আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
33 views
in বিবিধ মাস’আলা (Miscellaneous Fiqh) by (4 points)
আসসালামু আলাইকুম ওয়া রহমাতুল্লাহি ওয়া বারকাতুহ।
১. আমার এক আপু রাজশাহী শহরে থাকে। আমার রাজশাহী থেকে কিছু জিনিস কেনার প্রয়োজন। আমার বাড়ি দিনাজপুরের একটা উপজেলায় হওয়ায় এখানে সব কিছু পাওয়া যায় না। গেলেও সেগুলো মানসম্মত হয় না অনেক সময়। আমার সেই আপু বোরকা হিজাব পড়লেও মুখ খোলা রাখে, হাত মোজা পা মোজা পড়ে না। এক্ষেত্রে আমি যদি তার থেকে কিছু জিনিস কেনাকাটা করে নেই তাহলে কি আমার গুনাহ হবে? যেহেতু আমার জন্যই তাকে বাইরে যেতে হবে,  দোকানদারদের সাথে কথা বলতে হবে।

২. বাবার সম্পদে হালাল হারাম মিশে গেছে। বাবা সরকারি চাকুরিজীবী ছিল বন বিভাগের। তবে আমরা ইন শা আল্লাহ সম্পূর্ণ হালাল টাকায় উমরাহ তে যেতে চাচ্ছি। আমরা কি আগের টাকায় যেটাতে হয়তো হারামের মিশ্রণ থাকতে পারে এমন টাকায় কেনা জিনিস যেমন বোরকা, খিমার,অন্য ড্রেস,প্রসাধনী  উমরাহ তে নিতে পারব না কি সম্পূর্ণ হালাল টাকায় কেনা প্রতিটা জিনিস নিতে হবে? উল্লেখ্য হারামের মিশ্রণ সুদ  রিলেটেড  বা জোরপূর্বক আদায়কৃত না। আর বাবা অনুতপ্ত এবং তিনি সেই হারামের অনুমানকৃত পরিমাণ সওয়াবের নিয়ত ছাড়া দান করে দিবেন ইন শা আল্লাহ।
৩. হালাল হারামের মিশ্রণ এমনভাবে ছিল যে কোনটা সম্পূর্ণ চাকুরির হালাল টাকায় কেনা সেটা নির্ণয় করা যাচ্ছে না। এক্ষেত্রে কি আমাদের সতর্কতা হিসেবে বাসায় সব জিনিস পরিবর্তন করতে হবে? সন্দেহের জন্য সব পরিবর্তন করতে গেলে হয়তো সেই পরিমাণ অর্থ নেই আমাদের নিকট। করনীয় কি এক্ষেত্রে?
৪. আমার বাবার দেওয়া হাত খরচ হতে আমি কিছু টাকা জমা করেছিলাম। আমি তখন হারামের মিশ্রণের বিষয়টা সেভাবে জানতাম না। আমার জন্য কি সেই জমানো টাকা জায়েজ হবে? আমি সিউর না যে আমার জমানো টাকা পুরোটাই হালাল না কি হারামের মিশ্রণ আছে।
৫. জমানো টাকা জায়েজ না হলে সেটা কি অভাবী নিকট আত্মীয় দের দিতে পারব?

৬.. আমার বাবা হালাল টাকা দিয়ে যখন সেই অনুমানকৃত পরিমাণ সওয়াবের নিয়ত ছাড়া দান করবে তখন কি সেটা অভাবী নিকট আত্মীয়দের দেওয়া যাবে বা আমার বিবাহিত বোনকে দেওয়া যাবে যদি তার পরিবারে আর্থিক সংকট থাকে?

৬. আমাদের একটা সেলাই মেশিন আছে। সেটা সম্পূর্ণ হালাল টাকায় কেনা কি না বের করতে পারছি না। পড়ায় ১৮+ বছর আগের কেনা। এখন সেই মেশিনে কাপড় সেলাই কি জায়েজ হবে?
৭. আমাদের হালাল টাকা আসে বাবার চাকুরির বেতন, জমিজমার আবাদ হতে। হয়তো হালালের পরিমাণ বেশি হতে পারে। হারামটা চাকুরির সময় সেটার বিভিন্ন কাজে যাওয়া লাগত। গাছ রিলেটেড কাজে। তখন স্বেচ্ছায় মানুষ দিত। বাবা কখনোই জোরপূর্বক কিছু দাবি করেনি। বা টাকা দিলে তাদের কাজ আগে করে দিবে এমনটাও করেনি। অবশ্যই বেতনের বাইরে সেটা গ্রহণ নাজায়েজ ছিল। এটা কি ঘুষ এর মধ্যে পড়ে?

