وعليكم السلام ورحمة الله وبركاته
بسم الله الرحمن الرحيم
(০১)
গাশত মানে : ভ্রমণ, ঘোরাফেরা করা, দ্বীনের দাওয়াত নিয়ে যাওয়া।
গাশতের প্রমান ও ফজিলত হাদীস শরীফে আছেঃ-
عَنِ ابْنِ عَبَّاسٍ، عَنِ النَّبِيِّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قَالَ: غَدْوَةٌ فِي سَبِيلِ اللهِ، أَوْ رَوْحَةٌ خَيْرٌ مِنَ الدُّنْيَا وَمَا فِيهَا
ইবনে আব্বাস রাঃ থেকে বর্ণিত। রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেছেন: আল্লাহর রাস্তায় এক সকাল অথবা এক বিকাল দুনিয়া ও দুনিয়ার ভিতর যা কিছু আছে, তা থেকে উত্তম। [সুনানে তিরমিযী, হাদীস নং-১৬৪৮, সহীহ বুখারী, হাদীস নং-৬১৯৯, সহীহ মুসলিম, হাদীস নং-৪৯৮৫, সহীহ ইবনে হিব্বান, হাদীস নং-৭৩৯৮, সুনানে নাসায়ী কুবরা, হাদীস নং-৪৩২৭, আল মু’জামুল আওসাত, হাদীস নং-৮৬৬৭, আল মু’জামুল কাবীর, হাদীস নং-৫৮৩৫, মুসনাদে আবী আওয়ানা, হাদীস নং-৭৩৫৪, মুসনাদে আহমাদ, হাদীস নং-১২৬০২, মুসনাদুল বাজ্জার, হাদীস নং-৩৫৪৮, মুসনাদুর রাবী, হাদীস নং-৪৬৬, মুসনাদে আব্দ বিন হুমাইদ, হাদীস নং-২২৫, মুসান্নাফে ইবনে আবী শাইবা, হাদীস নং-১৯৮২০, মুসান্নাফে আব্দুর রাজ্জাক, হাদীস নং-৯৫৪৩]
হযরত আবূ বকর সিদ্দীক রাঃ যখন উসামা বিন জায়েদ রাঃ কে জিহাদের জন্য শামে প্রেরণ করছিলেন। তখন:
وَهُوَ مَاشٍ وَأُسَامَةُ رَاكِبٌ، فَقَالَ لَهُ أُسَامَةُ: يَا خَلِيفَةَ رَسُولِ اللَّهِ، لَتَرْكَبَنَّ أَوْ لَأَنْزِلَنَّ! فَقَالَ: وَاللَّهِ لَا نَزَلْتَ وَلَا أَرْكَبُ، وَمَا عَلَيَّ أَنْ أُغَبِّرَ قَدَمَيَّ سَاعَةً فِي سَبِيلِ اللَّهِ! فَإِنَّ لِلْغَازِي بِكُلِّ خُطْوَةٍ يَخْطُوهَا سَبْعَمِائَةِ حَسَنَةٍ تُكْتَبُ لَهُ، وَسَبْعَمِائَةِ دَرَجَةٍ تُرْفَعُ لَهُ، وَسَبْعَمِائَةِ سَيِّئَةٍ تُمْحَى عَنْهُ
আবূ বকর রাঃ পায়ে হেটে যাচ্ছিলেন। আর হযরত উসামা রাঃ ছিলেন সাওয়ারীর উপরে। তখন উসামা রাঃ আবূ বকর রাঃ কে বললেন: “হে আল্লাহর রাসূলের খলীফা! আপনি সাওয়ারীতে উঠবেন নাকি আমি নামবো? আবূ বকর সিদ্দীক রাঃ বললেন, আল্লাহর কসম! তুমি নামবে না এবং আমিও উঠবো না। এতে কি সমস্যা যে, আল্লাহর রাস্তায় আমার পায়ে কিছু ধুলাবালি লাগুক। কেননা, আল্লাহর রাস্তায় গমণকারীর প্রতিটি পদক্ষেপে সাতশত করে নেকী লেখা হয়। সাতশতটি মর্যাদা বুলন্দ হয় এবং সাতশতটি গোনাহ মাফ হয়। [আলকামেল ফিত তারীখ-২/১৯৫, তারীখে তাবারী-৩/২২৬]
أَبَا هُرَيْرَةَ، فَقَالَ: سَمِعْتُ رَسُولَ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ يَقُولُ: “مَوْقِفُ سَاعَةٍ فِي سَبِيلِ اللَّهِ خَيْرٌ مِنْ قِيَامِ لَيْلَةِ الْقَدْرِ عِنْدَ الْحَجَرِ الْأَسْوَدِ”
