আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
396 views
in সালাত(Prayer) by (27 points)
আসসালামু আলাইকুম ভাই। আলহামদুলিল্লাহ আমি আমার জানা মতে কখনো একাকী সালাত আদায় করলে ফরয সালাতের পূর্বে ইকামত দিয়ে নেই। এক্ষেত্রে আমার প্রশ্ন হলোঃ
১. একাকী সালাত আদায় এর ক্ষেত্রে কি ইকামত ফরয সালাতের পূর্বে দিতে হবে ? এবং যদি না দেওয়া হই ইকামত সে ক্ষেত্রে সালাত কি আদাইয় হবে ? নাকি গ্রহণযোগ্য হবে না ?
আরেকটি বিষয়  নিয়ে একটু দ্বিধায় আসি আশা করি আমাকে সাহায্য করবেন। তা হলো ঃ

১. জামাতে সালাত আদায় করলে করলে কি ইমাম সাহেবের পর কি সরবে তাকবির দিতে হবে নাকি নিরবে ?
২. একাকী সালাত আদায়ের ক্ষেত্রে কি তাকবির সরবে নাকি নিরবে দিতে হবে ? এবং যদি ভুল বশত পরিস্থিতিভেদে সরবের জায়গায় নিরবে বা নিরবের স্থানে সরবে তাকবির দিলে কি সালাত আদায় হবে ?নাকি  নতুন করে আমার শুরু করতে হবে ?

1 Answer

0 votes
by (678,880 points)
edited by
জবাব
وعليكم السلام ورحمة الله وبركاته 
بسم الله الرحمن الرحيم 

(০১)
যদি একাকী কোনো নামাজ আদায় করা হয়,
উত্তম হলো তার জন্যেও আযান ইকামত দেওয়া।
(নিজামুল ফাতওয়া ৫/৮৭)
যদি মহল্লার মসজিদে আযান হয়ে থাকে,তাহলে সে শুধু ইকামত দিবে।

একাকী নামায আদায়কারীর জন্য ইকামত দেয়া মুস্তাহাব। (হিদায়া ১/৯২)।  

ইসলামে আযান এবং ইকামতের গুরুত্ব অনেক।
এমনকি রাসুলুল্লাহ সাঃ সফর অবস্থায় বা একাকী নামাজ পড়ার অবস্থাতেও আযান ইকামত দেওয়া কথা বলেছেন।
,
★আযান দেওয়া সুন্নাতে মুয়াক্কাদা,জামাআতের সাথে নামাজ আদায় কারীর জন্যে ইকামত দেওয়া সুন্নাত।
একাকী নামাজ আদায় কারীর জন্য ইকামত দেওয়া মুস্তাহাব।
★যদি একাকী নামাজ আদায় কারী ইকামত না দেয়,তাহলে মাকরুহ হবেনা।
নামাজের কোনো সমস্যা হবেনা।   
,
উকবা ইবনু আমির রাযি. থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, আমি রাসুলুল্লাহ ﷺ-কে বলতে শুনেছি যে,

يَعْجَبُ رَبُّكَ مِنْ رَاعِي غَنَمٍ فِي رَأْسِ شَظِيَّةِ الْجَبَلِ يُؤَذِّنُ بِالصَّلاَةِ وَيُصَلِّي فَيَقُولُ اللَّهُ عَزَّ وَجَلَّ انْظُرُوا إِلَى عَبْدِي هَذَا يُؤَذِّنُ وَيُقِيمُ الصَّلاَةَ يَخَافُ مِنِّي قَدْ غَفَرْتُ لِعَبْدِي وَأَدْخَلْتُهُ الْجَنَّةَ

তোমার রব সে ব্যক্তির উপর খুশি হন, যে পাহাড়ের উচ্চশৃঙ্গে বকরী চরায় এবং নামাযের জন্য আযান দেয় ও নামায আদায় করে। আল্লাহ তাআলা বলেন, আমার এই বান্দাকে দেখ! নামাযের জন্য সে আযান ও ইকামত দিচ্ছে। সে আমাকে ভয় করছে। আমি আমার বান্দাকে ক্ষমা করে দিলাম ও জান্নাতে প্রবেশ করালাম। (আবু দাউদ ১২০৩)

বলেন, “কোন ব্যক্তি যখন কোন বৃক্ষ-পানিহীন প্রান্তরে থাকে, অতঃপর সেখানে নামাযের সময় উপস্থিত হয়, তখন সে যেন ওযু করে। পানি না পেলে যেন তায়াম্মুম করে। অতঃপর সে যদি শুধু ইকামত দিয়ে নামায পড়ে, তাহলে তার সাথে তার সঙ্গী দুই ফিরিশ্তা নামায পড়েন। কিন্তু সে যদি আযান দিয়ে ও ইকামত দিয়ে নামায পড়ে, তাহলে তার পশ্চাতে আল্লাহর এত ফিরিশ্তা নামায পড়েন, যাদের দুই প্রান্ত নজরে আসে না!” (আব্দুর রাযযাক, মুসান্নাফ, সহিহ তারগিব ২৪১নং)

