আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
72 views
in পরিবার,বিবাহ,তালাক (Family Life,Marriage & Divorce) by (1 point)
আসসালামু আলাইকুম। মেয়ের বাবা-মা বেঁচে নেই। ওলি বলতে কেউ নেই, মেয়ে ওমরাহর সুবাদে মদিনাতে এক বিপদগ্রস্ত এক ভিনদেশী নারীকে সাহায্য করেন, সেই জের ধরে ঐ আন্টির ভাগ্না ভাগ্নিদের সাথে পরিচয় করিয়ে দেন। মেয়েটি ওমরাহর থেকে এসে নিয়ত করেন ভালো কোন ছেলে পেলে বিয়ে করে নিবেন যেহেতু একাকীত্ব ফিল করেন, কারণ তাঁর বান্ধবীরাও বিয়ে করে ব্যাস্ত হয়ে গেছে, কথা বলার মত ও কেউ নেই । পরিচয়ের জের ধরে ছেলের ভালো মন্দ বুঝার উদ্দেশ্যে কথা বলেন। পরবর্তী তে বিয়ে হয়, কিন্তু বিয়ের পরবর্তী জানতে পারে ছেলের চরিত্র ভালো না, আগে বুঝতে পারেননি কিছুতেই। বিয়ের দশদিন পর ছেলের গার্লফ্রেন্ডের বিষয় নিয়ে স্ত্রী আপত্তি জানালে ছেড়ে দেওয়ার কথা বলে। সে-ই থেকে প্রায় সময় কথা হলেই ছেড়ে দেওয়ার কথা বলে। ( বলা বাহুল্য,  উনারা দুইজন দুই দেশে থাকেন, ছেলে অকর্মা, অলস, কুড়ে বাবা মায়ের সাথেই থাকেন। মেয়েকে এখনো নিয়েই যাননি তাদের বাড়িতে, মেয়েকে কোন ভরণপোষণের দায়িত্ব ও ছেলে পালন করেননি) ছেলেটা কথায় কথায় প্রায় সময় আকারে ইঙ্গিতে তালাকের কথা বলে।   স্বামী স্ত্রী দুজনের মধ্যে তালাকের বিষয় নিয়ে কথা কাটাকাটি হচ্ছিল। কথার ফাঁকে ছেলে বলেন ( মা কালীর দিব্যি)।  মেয়েটা আল্লাহকে খুব পায়, মেয়েটা জানত মুসলিম এবং কাফির বা মুশরিকের বিয়ে অটো বাতিল হয়ে যায় সেটা তাঁর স্বামীকে জানায়, এবং এধরণের কথা বলতে নিষেধ করে।  ছেলে টা উল্টো চটে গিয়ে ব'লে আমি হিন্দু আমি হিন্দু আমি হিন্দু - এখন তুমি কোন মুফতির কাছ থেকে ফতোয়া এনে দিতে পার দেখি- আমি মুসলিম নেই সেটার প্রমাণ কর।

জানতে চাচ্ছি - এদের বিয়ে কি হালাল অবস্থানে আছে?  বা ছেলেটা কি মুসলিম হিসেবে আছে না-কি ধর্ম চেঞ্জ হয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা আছে?

[বি. দ্র. মেয়েটা আগে অনেক দ্বীনদার পরহেজগার ছিলেন, এখন দিনকে দিন গাফেল হয়ে যাচ্ছে, সেটা নিয়ে ও ভয় পাচ্ছে মেয়েটা, জীবন বাঁচাবে না দ্বীন বাঁচাবে না ইজ্জত বাঁচাবে। মরে যাওয়া টা-ই একমাত্র সমাধান মনে করে- কারণ, বিয়ে করে উল্টো সুখুন নষ্ট হয়ে গেছে, মেয়েটি মানসিকভাবে শান্তিতে নেই, আল্লাহর কাছ থেকে ও দূরে ছিটকে পড়ার ভয় করছে  ]

এখন মেয়েটার কি করা উচিত?

1 Answer

0 votes
by (574,050 points)
জবাবঃ-
وعليكم السلام ورحمة الله وبركاته 
بسم الله الرحمن الرحيم

শরীয়তের বিধান হলো ইচ্ছাপূর্বক ভাবে নিজেকে নিজে কাফের বলে পরিচয় দেওয়া কুফরী। 

সূরা নাহলের ১০৬ নম্বর আয়াতে বলা হয়েছে-

مَنْ كَفَرَ بِاللَّهِ مِنْ بَعْدِ إِيمَانِهِ إِلَّا مَنْ أُكْرِهَ وَقَلْبُهُ مُطْمَئِنٌّ بِالْإِيمَانِ وَلَكِنْ مَنْ شَرَحَ بِالْكُفْرِ صَدْرًا فَعَلَيْهِمْ غَضَبٌ مِنَ اللَّهِ وَلَهُمْ عَذَابٌ عَظِيمٌ (106)

