আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
7 views
ago in সালাত(Prayer) by (14 points)
edited ago by

 মুসাফিরের সময়সীমা ও নামাজ

আসসালামু আলাইকুম ওয়া রহমাতুল্লাহি ওয়া বারকাতুহু
 

সফর বর্ণনা : 
আমরা জানি , শরীয়তে মুসাফির ঐ ব্যক্তিকে বলা হয়, যে  ৪৮ মাইল (৭৭.২৩২ কিলোমিটার) বা তার বেশি দূরত্বে যাওয়ার উদ্দেশ্যে নিজ এলাকা ত্যাগ করে ১৫ দিন কিংবা তার কম সময়ের জন্য। 

১২ ডিসেম্বর বিকাল ৩ টায়  সফর শুরু করলে ২৭ তারিখ ডিসেম্বর সকাল ৯-১০ টায় গন্তব্য ত্যাগ করে আনুমানিক সন্ধ্যা ৫-৬ টায় বাড়ি (নিজ গ্রাম) ফিরে   আসবো , ইনশআল্লাহ। 

সফর শুরু থেকে গন্তব্যে পৌঁছানো এবং গন্তব্য ত্যাগ করা পর্যন্ত ১৫ দিন এর কম(৫-৬ ঘন্টা কম ১৫ দিন ) সময়। 

আবার সফর শুরু থেকে গন্তব্যে পৌঁছানো এবং গন্তব্য ত্যাগ করে বাড়ি (নিজ গ্রাম)  ফিরে আসা  পর্যন্ত ১৫ দিন এর বেশি (৩-৪ ঘন্টা বেশি + ১৫ দিন ) সময়। 

প্রশ্ন  ১:  এতে তে কি আমি মুসাফির থাকবো ? 

প্রশ্ন ২ (প্রযোজ্য ক্ষেত্রে ): অন্যথায় মুসাফির অবস্থায় থাকার জন্য আমি কি ১৩ ডিসেম্বর সফর শুরু করে ২৭ ডিসেম্বর ফিরে আসবো ?

প্রশ্ন ৩:  মুকিম ইমামের পিছনে আমি মুসাফির অবস্থায় নামাজ পড়ার সময় আমি  চার রাকাত বিশিষ্ট নামাজ দুই রাকাত পাই তাহলে কি ইমামের সাথে আমিও সালাম ফিরিয়ে দিব, নাকি মুকিমের মত আরো দুই রাকাত মিলিয়ে  চার রাকাত পড়বো ? এবং ইমামের সাথে এক রাকাত পেলে কি আরো এক রাকাত পড়বো একা একা? নাকি তিন রাকাত পড়বো?

প্রশ্ন ৪: ৪৮ মাইল তথা (প্রায় ৭৮ কিলোমিটার) বা তার বেশি দূরত্বে যাওয়ার উদ্দেশ্যে নিজ এলাকা ত্যাগ করে ১৫ দিন এর বেশি  সময় থাকার নিয়ত করলেও কি সে পথিমধ্যে যাওয়ার সময় ও আসার সময় টুকু মুসাফির থাকে? এমন অবস্থায় শুধু গন্তব্যে মুকিম ?

প্রশ্ন ৫: কোনো এলাকায় কোনো ওয়াক্তের নামাজের সময় হয়েছে। কিন্তু আজান দেওয়া হয়নি কিংবা আযান দেওয়া হয়েছে জামাত শুরু হয়নি। এমন অবস্থায় যে ব্যক্তি আজান দেওয়ার আগেই কিংবা জামায়াত শুরু হওয়ার আগেই ওই এলাকা ত্যাগ করবে,  সে কি একাই নামাজ পড়লে আজান, ইকামত দিয়ে নামাজ  পড়তে হবে ?

যেমন বর্তমান সময়ে দুপুর ১২টার আগেই বাংলাদেশের প্রায় সব জায়গায় জোহর এর ওয়াক্ত শুরু হয়। কিন্তু ১ টার সময়(জুমু'আর দিনে সাড়ে ১২ টায় ) আজান দিয়ে দেড় টায় জামায়াত শুরু হয়। এখন কারো যদি ১ টায় সফর  থাকে , তাহলে ওয়াক্ত শুরু হওয়ার সাথে সাথেই একা নামাজ  পড়লে কি আজান, ইকামত দিয়ে এমাজ পড়তে হবে ?




