আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
63 views
in বিবিধ মাস’আলা (Miscellaneous Fiqh) by (3 points)
ٱلسَّلَامُ عَلَيْكُمْ وَرَحْمَةُ ٱللَّٰهِ وَبَرَكَاتُهُ

আমার কিছু বিষয় নিয়ে জানার ছিল আগে থেকে মাফ চেয়ে নিচ্ছি কারণ লিখা বড় হতে পারে তাই।

১) গোসল ফরজ হওয়া অবস্থায় নাপাক কাপড় পড়ে যদি কেউ বিছানায় অবস্থান করে তাহলে কি ফরজ গোসলের সময় বেডশিটও ধুতে হবে? অর্থাৎ বেডশিটে কোনো নাপাকি দেখা যায় না কিন্তু নাপাক কাপড় পড়ে বিছানায় থাকলে কি প্রতিবারই বেডশিট ধুতে হবে? বেডশিট না ধুয়ে যদি বসার অবস্থানের জায়গায় ৩ বার মুছে দি তাহলে কি হবে? আর না মুছে যদি ঐ জায়গায় কেউ বসে তাহলে কি সেও নাপাক হয়ে যাবে?(বেডশিটে কোনো নাপাকি দেখা যায় না।)

২) কাফফারার রোজা কি টানা ৩দিন রাখতে হবে? নাকি যেকোনো সময় করে ৩টা রাখা যাবে?

৩) উমরি কাযা নামাজের ক্ষেত্রে কি যে ওয়াক্তের কাজা সেই ওয়াক্তেই পড়া লাগবে? যেমন: যোহরের কাযা সালাত গুলো যোহরেই পড়া লাগবে এইরকম? আর উমরি কাযা নামাজ আর রোজার ক্ষেত্রে হিসাব কিভাবে করবো? জারণ দ্বীনে ফিরার আগে এবং পড়ে অনেক নামাজ কাযা হয়েছে। মানে মাঝে মাঝে পড়তাম আবার ছুটে যেত আবার পড়তাম এইরকম। তো কাযা নামাজ আদায় করতে করতে কিভাবে বুঝবো সব নামাজ আদায় হয়েছে কি না? আবার উমরি কাযা রোজাও কি কাফফারা হিসেবে রাখতে হবে?

৪) চট্টগ্রামের রীতি অনুযায়ী এইখানে মানুষ মারা গেলে ৪দিনা ৪০ দিনা বছরি ফাতিহা মেজবান কিসব কিসব জানি করা হয় এইসব করা তো জায়েজ নাই তাই না? আর যদি এইসব না করে ঐসব দিনে গরিব মিছকিনকে খাওয়ানো হয় বা এতিম খানায় টাকা দেওয়া হয় তাহলে কি জায়েজ হবে? মানুষের মৃত্যুদিনের বছরি কি আসলে মনে রাখার বা মানুষ খাওয়ানোর দরকার আছে?
৫) কুরবানির ঈদে আমাদের এইখানে দেখলাম গোশত রান্নার সময় গ্রামের কোনো হুজুর থেকে পানি পড়া এনে সেই পানি দিয়ে রান্না করা হয় এইসব কি আসলে কোনো অবস্থায় জায়েজ?
৬) পায়ে ধরে সালাম করা কি জায়েজ? বাসার কিছু মানুষ বা শশুর বাড়ির মানুষ যদি পায়ে ধরে সালাম না করার কথা শুনায় বা রাগ করে তাহলে কি করা উচিত?

৭) দ্বীনে ফিরার আগের অনেক বেপর্দা ছবি বাসার কিছু মানুষের ফেইসবুকে রয়ে আছে সেগুলো প্রায় ৭/৮ বছর আগের এর পরের যেগুলো সেগুলো আমি ডিলিট করেছি লুকিয়ে। আর কিছু জনের কাছে মানে আমার কাজিনদের কাছে রিসেন্টের কিছু ছবি এখনো আছে তাদের প্রোফাইলে।সেগুলো কিভাবে ডিলিট করবো এর জন্য আমি গুনাহগার হচ্ছি তাই না?
৮) দ্বীনে ফিরার আগে অনেক বেগানা পুরুষের সাথে আমার কথা হতো আমার অনেক ছবিও তাদের কাছে আছে আমি এর জন্য এখন পুরাপুরিভাবে লজ্জিত। এখন তাদের সাথে পুনরায় কথা বলা আমার পক্ষে কোনোভাবে সম্ভব না এমতাবস্থায় কি ঐসব ছবি তাদের কাছে থাকার কারণে আমি গুনাহগার হচ্ছি?

৯) ওজু করার পর সালাতের আগে বা সালাতের মাঝে সালাম ফিরিয়ে কেউ যদি কিছু আহার করে তাহলে কি ৩বার কুলি করে এরপর সালাতে দাঁড়াতে হবে?

