আসসালামুআলাইকুম ওয়া রাহমাতুল্লাহ,
এই হাদিসটি কি সহিহ?
আবু মূসা (রা.) বর্ণনা করেন যে রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেন,
“তিন ধরনের ব্যক্তি আছেন, যারা আল্লাহকে ডাকে, কিন্তু তাদের দোয়া কবুল করা হয় না:
১. সেই ব্যক্তি, যে তার স্ত্রীর খারাপ চরিত্র থাকা সত্ত্বেও তাকে তালাক দেয় না।
২. সেই ব্যক্তি, যার কাছে অন্যের ঋণ পাওনা থাকে, কিন্তু ঋণের জন্য সাক্ষী রাখেনি।
৩. সেই ব্যক্তি, যে তার সম্পদ এক নির্বোধ (অযোগ্য) ব্যক্তির হাতে তুলে দেয়, যদিও আল্লাহ বলেছেন, 'অযোগ্য ব্যক্তিদের (নির্বোধ) তোমাদের সম্পদ দিও না।'”
এটি মুস্তাদরাক হাকিম (খণ্ড ২, পৃষ্ঠা ৩০২) এবং শরহ মুশকিলিল আসার (তাহাভি, হাদিস: ২৫৩০)-এ উল্লেখিত। এছাড়াও এটি মুসান্নাফ ইবন আবি শাইবা (হাদিস: ১৭৪২৯)-তেও পাওয়া যায়।
ইমাম হাকিম এবং ইমাম আয-যাহাবি (রহ.) এই হাদিসটির সূত্রকে সহিহ (বিশ্বাসযোগ্য) বলে শ্রেণিবদ্ধ করেছেন। ইমাম তাহাভি (রহ.)-ও এই হাদিসকে গ্রহণযোগ্য হিসেবে চিহ্নিত করেছেন।
এই হাদিসের অর্থের ব্যাখ্যা কি ভিন্নরূপ হতে পারে ? ১ম প্রকারের ব্যক্তির ক্ষেত্রে ?
বাস্তব অবস্থায় কিছু অভিজ্ঞতার আলোকে দেখা যায়, স্ত্রী মারাত্মক রকমের দুশ্চরিত্রা হওয়া সত্ত্বেও (যেমন পরকীয়া, একাধিক পুরুষের সাথে প্রেম এর সম্পর্ক করা, ধরা খাওয়ার পরও পুরোনো পাপ-কাজে লিপ্ত হওয়া ইত্যাদি) ছোট সন্তানের কারণে ও কিছু মুরুব্বির পরামর্শে স্বামী এমন স্ত্রীকে সুযোগ দেয়, তালাক দেয় না, কিন্তু পরবর্তীতে দেখা যায় যে, যেই ছোট সন্তানের কারণে স্ত্রীকে ছেড়ে দেয় না, উল্টো সেই সন্তানের উপর খারাপ প্রভাব পড়ে, সন্তান এর আমল, আখলাক উল্টো নষ্ট হয়ে যায় এবং স্বামী বেচারা নিদারুন কষ্টের মধ্যেই জীবন পার করতে থাকে। এই হাদিসে কি ইশারা করা হয়েছে যে, এমন স্ত্রীকে তালাক না দেওয়ায় বরং স্বামীর ক্ষতি হয় এবং তার দোয়া কবুল হয় না ?
সঠিক ব্যাখ্যা জানাবেন আশা করি। অনেক স্বামী-ই আছেন, এই ধরণের অবস্থার মধ্যে আছেন, ৫/১০ বছর পার করে দিয়েছেন, কিন্তু স্ত্রীকে তালাক দিচ্ছেন না, সন্তানের দিকে চেয়ে, মুরুব্বীদের অনুরোধে, আবার এই ভীতিও তাদের দেখানো হয় যে, তালাক দেওয়া আল্লাহ পছন্দ করেন না, আল্লাহর আরশ কেঁপে উঠতে ইত্যাদি ! এই সকল স্বামীদের অবস্থা এমন - যেন দুনিয়াতেই জাহান্নামের মধ্যে আছেন, কষ্টের কথা কাউকে বলতেও পারছেন না ইত্যাদি।
ওয়াস্সালামু-আলাইকুম।