আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
49 views
in হালাল ও হারাম (Halal & Haram) by (6 points)
আসসালামু আলাইকুম,
আমার প্রশ্ন হলো, কাকড়া, অকটোপাস, স্কুইড খাওয়া " হারাম " কিনা? আমি আপনাদের সাইটে এই সেইম প্রশ্নের উত্তর দেখেছি। কিন্তু শায়েখ আহমাদুল্লাহ এবং মিজানুর রহমান বলেছেন এগুলো খাওয়া " জায়েজ আছে"। এখন মাকরুহে তাহরিমী হলে সেটা কিভাবে " জায়েজ " হয়? বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে হানাফী মাযহাবের মতে আমরা কোন ফতওয়া মানব? আর আমরা যদি এগুলাকে " হারাম " বলি, তাহলে গুনাহ হবে কিনা।
জাযাকাল্লাহ

1 Answer

0 votes
by (565,890 points)
জবাবঃ-
وعليكم السلام ورحمة الله وبركاته 
بسم الله الرحمن الرحيم

চিংড়ি খাওয়ার বিধানঃ-

হাদীস শরীফে এসেছেঃ- 

وَعَنِ ابْنِ عُمَرَ قَالَ: قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: أُحِلَّتْ لَنَا مَيْتَتَانِ وَدَمَانِ: الْمَيْتَتَانِ: الْحُوتُ وَالْجَرَادُ وَالدَّمَانِ: الْكَبِدُ وَالطِّحَالُ . رَوَاهُ أحمدُ وابنُ مَاجَه وَالدَّارَقُطْنِيّ

আবদুল্লাহ ইবনু ’উমার (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ দু’ প্রকারের মৃত এবং দু’ প্রকারের রক্ত আমাদের জন্য হালাল করা হয়েছে। সে মৃত দু’টি হলো, মাছ ও টিড্ডি। আর দু’ প্রকারের রক্ত হলো যকৃৎ ও প্লীহা।
(হাসান : মুসনাদে আহমাদ ৫৭২৩, মুসনাদুশ্ শাফি‘ঈ ১৫৬৯, মা‘রিফাতুস্ সুনান ওয়াল আসার লিল বায়হাক্বী ৫৮২৫)

★চিংড়ি সম্পর্কে চার মাযহাবের উলামায়ে কেরামদের মধ্য মতবিরোধ রয়েছে। শা'ফী, মালিকী,ও হাম্বলী মাযহাবের উলাময়ে কেরামগণ চিংড়িকে জায়েয বলে মনে করেন।
চিংড়ি নিয়ে হানাফী মাযহাবের উলামায়ে কেরামদের মধ্যেও মতবিরোধ রয়েছে। কেউ কেউ মাকরুহে তাহরীমি মনে বলেন।আবার কেউ মাকরুহে তানযিহি বলেন। অর্থাৎ তাহরীমি মনে না করলেও না খাওয়াকে উত্তম ও সচেতন পদক্ষেপ হিসেবে গণ্য করেন। (তাকমিলাতু ফাতহুল মুলহিম-৩/৫১৩-৫১৪,আহসানুল ফাতাওয়া-৭/৩৯১,কিতাবুন নাওয়াযিল-১৪/৪১৩,কেফায়াতুল মুফতী-৯/১২৪,
ইমদাদুল ফাতাওয়া-৪/১০৩)
এ সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে ক্লিক করুন- https://www.ifatwa.info/472

যেহেতু মতবিরোধ হুকুমের মধ্যে শীতিলতা নিয়ে আসে, বিধায় বর্তমানে চিংড়ি খাওয়াকে মাকরুহে তাহরীমি  বলা যাবে না।বরং মাকরুহে তানযিহি তথা অনুত্তম বলতে হবে।
,
https://www.ifatwa.info/3759/ নং ফতোয়াতে উল্লেখ রয়েছেঃ- 
বর্তমান আমাদের উপমহাদেশের উলামায়ে কেরাম বিশেষ করে মুফতী তকি উসমানী সাহেব দাঃবাঃ ফকীহুল মিল্লাত মুফতী আব্দুর রহমান রহঃ সহ অনেকেই বলেছেন যে চিংড়ি মাছ খাওয়া স্পষ্ট আকারে জায়েজ। 
এতে কোনো সমস্যা নেই। 
,
অনেকে বলে থাকেন কাঁটা না থাকলে তা মাছ হয় না। চিংড়ি তাহলে কি মাছ না? কাঁটা থাকা না থাকা মূল বিষয় নয়। মূল বিষয় হল, মাছ হওয়া। হানাফী মাযহাব মতে নদ নদী এবং সমুদ্রের শুধুমাত্র মাছ খাওয়া জায়েজ। অন্য প্রাণী খাওয়া জায়েজ নয়।
এখন প্রশ্ন হল, কোনটা মাছ আর কোনটা মাছ না এটি কিভাবে নির্ণিত হবে?

এর মূল বিষয় হল, জেলে এবং নদীর প্রাণী বিশেষজ্ঞদের মতে যেগুলো মাছের মাঝে গণ্য। সেগুলো মাছ হিসেবে স্বীকৃত হবে। আর যেসব তাদের মতে মাছ নয়, বরং সামুদ্রিক প্রাণী সেসব খাওয়া যাবে না।
সেই হিসেবে জেলে ও সমুদ্র প্রাণী বিশেষজ্ঞদের মতে চিংড়ি মাছের অন্তর্ভূক্ত। কিন্তু স্কুইড, অক্টোপাশ বা কাঁকড়াকে কেউ মাছ বলে না। বরং এসব সামুদ্রিক প্রাণী।

এ কারণে চিংড়ি খাওয়াতে বিধিনিষেধ নেই। কিন্তু কাকড়া, স্কুইড, অক্টোপাশ ইত্যাদি মাছ না হওয়ায় তা ভক্ষণ করার অনুমতি দেয়া হয় না।

ولا يأكل من حيوان الماء إلا السمك، وقال: مالك وجماعة من اهل العلم بإطلاق جميع ما فى البحر الخ (هداية، كتاب الذبائح-4/442، تبيين الحقائق-6/469)
পানিতে যে সমস্ত প্রানী বসবাস করে,তার মধ্যে শুধু মাত্র মাছ খাওয়াই জায়েজ।   

ولا يحل حيوان مائى الا السمك (رد المحتار-9/441
পানিতে বসবাস কারীর মধ্য হতে শুধুমাত্র মাছ খাওয়াই জায়েজ।      

হানাফি মাযহাবের ফতোয়া হলো, কাকড়া, অক্টোপাস, স্কুইড খাওয়া নাজায়েজ। এটাকে হারাম বলা যাবে।

এ সংক্রান্ত বিস্তারিত জানুনঃ- 

★সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি বোন,
আপনি যদি কাকড়া, অক্টোপাস, স্কুইড খাওয়াকে হারাম বলেন,সেক্ষেত্রে গুনাহ হবেনা।

উল্লেখ্য, এটা হানাফি মাযহাবের মত।
তবে ভিন্ন মাযহাবে ভিন্ন মত পরিলক্ষিত হয়। সেক্ষেত্রে তাদের অনুসারী গন সেই মত অনুযায়ী আমল করতে পারবেন।


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

------------------------
মুফতী ওলি উল্লাহ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...