1 Answer

0 votes
by (569,520 points)
জবাবঃ-
وعليكم السلام ورحمة الله وبركاته 
بسم الله الرحمن الرحيم

(০১)
হ্যাঁ, প্রশ্নের বিবরন মতে এক্ষেত্রে আপনারও গুনাহ হবে।
তবে এর দরুন সেই পন্য গুলি ব্যবহার করা আপনার জন্য নাজায়েজ হবেনা,বরং জায়েজই হবে।

হাদীস শরীফে এসেছেঃ- 

وَحَدَّثَنِي عَنْ مَالِك أَنَّهُ بَلَغَهُ أَنَّ رَسُولَ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قَالَ مَا مِنْ دَاعٍ يَدْعُو إِلَى هُدًى إِلَّا كَانَ لَهُ مِثْلُ أَجْرِ مَنْ اتَّبَعَهُ لَا يَنْقُصُ ذَلِكَ مِنْ أُجُورِهِمْ شَيْئًا وَمَا مِنْ دَاعٍ يَدْعُو إِلَى ضَلَالَةٍ إِلَّا كَانَ عَلَيْهِ مِثْلُ أَوْزَارِهِمْ لَا يَنْقُصُ ذَلِكَ مِنْ أَوْزَارِهِمْ شَيْئًا

মালিক (রহঃ) বলেনঃ তাহার নিকট খবর পৌছিয়াছে যে, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ফরমাইয়াছেনঃ যেকোন আহবানকারী হিদায়াতের দিকে আহবান করিবে তবে তাহাকে তাহার অনুসরণকারীদের সমান পুণ্য দেওয়া হইবে। অনুসরণকারীদের পুণ্য হইতে বিন্দুমাত্র কম করা হইবে না। আর যেকোন আহবানকারী পথভ্রষ্টতার দিকে আহবান করিবে, তবে তাহার উপর অনুসরণকারীদের পাপসমূহের সমান পাপ বৰ্তাইবে। তাহাতে অনুসরণকারীদের পাপসমূহের এতটুকুও কম করা হইবে না।
(মুয়াত্তা মালিক ৪৯৬)

قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: «الْمُسْلِمُونَ عَلَى شُرُوطِهِمْ

হযরত আবূ হুরায়রা রাঃ থেকে বর্ণিত। রাসূল সাঃ ইরশাদ করেছেনঃ মুসলমানগণ তার শর্তের উপর থাকবে। {সুনানে আবু দাউদ, হাদীস নং-৩৫৯৪, সুনানে দারা কুতনী, হাদীস নং-২৮৯০, শুয়াবুল ঈমান, হাদীস নং-৪০৩৯}

(০২)
সম্পূর্ণ হালাল টাকায় কেনা খাবার ও পরিধানের বস্তু না হলে উমরাহ কবুল হবেনা।

(০৩)
পরিবর্তন করা সমাধান নয়।
বরং আপনাদের বাসার এসব জিনিস ক্রয়ে কি পরিমাণ হারাম টাকা যুক্ত করা হয়েছে,প্রবল ধারণার ভিত্তিতে আনুমানিক একটি হিসাব কষে সমপরিমাণ টাকা মালিকলে ফেরত দিতে হবে। মালিক পাওয়া না গেলে সমপরিমাণ টাকা ছওয়াবের নিয়ত ছাড়া গরিব মিসকিনদের মাঝে দান করে দিতে হবে।

(০৪)
জায়েজ হবেনা।
হ্যাঁ যদি তিনি তার হালাল টাকা হতে আপনাকে টাকা দেন,সেক্ষেত্রে আপনি জমিয়ে রাখতে পারেন।

(০৫)
টাকা গুলির মূল মালিক খুজে পাওয়া না গেলে সেক্ষেত্রে ছওয়াবের ছাড়া নিয়ত ছাড়া যাকাত গ্রহনের উপযুক্ত আত্মীয়দের ছওয়াবের নিয়ত ছাড়া দিতে পারবেন।
তবে নিজের বাবা মা,দাদা দাদি,নানা নানি ইত্যাদি নিজের সন্তানদের দেয়া যাবেনা।

(০৬)
আপনার বাবাকে বলে নিশ্চিত হোন যে তাহা সম্পূর্ণ হালাল টাকায় ক্রয়কৃত কিনা?

তিনি যদি বলেন,যে উহা হালাল টাকায় ক্রয়কৃত, সেক্ষেত্রে সেই সেলাইম মেশিন ব্যবহার করতে কোনো সমস্যা নেই।

(০৭)
হ্যাঁ, এটা ঘুষ এর মধ্যে পড়ে।

আরো জানুনঃ- 


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

------------------------
মুফতী ওলি উল্লাহ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...