আর একদা তিনি আব্দুল্লাহ বিন আব্দুর রহ্মানকে মরুভূমিতে ছাগপালে থাকাকালে নামাযের জন্য উচ্চশব্দে আযান দিতে আদেশ করেছিলেন। (বুখারী প্রমুখ, মিশকাত ৬৫৬নং)

فتاویٰ ہندیہ،ج:۱، ص:۵۳۔  والضابطۃ عندنا ان کل فرض ادائً کان اوقضاء یؤذن لہ ویقام سواء اداہ منفرداً اوبجماعۃٍ الخ 

সারমর্মঃ প্রত্যেক নামাজ চাই সেটা আদায় নামাজ হোক,বা কাজা নামাজ হোক,একাকী হোক বা জামাআত  গত ভাবেই আদায় করুক।
আযান এবং ইকামত দিবে।
,
★সুতরাং প্রশ্নে উল্লেখিত ছুরতে নামাজ হয়ে যাবে।
কোনো সমস্যা নেই।
,
(০২)
জোড়ে তাকবির নয়,
বরং মুক্তাদি আস্তে আওয়াজে তাকবির দিবে।

হাদীস শরীফে এসেছেঃ 

أَخْبَرَنَا عُبَيْدُ اللَّهِ بْنُ فَضَالَةَ بْنِ إِبْرَاهِيمَ، قَالَ حَدَّثَنَا يَحْيَى، - يَعْنِي ابْنَ يَحْيَى - قَالَ حَدَّثَنَا حُمَيْدُ بْنُ عَبْدِ الرَّحْمَنِ بْنِ حُمَيْدٍ الرُّؤَاسِيُّ، عَنْ أَبِيهِ، عَنْ أَبِي الزُّبَيْرِ، عَنْ جَابِرٍ، قَالَ صَلَّى بِنَا رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم الظُّهْرَ وَأَبُو بَكْرٍ خَلْفَهُ فَإِذَا كَبَّرَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم كَبَّرَ أَبُو بَكْرٍ يُسْمِعُنَا .

উবায়দুল্লাহ ইবনু ফাযালা ইবনু ইবরাহীম (রহঃ) ... জাবির (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমাদের ইমাম হয়ে যোহরের সালাত আদায় করলেন তখন আবূ বকর (রাঃ) ছিলেন তার পেছনে। যখন রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাকবীর বলতেন তখন আবূ বকর (রাঃ)-ও আমাদেরকে শোনাবার জন্য তাকবীর বলতেন।

সহিহ, আবু দাউদ হাঃ ৬১৯, মুসলিম (ইসলামিক সেন্টার) হাঃ ৮৩৭,
,
সুতরাং যদি মুক্তাদিরা জোড়ে আওয়াজেই তাকবির দিতো,তাহলে হাদীসে ইরশাদ হতোনা যে "" আবূ বকর (রাঃ)-ও আমাদেরকে শোনাবার জন্য তাকবীর বলতেন""
,
(০৩)
একাকী নামাজ আদায়কারী আস্তে আওয়াজে তাকবির দিবে।
ইমদাদুল আহকাম ১/৬৩১
,
فقال : ( أَمَا إِنَّ أَحَدَكُمْ إِذَا قَامَ فِي الصَّلَاةِ فَإِنَّهُ يُنَاجِي رَبَّهُ ، فَلْيَعْلَمْ أَحَدُكُمْ مَا يُنَاجِي رَبَّهُ ، وَلَا يَجْهَرْ بَعْضُكُمْ عَلَى بَعْضٍ بِالْقِرَاءَةِ فِي الصَّلَاةِ ) رواه أحمد في " المسند " (8/523) بسند صحيح .
সারমর্মঃ
একাকী নামাজ  আদায়কারী জোড়ে আওয়াজে পড়বেনা।  

درمختار مع الشامی بیان سنن الصلوٰہ ص۹۵، ۴ ج۱ مطبوعہ ۱۲۹۴ھ   ونصہ وجھرالامام بالتکبیر بقدرحاجتہ للاعلام بالدخول والانتقلا وکذا بالتسمیع والسلام واماالمؤتم والمنفرد فیسمع نفسہ اھ
সারমর্মঃ
ইমাম মুক্তাদি দের নিজের অবস্তা জানানোর জন্য জোড়ে আওয়াজে তাকবির ইত্যাদি দিবে।
মুক্তাদী,মুনফারিদ শুধু যেনো নিজে শুনতে পারে,এমন শব্দেই তাকবির দিবে।

শায়েখ ইবনে বায রহঃ বলেন
أما التكبير فلا حاجة إلى الجهر به؛ لأن التكبير يجهر به في حق الإمام حتى يسمع المأمومون، أما إذا كان يصلي وحده فلا حاجة إلى الجهر بذلك يكبر تكبيراً ليس فيه جهر
সারমর্মঃ
তাকবিরের ক্ষেত্রে জোড়ে আওয়াজের প্রয়োজন নেই।  


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

------------------------
মুফতী ওলি উল্লাহ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

0 votes
1 answer 150 views
...