আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
32 views
in বিবিধ মাস’আলা (Miscellaneous Fiqh) by (4 points)
আসসালামু আলাইকুম ওয়া রহমাতুল্লাহি ওয়া বারকাতুহ্।
১/ স্বপ্নে দেখলাম এলাকায় বন্যা। বন্যার পানি ঘুলাটে।    গরম পানি ফুটলে যেইরকম এইরকম বন্যার পানি টগবগ করছে। তারপর দেখলাম আমি একটা পরিচিত ছেলেকে  কিছু আমল দিলাম তারপর তার মেসেজ এর কোনো রিপ্লাই দিলাম না। তারপর একটা জায়গা দিয়ে কোথায় যেন যাচ্ছি। ওই জায়গায় হিন্দুদের অনুষ্ঠান তাই তারা অনুষ্ঠানের জন্য আয়োজন করতেছে। মনে মনে বলতেছি, অনুষ্ঠানে গেলে ত সমস্যা  নাই আমি ত আল্লাহকে মানি তাদের মুর্তি আমি মানিনা।  তখন এক পুরুহিত আমাকে দেখে লাঠি দিয়ে  ৪-৫ টা বারি মারছে। তারপর আমি ওইখান থেকে বের হয়ে যাই। বের হওয়ার পরই রাস্তায় দেখি, অনেক আলেম এবং দ্বীনদার লোকেরা  দাড়ি টুপি পড়া পুরুষরা সব রাস্তাতে রাস্তার পাশে। তারপর  দেখি স্কুল পড়ুয়া মেয়েদেরকে  ছুটি  দিছে তারা বাড়িতে চলে যাচ্ছে । আমি তাদের সাথে আমার বাড়িতে যেতে চাচ্ছিলাম কিন্তু  যেতে পারিনি আমি ওইখানেই হারায় যায়৷ তারপর সাহায্যের জন্য দুইজন  ছেলে আসে একজন কালো গেন্জি পেন্ট পড়ুয়া ছিল আরেকজন সাদা পাঞ্জাবি টুপি পড়া ছিল। দুজনই দ্বীনদার। তারপর কালো গেঞ্জিওয়ালা ভাই আমাকে অর্ধেক রাস্তা আগাই দিছে বাকি অর্ধেক রাস্তা সাদা পান্জাবিওয়ালা লোকটা আগায় দিতেছিল তারপর ঘুম ভেঙ্গে  যাই।
★এই স্বপ্নের ব্যাখ্যা কি..?
২/ আমার নানু স্বপ্নে দেখছে,, কার বাড়িতে যেনো জেফত ( মানে কেউ মারা গেলে খাবারের অনুষ্ঠান করে সবাইকে খাওয়ানো) হচ্ছে। আমার নানুর এক মহিলা আত্মীয় সে আমাকে কারো বাড়িতে নিয়ে যাচ্ছে।  নানু বলতেছে, আরেহ্  আমার নাতীকে নিয়ে যাচ্ছো কেন?  নানুর ওই আত্মীয়  বলতেছে,, তাকে এখানে সাজাবোনা আমাদের বাড়িতে সাজাবো। তারপর আমি বোরকা পড়ে রেডি হচ্ছিলাম তার সাথে যাওয়ার জন্য৷
★এই স্বপ্নের ব্যাখ্যা কি?
৩/ আমি স্বপ্নে দেখলাম,,  আমাদের বাড়িতে কেউ নাই। একদম নিস্তব্ধ। তারপর একজন পুরুষ  আসলো  তাকে দেখে আমি ভয় পেলাম। ভয়ে আমি দেয়ালের সাথে ধাক্কা দিয়ে দাড়িয়ে থাকলাম আর সূরা কাহাফ মনে হয় পড়তে ইচ্ছে  করছিল কিন্তু  পড়িনি। তারপর সেই লোকটা আমার সামনে দিয়ে গেলো অথচ আমাকে দেখতে পেলো না। তারপর লোকটা কাউকে না পেয়ে চলে গেলো। তারপর দেখলাম আমাদের ছাদে দুইটা বাচ্চা। ১ম টা ৩/৪ বছরের।আর ২য় টা তার থেকে ছোট কিন্তু সেটা ছেলে নাকি মেয়ে খেয়াল নেই। তারপর দেখলাম আমি আমার দাদুর ঘরে সেখানে খাটের উপরে নিচে সবাই শুয়ে ঘুমিয়ে আছে। তারপর দেখলাম আমার দুইটা বাচ্চা একটা ৩-৪ বছরের আরেকটা একদম ছোট ১/২ মাসের। দুজনেই ঘুমিয়ে আছে । আমার স্বামীও আছে এখানে। তারপর আমার স্বামী আমাকে স্পর্শ করে। সহবাস করতে চাচ্ছিল। তারপর ঘুম ভেঙ্গে যাই।

