এক বোন জানতে চেয়েছে।
আসসালামু আলাইকুম শায়েখ আমার কত গুলো প্রশ্নের উত্তর জানার ছিল। আশা করি উত্তর দিবেন ইনশাআল্লাহ
।১) শায়েখ বিয়ের জন্য আহলিয়া সাইটে আমার এবং আমার মেজ আপুর বায়োডাটা জমা দিয়েছি।তো বায়োডাটায় একটা পয়েন্ট আছে নিজের সম্পর্কে কিছু বলুন, এ পয়েন্টে নিজের বিষয়ে ধারণা দেওয়ার জন্য আমার বায়োডাটাতে লিখছিলাম যে, আলহামদুলিল্লাহ নফল আমল হিসেবে সকালে ও রাতে কুরআন তিলাওয়াত করার তৌফিক পাই পাশাপাশি সকাল সন্ধ্যার হেফাজতের মাসনুন আমল ও বিভিন্ন জিকির আযকার করার তৌফিক পাই। আর আপুর বায়ো তে লিখেছিলাম যে আল্লাহর অশেষ রহমতে,নফল আমল হিসেবে সকালে সুরা ইয়াসিন ও রাতে সূরা মূলক পাঠ করা হয় আলহামদুলিল্লাহ।তো এসব যে লিখলাম এগুলো কি লোক দেখানো ইবাদত হয়েছে। আর লোক দেখানো ইবাদত তো শিরকের অন্তর্ভুক্ত তো কথাগুলো লেখার কারণে কি শিরক হয়ে গেছে। একটু জানাবেন ইনশাআল্লাহ। আমার এবিষয় মনে হলে খুবই অনুতপ্ত খারাপ লাগে মনে হয় এই টুকু না লিখলে ভাল হত। আর লিখছিলাম অনেকেই দেখছি ওনাদের বায়ো তে অনেক কিছুই লিখে কেউ কেউতাহাজ্জুতের বিষয়টিওলিখে। তাই আমি ভাবছিলাম এগুলো এখানেপ্রকাশ করা মনে হয় জায়েজ আছে। তো শায়েখ জানাবেন শিরক হয়েছে কিনা?
২) আর শায়েখ আমার বায়োডাটা টি আমি অনেকবার এডিট করছি আবার নতুন কথা লিখছি, মানে একেক সময় বিভিন্ন বিষয়ে মনে পড়লে তো ওইটুকু কথা বায়োডাটা তে লিখতাম ,তো এক সময় বিরক্ত হয়ে যেতাম , আর বলতাম যে আল্লাহ সামনে আর লিখব না ইনশাআল্লাহ।তার পর ও আবার অন্য একটি বিষয়ে মনে পড়লে লিখবো না বলেও আবার লিখে ফেলি। কারণ মনে হয় এই কথা টা তো লেখা দরকার ছিল যার জন্য লিখি। তো আমি যে আল্লাহ কে বলেছি যে আর লিখব না তারপরও লিখছি এতে কি আল্লাহকে কথা দেওয়া হয়েছে আর পরবর্তীতে লেখার কারণে কথা খেলাফ করা হয়েছে।?
৩) আর এদিকে আরো একটি বিষয় লিখার দরকার ছিল মানে আমার বায়োডাটা তে আমার রোগের বিষয়ে লিখছি কিন্তু এদিকে যে আমি তার জন্য চিকিৎসা করতেছি এ বিষয়টা লিখিনি, তবে লেখার প্রয়োজন মনে করছি,, তবে লিখতেছি না। আমি মনে করতেছি একে তো লিখবো না বলেও লিখছি তারপর আবারও যদি লিখি আল্লাহ না জানি আমার প্রতি অসন্তুষ্ট হন। আর হ্যাঁ এদিকে যদি আবারও লিখি কথা খেলাফের গুনাহ হতে পারে?