অনুবাদ-হযরত আবু হুরায়রা রাঃ থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন আমি রাসূল সাঃ বলিতে শুনিয়াছি যে, তিনি বলেছেন- আল্লাহর রাস্তায় কিছুক্ষণ দাঁড়িয়ে থাকা শবে কদরে হাজরে আসওয়াদের সামনে ইবাদত করা হইতে উত্তম। [সহীহ ইবনে হিব্বান, হাদীস নং-৪৬০৩, শুয়াবুল ঈমান, হাদীস নং-৩৯৮১, কানযুল উম্মাল ফি সুনানিল আকওয়াল ওয়াল আফআল, হাদীস নং-১০৫৬০, জামেউল আহাদীস, হাদীস নং- ২৪৩৪৮]
★সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি ভাই/বোন,
যদি ইখলাসের সহিত ছওয়াবের উদ্দেশ্যে উক্ত গাশত করা হয়,সেক্ষেত্রে উহা মুস্তাহাব হবে
(০২)
এ সময় পায়ের দিকে তাকিয়ে কাতার সোজা হয়েছে কিনা,সেটা প্রত্যক্ষ করা,অতঃপর তাকবিরে তাহরিমার জন্য সোজা হয়ে দাঁড়িয়ে সেজদার স্থানের দিকে নজর রাখা,মাথা না ঝুকানোর শিক্ষা হাদীসে এসেছে।
(০৩)
হাদীস শরীফে এসেছেঃ-
রাসুল সাঃ বলেন-
وَإِيّاكُمْ وَمُحْدَثَاتِ الْأُمُورِ، فَإِنّ كُلّ مُحْدَثَةٍ بِدْعَةٌ، وَكُلّ بِدْعَةٍ ضَلَالَةٌ.
আর সকল নব উদ্ভাবিত বিষয় থেকে দূরে থাকবে। কারণ, সকল নব উদ্ভাবিত বিষয় বিদআত। আর সকল বিদআত গোমরাহী ও ভ্রষ্টতা।’ (দ্র. মুসনাদে আহমাদ, হাদীস ১৭১৪২, ১৭১৪৫)
আরেক হাদীসে আছে-
مَنْ أَحْدَثَ فِي أَمْرِنَا هَذَا مَا لَيْسَ مِنْهُ فَهُوَ رَدّ .
‘যে আমাদের এই বিষয়ে (অর্থাৎ দ্বীন ও শরীয়তে) এমন কিছু উদ্ভাবন করবে, যা তার অংশ নয়, তা প্রত্যাখাত।’ -সহীহ মুসলিম, হাদীস ১৭১৮; সহীহ বুখারী, হাদীস ২৬৯৭
বিদ'আত কাকে বলে?
বিদআত বলা হয় দ্বীন ও ইবাদতে নব আবিষ্কৃত কাজকে। অর্থাৎ দ্বীন বা ইবাদত মনে করে করা এমন কাজকে বিদআত বলা হবে, যে কাজের কুরআন ও সহীহ সুন্নাহর কোন দলীল নেই।
নব আবিষ্কৃত পার্থিব কোন বিষয়কে বিদআত বলা যাবে না। যেমন শরীয়াতে নিষিদ্ধ কোন কাজকে বিদআত বলা হয় না। বরং তাকে অবৈধ, হারাম বা মাকরূহ বলা হয়।
বিদআত বলা হয় দ্বীন বিষয়ক কোন নতুন কর্মকে, যার কোন দলীল শরীয়তে নেই।
মহানবী (সঃ) বলেছেন, “ অবশ্যই তোমাদের মধ্যে যারা আমার বিদায়ের পর জীবিত থাকবে তাঁরা অনেক রকমের মতভেদ দেখতে পাবে। অতএব তোমরা আমার ও আমার সুপথপ্রাপ্ত খোলাফায়ে রাশেদ্বীনের সুন্নাহ অবলম্বন করো, তা দাঁত দ্বারা দৃঢ়তার সাথে ধারণ করো। (তাতে যা পাও মান্য কর এবং অন্য কোনও মতের দিকে আকৃষ্ট হয়ো না।) আর (দ্বীনে) নবরচিত কর্মসমূহ হতে সাবধান! কারণ, নিশ্চয় প্রত্যেক বিদআত (নতুন আমল) হল ভ্রষ্টতা।”(আবু দাঊদ ৪৪৪৩, তিরমিযী ২৮১৫, ইবনে নাজাহ ৪২ নং)
পারিভাষিক অর্থে বিদআত হলো, যে আমল বা কাজ নবীজী ও তার সাহাবা এবং তাবেয়ী যুগে ছিল না। সেই কাজ বা আমলকে সওয়াব মনে করে ইসলামের অংশ মনে করে করার নাম হল বিদআত।