 

1 Answer

0 votes
ago by (566,640 points)
জবাবঃ-
وعليكم السلام ورحمة الله وبركاته 
بسم الله الرحمن الرحيم

শরীয়তের বিধান হলো কোন স্থানে গিয়ে সেখানে যদি কমপক্ষে পনের দিন থাকার নিয়ত না করে, তাহলেও কসর পড়তে হবে। বেশি দিন থাকার নিয়ত করলে কসর করতে পারবে না।

৭৮ কিলোমিটার হল সফরের দূরত্ব। এর কম নয়। সুতরাং কেউ যদি ৭৮ কিলোমিটার দূরত্বের সফরের নিয়তে বের হয় কেবল সেই ব্যক্তি কসর পড়তে পার। এরচে’কম দূরত্বের সফরের জন্য কসর পড়া জায়েজ নয়।

হাদীস শরীফে এসেছে  

سنن أبى داود -صلاة السفر باب متى يقصر المسافر (1 / 465)حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ بَشَّارٍ حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ جَعْفَرٍ حَدَّثَنَا شُعْبَةُ عَنْ يَحْيَى بْنِ يَزِيدَ الْهُنَائِىِّ قَالَ سَأَلْتُ أَنَسَ بْنَ مَالِكٍ عَنْ قَصْرِ الصَّلاَةِ فَقَالَ أَنَسٌ كَانَ رَسُولُ اللَّهِ -صلى الله عليه وسلم- إِذَا خَرَجَ مَسِيرَةَ ثَلاَثَةِ أَمْيَالٍ أَوْ ثَلاَثَةِ فَرَاسِخَ – شُعْبَةُ شَكَّ – يُصَلِّى رَكْعَتَيْنِ.

সারমর্মঃ যখন তিন ফারছাখ সফরের নিয়ত করে,তাহলে কসরের নামাজ পড়তে পারবে।

সফর অবস্থায় চার রাকাত বিশিষ্ট ফরজ নামাজ কসর করতে হবে। কুরআন মাজিদে ইরশাদ হয়েছে,

وَإِذَا ضَرَبْتُمْ فِي الْأَرْضِ فَلَيْسَ عَلَيْكُمْ جُنَاحٌ أَنْ تَقْصُرُوا مِنَ الصَّلَاةِ

‘আর যখন তোমরা যমীনে সফর করবে, তখন তোমাদের নামাজ কসর করাতে কোনো দোষ নেই।’ [সূরা নিসা, আয়াত: ১০১]

হাদিস শরীফে এসেছে,

عِيسَى بْنُ حَفْصِ بْنِ عَاصِمِ بْنِ عُمَرَ بْنِ الْخَطَّابِ عَنْ أَبِيهِ قَالَ صَحِبْتُ ابْنَ عُمَرَ فِى طَرِيقٍ – قَالَ – فَصَلَّى بِنَا رَكْعَتَيْنِ ثُمَّ أَقْبَلَ فَرَأَى نَاسًا قِيَامًا فَقَالَ مَا يَصْنَعُ هَؤُلاَءِ قُلْتُ يُسَبِّحُونَ. قَالَ لَوْ كُنْتُ مُسَبِّحًا أَتْمَمْتُ صَلاَتِى يَا ابْنَ أَخِى إِنِّى صَحِبْتُ رَسُولَ اللَّهِ – ﷺ – فِى السَّفَرِ فَلَمْ يَزِدْ عَلَى رَكْعَتَيْنِ حَتَّى قَبَضَهُ اللَّهُ عَزَّ وَجَلَّ وَصَحِبْتُ أَبَا بَكْرٍ فَلَمْ يَزِدْ عَلَى رَكْعَتَيْنِ حَتَّى قَبَضَهُ اللَّهُ عَزَّ وَجَلَّ وَصَحِبْتُ عُمَرَ فَلَمْ يَزِدْ عَلَى رَكْعَتَيْنِ حَتَّى قَبَضَهُ اللَّهُ تَعَالَى وَصَحِبْتُ عُثْمَانَ فَلَمْ يَزِدْ عَلَى رَكْعَتَيْنِ حَتَّى قَبَضَهُ اللَّهُ تَعَالَى وَقَدْ قَالَ اللَّهُ عَزَّ وَجَلَّ (لَقَدْ كَانَ لَكُمْ فِى رَسُولِ اللَّهِ أُسْوَةٌ حَسَنَةٌ