৪) হুজুর আমার এক নিকট আত্মীয় ভিক্ষুক মানে,ওনার পায়ে সমস্যা আছে তো উনি ভিক্ষা করে সংসার চালায়, এখন উনি যদি আমাদেরকে কোন কিছু দেয় খেতে ওইটা কি খাওয়া আমাদের জন্য জায়েজ হবে? কারণ আমি মনে করতেছি কত লোকই তো ওনাকে টাকা দান করে তো কার টাকা হালাল না হারাম আমিতো জানিনা যার জন্য উনি কোন কিছু দিলেও আমি খেতে চাই না। এটা কি আমার ঠিক হচ্ছে।?
৫) শায়েখ মেয়েদের পার্কে গিয়ে ভ্রমণ করা কি জায়েজ আছে?
৬) শায়েখ আমি একদিন আসরের নামাজ পড়ছিলাম মানে দেরী হয়ে গেছিল এক জায়গায় গিয়েছিলাম,তো বাড়িতে আসার পর আসরের নামাজ পড়লাম, পড়ার পর দেখি ৫:১৭বাজে, তবে মুসলিম এ্যাপসে দেখলাম ওইদিনের আসরের ওয়াক্তের শেষ হচ্ছে ৫ঃ১৬। এক্ষেত্রে নামাজটা কি,আবার পড়তে হবে?
৭) শায়েখ হানাফী মাযহাবের মেয়েদের সালাফি মাযহাবে,বিয়ে হলে কি কোন সমস্যা হতে পারে, মানে হানাফি মাযহাবের সাথে তো সালাফি মাজহাবের পার্থক্য আছে তাই না। মানে একটা সম্বন্ধ আসে পাত্র হচ্ছে সালাফি মাযহাবের যার জন্য আমার কাছে ভালো লাগে না। এ বিষয়ে একটু পরামর্শ দিলে ভালো হতো।
৮) শায়েখ সুন্নাত ও নফল নামাজের সিজদায় কি বার বার আস্তাগফিরুল্লাহ বা আল্লাহুম্মাগফিরলি পড়া যাবে।?
৯) শায়েখ বাজারে এখন যেসব দামি দামি বিভিন্ন ক্রিম বের হয়েছে এসব ব্যবহার করে কালো স্কিনের মেয়েরা যদি ফর্সা হয় এটা কি জায়েজ আছে? সমাজে দেখা যায় অনেক অবিবাহিত মেয়েরাও এসব ক্রিম ব্যবহার করে ফর্সা হয়ে পুরুষদের নজর কাড়ে এগুলো কি জায়েজ?
১০) শায়েখ অনেক সময় দেখা যায় কোরআন তিলাওয়াত করার সময় ওযু ভেঙ্গে যায় তো ঐ সময় আমি যদি কোরআন না স্পর্শ করে, মানে কাগজের পৃষ্ঠা দিয়ে একটা চিরকুট বানিয়েছি এটা দিয়ে যদি পৃষ্ঠা উল্টিয়ে পড়ি আর পড়া শেষে কোরআন শরীফের গিলাফ ধরে রেখে দিই কোরআন কে এতে কি গুনাহ হবে?
১১) হুজুর আমাদের গোসলখানা বাথরুম একসাথে তবে বাথরুমে দরজা লাগানো আছে, এতে করে গোসলখানায় ট্যাপের মধ্যে ওযু করলে বিসমিল্লাহ পড়া যাবে?
১২) শায়েখ এখন তো বেশিরভাগই হাতে হাতে স্মার্টফোন প্রয়োজনে অপ্রয়োজনে ফেসবুক বা youtube গেলে পর পুরুষদের ছবি চোখের সামনে পড়ে যায়, তবে আমি যদি ইচ্ছাকৃত ভালো ভাবে না দেখি এতে করে কি চোখের গুনাহ হচ্ছে?
১৩) আমার এক বোন উনি অবিবাহিত অবস্থায় এক কবিরাজ এর কাছে যায় তো ওই কবিরাজের দুইটা স্ত্রী আছে সন্তান আছে নাতনিও আছে,তো ঐ আপু গিয়েছিল এই কবিরাজের কাছে ঔষধ আনার জন্য,,তো ঐ কবিরাজ তোর এই আপুকে দেখে পছন্দ করে ফেলে এবং বিভিন্ন তাবিজ কবজ করে আপুকে বিয়ে করার জন্য আর অবশেষে আপুর সাথে অনেক কিছু হয়, যার জন্য ওই আপুকে ব্ল্যাকমেইল করে বিয়ে করে আপুটাকে। এখন এই আপু অবিবাহিত ছিল ও কিন্তু এই কবিরাজের বয়স ৫০-৬০ এর দিকে হবে হয়তো, তো উনার সাথে যে বিয়ে হল এটা কি আপুর তাকদীর ছিল ?