আমি বার বার স্বপ্নে দেখি কেউ আমার সাথে সহবাস করছে এবং আমার বাচ্চা  আছে..
★উল্লেখ্য,আমি অবিবাহিত। এই স্বপ্নের ব্যাখ্যা কি??
৪/  সূর্য পশ্চিম দিকে উঠলে তওবার দরজা বন্ধ হয়ে যাই।
আমি যদি  এভাবে দুয়া করি,,,আল্লাহ তুমি আমার, আমার ফ্যামিলির লোকদের , আমার সকল আত্মীয়দের এবং সকল মুসলিম উম্মাহর  তওবা সেদিনও কবুল করে নিও যেদিন সূর্য পশ্চিমদিকে উঠলে তওবা আর কবুল হয়না। আমাদের ইমান বৃদ্ধি  করে দাও। আমাদেরকে ইমানের পথে অবিচল রেখো। আমাদের দূর্বল ইমান মজবুত করে দাও। আমরা  কখনোই যেন ইমানহারা না হই। ইমান নিয়ে যেনো  বেঁচে থাকি ইমান নিয়েই যেন উত্তম মৃত্যু লাভ করি৷
★এইভাবে দুয়া করা যাবে?? নাকি আল্লাহ যেটা নিষেধ করলো সেটাতে আমি বেয়াদবি করলাম??

1 Answer

0 votes
by (570,810 points)
জবাবঃ-
وعليكم السلام ورحمة الله وبركاته 
بسم الله الرحمن الرحيم

(১-৩)
হাদীস শরীফে এসেছেঃ- 

حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ أَبِي عُمَرَ الْمَكِّيُّ، حَدَّثَنَا عَبْدُ الْوَهَّابِ الثَّقَفِيُّ، عَنْ أَيُّوبَ السَّخْتِيَانِيِّ، عَنْ مُحَمَّدِ بْنِ سِيرِينَ، عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ، عَنِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم قَالَ " إِذَا اقْتَرَبَ الزَّمَانُ لَمْ تَكَدْ رُؤْيَا الْمُسْلِمِ تَكْذِبُ وَأَصْدَقُكُمْ رُؤْيَا أَصْدَقُكُمْ حَدِيثًا وَرُؤْيَا الْمُسْلِمِ جُزْءٌ مِنْ خَمْسٍ وَأَرْبَعِينَ جُزْءًا مِنَ النُّبُوَّةِ وَالرُّؤْيَا ثَلاَثَةٌ فَرُؤْيَا الصَّالِحَةِ بُشْرَى مِنَ اللَّهِ وَرُؤْيَا تَحْزِينٌ مِنَ الشَّيْطَانِ وَرُؤْيَا مِمَّا يُحَدِّثُ الْمَرْءُ نَفْسَهُ فَإِنْ رَأَى أَحَدُكُمْ مَا يَكْرَهُ فَلْيَقُمْ فَلْيُصَلِّ وَلاَ يُحَدِّثْ بِهَا النَّاسَ "
মুহাম্মাদ ইবনু আবূ উমার আল-মাক্কী (রহঃ) ..... আবূ হুরাইরাহ (রাযিঃ) সূত্রে নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, যখন যুগ ও সময় (কিয়ামাতের) সন্নিকটে হয়ে আসবে তখন প্রায়শ (খাঁটি) মুসলিমের স্বপ্ন মিথ্যা ও ভ্রান্ত হবে না। তোমাদের (মাঝে) অধিক সত্যভাষী লোক সর্বাধিক সত্য (ও বাস্তব) স্বপ্নদ্রষ্টা হবে। আর মুসলিমের স্বপ্ন নুবুওয়াতের পয়তাল্লিশ ভাগের এক ভাগ। আর স্বপ্ন তিন (প্রকার)- ভাল স্বপ্ন আল্লাহর তরফ হতে সুসংবাদ (বাহক)। আর (এক ধরনের) স্বপ্ন শাইতানের পক্ষ হতে দুর্ভাবনা তৈরি করে। আর (এক ধরনের) স্বপ্ন যা মানুষ তার মনের সাথে কথা বলে (এবং ভাবনা-চিন্তা করে) তা থেকে (উদ্ভূত)।

অতএব তোমাদের কেউ যদি এমন কিছু (স্বপ্ন) দর্শন করে- যা সে পছন্দ করে না, তাহলে সে যেন (ঘুম থেকে) উঠে দাঁড়ায় এবং সলাত (সালাত/নামাজ/নামায) আদায় করে আর মানুষের নিকট সে (স্বপ্নের) কথা গোপন রাখে।
(মুসলিম ৫৭৯৮, (ইসলামিক ফাউন্ডেশন ৫৭০৮, ইসলামিক সেন্টার ৫৭৪০)

