আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
21 views
in বিবিধ মাস’আলা (Miscellaneous Fiqh) by (18 points)
edited by
আসসালামু আলাইকুম।
আমরা ৩ বোন,ভাই নেই।আমি মেজো।আমার বাবা উপার্জন ক্ষম নয় এবং তার অনেক ঋণ আছে।বিয়ের আগে আমি আমার স্বামীকে আমাদের অবস্থা জানিয়েছিলাম।তিনি আমার পরিবারের দায়িত্ব নেওয়ার কথা বলেছিলেন।

আমার বিয়ে হয়েছে ৪ বছর।আমার স্বামী অসুস্থ থাকায় আমি অনার্স থার্ড ইয়ারে থাকা অবস্থায় পড়াশোনা ছেড়ে দেই।পরবর্তীতে দ্বীনের বুঝ আসার পরে ফ্রি-মিক্সিং পড়াশোনায় আমার স্বামী পারমিশন দেয় নি।আমিও আর কন্টিনিউ করিনি।

এখন আমার স্বামী আলহামদুলিল্লাহ খুব ভালো জব করে।কিন্তু সে আমার ফ্যামিলি কে দেখতে পারে না।আমার বড় বোনের উপর আমার বাবা মায়ের দায়িত্ব চাপিয়ে দিয়েছে।আমার বোনের হাজবেন্ড তার সাধ্য মতো দেন।কিন্তু সেটা একটা ফ্যামিলির খাওয়া পড়ার জন্য সাফিসিয়েন্ট না।আমার ছোট একটা বোন আছে অবিবাহিত। ঋণ শোধ করা তো দূরে থাক,তাদের খেয়ে পড়ে থাকাটাই কষ্ট হচ্ছে।আমার স্বামী নিজে কোন হেল্প করেন না,আমাকে কিছু করতেও দেন না।আমি ১ টা টিউশন করাতাম সেই টাকাও নিয়ে নিত তার মানসিক সমস্যার কারণে। এখন টিউশন ও করতে দেয় না।আমি টিউশন করা ছাড়া আর কোন ইনকাম সোর্স জানিও না।

বাবা-মা, বোনেট কষ্ট আমি সহ্য করতে পারতেছি না।আমার গলা দিয়ে ভাত নামতে চায় না।কষ্ট হয় খুব।কিন্তু তাও মন খারাপ করা যায় না।নূন্যতম মন খারাপ করলেও বাসায় অশান্তি সৃষ্টি হয়।

আমার স্বামী আমাকে প্রতি মাসে ২ হাজার টাকা হাত খরচ দেয়, কিন্তু শর্ত হচ্ছে সেই টাকা আমি আমার ফ্যামিলির পিছনে ব্যয় করতে পারবো না।

আমার এখন করনীয় কি?

স্বামী কে না বলে হাত খরচ থেকে টাকা দিলে গুনাহগারী হবো?

স্বামীর অমতে গিয়ে নিজে ইনকাম করতে পারবো?

বাবা-মা কে সাহায্য না করলে গুনাহ হবে?

আমি ৪ টা বছর ধরে সহ্য করেছি।৪ বছরে মাত্র ২ বার বাবার বাড়ি যেতে পারছি।কিন্তু আমি আর সহ্য করতে পারতেছি না।কেউ আমার অবস্থা বোঝে না।নিজের মৃত্যু কামনা করতে ইচ্ছা হয়।

1 Answer

0 votes
by (57,120 points)

 

ওয়া আলাইকুমুস-সালাম ওয়া রাহমাতুল্লাহি ওয়া বারাকাতুহু

বিসমিল্লাহির রহমানির রহীম

জবাব:-

https://ifatwa.info/6603/  ফতোয়াতে উল্লেখ করা হয়েছে যে

পরিবারের জন্য খরচ করা,মা বাবার ভরনপোণের জন্য খরচ করা উত্তম কাজ।

মা বাবা নিজেদের ভরনপোষণের ক্ষেত্রে অসমর্থ হলে সন্তানদের জন্য তাদের ভরনপোষণের খরচ দেওয়া শুধু শরীয়তেই নয়  এটা মানবতার দিক লক্ষ্য করেও জরুরি।

হাদিস শরিফে এসেছে,

রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেন, ‘খরচের ব্যাপারে তুমি আগে নিজের প্রয়োজনীয় খরচের দায়িত্বশীল, তারপর তোমার স্ত্রীর, তারপর সামর্থ্য হলে তোমার নিকটাত্মীয়ের খরচ তোমার ওপর বর্তাবে।’ (সহিহ মুসলিম, হাদিস ৯৯৭)

মা-বাবা  ভরণ-পোষণের অধিকারী হওয়ার জন্য শর্ত হলো দুটি।

এক. তাঁরা এমন দরিদ্র হতে হবে যে তাঁরা নিজের মালিকানার সম্পদে চলতে অক্ষম। এখন কথা হলো, যদি তাঁরা উপার্জনের শক্তি রাখে, তাহলেও তাঁদের সন্তানদের ভরণ-পোষণ দিতে হবে কি না? এ ক্ষেত্রে বিধান হলো, তাঁদের উপার্জনের শক্তি থাকলেও যদি তাঁদের কাছে চলার মতো নগদ টাকাকড়ি না থাকে, তাঁদের সন্তানদের ভরণ-পোষণ দিতে হবে। তাদের সন্তানরা এ কথা বলতে পারবে না যে আপনি তো উপার্জনে সক্ষম, আপনি নিজে উপার্জন করে চলুন। তবে যদি তাঁরা ধনী হন, তথা তাঁদের মালিকানায় নগদ এমন সম্পত্তি থাকে, যা দ্বারা তাঁরা শান্তিতে কালাতিপাত করতে পারেন, তাহলে সন্তানদের ওপর তাঁদের ভরণ-পোষণ দেওয়া ওয়াজিব নয়।