ইবনে উমর রাযি. বলেন, নিশ্চয় আমি রাসুলুল্লাহ ﷺ এর সাথে সফর করেছি, তিনি মৃত্যুবরণ করার আগ পর্যন্ত সফরে ২ রাকাতের বেশি পড়েন নি। আমি আবু বকর রাযি. এর সাথেও সফর করেছি, তিনিও আমরণ সফরে ২ রাকাতই পড়েছেন। আমি উমর রাযি. এর সাথেও সফর করেছি তিনি মৃত্যু পর্যন্ত সফরে ২ রাকাতের বেশি পড়েন নি। আমি  উসমান রাযি. এর সাথেও সফর করেছি, তিনিও মৃত্যুর আগ পর্যন্ত সফরে ২ রাকাতের বেশি পড়েন নি। আর আল্লাহ তায়ালা বলেছেন, আমি তোমাদের জন্য রাসুলুল্লাহ ﷺ এর মাঝে রেখেছি উত্তম আদর্শ। (মুসলিম ১৬১১)

আরো জানুনঃ 

তিন দিন বা তার সমপরিমাণ দূরত্বের অধিক সফর করলে কেউ মুসাফির হিসাবে গণ্য হবে।যেমন ফাতাওয়ায়ে হিন্দিয়ায় বর্ণিত রয়েছে-
أَقَلُّ مَسَافَةٍ تَتَغَيَّرُ فِيهَا الْأَحْكَامُ مَسِيرَةُ ثَلَاثَةِ أَيَّامٍ، كَذَا فِي التَّبْيِينِ، هُوَ الصَّحِيحُ
সর্বনিম্ন দূরত্ব যার দ্বারা শরীয়তের বিধি-বিধানে  পরিবর্তন আসে।(তথা মানুষ মুসাফির হয়)তিন দিনের দূরত্ব।(তাবয়ীন) এটাই বিশুদ্ধ মত।(ফাতাওয়ায়ে হিন্দিয়া-১/১৩৮)

এ সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে ক্লিক করুন- https://www.ifatwa.info/1281

★সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি ভাই/বোন,
(১-২)
প্রশ্নের বিবরণ মতে আপনি যেহেতু গন্তব্য স্থলে গিয়ে পূর্ণ ১৫ দিন থাকেননি,বা থাকার নিয়তও করেননি,সুতরাং গন্তব্য স্থল যদি ৭৮ কিলোমিটার দূরত্বে বা তার চেয়ে বেশি দূরত্বে হয়,সেক্ষেত্রে প্রশ্নে উল্লেখিত ছুরতে আপনি মুসাফির হিসেবে থাকবেন।

(০৩)
প্রশ্নে উল্লেখিত সমস্ত ছুরতে এক্ষেত্রে আপনাকে পূর্ণ চার রাকাতই আদায় করতে হবে।

বিস্তারিত জানুনঃ- 

(০৪)
এক্ষেত্রে যাওয়া ও আসার সময় যাতায়াত কালে তিনি কসর নামাজ আদায় করবেন।

(০৫)
এক্ষেত্রে আযান দেয়ার প্রয়োজনীয়তা না থাকলেও ইকামত দেয়া মুস্তাহাব।

তদুপরি আযান ইকামত কোনোটি না দিয়ে নামাজ আদায় করলেও কোনো সমস্যা নেই।
নামাজ হয়ে যাবে,কোনো গুনাহ হবেনা।

বিস্তারিত জানুনঃ- 


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

------------------------
মুফতী ওলি উল্লাহ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...