১৪)আর আমার এক প্রতিবেশী আমাকে বলছিল আপনার ওই বোনের তো এরকম বয়স্ক লোকের সাথে বিয়ে হলো ,,তো আমি বললাম এই বিয়ে কি আমরা দিছি,, মানে এই বিয়ে টা তো আর আপুর পরিবারের খুশি মনে সম্মতিতে হয়নি। তো ঐ প্রতিবেশী বলল যে ভাগ্যে থাকলে কোথায় ফেলবেন, তো আমি বললাম যে এটা কিসের ভাগ্য উনি তো ব্ল্যাকমেল করে বিয়ে করছে, আমি মানি ই না এটা ভাগ্য,, আর বলছিলাম এটা তো একটা দুর্ঘটনা। আর হুজুর তাকদিরের উপর বিশ্বাস রাখা তো ঈমান এর অন্তর্ভুক্ত।তো ঐ আপু যে এরকম বয়স্ক লোকের সাথে বিয়ে হয়েছে ওটা কি আপুর তাকদীর ছিল। আর যদি এটা তাকদীর ই হয়ে থাকে তাহলে আমার কথাগুলোর কারণে কি আমার ঈমানের কোন ক্ষতি হয়েছে??
১৫)হুজুর ফেসবুক এ একটা ভিডিও দেখলাম যে একজন বড় আলেম বলতেছে যে মেডিকেল সাইন্স ল্যাব দ্বারা প্রমাণিত,,মহিলারা মাসিকের সময় পাঁচ ধরনের খাবার খেলে ক্যান্সারে দিকে যাবে। তো খাবার গুলো হলো: শসা ,লবণ ,জাঙ্ক ফুড ,কোল্ড ড্রিংকস, দুধ । আর ঐ আলেম এটাও বলছে যে মাসিকের সময় শসা খেলে নাকি বন্ধ্যাত্ব হয় মহিলারা।তবে আমি এক ডক্টর কে জিজ্ঞেস করি যে মাসিকের সময় নাকি দুধ খাওয়া নিষেধ। তো ডক্টর আমাকে বলে যে কে বলছে এ সময় এগুলো যত বেশি পারেন খাবেন।তো আমার জানার বিষয় হচ্ছে,, মাসিক চলাকালীন সময়ে আমি যদি এই খাবারগুলো না খাই এতে কি আমার ঈমানের কোন সমস্যা হতে পারে, মানে বিদয়াত হবে ?
১৬) শায়েখ কাযা রোজা রাখা অবস্থায় যদি কোন কারনে এ কাজা রোজাটি ভেঙে যায় বা ভাঙতে হয়,, এক্ষেত্রে কি পরে আবার রোজা রাখার ক্ষেত্রে আগের কাজা রোজা তো রাখবোই তবে যেদিন কাজা রোজা রাখার নিয়ত করেছিলাম ঐদিন কোন কারনে ভাঙ্গার ফলে ওইদিনেরটাও আবার কাযা করতে হবে,মানে ধরুন আমার রমজানের ফরজ কাজা রোজা নয়টি, তবে যেদিন আমি একটা রোজা রাখার নিয়ত করলাম তো ঐদিন কোন কারণে ভেঙে গেল, এক্ষেত্রে আমার জিম্মায় থাকা নয় টি রোজা সহ যেদিন নিয়ত করেও ভেঙে গেল এটা সহ দশটি রাখতে হবে?
আমি অনেকগুলো প্রশ্ন করেছি শায়েখ তার জন্য আফওয়ান,, আর অগ্রিম জাযাকুমুললাহ খইরন আপনাদেরকে।