উল্লেখিত ছুরতে আপনি উপরে উল্লেখিত নসিহাগুলো পালন করার পাশাপাশি মানসিক দুশ্চিন্তা থেকে মুক্তি পেতে বেশি বেশি যেই কাজগুলো করতে হবে তার মধ্যে অন্যতম, তাওবাহ-ইসতেগফার করা, আল্লাহর প্রতি তাওয়াক্কুল করা, হাসি-খুশি থাকার চেষ্টা করা, নামাজে মনোযোগী হওয়া, দোয়া ও জিকির করা, কুরআন তেলাওয়াত করা ইত্যাদী। পরিশেষে দ্বীনদার নারীদের সাথে সম্পর্কে রাখতে হবে এবং তাদের সাথে দ্বীনি বিষয়ে পরস্পরে আলোচনা করলে নিজের ঈমান আরো বৃদ্ধি হবে ইনশাআল্লাহ।  


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

--------------------------------
মুফতী মুজিবুর রহমান
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...