ইসলামী দৃষ্টিতে স্বপ্ন তিন প্রকার। 
,
১. যা আল্লাহর পক্ষ থেকে বান্দাহকে দেখানো হয় যা কল্যানকর হয়।

২. শয়তানের পক্ষ হতে দেখানো হয় যাতে মানুষ খারাপ, মন্দ ভয়ংকর কিছু দেখে থাকে।
তবে শয়তান স্বপ্ন দেখানোর দ্বারা মানুষের কোন ক্ষতি করতে পারেনা।
,
ভয়ংকর স্বপ্ন দেখলে দুশ্চিন্তার কোন কারন নেই। শয়তান মানুষকে দুশ্চিন্তায় ফেলার জন্যই এমন সব আজব আজব জিনিস দেখায়। এমনটা দেখলে ঘুম থেকে জেগে বাম দিকে থুথু ফেলে আস্তাগফিরুল্লাহ বলতে হয়। 

৩. মানুষের কল্পনা। অর্থাৎ মানুষ যা কল্পনা করে স্বপ্নে তা দেখতে পায়। 

★সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি বোন,
প্রশ্নে উল্লেখিত স্বপ্নগুলোর মধ্যে কিছু আছে মনের কল্পনা প্রসূত স্বপ্ন। আবার কিছু আছে শয়তানের পক্ষ থেকে দেখানো স্বপ্ন।
,
খারাপ স্বপ্ন দেখলে শয়তান ও তার অনিষ্ট থেকে আল্লাহ্ তা’আলার নিকট আশ্রয় চাইবেন এবং তিন বার থুতু ফেলবেন। উপরন্তু তা কাউকে বলবেন না। পার্শ্ব পরিবর্তন করে ঘুমিয়ে যাবেন।

এ ধরনের স্বপ্নের কথা কাউকে বলবেননা। 
বিতাড়িত শয়তান থেকে আল্লাহর কাছে পানাহ চাইবেন,রাতে ঘুমানো আগে অযু করে পবিত্র কাপড়,পবিত্র বিছানায় তিন কুল পড়ে শরীরে ফুক দিয়ে আয়াতুল কুরসি পড়ে ঘুমাবেন।
একাকী ও পূর্ণ অন্ধকার রুমে না ঘুমানোর চেষ্টা করবেন।

আপনার জন্য করণীয় হল,
ইসলামের প্রত্যেকটি বিধানকে গুরুত্ব সহকারে মেনে চলুন।

বিশেষকরে সঠিক সময়ে সালাত আদায় করুন এবং চাইলে কিছুটা দান-সদকাহ করতে পারেন।

(০৪)
ইমাম বুখারী, মুসলিম এবং অন্যান্য ইমামগণ আবু হুরায়রা রাদ্বিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণনা করেছেন যে,  নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন,

«لَا تَقُوْمُ السَّاعَةُ حَتَّى تَطْلُعَ الشَّمْسُ مِنْ مَغْرِبِهَا فَإِذَا طَلَعَتْ وَرَآهَا النَّاسُ آمَنُوا أَجْمَعُونَ فَذَلِكَ حِينَ لَا يَنْفَعُ نَفْسًا إِيمَانُهَا لَمْ تَكُنْ آمَنَتْ مِنْ قَبْلُ أَوْ كَسَبَتْ فِي إِيمَانِهَا خَيْرًا»

‘‘যতদিন পশ্চিম  আকাশে সূর্য উদিত হবে না ততোদিন কিয়ামত হবে না। যখন পশ্চিম আকাশে সূর্য উদিত হবে এবং মানুষ তা দেখবে তখন সবাই ঈমান আনবে। তখন এমন ব্যক্তির ঈমান কোনো উপকারে আসবে না যে ইতিপূর্বে বিশ্বাস স্থাপন করে স্বীয় বিশ্বাস অনুযায়ী সৎকাজ করেনি’’।
(বুখারী, কিতাবুর রিকাক)

আবু মুসা আশআরি (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসুল (সা.) বলেছেন, ‘আল্লাহ তাঁর হাতকে রাতে প্রসারিত রাখেন, যেমন দিবসের পাপীরা তাওবা করে। তিনি তার হাত দিবসে প্রসারিত রাখেন, যেন রাতের পাপীরা তাওবা করে। যতক্ষণ পর্যন্ত সূর্য পশ্চিম দিক থেকে উদিত না হয়। ’ (মুসলিম, হাদিস : ২৭৫৯)

★সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি বোন,
আপনি উক্ত দোয়াতে যেসব পয়েন্ট উল্লেখ করেছেন,তার ১ম পয়েন্ট উল্লেখ করে দোয়া করা যাবেনা।

শেষের বাক্য গুলি দোয়ায় বলা যাবে।


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

------------------------
মুফতী ওলি উল্লাহ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...