“কেউ বিশ্বাস স্থাপনের পর আল্লাহকে অস্বীকার করলে এবং প্রত্যাখ্যানের জন্য হৃদয় মুক্ত রাখলে তার উপর আল্লাহ ক্রোধ পতিত হবে এবং তার জন্য রয়েছে মহাশাস্তি। তবে তার জন্য নয়, যাকে (সত্য প্রত্যাখ্যানে) বাধ্য করা হয়, কিন্তু তার অন্তর বিশ্বাসে অটল।” (১৬:১০৬)
,

ফাতাওয়ায়ে আলমগীরী তে আছে
"وَمَنْ يَرْضَى بِكُفْرِ نَفْسِهِ فَقَدْ كَفَرَ."
(كتاب السير، الْبَابُ التَّاسِعُ فِي أَحْكَامِ الْمُرْتَدِّين ، مطلب فِي مُوجِبَاتُ الْكُفْرِ أَنْوَاعٌ مِنْهَا مَا يَتَعَلَّقُ بِالْإِيمَانِ وَالْإِسْلَامِ، ٢ / ٢٥٧، ط: دار الفكر)
"এবং যে কুফরীতে সন্তুষ্ট থাকে, সে কাফের হয়ে গেছে।

এ সংক্রান্ত বিস্তারিত জানুনঃ   

কেউ যদি ইচ্ছাকৃতভাবে নিজেকে হিন্দু বলে পরিচয় দেয়,সেক্ষেত্রে সে কাফের হয়ে যাবে।
তাকে পুনরায় ঈমান আনতে হবে।
বিবাহিত হলে বিবাহ নবায়ন করতে হবে।

فتاوی عالمگیریہ:
"مسلم قال: أنا ملحد يكفر، ولو قال: ما علمت أنه كفر لا يعذر بهذا."
(کتاب السیر ،باب احکام المرتدین،ج:2،ص:279،ط:رشیدیہ)
সারমর্মঃ-
কোনো মুসলিম বলেছে যে আমি মুরতাদ, তাহলে সে কাফের হয়ে যাবে।
এক্ষেত্রে যদি সে বলে যে আমি তো জানিনা যে এটি কুফর,তাহলে সেই ওযর গ্রহণযোগ্য হবেনা।

★সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি ভাই/বোন,
প্রশ্নের বিবরন মতে উক্ত দম্পত্তির বিবাহ ফাসেদ হয়ে গিয়েছে। স্বামী মুরতাদ হয়ে গিয়েছে।

পুনরায় ঘর সংসার করতে চাইলে পুনরায় ঈমান গ্রহন করে বিবাহ পড়িয়ে নেয়া আবশ্যক। 

উক্ত বোনের প্রতি পরামর্শ, 
আত্মহত্যা এটি কোনো সমাধানের বিষয় নয়।
এর জন্য নিজের দুনিয়াবী জীবন ও  আখেরাতের অনন্তকালর জীবনকে ধ্বংসের দিকে ঠেলে দিবেননা।
এর আখেরাতে চিরস্থায়ী জাহান্নামে যেতে হবে।

কেহ যদি দুনিয়ায় যেনা করে,সেও তো তওবা করলে মাফ পাবে।
কিন্তু আত্মহত্যা করলে চিরস্থায়ী জাহান্নাম।
সুতরাং এটি কোনোভাবেই বুদ্ধিমান ব্যাক্তির কাজ হতেই পারেনা।
,
অহেতুক পেরেশানী করে নিজেকে ক্ষতিগ্রস্ত করবেন না। আপনি কিছুদিন সংসারের বাহিরে থাকুন।

প্রয়োজনে কোনো মাহরামের সাথে করে মাস্তুরাত জামাতে গিয়ে সময় লাগান,চিল্লায় চলে যান, মনের তীব্র কনফিউশন থেকে নিজেকে মুক্ত করে নিন। 
,
এই দুনিয়ার কেহই আমাদের আপন নয়,শুধুমাত্র এক আল্লাহই আমাদের আপন।
মায়ের পেটে থাকা অবস্থাতেও তিনি আমাদের দেখাশোনা করেছেন,কবর জগতেও তিনিই একমাত্র আপন থাকবেন।

তিনি ছাড়া কেহই আমাদের আপন নন।
সুতরাং একমাত্র মহান আল্লাহর সন্তুষ্টি কামনায়,তার আদেশ পালনার্থে আত্মহত্যা করবেননা।
,
দুনিয়ার জিন্দেগী দাঁতে দাঁত চেপে হলেও সহ্য করুন,আখেরাতের অনন্তকাল জিন্দেগীর শান্তি কামনায়,,,।

★আপনাদের বিবাহ তো ফাসেদ হয়েই গিয়েছে,শরীয়তের দৃষ্টিকোণ হতে এখন আপনারা তো আর স্বামী স্ত্রী নন,
সুতরাং প্রয়োজনে পুনরায় বিবাহ না পড়িয়ে  সংসার জীবন আপনি আপাতত বাদ দিয়ে শরীয়তের গন্ডির মধ্যে থেকে কোনো হালাল চাকরি করে জীবন পরিচালনা করুন,পরবর্তীতে দ্বীনদার কোনো পাত্র পেলে বিবাহ করে নিবেন।

আরো জানুনঃ- 


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

------------------------
মুফতী ওলি উল্লাহ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...