আফওয়ান অনেক প্রশ্ন একসাথে করেছি। আমাকে সংক্ষেপে উত্তর দিলে হবে ইনশাআল্লাহ।

1 Answer

0 votes
by (64,890 points)

বিসমিল্লা-হির রহমা-নির রহীম।

জবাবঃ

ক. তরল নাপাকঃ পেশাব বা এ জাতীয় কোন  তরল নাপাক কাপড়ে লাগলে তিন বার উত্তমরূপে নিংড়িয়ে ধৌত করতে হবে; যদি তা কোন পাত্রে ধৌত করা হয়। আর যদি প্রবাহিত পানি বা পুকুর অথবা নদীতে পুরো কাপড় চুবিয়ে দেওয়া হয় তাহলে সেক্ষেত্রে তিনবারের অনিবার্য কোন শর্ত নেই।

খ. শক্ত নাপাকঃ কোনো বস্তুতে পায়খানা বা শক্ত নাপাকি লাগলে প্রথমে উক্ত নাপাকি অপসারিত করতে হবে। তারপর তা তিনবার ধৌত করতে হবে। আর যদি তিন বারেও নাপাকি দূর না হয় তাহলে নাপাকি দূর না হওয়া পর্যন্ত ভালোরূপে ধুয়ে পরিষ্কার করতে হবে। সুতরাং কাপড় ভালো ভাবে ধৌত করার পরও নাপাকির দাগ থাকলে কোনো  নেই।


https://ifatwa.info/52954/  নং ফাতাওয়াতে আমরা বলেছি যে,

১. কাপড় প্রবাহিত পানিতে মানে ট্যাপের পানিতে ধোয়ার নিংড়ানোর সময় হাতে যে পানি লাগে, হাতে সেই কাপড় থাকা অবস্থাতেই সেই পানি সেই কাপড়ে লাগলে কাপড় নাপাক হবে না।কেননা প্রবাহিত পানিতে তিনবার ধৌত করা লাগে না।এবং যে পানি হাতে লাগে, সেই পানিও নাপাক নয়।

২. কাপড় নিংড়ানোর সময় কিছু পানি হাতের তালু বেয়ে কনুই পর্যন্ত নেমে আসে। কাপড় ঘুরিয়ে পেচিয়ে নিংড়ানোর সময় সেই পানি থাকা অবস্থায় হাতে কাপড় সামান্য ছোয়া লাগে।যদি তা প্রবাহিত পানিতে কাপড় ধৌত করার পর হয়ে থাকে, তাহলে তা পবিত্র, নতুবা অপবিত্র হিসেবে বিবেচিত হবে।

إنْ غَسَلَ ثَلَاثًا فَعَصَرَ فِي كُلِّ مَرَّةٍ ثُمَّ تَقَاطَرَتْ مِنْهُ قَطْرَةٌ فَأَصَابَتْ شَيْئًا إنْ عَصَرَهُ فِي الْمَرَّةِ الثَّالِثَةِ وَبَالَغَ فِيهِ بِحَيْثُ لَوْ عَصَرَهُ لَا يَسِيلُ مِنْهُ الْمَاءُ فَالثَّوْبُ وَالْيَدُ وَمَا تَقَاطَرَ طَاهِرٌ وَإِلَّا فَالْكُلُّ نَجِسٌ. هَكَذَا فِي الْمُحِيطِ.

যদি কেউ কাপড়কে তিনবার ধৌত করে,এবং প্রত্যেকবার নিংড়ায়, অতঃপর কাপড় থেকে পানির ফোটা কোনো জিনিষে পড়ে, যদি তৃতীয়বার ভালভাবে নিংড়ানো হয়ে থাকে,এমনভাবে যে এরপর আর নিংড়ালে কোনো পানি বের হবে না,তাহলে কাপড় থেকে যে পানি পড়বে,সেই পানি ও কাপড় এবং হাত কোনো কিছুই নাপাক বলে বিবেচিত হবে না।আর যদি নিংড়ানো না হয়ে থাকে,তাহলে তিনবার ধৌত করার পরও কাপড় থেকে ফোট ফোটা করে পরে যাওয়া পানি নাপাক বলেই গণ্য হবে। ( ফাতাওয়ায়ে হিন্দিয়া-১/৪২)


এ সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে ক্লিক করুন- https://www.ifatwa.info/23740 

পাক-নাপাক সম্পর্কে আরো বিস্তারিত জানুন- https://ifatwa.info/53602/    

সুঁই মাথার মত নাপাকির ছিটা মাফ- https://ifatwa.info/52485/


সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনী বোন!


১. প্রশ্নোক্ত ক্ষেত্রে বেডশিটে নাপাকি না লাগলে তা ধৌত করা লাগবে না। তাতে বসতে পারবে।

২. কিসের কাফফারার রোজা? বললে বিস্তারিত উত্তর দেওয়া যেত।

কসমের কাফফারা সম্পর্কে বিস্তারিত জানুন - https://www.ifatwa.info/1808/

৩. প্রশ্নোক্ত অনুমান করে আদায় করবেন। নিষিদ্ধ সময়গুলো ছাড়া যেকোনো সময় পড়া যাবে।

আরো জানুন - https://www.ifatwa.info/7999/


৪. এরকম নির্দিষ্ট দিন উপলক্ষে কিছু করলে গোনাহ হবে।

আরো জানুন - https://www.ifatwa.info/30051/

৫. না, এটা করা যাবে না।

৬.এ সম্পর্কে বিস্তারিত জানুন - https://www.ifatwa.info/17858/

৭. তাদেরকে ডিলেট করে দিতে বলবেন।

৮. তাদের সাথে আর কথা বলার দরকার নাই। তবে অন্য কারোর মাধ্যমে আপনার ছবি ডিলেট করে দিতে বলা সম্ভব হলে তা করবেন।

৯. প্রশ্নটি আরো স্পষ্ট করে বললে ভালো হতো। সালাতের আগে বা পরে আহার করলে শুধু ভালো ভাবে কুলি করলেই হবে। 


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

--------------------------------
মুফতী আব্দুল ওয়াহিদ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...