দুই. সন্তান-সন্ততি সামর্থ্যবান ও উপার্জনে সক্ষম হতে হবে। তাদের সামর্থ্যবান হওয়ার পরিমাণ হলো, তাদের মালিকানার সম্পত্তি বা উপার্জনকৃত আয়ের দ্বারা নিজের ও নিজের স্ত্রী ও সন্তান-সন্ততির স্বাভাবিক ভরণ-পোষণের পর অতিরিক্ত সম্পদ থাকতে হবে। অন্যথায় তাদের উপার্জনকৃত আয়ের মধ্য থেকে যদি তার নিজের ও স্ত্রী বা সন্তান-সন্ততির ভরণ-পোষণের অতিরিক্ত সম্পদ না থাকে, তাহলে মা-বাবা ও ঊর্ধ্বতন আত্মীয়ের ভরণ-পোষণ দেওয়া ওয়াজিব নয়। যদিও এ ক্ষেত্রে উত্তম হলো, কষ্ট হলেও যথাসাধ্য মা-বাবারও ভরণ-পোষণের খরচ চালিয়ে যাবে। (তাবঈনুল হাকায়েক : ৩/৬৪, রদ্দুল মুহতার : ২/৬৭৮)

মা-বাবার ভরণ-পোষণের দায়িত্ব উপরোক্ত দুই শর্তে সব ছেলে-মেয়ের ওপর ওয়াজিব। এ দায়িত্ব সব সাবালক সামর্থ্যবান ছেলে-মেয়ের ওপর সমভাবে বর্তাবে। এ ক্ষেত্রে ছেলে-মেয়ের মধ্যে কোনো পার্থক্য নেই, তাই কোনো মেয়ে যদি সামর্থ্যবান ও বিত্তবান হয়, তাহলে ছেলেদের মতো সমভাবে তার ওপরও মা-বাবার খরচের দায়িত্ব বর্তাবে। কেননা মা-বাবার জীবিত অবস্থায় সন্তানের জন্য খরচ ও উপহারে মেয়েরাও তাদের ভাইদের মতো সমঅধিকারী, তাই মা-বাবার খরচ বহনে তারাও সামর্থ্যের শর্তে তাদের ভাইদের সমদায়িত্বশীল হবে। ছেলে-মেয়ে না থাকলে তারপর সিরিয়াল আসবে নাতি-নাতনিদের। অতএব, তাদের ওপর সমভাবে এ দায়িত্ব বর্তাবে। (ফাতহুল কাদির : ৪/৪১৭)

সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি ভাই/বোন!

প্রশ্নে উল্লেখিত ছুরতে আপনার উপর আপনার পিতা মাতাকে দেখাশোনার দায়িত্ব রয়েছেআপনি যদি স্বামী থেকে হাত খরচের জন্য দেয়া টাকা বা বা অন্য সময়ে দেয়া টাকা বাঁচিয়ে বাবা মাকে দেন, তাহলে কোনো সমস্যা নেই। কারণ, আপনার স্বামী আপনাকে যেই টাকা দেন উহার মালিক আপনি। আপনার ইচ্ছে মত বৈধ কাজে তা ব্যবহার করা জায়েয আছে।

 স্ত্রীর মালিকানাধীন সম্পদে স্বামীর হস্তক্ষেপ করা জায়েয নেই। সর্বোচ্ছ স্বামী পরামর্শ দিতে পারেন। বাবা মার প্রয়োজনে স্বামীকে বুঝিয়ে (আপনার স্বামী রাজি হলে) তাদের প্রয়োজন পূরন করতে পারেন। নিজে না পারলে স্বামীর পরিবারের দ্বীনদার কোন মুরব্বী (যাকে স্বামী মান্য করে) এর মাধ্যমে বা স্থানীয় কোন আলেমের মাধ্যমে উক্ত বিষয়ে বুঝাতে পারেন। হেকমত ও ভালবাসার মাধ্যমে উক্ত সমস্যার সমাধানের ফিকির ও চেষ্টা করুন। ঝগড়া বিবাদে লিপ্ত হওয়া থেকে বিরত থাকাই শ্রেয়। সর্বপরি আল্লাহ তায়ালার নিকট দুআর অব্যাহত রাখতে হবে।


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

--------------------------------
মুফতী মুজিবুর রহমান
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)
ago by
স্বামী কোন ভাবেই বুঝতে চাচ্ছে না।৪ বছর ধরে বুঝিয়েছি।

আমাকে টাকা দেওয়ার আগে আমাকে দিয়ে কথা দেওয়াইছে যে আমি আমার ফ্যামিলিকে টাকা দিব না।এই শর্তে টাকা দেয়।সে যদি জানে যে টাকা দিব তাহলে আমাকে টাকা দেওয়া বন্ধ করে দিবে।
এই শর্ত ভংগ করে টাকা দেওয়া জায়েজ হবে?

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...