জবাবঃ-
بسم الله الرحمن الرحيم
(০১)
হাদীস শরীফে এসেছেঃ-
حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ عَبْدِ اللَّهِ الرَّقِّيُّ، حَدَّثَنَا إِبْرَاهِيمُ بْنُ عَبْدِ السَّلاَمِ بْنِ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ بَابَاهْ الْمَخْزُومِيُّ، حَدَّثَنَا عَبْدُ اللَّهِ بْنُ مَيْمُونٍ، عَنْ مُحَمَّدِ بْنِ الْمُنْكَدِرِ، عَنْ جَابِرِ بْنِ عَبْدِ اللَّهِ، قَالَ قَالَ رَسُولُ اللَّهِ ـ صلى الله عليه وسلم ـ " لاَ تَدَعُوا الْعَشَاءَ وَلَوْ بِكَفٍّ مِنْ تَمْرٍ فَإِنَّ تَرْكَهُ يُهْرِمُ " .
জাবির ইবনে আবদুল্লাহ (রা.) বলেন, রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, ‘রাতের আহার ত্যাগ কোরো না, যদিও তা এক মুঠো খেজুরও হয়। কারণ রাতের আহার ত্যাগ মানুষকে বৃদ্ধ করে দেয়।
(ইবনে মাজাহ, হাদিস : ৩৩৫৫; তিরমিজি, হাদিস : ১৮৫৬)
রাসুলুল্লাহ সাঃ রাতের খাবার এশার নামাজের আগে বা সঙ্গে সঙ্গেই সেরে নিতে উদ্বুদ্ধ করেছেন।
ইমাম বুখারি (রহ.) তাঁর গ্রন্থে ‘রাতের খাবার পরিবেশন করা হলে তা রেখে অন্য কাজে ত্বরা করবে না’ শিরোনামে একটি অধ্যায়ই নিয়ে এসেছেন,
সেখানে তিনি আয়েশা (রা.) সূত্রে নবী (সা.) থেকে বর্ণনা করেছেন যে,
حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ يُوسُفَ، حَدَّثَنَا سُفْيَانُ، عَنْ هِشَامِ بْنِ عُرْوَةَ، عَنْ أَبِيهِ، عَنْ عَائِشَةَ، عَنِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم قَالَ " إِذَا أُقِيمَتِ الصَّلاَةُ وَحَضَرَ الْعَشَاءُ فَابْدَءُوا بِالْعَشَاءِ ". قَالَ وُهَيْبٌ وَيَحْيَى بْنُ سَعِيدٍ عَنْ هِشَامٍ " إِذَا وُضِعَ الْعَشَاءُ
মহানবী (সা.) বলেছেন, ‘যখন নামাজের (এশার) ইকামত দেওয়া হয় এবং রাতের খাবারও উপস্থিত হয়ে যায়, তাহলে তোমরা আগে আহার করে নেবে।’ (বুখারি, হাদিস : ৫০৬৯)
আনাস রাদিয়াল্লাহু আনহু আমাদেরকে বর্ণনা করছেন, তিনি বলেন:
« إن النبي - صلى الله عليه وسلم - لم يجتمع عنده غداء ولا عشاء من خبز ولحم إلا على ضفف».
রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের দুপুর ও রাতের খাবারে কখনো রুটি মাংস একত্রে মিলত না, যদিও মিলত তা হত অতি সামান্য।
(তিরমিযী, হাদিস: ২৩৫৬)
রাসূলুল্লাহ সাঃ এমনকি তখনকার আরব বাসীদের সাধারণ নিয়ম ছিল যে,তারা ২ বার খাবার খেতেন, জোহরের পূর্বে এবং আসরের পর খাবার খেতেন।
★সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি বোন,
উপরোক্ত হাদীস গুলি বিবেচনা করলে আমরা বুঝতে পারি যে রাসুলুল্লাহ সাঃ ২ বেলা খাবার খেতেন।
এক,দুপুরের কিছু আগে।
দুই, আসরের পর বা মাগরিবের পর।
মাগরিবের পর বলতে ইশার পূর্বে বুঝায়।
ঈশার সঙ্গে সঙ্গেও বুঝায়।
তবে ইশার পর দেড়ি করা যাবেনা।
রাসুল (সা.) দুটি বিষয়কে অগ্রাধিকারকে দিতেন। একটি হলো ক্ষুধা থাকলে তিনি খেতেন, না হলে তিনি খেতেন না। অতিরিক্ত খাবার খেতেন না।
দ্বিতীয়ত, রাসুল (সা.) রাতে সালাত আদায় করতেন। বিশেষ করে এশার পর তিনি অপ্রয়োজনীয় কথা বলে সময় নষ্ট করতেন না। মানে এশা পড়ে ঘুমিয়ে পড়তেন। তাই এশার আগেই খেয়ে নিতেন।
(০২)
হাদীসে শুধু ২ বেলা খাবার কথাই পেয়েছি।
বরং হাদীসে এমনটি পাওয়া যায় যে রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ও তা পরিবার তাঁর মৃত্যু পর্যন্ত পরস্পর দুই দিন যবের রুটি পেট ভরে পূর্ণ করে খাননি।
আয়েশা রাদিয়াল্লাহু আনহা বলেন:
«ما شبع آل محمد من خبز شعير يومين متتابعين حتى قبض رسول الله - صلى الله عليه وسلم -»
মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের পরিবার তাঁর মৃত্যু পর্যন্ত পরস্পর দুই দিন যবের রুটি পেট ভরে পূর্ণ করে খায়নি।
(মুসলিম, হাদিস: ২৯৭০)
অন্য বর্ণনায় এসেছে:
«ما شبع آل محمد منذ قام المدينة من طعام بر ثلاث ليال تباعًا حتى قبض».
মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম মদীনায় আগমণের পর থেকে মৃত্যু বরণ পর্যন্ত তাঁর পরিবার পরস্পর তিন দিন পেট পূর্ণ করে গমের রুটি খায়নি।
(মুসলিম, হাদিস: ২৯৭০)
বরং রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম খাবার কিছু না পেয়ে ক্ষুধার্ত পেটে ঘুমিয়ে যেতেন এক লোকমাও তার পেটে কিছু যেত না!
ইবনে আব্বাস রাদিয়াল্লাহু আনহুমা হতে বর্ণিত, তিনি বলেন:
«كان رسول الله - صلى الله عليه وسلم - يبيت الليالي المتتابعة طاويًا هو وأهله،لا يجدون عشاء، وكان أكثر خبزهم خبز الشعير».
রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ও তাঁর পরিবার ক্ষুধার্তাবস্থায় পরস্পর কয়েক রাত অতিবাহিত করতেন। রাতের খাবার থাকত না তাদের কাছে, আর বেশীর ভাগ তাদের রুটি ছিল যবের রুটি।
(তিরমিযী, হাদিস: ২৩৬০)
(০৩)
প্রশ্নের বিবরণ মতে তার গুনাহ হবেনা।